নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের প্রায়ই সবারই কখনও না কখনও সব কিছু ছেড়ে দিয়ে ছুড়ে দিয়ে যেদিকে চোখ যায় সেদিকে চলে যওয়ার কথা মনে আসে । আপনারও কোন না কোন সময়ে এমন কথা মনে এসেছে নিশ্চয়ই! আমার এসেছে বেশ কয়েকবারই। এখনও আমার প্রায়ই মনে আসে কথাটা ! প্রায়ই মনে হয় সাইকেলটা নিয়ে বের হয়ে পড়ি । ফোনটা বাসায় রেখে, অল্প কিছু টাকা পয়সা নিয়ে যেদিকে দুচোখ চলে যায়, সেদিকেই সাইকেলটা চালিয়ে দিই । কিন্তু এই ইচ্ছে টা কোন ভাবেই পূরণ করা হয় না । হয়তো কোন দিন সত্যি সত্যি বের হয়ে যাব । যতদিন না যাচ্ছি ততদিন এই জীবন নিয়েই আছি । ব্লগেও আছি !
যাইহোক আজকের পালানোর গল্প যদিও এই গল্প না । আজকের পালানোর গল্পটা হচ্ছে আমার জীবনে প্রথম এবং এক মাত্র বাড়ি ছেড়ে পালানোর গল্প । ছোট বেলা থেকেই আমি আমার বাবাকে বড় ভয় পেতাম । অথচ তিনি প্রায় কোন দিনই আমার গায়ে হাত তোলেন নি । সম্ভবত একবার তার হাতে একটা চড় খেয়েছিলাম । অবশ্য তার আমাকে মাইর দেওয়ার দরকারও ছিল না । কেবল আমার দিকে একবার চোখ গরম করে তাকানোই যথেষ্ঠ ছিল । আমি আমার পুরো জীবনে বলতে গেলে কোন অন্যায়ই করি নি কেবল মাত্র আমার বাবার এই মারের ভয়ের কারণে । আমার বড় ভাইকে প্রচুর মাইর দিয়েছেন তিনি । সেই মাইর খাওয়া দেখেই আমি মোটেও কোন অন্যায় করার সাহস করি নি কোন দিন । মোটামুটি ক্লাস টেন পর্যন্ত আমার নামে বাসায় কখনও নালিশ আসে নি । ক্লাস টেনে অবশ্য একটা ঘটনা ঘটেছিলো । সেটা ঠিক নালিশ নয় । সেই গল্প আমি আগে করেছি অবশ্য ।
যাই হোক, আগেই বলেছি যে আমি আমার বাবাকে ভয় পেতাম খুব । তাকে বলার উপায় ছিল না যে সেদিন স্কুলে যাবো না । কী কারণে স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না সেটা আমার অবশ্য মনে নেই । তবে স্কুলে যাবো না এটাই ছিল ফাইনাল । তখন যশোরে থাকি । ক্লাস ফোরে পড়ি যতদুর মনে পড়ে। বাসার ঠিক কাছেই স্কুল । হেটে যেতে মিনিট পাঁচেক সময় লাগে । বাসায় আম্মুকে বললাম যে আমার খুব পেট ব্যাথা করছে । আমি কিছুতেই স্কুলে যাবো না । কিন্তু সে বিশ্বাস করলো না । বলল যে স্কুলে যেতে হবেই ।
আমি শার্ট গায়ে দিলাম । প্যান্ট পরলাম । তারপর বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম । স্কুল যেদিকে তার বিপরীত দিকে হাটা শুরু করলাম ! ঝুমঝুমপুর গ্রাম আমার পরিচিত । টুকটুক করে হাটতে হাটতে গ্রাম পার হয়ে অন্য আরেকটা গ্রামে হাজির হলাম । আমার লক্ষ্য ছিল যে কোন ভাবে স্কুলে যাওয়ার সময়টা পার করে তারপর বাসায় ফেরা । হাটতে হাটতে অন্য আরেকটা গ্রামে চলে এসেছি । গ্রামের নাম টা অবশ্য এখন আর আমার মনে নেই । তবে সেই গ্রামে আমি আগেও গিয়েছিলাম । আমরা যে বাসায় ভাড়া থাকতাম সেই বাড়িওয়ালার বাবার বাড়ি ছিল সেই গ্রামে । বাড়িওয়ালার ছেলে বন্ধু ছিল । সেই হিসাবে তার দাদার বাড়ি আমি আগেও এসেছি । সেই বাড়ির একজন আমাকে দেখলো । এবং আমাকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেল । তখন সকালের নাস্তা খাওয়ার সময় । আমাকে ভাত খাওয়ালো । ডিম ভাজি আর আলুভাজি ছিল । এটা আমার এখনও মনে আছে । সেই বাসায় আমি আরও বেশ খানিকটা সময় ছিলাম । তারপর যখন মনে হল যে স্কুলের সময় পার হয়ে গেছে তখনই বাড়ির পথ ধরলাম । বাড়ির লোকজন অবশ্য আমাকে এগিয়ে দিতে চাইলো । রাস্তা যেহেতু আমার চেনা তাই দরকার নেই বললাম । যদিও কাজ হল না । তাদেরই একজন আমাকে সাইকেলে করে বাসায় পৌছে দিল ।
বাসায় পৌছে দেখি সেখানে অন্য রকম অবস্থা । আমার আম্মা কান্না কাটি করে অস্থির । পরে শুনেছিলাম যে আর কিছু পার হলেই নাকি মাইকিং করার প্লান করা হচ্ছিলো । আমার পরিকল্পনা ছিল কেবল স্কুলে না যাওয়ার কিন্তু পরিস্থিতি যে এমন হয়ে যাবে আমি কোন দিন ভাবিও নি । সেদিনের পরে আমি আর কোন দিন বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করি নি । তবে এরপরে যদি একান্তই কোন দিন স্কুলে না যাওয়ার কথা বলতাম তাহলে আমাকে আর জোর করে স্কুলে পাঠানো হত না !
এই গল্প টা অবশ্য বাড়ি থেকে পালানোর গল্প না । এটা স্কুল পালানোর গল্প । অনেকে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, তবে আমি জীবনে কেবল মাত্র একটা দিন স্কুল পালিয়েছি । আর কোন দিন স্কুল পালাই নি । এই ঘটনাটা উপরের ঘটনার আগে । তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি । আমাদের টিফিনের পরে দুইটা ক্লাস হত তখন । সেই দুইটার একটা ক্লাস হত ইংরেজি র্যাপিড রিডিং । স্যার ইংরেজি গল্প পড়াতেন । স্যারের নাম টা মনে আসছে না এখন । তবে সেই স্যার ছিলেন খুব রাগী । স্যার কেবল ইংরেজি গল্পই পড়াতেন না সেই গল্প থেকে শব্দার্থ ধরতেন । এটা আমার জন্য খুব প্যারা ছিল । একদিন আগে স্যার মোটামুটি সবাইকে এই পড়ার জন্য মেরেছেন । আমি কোন মতে উতরে গেছি । তবে ঐদিন কিছুই হয় নি । যদিও স্কুলের কাছেই বাসা ছিল, টিফিনে পিরিয়ডে বাসায় গিয়ে ফেরৎ আসা যেত । ঐদিন বাসায় গেলাম । সেই শব্দার্থ পড়তে থাকলাম । তবে এক সময়ে খেয়াল হল যে কোন কাজ হবে না । ব্যাগ নিলাম । তারপর আস্তে করে স্কুলের পেছন দিক দিয়ে বের হয়ে গেলাম । বাসায় যাওয়ার উপায় ছিল না । স্কুল থেকে দুরে একটা ছোট নদী ছিল । ভৈরব নদীর কোন শাখা নদী সম্ভবত । নীলগঞ্জ ব্রিজের নিচে গিয়ে বসে থাকলাম । তারপর যখন স্কুল ছুটি হল তখন আমি ব্যাগ নিয়ে বাসায় গিয়ে হাজির হলাম । এমন একটা ভাব যেন স্কুল থেকেই আসছি ।
অবশ্য এইটা বাসায় ঠিকই প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিলো কয়েক দিন পরে ।
মোটামুটি এই হচ্ছে আমার জীবনের দুইটি পালানোর জন্য । কদিন আগে সহব্লগার জুলভার্নের পালানোর গল্প পড়ে মনে আমার জীবনের পালানোর গল্প টা লেখা যাক ।
pic source
২৪ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৯
অপু তানভীর বলেছেন: আপনার পালানোর গল্প শুনে ভাল লাগলো !
প্রথম ঘটনাতে আমার বাসার লোকজন জানতে পারে নি আমি কোথায় আছি । তারা খুজে না পেয়ে তখন মাইকিং করার ব্যাপারে ভাবছিলো । আমার লক্ষ্য ছিল কেবল স্কুলে না যাওয়া । স্কুলের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেই আমি বাসার পথ ধরেছিলাম ।
দ্বিতীয় ঘটনার বেলাতে আমার বড় ভাইয়ের এক পরিচিত মানুষ আমাকে দেখে ফেলেছিলো আমি নদীর পাড়ে বসে আছি । সে আমার ভাইকে বলেছিলো ।
২| ২৪ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:০৪
লেখার খাতা বলেছেন: বেশিকম সকলের স্কুল-বাড়ি পালানোর মেমোরি রয়েছে হয়ত। একবার স্কুল পালিয়ে বাংলা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম সিনেমা হলে, যা বাড়িতে জানাজানি হয়ে যায়।ভয়ে বাড়ি ফেরা হয়নাই। পকেটে ছিল ৫০ টাকা। ট্রেনে ট্রেনে চব্বিশ ঘন্টা ঘুড়ে বারি ফেরার পর বাবার হাতে মার খাইছি অনেক। আর কোনদিন পালাইনি।
২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:০২
অপু তানভীর বলেছেন: আমার অবশ্য এতো সাহস হয় নি স্কুলে থাকতে । তবে একবার ঠিকই মুভি দেখতে গিয়েছিলাম সিনেমা হলে ! যদিও সেটা জানা জানি হয় নি ।
৩| ২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:০৮
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: প্রাইমেরিতে পড়ার সময় টিফিনের পর স্কুল ফাঁকি দিতাম হরহামেশাই। হাইস্কুলে সুবিধা করতে পারি নি, পালালেও পরদিন জবাবদিহি করতে হতো।
২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:২৫
অপু তানভীর বলেছেন: আমি সব সময় বাবাকে ভয় পেতাম খুব । তাই সেই সাহস হয় নি কোন দিন । পরে অবশ্য এই পালাতে আর ইচ্ছে করতো না খুব একটা ! স্কুলে যেতে মজাই লাগতো বেশ !
৪| ২৪ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৪:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: কয়েক দিন আগে আমি আমার জীবনের পালানোর গল্প নিয়ে লিখেছিলাম....স্কুল পালানোর তেমন কোনো স্মৃতি আমার নেই, তবে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন আমরা আমাদের ক্লাসের চল্লিশ জন ক্যাডেট পালিয়েছিলাম... ক্যাডেট কলেজ থেকে পালানো কতোটা ভয়ংকর অপরাধ এবং পরিনতি সেটা ক্যাডেট কলেজের ছাত্র শিক্ষক এবং সেনাকর্মকর্তারা ছাড়া কেউ কল্পনাও করতে পারবেনা! কিন্তু সেই দুঃসাহসিক অপরাধ আমরা করেছিলাম....আমাদের ইমোশনাল অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছিলেন সেনা সদর ....
২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ৮:৪৩
অপু তানভীর বলেছেন: সামান্য স্কুল থেকেই আমি পালানোর কথা ভাবতে পারি নাই আর আপনি কিনা পালিয়েছে ক্যাডেট কলেজ থেকে ! সর্বনাশ!
একদিন সেই দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে লিখে ফেলুন !
৫| ২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ৯:০২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: স্মৃতি রোমন্থন ভালো লেগেছে।
২৪ শে জুন, ২০২২ রাত ১১:৫৬
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ
৬| ২৫ শে জুন, ২০২২ রাত ১২:০৯
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
হে, এটা স্কুল পালানোর গল্প।
২৫ শে জুন, ২০২২ রাত ১:০০
অপু তানভীর বলেছেন: জীবনে মাত্র একবার পালিয়েছি স্কুল !
৭| ২৮ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:০১
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: বাহ্ ! দারুন মজা পেলাম । চেরাগ আলী কিংবা আপনার মতো সবার জীবনেই বাড়ি পালানোর গল্প থাকা উচিত । শুভ ব্লগিং ভাল থাকুন ।
২৮ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১:৩৬
অপু তানভীর বলেছেন: আমার জীবনে আসলে পালানোর গল্প নাই বললেই চলে । যা আছে এই । বাবাকে খুব ভয় পাওয়ার কারণে অন্যায় কিছু করার সাহস পেতাম না !
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৮| ২৯ শে জুন, ২০২২ রাত ১:৪০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আসলে স্মৃতি খোঁজ করলে দেখা যাবে আমাদের সকলের কমবেশী স্কুল পালানোর অভিজ্ঞতা আছে। আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লেগেছে। +++
২৯ শে জুন, ২০২২ সকাল ১১:০৭
অপু তানভীর বলেছেন: এটা অবশ্য সত্য কথা । সবারই এই রকম কম বেশি অভিজ্ঞতা আছে !
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:২৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার গল্প দুটো বেশ মজার। আমি দুইবার স্কুল পালিয়েছিলাম মাত্র। প্রথমবার ক্লাস ফোরে যখন পড়ি তখন। টিফিনের পরে কড়া কোন স্যারের ক্লাস ছিল। তাই টিফিনের পরে আমাদের চেয়ে নীচের ক্লাসের ছেলেদের স্কুল বাসে উঠে পড়ি বাসায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য ক্রমে ক্লাসের পাশ দিয়ে যখন বাসটা ঘুরাচ্ছিল তখন ক্লাস থেকে এক ম্যাডাম আমাকে দেখে ফেলে। দূর থেকে আমি বুঝতে পারি যে উনি আমাকে রাগত দৃষ্টিতে শাসাচ্ছেন এবং সম্ভবত বলছেন যে কালকে আসো মজা বোঝাবো। কিন্তু আল্লাহর কি অসীম করুণা পরের দিন ম্যাডাম মনে হয় আমার কথা ভুলে গেছেন এবং কাউকে কিছু বলেননি। ওনার সামনেও আমি অবশ্য পড়িনি।
দ্বিতীয়বার পালিয়েছিলাম দল বেঁধে ৪ জন বা ৫ জন। ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন। আমাদের অনেকের অঙ্ক মাসিক পরীক্ষা খারাপ হয়েছিল। আমি তো শুন্য পেয়েছিলাম ২৫ মার্কের মধ্যে (পরে জানতে পেড়েছিলাম)। আমি সরল অঙ্ক দিয়ে শুরু করেছিলাম কিন্তু ৪০ মিনিটে সেই অঙ্ক আর মিলাতে পারিনি। ফলে অন্য কোন অঙ্কের উত্তর দেয়ার চেষ্টাও করতে পারিনি। এই যখন অবস্থা তখন মনের দুঃখে কয়েকজনে স্কুল থেকে পা টিপে টিপে বেড়িয়ে গেলাম। প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুমের সামনে দিয়ে মাথা নিচু করে যেতে হয়েছিল যেন মাথা দেখা না যায়। তারপর হাটতে হাটতে বাসায় চলে যাই।
আপনার প্রথম গল্পটায় আপনার পরিবার কিভাবে জানলো এটা বুঝতে পারলাম না। দ্বিতীয় গল্পটার ক্ষেত্রেও কে বলে দিল যে আপনি স্কুল পালিয়েছিলেন?