|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
 
   
যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য তার পন্যের বিজ্ঞাপন একটা গুরুত্বপূর্ন ব্যাপর । অনেকেই মনে করেন যে পন্যের গুণগত মান ভাল হলে সেই পন্যের বিজ্ঞাপনের দরকার হয় না । কিন্তু যারা ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তারা জানেন যে পণ্যের বিজ্ঞাপন কতখানিক গুরুত্বপূর্ণ । ক্ষেত্র বিশেষে এই বিজ্ঞাপন প্রচারণা একটা ডুবতে থাকা কোম্পানিকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে । আজকে তেমনই একটা বিজ্ঞাপনের গল্প শোনাই । 
আপনারা ''মার্লবোরো'' সিগারেটের নাম সবাই শুনে থাকবেন । উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্রিটিশ নাগরিক ফিলিপ মরিসের হাত ধরে খুব স্বল্প পরিসরে এই ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু হয় । বিশ শতকের শুরুর দিকে এই সিগারেট আমেরিকাতে সিগারেট কোম্পানিতে হিসাবে রেজিস্টার্ড হয় যদিও ১৯২৩ সালের আগ পর্যন্ত কোন সিগারেট বাজারজাত করা হয় নি । শুরুতে এই সিগারেট কেবল মাত্র হোটেল এবং রিসোর্টে সরবারহ করা হত । পরে ১৯৩০ সালের দিকে এই সিগারেটটা লেসিডস ব্র্যান্ড হিসাবে প্রচার করা হয় । ব্র্যান্ডটির স্লোগানই ছিল ''Mild As May'' মে মাসের মতই কোমল । মূলত ফিলিপ এই ফিল্টার্ড সিগারেট বাজারে এনেছিলো বিপুল পরিমান মহিলা সিগারেট প্রেমিদের আকর্ষণ করার । সেই সময়ে অন্যান্য ব্রান্ডের তুলনাতে মার্লোবোরো স্বাধ গন্ধ একেবারেই কোমল ছিল । 
এরপর ১৯৫০ সালের দিকে গবেষণায় সিগারেটের খাওয়ার খারাপ দিক গুলো বের হয়ে আসে তখন একটা ভুল প্রচারণা চালু হয় যে ফিল্টার্ড সিগারেট খাওয়াটা বুঝি নিরাপদ এবং এতে স্বাস্থ্যগত ক্ষতি কম হয় কিংবা হয় না । তবুও মার্লোবোরো ব্যবসা টিকে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছিলো । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কোম্পানির বিক্রি ছিল মুল বাজারের এক পার্সেন্টেরও কম । তখন কোম্পানি ঠিক করলো যে কেবল মেয়েদের ব্র্যান্ড নয় এটাকে তৈরি করতে হবে পুরুষের ব্র্যান্ড । কিন্তু যা আগে থেকেই মেয়েদের পন্য হিসাবে পরিচিত পেয়েছে তাকে পুরুষের সহজে গ্রহন করার কথা নয় । তারা সেটা করলোও না । সেই পঞ্চাশের দশকে পুরুষেরা এই ক্যান্সারের ঝুকির থেকেও নারী সিগারেট হাতে ধরা পরাটাকে বেশি ভয় পেত । যদি কেউ তাদের মেয়েদের সিগারেট খেতে দেখে তাহলে তাদের পৌরষত্বে আঘাত লাগবে । ফলে কোম্পানী প্রায় বন্ধই হয়ে যেতে বসলো ।
এই মার্লোবোরো ব্র্যান্ডের রেপুটেশনকে ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিকাগোর বিখ্যাত বিজ্ঞাপন নির্মাতা লিও বার্নেটকে ।  
  pic source
 pic source 
 
তখন সকল টোবাকো কোম্পানি তাদের সিগারেটের প্রচারণা চালাচ্ছে এই বলে যে ফিল্টার্ড সিগারেটে ক্ষতির পরিমান কম কিংবা তাদের বানানো ফিল্টার সব থেকে উন্নত এই বলে । কিন্তু লিও সেই দিকে না গিয়ে একেবারে উল্টোপথে হাটা শুরু করলো । লিও সিগারের ক্ষতির কথা না বলে বরং সে ঠিক করলো যে এই সিগারেটের সাথে পৌরুষদীপ্ত একটা ভাব তুলে ধরবেন । এবং তিনি তাই করলেন । ঠিক হল যে সব থেকে পৌরুষাদীপ্ত কিছু মানুষকে মডেল হিসাবে ব্যবহার করবেন । এবং তাদের হাতে সিগারেট দিয়ে দেখাবেন যে এটা তাদের পৌরুষত্বকে বৃদ্ধি করছে । ১৯৫৫ সালে প্রথম এই থিম থেকে এক কাউবয়কে হাজির করা হয় বিজ্ঞাপনের চিত্রে । এবং এতেই কাজ হয়ে যায় ।
মার্লবোরো ম্যানের বিজ্ঞাপন গুলো দেখতে এই ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন  
এক বছর আগেও যে কোম্পানিটি বিক্রির অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিলো সেই কোম্পানি আমেরিকার সর্বাধিক বিক্রিত পন্যের তালিকাতে ৪র্থ স্থানে চলে । পরের বছরে বিক্রি আরও কয়েক গুণ বেড়ে গেল । এই বিজ্ঞাপন এতোই জনপ্রিয় হল যে এই বিজ্ঞাপনে মডেলদের আলাদা একটা নামে পরিচিত পেতে শুরু করলো । মার্লোবোরো ম্যান । 
শুরুতে পেশাদার মডেলদের কাউবয়ের সজ্জায় সাজিয়ে বিজ্ঞাপনের মডেল বানানো হত । তবে লিও এই বিজ্ঞাপনকে আরও জীবন্ত করতে সত্যিকারের কাউবয়দের নিয়ে আসার পরিকল্পনা করলেন । তিনি খুজে বের করেন ড্যারেন উইনফিল্ডকে । তিনি আমেরিকার একটি রাঞ্চের সত্যি কারের কাউবয়ের কাজ করতেণ । তাকে বানানো হল মার্লবোরো ম্যান । 
  pic source
 pic source  
উইনফিল্ড ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এই মার্লোবোরো ম্যানের চরিত্রে বিজ্ঞাপনে কাজ করেন । যদিও আরও অনেক কাউবয় এই মডেল হয়েছেন এর মাঝে তবে উইনফিল্ডের মত এত জনপ্রিয় আর সফল আর কেউ ছিল না । উইনফিল্ডই ছিল সর্বকালের সব থেকে সেরা মার্লোবোরো ম্যান । কেবল আমেরিকাতেই নয়, এই মার্লবোরোম্যানদের হাত ধরে ব্র্যান্ডটি পৌছে যায় বিশ্বের নানান দেশে । অন্যান্য কোম্পানিও একই ভাবে বিজ্ঞাপন তৈরির চেষ্টা করেছেন তবে মার্লোবোরোম্যান মত সফলতা তারা পান নি । 
তবে এই বিজ্ঞাপনের যেমন জনপ্রিয়তা ছিল সেই সাথে সমালোচনাও ছিল অনেক । অনেকের কাছে একটা ক্ষতিকর দিককে এই ভাবে জনপ্রিয় করে তোলাটা মোটেই ভাল কিছু মনে হল না । সত্যিই কিন্তু তাই যে কাজ করলে মানুষের মৃত্যু হয় সেই কাজকে মহিমান্বিত করাটা কোন ভাবেই প্রশংসাযোগ্য হতে পারে না । স্বয়ং এই মার্লোবোরো ম্যান মডেলদের ভেতর থেকেই চারজন মডেল এই ধুমপানত জনিত কারণে মারা যায় । 
মোটামুটি নব্বই দশক পর্যন্ত মার্লবোরো ম্যানদের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিল । তবে ধুমপানের খারাপ দিক নিয়ে নিয়ে মানুষজনের ভেতরে আরও সচেতনা চালু হলে ধীরে ধীরে এই জনপ্রিয় মডেলদের দিন শেষ হয়ে আসতে থাকে । অনেক দেশই তামাক পন্যের বিজ্ঞাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা চালু করে । দুই হাজার সালের পর বলতে গেলে এই বিজ্ঞাপন গুলো একেবারে হারিয়ে যায় । 
আমাদের দেশে এক সময় সিগারেটের বিজ্ঞাপন দেখা যেত । জাহিদ হাসানের বিজ্ঞাপনের কথা আমার মনে পড়ে । কোন এক জাহাজ ডেকে সে সিগারেট টানে । তারপর নায়িকা এসে তাকে জড়িয়ে ধরে । এক সময়ে আমাদের দেশেও মনে করা হত যে সিগারেট পৌরুষত্বের প্রতীক । যদিও এই বোরবাকগিরির ধারণা অনেক কমে এসেছে । 
সিগারেট সহ সকল তামাকজাত পন্য থেকে দুরে থাকুন। 
তথ্যসুত্র
Wkipedia.org 
Marlboro Man 
The Real Marlboro Man 
রহস্য পত্রিকা - ইসমাইল আকরাম 
মানুষের চিন্তাধারা বদলে দিয়েছে যেসব বিজ্ঞাপন
  
pic source
 ১৮ টি
    	১৮ টি    	 +৪/-০
    	+৪/-০  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:০৫
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:০৫
অপু তানভীর বলেছেন: আগে আমার কাছে ফিচার পড়ার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল এই রহস্য পত্রিকা । আমাদের সময়ে ইন্টারনেটের তো এতো সহজ লভ্যতা ছিল না । কত কিছু যে এই পত্রিকা থেকে পড়েছি তার কোন ঠিক নেই । 
সেই সময়ে বিজ্ঞাপন অনেক কিছুই বদলে দিতে পারতো তবে এটা সত্য যে এখন সেটা একটু কঠিনই ব্যাপার । তারপরেও বিজ্ঞাপন এখনও খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ।
২|  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৫:০৩
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৫:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার একটা পোস্ট! +
  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:০৬
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:০৬
অপু তানভীর বলেছেন: কী যে বলেন আমাদের সামু ব্লগে কেবল একজনই ইন্টারনাসনাল লেভের পোস্ট লেখেন । নিজেই নিজের পোস্টের সেটা বিশ্লেষখ এবং গুণগ্রাহী  
৩|  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৫:২৮
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৫:২৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: 
- কিরে মানিক কি বাত্তি লাগাইলি?
মনে পরে গেলো।
  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:১৪
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:১৪
অপু তানভীর বলেছেন: শিশু কালের সেই বিজ্ঞাপন গুলো অন্য রকম ছিল ।
৪|  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সন্ধ্যা  ৭:৪৩
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সন্ধ্যা  ৭:৪৩
এইচ তালুকদার বলেছেন: জাহিদ হাসান মডেল হয়েছিলেন এশিয়ান সিগারেট এর। অ্যাড টা এতই ভালো লাগতো যে সিগারেত খেতে মন চাইতো,তবে এতই ছোট ছিলাম যে সিগারেট কেনার সাহস হত না।
  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:১৭
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:১৭
অপু তানভীর বলেছেন: তাহলে বুঝেন যে সিগারেট মানুষের মনের উপরে কী পরিমান প্রভাব ফেলে । এই কারণে সরকার সকল তামাকজাত পন্যের বিজ্ঞাপন চালানো বন্ধ করেছে । তবুও কী সিগারেট খাওয়া বন্ধ আছে বলেন !
৫|  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ৮:৪৫
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ৮:৪৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: অনেকদিন ধরে মার্লবোরো সিগারেট টানি না, এটার নামই আমি ভুলে গেছিলাম, দেখি কালকে কয়েকটা কিনবো। 
যে কোন পণ্য; মানের সাথে সাথে বিজ্ঞাপনের দিকেও সমানভাবে নজর দিতে হবে। বর্তমান সময়ে অনেক বাজে পণ্য শুধু বিজ্ঞাপনের উপর টিকে আছে।
  ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:২১
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১১:২১
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশী পন্যের কথাই যদি চিন্তা করেন অনেক পন্য আছে কেবলল দেশ প্রেমে ট্যাগ লাগিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে বাজে মান দিয়ে টিকে আছে দিনের পর দিন । বিজ্ঞাপন ঠিকঠাক মত করতে পারলে খারাপ মানের জিনিসও টিকে যায় বাজারে !
৬|  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১২:৩৪
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  রাত ১২:৩৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর একটা লেখা মনোযোগ দিয়ে পড়লাম
  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৩৯
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৩৯
অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ পঠন ও মন্তব্যের জন্য
৭|  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ৮:৩০
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ৮:৩০
হাসান মাহবুব বলেছেন: নিপাত যাক ধূমপান।
  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৪০
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৪০
অপু তানভীর বলেছেন: একেবারে ছোটবেলা থেকে আমার বিড়িখোরদের দেখতে পারি না । প্রকাশ্যে ধূমপান আমাদের অপরাধ কিন্তু এই আইনের কোন প্রয়োগ নেই । আরও কঠোর ভাবে এই আইন বলবত করা উচিৎ !
৮|  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৫১
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  সকাল ১১:৫১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: 
জীবনে একবারই কৌতহলে কয়েকজন মিলে সিগারেটে টান দিয়েছিলুম। সেই শুরু সেই শেষ। উৎকট গন্ধে আর কাশতে কাশতে জীবন ওষ্টাগত।
  ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১২:০৫
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১২:০৫
অপু তানভীর বলেছেন: আমি জীবনে আসলে এই জিনিস কাছে নিয়ে দেখি নি । অন্যের খাওয়ার ধোয়াতেই আমার আস মিসে গেছে । এই গন্ধ আমার একেবারেই সহ্য হয় না । এমন কি যারা নিয়মিত এই জিনিস খায় তাদের কাছ থেকে সব সময় দুরে থাকি।
৯|  ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১:৩২
১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১:৩২
ফেরদৌসী মাসুদ বলেছেন: আজ একটা টান দিতেই হয়।
  ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১:৪৬
১০ ই জানুয়ারি, ২০২৩  দুপুর ১:৪৬
অপু তানভীর বলেছেন: নাহ, টান দেওয়াটা মোটেই ভাল কিছু নয় ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৩:০১
০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩  বিকাল ৩:০১
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: দারুণ একটা বিষয় , রহস্য পত্রিকায় একবার ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল এর টিপিং পয়েন্ট নিয়ে একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম সেটা থেকেও অনেক চমকপ্রদ ব্যাপার জেনেছিলাম । তবে মনে হয় না লিও বার্নেটের এই উপায় এখন কাজে দেবে । ভোক্তার মানসিক অবস্থা অনেক বদলে গেছে !!