নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই মলাট দেওয়ার সেই সময়গুলো ....

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬



ছবি কার্টেসী Atick Arts

আজকে ফেসবুকে উপরের ছবিটা চোখে পড়ল আজকে। পুরোনো সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। আগে আমাদের নতুন বছর শুরু হত ঠিক এই ভাবেই। স্কুল থেকে আমরা যখন বই পেতাম তখন আমাদের প্রধান কাজই হত বইয়ের উপরে মলাট দেওয়া। এই কাজের জন্য মূলত আমাদের বাবারাই আমাদের সাহায্য করতেন। বাবা বাসার আগের বছরের ক্যালেন্ডার দিয়ে আমাদের প্রতিটা বই মলাট দিয়ে দিতেন। বইটা আবার একটু বেশি টেকসই করতে ভোমর সুতো দিয়ে সেটাকে সেলাই করা হত। সেলাইয়ের গিট দেওয়ার সময় আমাদের এক আঙ্গুল দিয়ে সুতোর মাঝে ধরতে হত যাতে করে গিটটা সঠিক ভাবে কাজ করে। তারপর বইয়ের মলাট দেওয়ার কাজ হত। আগের বছরের ক্যালেন্ডার দিয়ে যে বইয়ের মলাট দেওয়া হত সেই মলাটে কোন আঠা ব্যবহার করা হত না। এই মলাট দেওয়ার জন্য বিশেষ রকমের ভাজ ব্যবহার করা হত।

আমার এই বইয়র মলাট দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ ছিল সব সময়। আমি সব সময় আমার বই যত্ন করতে পছন্দ করতাম। প্রতিটা বই সব সময় মলাট দিতাম। ক্লাস ফাইভ কিংবা সিক্স পর্যন্ত আমার বাবা এই কাজটা করে দিলেও এরপর থেকে এই কাজ আমি নিজেই করতাম। এই জন্য আমার আলাদা জিনিসপত্র ছিল।
প্রতিটা বইয়ের সেলাইয়ের জন্য আমি ভোমর ব্যবহার করতাম না। কারণ ভোমর দিয়ে বইয়ের ভেতরে ছিদ্র করাটা বেশ ঝামেলার ছিল। আমি সব সময় ব্যবহার করতাম হাতুরি আর পেরেক। নির্দিষ্ট স্থানে তিনটা কিংবা চারটা ফুটো করতাম । তারপর মোটা সুই দিয়ে সেখানে সেলাইয়ের মত করে বই বাঁধাই করতাম । প্রথমে মলাটের জন্য ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হলেও পরে ব্যবহার করতাম ঔষধ কোম্পানীর প্রোডাক্ট ডিসক্রিপশন ফাইল। এইগুলো লোমিনেটিং করা থাকতো আর পুরানো বইয়ের দোকানে কিনতে পাওয়া যেত। এখানে অবশ্য আঠা ব্যবহার করতে হত। এভাবে প্রতিটা বই বাঁধা করতাম । আমি একেবারে ইন্টার মিডিয়েট পর্যন্ত আমার প্রতিটা বই এভাবেই বাঁধাই করতাম। এক সময় আমার স্বপ্ন ছিল যে একটা বই বাঁধাইয়ের দোকান দিব।

এখনকার দিনে আর বাচ্চাদের আর বই বাঁধাই করতে দেখি না। এখনকার বাবাদের মাঝেও বাচ্চাদের বই মলাট দেওয়ার ব্যাপারটা আর দেখা যায় না । তাদের কাছে সেই সময়ই বা কোথায় । আমি এলাকার একটা কোচিংয়ে ক্লাস নিয়েছি বাসায় পড়িয়েছি কিন্তু কারো বই এখন আর বাঁধাই করতে দেখি নি। আর এখনকার বইগুলো কেন জানি আগের মত আর মজবুত ভাবে বাঁধা করা থাকে না। আগে প্রতিয়া বইতেই আলাদা ভাবে সেলাই করা থাকত। এখনকার বইগুলোতে আঠা মারা থাকে। এই আঠা আবার কিছুদিন পরেই খুলে যায়। সেই ছেড়া বই নিয়েই তারা পড়ে। আমি আমার জীবনে কোন দি ছেড়ে বই পড়ি নি। পুরানো বই হলেও সেটা মলাট দিয়ে সেলাই করেই, দরকার হলে বাজার থেকে কাটিং মেশিন করে কেটে নিয়ে আসতাম। বই ভাল না হলে আমার সেটা পড়লে ভাল লাগত না। ছাত্র আমি যেমনই ছিলাম না কেন বইয়ের প্রতি এই ভালবাসা আমার সব সময় ছিল।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৮

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জানুয়ারি মাসে নতুন বই পাওয়া ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধূলা প্রচুর মিস করি। :(

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১২

অপু তানভীর বলেছেন: সব কিছুই এখন কেমন জানি হয়ে গেছে। আমাদের সময়েও ব্যাপারগুলো এমন ছিল না।

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১১

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আপনার অভ্যাসটা আমারো ছিল। চায়না নামের সাময়িকি কিনে মলাট দিতাম। দারুণ সব ছবি থাকতো সেই সাময়িকিতে।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: এখনকার ছেলেমেয়েদের ভেতরে এই জিনিসটা একমই আমি দেখি নি। এরা পড়ার বইকে একদমই ভালোবাসে না।

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:০১

জুল ভার্ন বলেছেন: নস্টালজিক!

৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:১৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আব্বা বই সেলাই করে মলাট করে দিতেন। পরে আব্বা দেশে না থাকাতে নিজের বই নিজেই যত্ন নিতাম। মলাট করতাম। নিউজপ্রিন্ট কাগজের খাতা বানাতাম। সাদা খাতায় নোট করতাম সেটাতে পলিথিন দিয়ে মলাট করতাম। তাহলে ঘামে ছিড়তো না। কারণ আমাদের বইয়ের ব্যাগ ছিল না । বগলদাবা করে বই নিয়ে যেতাম স্কুলে।

আমার ছেলেদের বই তাদের বাবা কখনো মলাট করে দেয়নি। সেই ছোট থেকে আমিই মলাট করেছি। এখনো করি। এখন দেখা যায় কয়েকদিন পরেই মলাট ছিড়ে ফেলে, আবার বইয়ের পাতাও এদিক ওদিক পড়ে যায় ছিড়ে। তাদের কোন বিকার নাই এতে। না পড়তে পারলেই যেন বাঁচে। মেজাজটা গরম হয় যখন দেখি টেবিলটাও গুছিয়ে রাখে না। নিজের বই নিজেরা কখনোই গুছায় না। আজও কিছু শিখাতে পারলাম না এত বুঝানোর পরেও। এরা মোবাইল আসক্ত পোলাপান। রাত জাগে সকালে বেলা করে উঠে :(

৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কত যে স্মৃতি বই বাঁধাই করা মলাট দেয়া নিয়ে। ক্যালেন্ডার জমাতাম যাদের বাসায় বাচ্চা নাই তাদের কাছে বুকিং দিতাম। ঝকঝকে সাদা মোটা কাগজে বই চকচক করত। লেখায় খাতা ব্রাউন ঠোঙ্গার কাগজ কিনে বাঁধাই করতাম। ডিসেম্বর জানুয়ারি তে সাথে স্কুলের স্পোর্টস ডে , বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসবের জন্য সারটিনের ফিতা দিতে ব্যাজ বানাতাম আর পুরুস্কারের বই চমৎকার করে বাঁধতাম স্কুল জীবনে র‍্যাপিং পেপার অত ছিল না। পরবর্তীতে তো প্যাপিং কে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলাম । কত স্মৃতি স্কুল কলেজ জীবনের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.