" প্রথম প্রেম "

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮

আমি তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি।
ক্লাস থ্রি মানে আমার কাছে বিরাট ব্যাপার। ক্লাস টুতে থাকতে হিসু করতে গেলে স্যারদের কাছে পারমিশন নিয়ে যেতে হতো কিন্তু থ্রিতে উঠলে পারমিশন ছাড়াই যাওয়া যেতো ।
তাই নিজেকে খুব বড় বড় লাগতো ।।
শার্টের বোতাম ওপরের টা খুলে চলাফেরা করতাম।
আমাদের ক্লাসের সব থেকে সুন্দর মেয়েটার নাম ছিলো " শারমিন "
এবং সবারই তার প্রতি এক্সট্রা একটা নজর থাকতো ।
আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না ।
আমি তাকে মনে মনে অনেক পছন্দ করতাম, কিন্তু ভুলেও তার সাথে কথা বলার সাহস পেতাম না ।
ভাবতাম একদিন সবাইকে চমকে দিয়ে সবার সামনে শারমিনকে আমার টিফিনের ২ টাকা দিয়ে ঝালমুড়ি কিনে খাওয়াবো ।
তো একদিন আমাদের বাড়িতে কেউ একজন একটা বিয়ের কার্ড দিয়ে গেছিলো।
আমি টিভিতে দেখতাম ভালোবাসার মানুষকে কার্ড আর সুন্দর ফুল দিতে হয় ।
আমি চুরি করে ওই কার্ডটা নিজের কাছে রাখলাম এবং একদিন রাতে সারা কার্ডে একটা নামই লিখলাম " শারমিন শারমিন শারমিন"
এবং কার্ডের তল পাশে লিখলাম-
" শারমিন আমি তুমারে ভালবাসি, তুমিও আমারে ভালোবেসো আচ্ছা "
আমি তখন খুব চিনিখোর ছিলাম ।
লিখা শেষে চিনির পট থেকে একটু চিনি আনলাম ।
তারপর ওই চিনি কার্ডের মধ্যে ভালো করে ছাড়িয়ে দিলাম ।
আর মনে মনে ভাবলাম এই কার্ড পেয়েই শারমিন চিনি খাবে আর আমাকে একটা ইয়েস কার্ড দিয়ে দিবে ।
এই ভেবে আমি ঘুমিয়ে গেলাম ,
পরের দিন সকালে উঠে দেখি আমার বড় ভাইয়া ওই কার্ড নিয়ে আমাকে ডাকছে আর বলছে এই লিখা কে লিখছে ? আর এখানে পিঁপড়া আসলো কিভাবে !!
আমি থতমত হয়ে দেখলাম পুরা কার্ড জুড়ে পিঁপড়া । আর চিনি ভিজে ভিজে গেছে ।
এটা দেখতে দেখতেই সপাং করে বড় ভাইয়ের হাত আমার কানের নিচে
পৌঁছে গেলো । আমার কাছে মনে হলো আমি কোনো বন্য গণ্ডার আমাকে গুতা দিয়েছে ।
এর পর থেকে আমি কখনো শারমিনের দিকে তাকাতে সাহস পাইনি ।
তার কিছুদিন পর আমার একটা ছোট বোন হলো ,
সবাই তার বিবিধ নাম দিলো ,
আমিও একটা নাম দিলাম - " শারমিন "
এখন তার অফিসিয়াল নাম " শারমিন "
আর এভাবেই আমার প্রথম প্রেম বেঁচে রইলো...

৬ টি +১/-০