নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একমুঠো জলযোগে বিচ্ছিন আলেয়ার পিছু!

এক দিন পান সুপারির দিন ফুরাবে। দূর হেয়ালী আড়াল থেকে বন্ধ হবে আবার।

অর্ণব অহর্নিশ

সময়ের তার্পিনে ছুটে চলা পথিকের মত...

অর্ণব অহর্নিশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরূশের জন্য

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮

ধরো অনেক বছর পরে তুমি ভার্সিটিতে তখন, আর তোমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে অল্প অথবা বিনা কারণেই একটু ঝগড়া বাঁধিয়ে নিলে। মন খারাপ করে একা বসে আছো ক্যান্টিনে, অথবা তোমাদের ক্যাম্পাসের জারুল গাছের নিচের বাঁধানো শানে। মন ভালো করার সে কি উথাল পাতাল চেষ্টা চলছে তোমার। তবুও একটুও মন ভাল করতে পারছো না। ঠিক তখন তুমি এই লেখাটাপড়ে নিও । আরূশ, আমি তোমার বাবা বলছি। আর আমি তো জানি এর আগেও তুমি বহুবারই হয়তো পড়বে এই লিখা। কারণ, এই লেখাটা শুধু তোমার জন্যই তো লিখছি আমি। এই আমি! বসে আছি। লিখছি দ্রুত। আরূশ, আজ ২৩ শে আষাঢ়, ১৪২০। জুলাই মাসের ৭ তারিখ, ২০১৩। তোমার বয়স আজ একমাস পূর্ণ হলো মা।

তোমার তো এখন কাজ শুধু, হাগু-মুতু, খাওয়া-দাওয়া, মাঝে মধ্যে একটু আধটু ক্যা ক্যা করে কান্না করা আর সারা দিন ঘুমাও তুমি। কখনোও একটু তাকাও যদিও কিন্তু তোমার মা বলে তুমি এখনও দুরের জিনিস দেখতে শেখো নি। তাই আমি তোমার মুখের কাছাকাছি নিজেকে মেলে ধরি কত, যেন আমার অবয়ব বুঝতে পার, কিন্তু কই? আমার ডান আর বাম কান ঘেঁষে তুমি পেছনের দেয়াল কি দেখ? তোমার একদম কাছে মুখ আনলেও খানিক দেখেই চোখ বুজে ফেল। কেন বলতো? আমাকে তুমি কবে দেখতে পাবে, চিনতে পারবে এই সব ভেবে আমি অধীর হয়ে থাকি। অনেক ব্যস্ততায় অফিস আর অন্যান্য কাজ শেষ করে দিনের আলোতে তোমার সাথে আমার কমই দেখা হয়। এরপর কিভাবে ছুটতে ছুটতে যে আমি তোমার কাছে ফিরি তুমি তো এইসব কিছুই বুঝো না। কখনও বাসায় যেয়েই দেখি এদিক ওদিক চেয়ে কি যেন ভেবে চলছো তুমি। এতো কি ভাব বলতো? কোন একটা মুখ যে কিভাবে সারাদিন চোখের তারায় ভেসে বেড়াতে পারে তা আমি জানতামই না, যদি না তুমি আসতে এই ধরায়। কিন্তু কি জান মা, প্রতিদিন তোমাকে আমার নতুন নতুন লাগে। প্রতিদিন তোমার দিকে তাকালেই কেমন এক লজ্জা মাখা নতুন ভাল লাগায় মন ভরে ওঠে। জানি না আর কত গুলো মাস পার হলে তুমি আমার দিকে সরাসরি তাকাতে পারবে, আমাকে চিনতে পারবে। জানি না কবে তুমি তোমার ছোট্ট সুন্দর হাত দিয়ে নিজে থেকেই আমায় ছুঁয়ে দেবে। এসব জানতে ইচ্ছে হয় খুব কিন্তু কার কাছে জিজ্ঞেস করব? কাউকেই বলি না কিছু, শুধু অধীর হয়ে অপেক্ষা করে চলছি। একদিন বড় হবে তুমি। এরপর আরও বড়! একদিন কি অনেক বড় হয়ে যাবে আরূশ? কবে তুমি চিনে নেবে সেই মানুষটিকে এই পৃথিবীতে যার উপরে তুমি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে পার? কবে চিনে নেবে তাকে যার উপরে সবচাইতে বেশি আস্থা রাখতে পার তুমি? এখন তো শুধু মাকেই চেন। আমাকেও কবে চিনতে পারবে আরূশ?

যখন বড় হয়ে আমার এই লেখাটা পড়বে তুমি, তখন তোমার মুখটা কেমন হবে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব। এক ফোটা জল কি খেলে যাবে কপোলে তোমার? একদিন বড় হয়ে গেলে, বিয়ে হয়ে যাবে তোমার আর দেখতেও পারব না তোমাকে যখন তখন, সেইসব কথা ভেবে আমার চোখেও অনেক সময়ই জল খেলে যায়, জানো? আরূশ মন খারাপ করো নাতো। একটা মজার কথা শোন। তোমার মা বলে কি জানো? “আমরা আরূশের বরকে ঘর জামাই করে রেখে দেব। তাহলেইতো আরূশ আর চোখের আড়াল হবে না” দেখতো তো কেমন পাগল তোমার মা। তোমার মাকে আমি তটিনী বলে ডাকি। আর তুমি তটিনীর চেয়ে ভাল মা এই পৃথিবীর কোথাও পাবে না। ইউ সুড বি প্রাউড অফ হার। ওকে নিয়ে আরেকদিন বোলব কেমন? তোমার প্রথম মাস পূর্তিতে আজ শুধু তোমার আর আমার মাঝে গল্প হলো খানিক।

এইতো একটু পর আবার সন্ধ্যা হবে। তোমার সাথে আমার দেখা হয়ে যাবে। আজকে আমরা অনেক মজা করে খেলবো! ঠিক আছে মা?

আজ রাখছি। হু!

তোমার বাবা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.