![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের তার্পিনে ছুটে চলা পথিকের মত...
আরূশ,
আজকে তোমার বয়স পাঁচ মাস পূর্ণ হয়ে গেলো। প্রতিদিন অফিসের অক্লান্ত কাজ আর এরপর জিমে কঠোর সাধনা শেষে ঝিমিয়ে পড়া শরীর নিয়ে বাসায় ঢুকেই দেখি নতুন কিছুনা কিছু একটা শিখে গিয়েছো তুমি। দেখে সব ক্লান্তি কোথায় উড়ে যায় তখন! জানো কাল কি হলো? বাসায় যেয়েই কোন রকমে স্নানটা সেরেই আমি তোমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। আর আমি বাসায় যাওয়ার পরেই তোমার রোজকার খেলা হচ্ছে আমার গাল-নাক-চোখ আর কান ধরে টানাটানি করা। তখন আমি অনেক আদরে তোমাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকি। তোমার মায়ের ড্রেসিং টেবিলের আয়নাটা হচ্ছে তোমার সবচেয়ে পছন্দের খেলনা। কেন বলতো? ওখানে দাঁড়ালেই তুমি সব বাদ দিয়ে নিজেকে দেখতে থাকো, আর আআআ,উউউ করে কতো কথা বল নিজের সাথে! কখনও মিটিমিটি করে হাসতে থাকো। আর তখনই ঘটলো বেপারটা! যখন আয়নায় তাকিয়ে নিজের সাথে একমনে কথা বলছিলে তুমি, মিটিমিটি হাসছিলে খুব, আমি কপট অভিমানী মুখ করে বলে উঠলাম, “আমি সারাদিন কতো কষ্ট করে তোমার কাছে আসি আর তুমি কিনা নিজের সাথেই কথা বল শুধু! নিজের দিকে তাকিয়েই হাসবে শুধু! ঠিক আছে আমার সাথে কোন কথা বলা লাগবে না!” একথা শুনে মুখটা তুমি কেন যেন গম্ভীর করে ফেললে আর আমি এমন বাবু আর কখনই দেখি নাই যে কিনা এতো ছোট কাল থেকেই কেউ কথা বললে তার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে! তোমার করুন মুখ দেখে খুব মায়া লেগে উঠলো। তোমার মন ভালো করতে তাই হঠাত করে শব্দ করে হেসে উঠলাম আর ও আল্লাহ আমার হাসি দেখে এই প্রথম তুমি শব্দ করে হেসে উঠলে কাল। তোমার মা পাশে কম্পিউটারে বসে ছিল কিন্তু তোমার হাসির শব্দে অবাক হয়ে তোমার কাছে ছুটে এলো। আমি আবার খুব গম্ভীর হয়ে কিছুক্ষণ থাকি আর তুমি মনোযোগ দিয়ে আমার দিকে আয়নায় চেয়ে থাকো, যেই না আবার হেসে উঠি আমি তুমিও অমনি শব্দ করে বড় মানুষদের মতোই হেসে উঠো। তোমার হাসির শব্দ শুনে আমার এত্তো আনন্দ লাগছিল যে মনে হচ্ছিলো আমি যেন এইমাত্র হিমালয় পর্বত জয় করে এলাম। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই তোমাকে ফেলে আমি কোথাও যাব না কোনদিন। হিমালয়েও না। আমি সঙ্গে সঙ্গে ড্রববক্স এ তোমার নামের ফোল্ডারে টেক্সট ফাইলে লিখে রাখলাম
**আরূশ প্রথম শব্দ করে হেসে উঠে ৬ই নভেম্বর,২০১৩ এ**
মামণি অন্যের কি হয় জানিনা কিন্তু আমার কি মনে হয় জানো এই পৃথিবীর সবচেয়ে লাবণ্যময়ী আর মূল্যবান সম্পদ হচ্ছো তুমি।
রাত তখন চারটা বাজে সবাই ঘুমাচ্ছে, তোমাকে কোলে করে বসে আছি আমি। একমনে ঘুমের ভেতরে মাঝেমধ্যে আমার গায়ে চিমটি কেটে দেখো তুমি, আমি আছি কিনা। তখন বুকে আলতো স্পর্শ করে জানিয়ে দেই আমি জেগে আছি মা, সবাই ঘুমিয়ে গেলেও আমাকে তুমি কখনোই তোমার বেপারে বেখবর পাবে না। তোমার দিকে চেয়ে থাকি... অনেক গুলো ক্ষণ, আর গভীর রাতে তোমার কপালে আলতো করে চুমো দেই যখন, সব সময় আমার চোখের কোনে জল কেন এসে যায় বলতো মামণি। যেমন, এখনও এতো দূরে বসে তোমার কথা ভেবে ঝাপসা লেগে উঠছে সব, সবই।
তুমি কবে জানবে তোমাকে নিয়ে আমার এই সত্যি গল্পগুলো। তুমি কি সেদিন তোমাকে নিয়ে আমার মনের অনুভূতি গুলো বুঝতে পারবে মামণি? যাই হোক, আর তুমি যাই করো না কেন আমি কোন দিনই তোমার কোন কাজে কষ্ট পাবো না। তুমি শুধু তোমার মায়ের মনে কোন দিন আঘাত দিও না! ঠিক আছে আরূশমণি? এখন বিকেল ৩টা বাজে, অফিসে আমি। আজকে তাই রাখতে হবে, একগাদা কাজ শেষ করতে হবে ৫.৩০টার ভেতরে। নাহলে বলেই দিতাম তোমার প্রথম হামাগুড়ি দেওয়ার চেষ্টা যে এমাসেই সফল হয়েছিল। শুধু তারিখটা জেনে রাখ: ০২-১১-২০১৩। আর সময়ের অভাবে এইটাও বলতে পারছি না যে, এই মাসেই তুমি হাত বাড়িয়ে কোলে আসা শিখেছো: ০৪-১১-২০১৩ এ। হু, এখন কোলে আসতে ইচ্ছে হলেই তুমি দুই হাত বাড়িয়ে দাও। তখন তোমাকে দেখতে কতো যে সুন্দর লাগে জানো না তুমি! যেন একটা পরী। অনেক ভালোবাসি মামণি। অনেক খানি বেশি।
-তোমার বাবা।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৭
সপন সআথই বলেছেন: "prithibir sob babai ek"- onuvutir lekhoni k kurnis janai. valo thakben
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৬
আবু নাসের মোহম্মদ রেজা বলেছেন: অনুভূতির অসাধারন প্রকাশ ...