নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"ভুল-ত্রুটি যুক্ত সাধারণ লোক\"

মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ

অতিমানব

মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছিল বাঙ্গালীদের যে ঘটনা..

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৩

২০০৭ সালের বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা এইটা। যে কোন থ্রিলার মুভির চেয়েও কম রোমাঞ্চকর না এই ঘটনা। কারণ সেই বছর আরব আমীরাতের আদালত ছয় বাংলাদেশীর শিরচ্ছেদের রায় দেয়। কিন্তু তাদের সবাই অপরাধী ছিল না। মাত্র একজন বাংলাদেশী এক পাকিস্তানিকে রান্নার বটি দিয়ে কেটে দুই টুকরো করে ফেলেছিল। কিন্তু বাংলাদেশীরাতো দেশে যাই করুক বিদেশে খুব সৎ জীবন যাপন করে । বাংলাদেশীরা অন্তত পাকিস্তানিদের মত পাসপোর্ট দুনম্বরী , চুরি , ড্রাগস , ধর্ষণ , সীমান্তে দালালী ও খুনের মত কোনো অপরাধে জড়িত হয় না । বাংলাদেশীরা অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রমী ও নিরীহ হিসেবেই দুনিয়ার সব দেশে পরিচিত। তবুও এই বাঙ্গালীরাই কিভাবে এমন লোমহর্ষক ঘটনায় জড়িয়ে গেল?

শহরের উপকণ্ঠে একটি বড় বাড়িতে বেশ ক'জন বাংলাদেশী , পাকিস্তানি এবং ভারতীয় ব্যাচেলর কয়েকটি রুম ভাগাভাগি করে থাকতো । পেশায় এরা সবাই সাধারণ শ্রমিক ও খুব অল্প বেতনে কাজ করত । এক শুক্রবার ছুটির দিন বিকেলে বাংলাদেশী দুই রুমমেট রান্নার জন্য তরকারি কুটছিল বটি দিয়ে । রুমের ভেতর ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজাচ্ছিল বাংলাদেশের বাংলা গান । সেই সময় এক পাকিস্তানী সেখানে এসে কথা বলার পর এক পর্যায়ে বাঙালিকে দুজনকে কটাক্ষ করে বলে, - " তোমারা বাঙালরা ইণ্ডিয়ানদের মতো।" একথা শুনে এক বাঙালি বলে উঠে ,"আমরা ইণ্ডিয়ানদের মতো হতে যাব কেন ? আমরা কারো মতো না , আমরা আমাদের মতোই। " পাকিস্তানিটি তখন আবার খোঁচা দিয়ে বলে, "তোমাদের জন্মটা কি আমাদের অজানা ? ৭১ সালে আমরা পাকিস্তানীরা ৯৯% বাঙালি নারীকে গর্ভবতী করে এসেছিলাম। সেই থেকে বাঙালি একটা কালো , একটা সাদা , যেমনটি তোমরা দুইজন দুইরকম।" একথা শুনে বাঙালিটি আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারে না । তার মাথায় রক্ত উঠে যায়। সে তার হাতের কাছে থাকা রান্নার বটি দিয়ে এক কোপে পাকিস্তানির শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলে। মুহুর্তেই ছুটে আসে আশে পাশের মানুষ ও স্থানীয় পুলিশ। হাতকড়া লাগিয়ে ঘরের মধ্যে যে ক'জন ছিল সবাইকে ধরে নিয়ে যায়। একসময় মামলা ওঠে আদালতে। যদিও সাহসী বাঙালিটি একা খুন করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেয় তথাপি তাকে সহযোগিতা করার অপরাধে বাকিদেরও দোষী সাব্যস্ত করে আদালত আমিরাতের নিয়ম অনুযায়ী সবাইকে শিরচ্ছেদের রায় হয়। তবে এখানে কথা আছে। নিহত পাকিস্তানীর স্ত্রী , সন্তান, মা, বাবা যদি ক্ষমা করে দেয় তাহলে সাজা মওকুফ হতে পারে অথবা যদি আদালত কর্তৃক নির্ধারিত নগদ অর্থদন্ড ৯০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা যায় তবে শিরচ্ছেদ রহিত হতে পারে।

রায়ের পর নিহতের পাকিস্তানীর পরিবারের সাথে একটা দফা রফা করার চেষ্টা হলো বিভিন্নভাবে , কিন্তু কোনো লাভ হলো না । বাকী রইলো , অর্থদন্ড পরিশোধ করা। এইটাতো একেবারেই সম্ভবই না। সবাই ছিল নিম্নবিত্ত অতি দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের পক্ষে এত টাকা পরিশোধ করে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব নয়। এদিকে প্রকৃত ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ভেতরে ভেতরে ফুঁসতে থাকে আমিরাত প্রবাসী বাঙালিরা কম্যুনিটি। হত্যাকারি যুবকটি যে দেশের অপমান সইতে পারেনি এবং একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক তাতে কারো কোনো সন্দেহ থাকে না। একজন বাংলাদেশী বীর হিসেবে যুবকটি সকল বাংলাদেশির হৃদয়ে স্থান করে নিতে থাকলো দ্রুত। এরপরই প্রেক্ষাপট দ্রুত বদলে যেতে থাকে। দলমত নির্বিশেষে সকল বাঙালি এক কাতারে দাঁড়িয়ে যায়। এ যুবকদের বাঁচাতেই হবে। বাঙালী জাতির ইজ্জতের প্রশ্ন। অর্থ সাহায্য ছাড়াও সহযোগিতার জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের ওপরও চাপ সৃষ্টি করলো। এভাবে আস্তে আস্তে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় হয়ে খবর চলে গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্তর কেঁদে উঠলো সন্তানের অমঙ্গলের আশংকায়। তিনি একটা মুহূর্ত দেরী করলেন না। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৬ জন বাংলাদেশীকে বাঁচাতে ১১১,৬২৭ ইউরো (প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা) প্রদান করার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দিলেন। অতঃপর আবুধাবীতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নির্দিষ্ট তারিখের মাত্র একদিন আগে উল্লিখিত অর্থ পরিশোধ করলে উক্ত বাংলাদেশী তরুণরা শিরোচ্ছেদের আদেশ থেকে রেহাই পেয়ে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে বীরের মর্যাদায় দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হয়।

কৃতজ্ঞতাঃ Alexander Ameer
লিংক: Click This Link

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সাবাস বীর বাঙালী। কুকুরকে উপযুক্ত মুগুর দিয়েছে। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: যাই কোন মাথা ঠান্ডা রাখাটা আমাদের সবারই উচিৎ

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৩

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। "ভয় নাই ওরে ভয় নাই, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। " ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করতে চাইনা সেই সব বাংলার দামাল ছেলেদের যারা ব্লগ লিখতে জানেনা, জানেনা হতে শাব্দিক দেশপ্রেমিক,
যাদের হৃদয় সত্যই ভালবাসে মায়ের মমতায় ভরা এই দেশের মাটিকে, যারা প্রতিনিধিত্ব করে এই জননী-জন্মভূমির।

সেই সাথে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের যথাযোগ্য আত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক উত্তরাধিকারিণী, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। যিনি আরেকটি লড়াইয়ে দেশের সম্মান রক্ষা করলেন।

[যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করছি, যারা সারা জীবনের সঞ্চয় নিঃশেষ করে বিদেশ গিয়েছিলেন দেশের চাকা সচল রাখতে, এই মুক্তি যোদ্ধাদের যেন অসহায় জীবন যাপন করতে না হয়।]

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪১

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: সাদা মনের মানুষ বলেছেন: যাই হোক না কেন মাথা ঠান্ডা রাখাটা আমাদের সবারই উচিৎ ।

মাথা ঠান্ডা রাখলে লড়াইয়ে আপনি যেখানকার ঘা সেখানে দিতে পারবেন। কিন্তু সবক্ষেত্রে লড়াই এড়াতে পারবেন না বা এড়ানো উচিতও নয়। কেননা আত্মসম্মানবোধের চেয়ে জীবন বা টাকা কোনটাই উপরে নয়।

৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ঝগড়া হলেই কোপ! এটা ঠিক নয়। আসলেই কী ঐ কারণে মেরেছিল নাকি?

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৮

মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ বলেছেন: Click This Link

৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১১

রিয়াজ বিন জাফর বলেছেন: এইটা কি সত্য ঘটনা ?

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৬

মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ বলেছেন: হুম। Click This Link

৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৬

মুসাফির... বলেছেন: ২০১০ সালের ঘটনাটার একটা খবরের লিন্ক দিনতো.

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৭

কালীদাস বলেছেন: ঐ ফাকিস্তানি যে কথাটা বলেছে যেকোন সুস্হ মানুষেরই মাথায় খুন চেপে যাওয়ার কথা। তবে এজন্য খুন করাটা বাড়াবাড়ি।

বাইদ্যাওয়ে, বাংলাদেশিরা বাইরে খুব আইনকানুন মেনে চলে- কথাটা সব দেশে সত্যি না, কিছু শহরে আমি বাংলাদেশিদের কার্যকলাপ দেখে অবাক হয়েছি। মেজাজটা চরম খারাপ হয়ে যায় পুরান বাংলাদেশিদের ইন্ডিয়ান আর ফাকিস্তানিদের সাথে হিন্দি া উর্দু চোদাতে দেখলে। ওরা জীবনে আমাদের সাথে বাংলায় কথা বলেছে যে আমাদের ভদ্রতা মারাতে হবে?

তবে হ্যাঁ, ফাকিস্তানিদের চেয়ে আমাদের রেপুটেশন অনেক ভাল বাইরে।

৯| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৫

মুসাফির... বলেছেন: থুক্কু. দু:খিত লিন্কটা আমি নিজেই দিলাম.।
https://m.facebook.com/lube11000/posts/10210905860666439

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৮

মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিরাজ বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.