নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার বেলা যে যায় সাঁঝবেলাতে...

অপরাজিতার কথা

ফুল ভালোবাসি,গান ভালোবাসি,মেঘ ভালোবাসি,বৃষ্টি ভালোবাসি............বন্ধু ভালোবাসি......

অপরাজিতার কথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি স্তব্ধতা চেয়েছিল আর এক নৈঃশব্দকে ছুঁতে…

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

সুহৃদ হাবিব বাবুলের জার্মানির বাসায় ,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নিজ কন্ঠের আবৃত্তি " ভ্রু পল্লবে ডাক দিলে দেখা হবে চন্দনের বনে.."





তখন কলেজ লাইফ,প্রেম আমার ভেতর গরম পানির মতন টগবগ করে ফুটছে!!অথচ পাত্র নেই ধারন করার। একের পর এক পড়ে যাচ্ছি সুনীল,নির্মলেন্দু গুন,পূর্নেন্দু পত্রী,হেলাল হাফিজের কবিতা !তার মাঝে সুনীলের কবিতা আর গল্পই পড়া হত বেশি!উনিশ বসন্ত পেরিয়ে আসা যুবতীর চোখে উদ্দাম সুনীল তখন ছড়িয়ে দিয়েছে নীললোহিতের আগুন!



সুনীল ছিল এক টগবগে যুবক,বয়সকালেও সে চিরযুবা।ভালোবাসার জন্যে যে প্রান নেয় হাতের মুঠোয়,দুরন্ত ষাড়ের চোখে বাঁধে লাল কাপড়!!বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনে ১০৮ টি নীল পদ্ম.....উদ্দাম,উচ্ছল এক যুবকের প্রতিকৃতি !!রুপকথার পংখীরাজ ঘোড়ায় চড়ে আসা রাজপুত্রের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়!বয়স যাকে বয়স্ক করতে পারেনি,সে-ই সুনীল! আমার কাঁচা বয়সের চোখে তার বয়স ধরা পড়ে না,পড়ে তার অফুরন্ত ভালবাসার অদম্য প্রকাশ!



একের পর এক অসাধারন সব কবিতা পড়তে পড়তেই কখন যেন প্রেমে পড়ে যাই এই দুর্দান্ত যুবকটির,আর সেই প্রেম প্রকাশের অন্য কোন সুযোগ না পেয়ে লিখতে থাকি চিঠি ,তাকেই উদ্দেশ্য করে।কিন্তু আকাশের ঠিকানায় লেখা সেইসব চিঠি পৌঁছয় না যুবকের হাতে,পড়ে থাকে ঘরের কোনের পুরনো বাক্সের বই চাপা অন্ধকারে! ১০৮ টা নীল পদ্মের আকাংখায় বুকের ভেতর সুগন্ধি রুমাল রেখে অসম বয়সী,অজানা যুবকের প্রতীক্ষায় নিঃসংগ দিন কাটে,বেলা চলে যায় অবেলায়!



কেউ বোঝে না,কাউকে বোঝাতেও পারি না,…কি এক অসম্ভব ভালোবাসা আমাকে ঘিরে রাখে অহর্নিশ!!! অন্ধ প্রেমে বয়সের সীমা পেরিয়ে যাই নির্দ্বিধায় ।নিজেকে নীরা ভাবতে শুরু করি;গুলিয়ে ফেলি কোনটা বাস্তব আর কোনটা কল্পনা! স্বপ্নের ডানায় চড়ে ভেসে বেড়াই সুনীলের প্রেমের কবিতার পঙক্তিতে পঙক্তিতে,তার সাবলীল লেখনীর চয়ন করা শব্দে খুঁজে ফিরি হৃদয়ের গহীনে হাতড়ে ফেরা কোন এক যুবতীর অবুঝ ভালবাসার।আমি আঁচল পেতে বসে থাকি দু'চোখের ধুলো মুছে দিব বলে!!



অন্ধকারে হলুদ হয়ে যাওয়া চিঠিগুলোর উত্তর খুঁজি তার কবিতা্র পাতায়!বহুদূর হতে কে যেন কানে কানে এসে বলে-



“আমি তোমার সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসি

তোমার নগ্ন কোমরের কাছে উষ্ণ নিশ্বাস ফেলার আগে

অলঙ্কৃত পাড় দিতে ঢাকা অদৃশ্য পায়ের পাতা দুটি

বুকের কাছে এনে

চুম্বন ও অশ্রুজলে ভেজাতে চাই

আমার সাঁইত্রিশ বছরের বুক কাঁপে

আমার সাঁইত্রিশ বছরের বাইরের জীবন মিথ্যে হয়ে যায়”



……………আমার উনিশ বছরের জীবন মিথ্যে হয়ে যায় কবিকে ভালোবেসে!!



তারপর সময়ের কালে কেটে গেছে কত দিন আর রাত। আমিও পৌঁছেছি তেত্রিশে,আমার জীবনেও কেউ কথা রাখেনি,নাদের আলী ফিরে আসেনি কোনওদিন। আমি তখন বুঝে গেছি,নাদের আলীরা কখনোই আর ফিরে আসে না!! আর তাই হয়ত ভালো হয়নি নীরার অসুখ!!! নীরার বুকে এখনও তাই শুধুই মাংসের গন্ধ!!সুগন্ধি রুমাল মিলিয়ে গেছে কালের স্রোতে,শুধু যেতে যেতে রেখে গেছে তার সুগন্ধ,নীরার অতৃপ্ত ভালবাসায়.....



আর সেই কবি?? নীরার দূঃখকে ছুঁতে চাওয়া কবি,নীরার ভালোবাসাকে না জেনেই তার অকস্মাৎ প্রস্থান!!!



“তুমি তো জানো না, নীরা, আমার মৃত্যুর পরও এই ছবি থেকে যাবে "………সেই ছবি এখনো আছে,শুধু তুমি নেই,কবি!!!



পাহাড়ের পায়ে পড়ে আছে গোধুলি,উদাসী ছায়ার মধ্যে ভাঙ্গা কাচ,শাদা বাড়িটার সামনে আলো-ছায়া-আলো এখনো আছে,শুধু কবির প্রয়ান!!! চাঁদের নীলাভ রং, ওইখানে লেগে আছে নীরার বিষাদ……… অরণ্যের এক প্রান্তে হাত রেখে নীরা কাকে বিদায় জানালো, কেউ জানল না! শুধু তোমার আত্মার একটা কুচো টুকরো পড়ে রইল আজ নীরার কাছে!!



কবি, তুমি কি তোমার দ্বীপে পৌছুতে পেরেছ?? নাকি পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দশদিককে উদ্দেশ্য করে বলছ,



“প্রত্যেক মানুষই অহঙ্কারী, এখানে আমি একা—

এখানে আমার কোনো অহঙ্কার নেই।

এখানে জয়ী হবার বদলে ক্ষমা চাইতে ভালো লাগে।

হে দশ দিক, আমি কোনো দোষ করিনি।

আমাকে ক্ষমা করো।”



পীত অন্ধকারে ডোবে হরিৎ প্রান্তর………ওখানে কী করে যাবো, কী করে তোমাকে খুঁজে পাবো?



“ আমি আর কফি হাউস থেকে হেঁটে হেঁটে হেঁটে

নিরুদ্দিষ্ট কখনো হবে না

আমি আর ধোঁয়া দিয়ে করবো না ক্ষিদের আচমন্‌‌!

আমি আর পকেটে কবিতা নিয়ে ভোরবেলা

বন্ধুবান্ধবের বাড়ি যাবো না কখনো

হসন্তকে এক মাত্রা ধরা হবে কিনা এর তর্কে আর

ফাটাবো না চায়ের টেবিল

আর কি কখনো আমি সুনীলকে মিল দেব

কণ্ডেন্সড্‌ মিল্কে?"



না,তুমি শুধু নীরার বুকের সুগন্ধি রুমালে লেগে থাক অপার্থিব হয়ে।তুমি ঘুমাও কবি,আমি জেগে রই।





মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

ভাঙ্গা ডানার পাখি বলেছেন: ুন্দর!

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৮

অপরাজিতার কথা বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


পোস্টটি দুইবার এসেছে। এডিট করে নেবেন।


আমি আর ধোঁয়া দিয়ে করবো না ক্ষিদের আচমন্‌‌!
আমি আর পকেটে কবিতা নিয়ে ভোরবেলা
বন্ধুবান্ধবের বাড়ি যাবো না কখনো
হসন্তকে এক মাত্রা ধরা হবে কিনা এর তর্কে আর
ফাটাবো না চায়ের টেবিল


দারুণ

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১২

অপরাজিতার কথা বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।কিন্তু ২ বার কোথায় এসেছে ঠিক বুঝলাম না!আর কি করে এডিট করতে হয় তাও জানি না! :( :(

কি করি বলুন তো!

৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১৭

বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.