![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হঠাৎ পাশের ফ্লাট থেকে চিৎকার আর কান্নার শব্দ ভেসে আসতেছিল। কান্নার শব্দ শুনে মধ্যবয়সী নারীর কন্ঠ মনে হল। কান্নার শব্দগুলো এতোটাই হৃদয় বিদারক ছিল যে, ঘরে চুপ করে বসে থাকতে পারলাম না। রুম থেকে বেরিয়ে দেখি ইতোমধ্যেই বেশকিছু মানুষ জমা হয়েছে।
ভিড় ঢেলে ভিতরে প্রবেশ করে তেমন কিছুই বুঝতে পারলাম না। মাঝবয়সী এক নারী একটি বন্ধ দরজায় ডাকতেছে আর কাঁদতেছে। উৎসুক জনতার কাছে জানতে পারলাম, বন্ধ দরজাওয়ালা রুমটা নাকি মহিলার একমাত্র মেয়ের। মহিলা সকাল থেকে মেয়েকে ডাকতে ডাকতে এখন বেলা ১২টা বাজে, তারপরও দরজা খুলতেছে না। তাই এইভাবে কান্না করতেছিল। লোকজনের এমন নিশ্চিন্ত কথাশুনে কেমন জানি খুব খারাপ লাগল। তারপর লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে সেই রুমের দরজায় পৌঁছে গেলাম।
দু’একজন কে সঙে নিয়ে দরজা ভাঙ্গার কাজ শুরু করলাম। সবাই মিলে কয়েকটা ধাক্কা দিতেই ম্যাড়াৎ শব্দ করে ধাস করে দরজা মেঝেতে আছড়ে পড়ল। রুমে ঢুকে দেখি নীল শাড়িপরা তরুনী উপুড় হয়ে পড়ে আছে। আর তার মুখ দিয়ে ক্রমাগত ফেনা বের হচ্ছিল। মেয়ের এই অবস্থা দেখে মা সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। পাশের বাসায় মাকে ধরাধরি করে ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দারা নিয়ে গেল। আর আমরা মেয়েটিকে নিয়ে ছুটলাম হাসপাতালে।
হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেয়েটার আত্নহত্যার কারণ শুনলাম। মেয়েটার বাবা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। বাড়ি চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা এলাকায়। মেয়েকে নিয়ে ঢাকা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবার কারণ ঐ মেয়েই। আহসান উল্লাহতে আর্কিটেকচারে পড়তেছে। ভার্সিটিতে ভর্তি হবার দু’মাসের মধ্যেই ৫ টি প্রেমের অফার পায় নীল শাড়িতে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে থাকা জেবা নামের হতভাগা মেয়েটি। সেই ৫ জনের একজনকে সে হ্যাও বলে দেয়। এভাবেই চলতেছিল তাদের প্রেম।
গতকাল ছিল ভ্যালেন্টাইন ডে। জেবার প্রেমের একবছর পূর্ণ হল। এই দিনে জেবাকে প্রপোজ করেছিল। তাই জেবার প্রেমিক বলে, ‘ কাল আমরা লং ড্রাইভে যাবো। আমার বন্ধুরাও ওদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে যাবে। আমরা হ্যাং আউট করব, চিল করব, মাস্তি করব।’
জেবাও রাজি। নিজের প্রিয় নীল শাড়ি এবং খোপায় বেলী ফুলের মালা দিয়ে জেবা বেরিয়ে পড়ে। জেবার প্রেমিক ওর সাঙ্গপাঙ্গসহ হাজির। কিন্তু ওদের কারো সাথে ওদের গার্লফ্রেন্ড নেই। জেবা জিজ্ঞেস করে, ‘তোমাদের গার্লফ্রেন্ড কই? ওরা যাবে না?’
জবাবে বলে, ‘ওরা সবাই সামনে আছে। চল আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
এরপর গাড়ি চলতে থাকে। একটু পরপর জেবা বলতে লাগল, ‘কোথায় ওরা? আর কতদূরে’
জবাবে বলতেছিল, ‘এইতো সামনেই আছে।’
এরপর তারা গাজীপুরের অদূরে একটি বাগানবাড়িতে গাড়ি থামাল। জেবাকে বলল, ‘ভিতরে চল। সবাই তোমাকে সারপ্রাইজ দেবার জন্য অপেক্ষা করছে’...
জেবাও হাসতে হাসতে সেই বাড়িতে প্রবেশ করে।
এতোটুকু শোনার পর আমি বাসার পথে হাটতে শুরু করলাম। আকাশের চাঁদটা এখনো উঠতে অনেক বাকি। আকাশের ঐ আধো আলো আধো ছায়ার দিকে তাকিয়ে ভাবলাম, জেবার জন্য সত্যিই বিরাট এক সারপ্রাইজ অপেক্ষা করতেছিল। যে সারপ্রাইজ তাকে আত্নহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করল......
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪১
কলাবাগান১ বলেছেন: বানানো গল্প ভাল হয়েছে..।এখন এই পথ ধরেছেন??? সরাসরি বললেই পারেন
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০২
পলাশমিঞা বলেছেন: বাস্তবিক হলে ভয়ঙ্কর!