নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাখির মতো উড়তে চাই, মুক্ত বাধাহীন।বন বনানীর মাথার উপর অাকাশ সীমাহীন।

গিরি গোহা

ইচ্ছে হলেই চলো ব্লগে

গিরি গোহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবিলম্বে ‘র‌্যাব’ কে সরকারীভাবে অস্কার পুরষ্কারে ভূষিত করা হোক!

২০ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

অনেকদিন আগে একটি বাংলা সিনেমা দেখেছিলাম। সিনেমাটির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় ছিল, বাড়ির মালিক এবং চাকরের মাঝে সম্পর্ক নিয়ে। বাড়ির মালিক চাকরকে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারতেন না। তিনি কখনো চাকরকে ধমকও দিতে পারতেন না। এমনকি চাকর যদি কাজও না করত তারপরও মালিক টু শব্দটিও করতে পারতেন না। একদিন সকাল বেলা বাড়ির মালিক ডাইনিং টেবিলে গিয়ে দেখেন নাস্তা নেই। তিনি রান্না ঘরে গিয়ে দেখলেন, গতরাতে যে অবস্থা ছিল এখনো সেই অবস্থাই আছে। এরপর চাকরের রুমে গিয়ে দেখলেন, চাকরসাহেব কাঁধা মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে। বাড়ির মালিক নরম সুরে কাঁদো কাঁদো ভঙ্গিতে বললেন, ‘তা আজ কি নাস্তা পানি কিছু খাওয়াবে না’! চাকর বাবাজি বললেন, ‘আজ রান্না বান্না করতে পারবো না। বৃষ্টির দিন আপনি যদি কাঁধা মুড়াইয়া মজা করে ঘুমাইতে পারেন তয় আমি পারুম না ক্যা’! বাড়ির মালিক তারপরও কিছু বলতে পারেন না। কেন পারেন না, জানেন? বাড়ির মালিকের বহু কুকৃত্তি এবং অপরাধের প্রত্যক্ষ সাক্ষি এই চাকর। এই চাকর যদি একবার বিগড়ে যায় তবে মালিকের আর রক্ষে নেই। আম এবং ছালা দু’টোই খোয়াতে হবে।

আজকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাংলা সিনেমার সেই চাকর আর বাড়ির মালিকের মত অবস্থায় পৌছে গেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এবং র্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ান র্যাব যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে কিন্তু সরকার সাহেব কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। কেন পারছেন না, জানেন? কারণ, সরকারের বহু অপকর্ম এবং কুকৃত্তির প্রত্যক্ষ ও অংশিদারমূলক সাক্ষি এই পুলিশ এবং র্যাব বাহিনী। সরকার নিজেদের গদি রক্ষার তাগিয়ে পুলিশ এবং র্যাবকে দিয়ে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে নির্যাতন করিয়ে নিয়েছে। শত শত মানুষকে ক্রসফায়ারে হত্যা করিয়েছে। সেইসব নির্যাতন এবং ক্রসফায়ারের রাজসাক্ষি পুলিশ ও র্যাব। তাই তারা যতোই অন্যায় করুক তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের লিগ্যাল একশন নেবার সামান্য হিম্মতও এই সরকার রাখে না। কারণ র্যাব পুলিশ বিগড়ে গেলে আবার গদিটাও না হারাতে হয়! তার চেয়ে এতোদিন জামায়াত শিবির এবং বিএনপি মরেছে। এবার না হয় র্যাব পুলিশের হাতে সাধারণ মানুষ মরেছে। তাতে কি এসে যায়! ক্ষমতা এবং সরকারী গদিটা নিজ আয়ত্বে আছে এটাই বড় কথা!

এবার আসি জঙ্গি প্রসঙ্গে। যেকোন জঙ্গি অভিযান পরিচালনা করা হলেই আমরা আম জনতারা এক বাক্যেই বলে দেই ‘সব নাটক’! নাটক বললেই সরকারদলীয় সমর্থক এবং একান্তই অন্ধ ব্যক্তিরা আমাদের খাঁটি বাংলা ভাষায় গালি দিয়ে সম্মানিত করে থাকেন। আমরা আম জনতা। আমাদের গালি দিলেই কি আর সালাম দিলেই কি! আমরা যে রাস্তার মানুষ সেই রাস্তাতেই পড়ে থাকবো। কিন্তু সরকার দলীয় সমর্থক এবং অন্ধ ভক্তরা কি একবারও ভেবে দেখেছেন, আমরা কেন নাটক বলি?
কিছুদিন আগে ডিবি মনিরুল ইসলাম তার ফেসবুক পোষ্টে বিরাট কষ্টের কথা লিখলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের সৈন্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অভিযানগুলো পরিচালনা করে আর আপনারা বলেন নাটক!’ মনিরুল সাহেবের এই পোষ্টখান পড়ে সরকার দলীয় সমর্থকরাও হৈহৈ করে উঠল, তাই তো তাই তো! কিন্তু ডিবি মনিরুলের জন্য এক বালতি আফসোস প্রদর্শন করে বলতে হয়, নাটকের স্ক্রীপ্ট এতোই দুর্বল যে অভিযানের শুরু দেখেই সবাই বলে দেয় এটা নাটক! তাহলে আসুন দেখা যাক, জঙ্গি নাটকের স্ক্রীপ্টের দুর্বলতাগুলো কোথায় কোথায়?



র‌্যাবের সদরদ্প্তরে বোমা হামলার ঘটনায় হানিফ নামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতার দেখানোর একদিন পরেই কুর্মিটোলা সামরিক হাসপাতালে সেই হানিফের লাশ পাওয়া যায়। র‌্যাব দাবি করেছে সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কিন্তু তারা গোটা শরীরে ছিল রক্তের দাগ। হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর না হয় নাকে মুখে রক্ত লেগে থাকবে! কিন্তু সেই রক্ত সারা শরীরে লেগে থাকবে কিভাবে?

উল্লেখ্য, র‌্যাবের এই দাবিটিও যে মিথ্যা তা প্রমান করতে আমরা হানিফের পরিবাবের বক্তব্য শুনতে থাকি।

হানিফকে ২০ দিন আগেই গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব। কিন্তু পরিবার সেই কথাটি জানতো না। তাই তারা তাৎক্ষনিকভাবে থানায় জিডিও করে। হানিফ নিহত হবার পরপরই সেই জিডিও গায়েব করে দেয় আমাদের সরকারের অহংকার র‌্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ান র‌্যাব।


নিহত হানিফের স্ত্রী জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বরিশালে চরমোনাই পীরের মাহফিলে গিয়েছিলেন হানিফ ও সোহেল। সেখান থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁরা লঞ্চে ফিরে আসেন। নামেন কাঁচপুর সেতুর কাছে। তাঁদের আনতে প্রাইভেট কার নিয়ে যায় চালক জুয়েল। সেখানে গিয়ে জুয়েল দেখতে পান সাত-আটজন নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে হানিফ ও সোহেলকে হাইয়াস গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। আর কয়েকজন এসে প্রাইভেট কারে উঠে জুয়েলকে অস্ত্র ঠেকিয়ে চালাতে বলে। এরপর তারা জুয়েলকে মারধর করে পূর্বাচলে ফেলে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় হানিফের ভাই মো. হালিম মৃধা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৪ মার্চ জিডি করেন।

গত বুধবার (১৫ মার্চ) সকাল নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে র‍্যাব-১–এর একটি গাড়ি ও সাদা রঙের একটি হাইয়াস গাড়ি তাদের বাসায় আসে। রায়েরবাজার শাহ আলী গলির মুখে র‍্যাবের গাড়িটি দাঁড়ায়। আর সাদা গাড়িটি বাড়ির সামনে দাঁড়ায়। সাদা গাড়ি থেকে চার-পাঁচজন হানিফকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ঢোকে। এরপর বাসার লোকজনের সামনে কুলসুমকে বলে, আপনার স্বামী একটি অন্যায় কাজে সহযোগিতা করেছে। এরপর হানিফের ব্র্যাক ও ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের চেক বই এনে ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার চেকে সই করিয়ে নেয়।

হানিফের বেয়াই রেজাউল ইসলাম বলেন, বাসায় আসা লোকজনের মধ্য একজনের গায়ে র‍্যাবের পোশাক ও হাতে অস্ত্র ছিল। তাঁর বুকের মধ্যে নেমপ্লেটে ইকবাল লেখা ছিল। এ ছাড়া আর কারও নাম-পরিচয় জানানো বা বলা হয়নি। হানিফকে সঙ্গে নিয়ে আবার চলে যায়। যাওয়ার সময় বাসায় রাখা পালসার ব্র্যান্ডের একটি মোটরসাইকেলও নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার তারা টেলিভিশনে জানতে পারে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে হানিফ নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তখন তাঁরা সেখানে যান। পরিচয় দেখে নিশ্চিত হন এই ব্যক্তি তাঁদেরই হানিফ।

এদিকে মিডিয়া মারফত জানতে পারলাম র‌্যাব কর্মকর্তা মুফতি সাহেব নাকি বলেছেন, আশকানায় বিষ্ফোরিত বোমা এবং সীতাকুন্ঠে উদ্ধারকৃত বোমার মধ্যে মিল খুঁজে পাচ্ছেন।

এইবার বুঝলেন তো, কতটা কাঁচা হাতের স্ক্রীপ্ট। এতো দুর্বল স্ক্রীপ্ট দিয়ে নাটক বানালে তো ফ্লপ খাবেই। তারপরও একেবারেই ফ্লপ বলা যাবে না। অপেক্ষাকৃত এইসব দুর্বল স্ক্রীপ্টের নাটক দিয়েও হাসান মাহমুদরা বিএনপিকে নাজেহাল করে চলেছেন। সরকারী অর্থে নির্মিত এইসব নাটককে যে একেবারেই ফ্লপ হতে দেওয়া যায় না সেই গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিশিষ্ট্য বুদ্ধিজীবি হাসান মাহমুদ। চলুক নাটক! এমন এক্সেপশনাল নাটক বহুদিন দেখাও হয় না। হুমায়ূন আহমেদ সাহেব পরলোক গমনের পর থেকে এক্সেপশনাল নাটক নির্মান প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মানুষ ঝুঁকে পড়ে ষ্টার জলসা এবং জি বাংলার দিকে। সেইসব দর্শককে দেশী মিডিয়ামুখী করতে র‌্যাবের এমন উদ্যোগকে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে। সেইসাথে আমরা র‌্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সত্যিই নাটক নির্মানে র‌্যাবের জুড়ি মেলা ভার। তাই অনুরোধ করব চলতি বছরের মেরিল প্রথম আলো পুরষ্কারটি র‌্যাব এবং র‌্যাব প্রধান বেনজির আহমেদকে প্রদান করা হোক। জানি এই পুরষ্কার তাদেরকে মূল্যায়ন করতে পারবে না। তাই আশা রাখবো, আগামীতে হাসান মাহমুদ সাহেব পূর্বের ন্যায় আন্দোলন করে, র‌্যাব এবং বেনজির আহমেদকে ‘অস্কার পুরষ্কার’ পাইয়ে দেবার ব্যবস্থা করবেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৩৮

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: ধন্যবাদ ছদ্ম নামের লেখককে । যাকে মারার জন্য তাক করে আছেন তিনিও মরবেন আর যিনি তাক করে আছেন তিনিও অবশ্যই মরবেন, কয়েকদিন আগে আর পরে। সুতারং যারা চাকুরীর ভয়ে জুলুমে লিপ্ত আছেন তাঁদেরকে বলছি আল্লাহর বড়ত্বকে ভয় করুন।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫

লিংকন১১৫ বলেছেন: উদাহরণ টা সেই দিয়েছেন ভাই ,
জোর যার মল্লুক তাঁর , এর আগে কতো গুলো বড় ধরনের ঘটনা ঘটে গেল কিন্তু একটারও কোন কুল কিনারা হয়নি আজো ।
আর এটারও হবে না , কদিন একটু মাতা মাতি হবে ব্যাস , তারপর নতুন একটা কিছু হবে তারপর এটা ধামা চাপা পরে যাবে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.