নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

পাললিক মন

নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!

পাললিক মন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ্যামেচার, দলকানা, স্তাবক, অপেশাদার টিভি চ্যানেলের সংখ্যাধিক্য, বস্তাপঁচা খবর ও টক-শো বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ

১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:১২

বন্যা, খরা, সাইক্লোন, প্লেগ ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ন্যায় বাংলাদেশের উপর একটি স্থায়ী মানবসৃস্ট দুর্যোগ নাজিল হয়েছে- টেলিভিশন। ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাস্ট্রীয় জীবনে এসব টিভি চ্যানেল মারাত্মক অশান্তির আমদানী করেছে। দুনিয়াতে দেশও অনেক আছে, চ্যানেলও অনেক আছে- তবে এহেন সংবাদ ও টকশো নির্ভর গোটা টেলিভিশন সেক্টর বোধ করি যেকোনো দেশেই বিরল!



বিজ্ঞান, ভুগোল, প্রকৃতি (ডিসকভারী, ন্যাট জিও, এনিমেল প্লানেট); সিরিয়াল (সনি, জিটিভি, স্টার প্লাস, জলসা, ওয়াল্ড); সিনেমা (জি, এইচবিও, স্টার মুভিজ, সনি ম্যাক্স); খেলা (টেন, ইএসপিএন), খবর (এনডিটিভি, বিবিসি, আলজাজিরা, জি নিউজ), ভ্রমন ও লাইফস্টাইল (টিএলসি); কার্টুন (নিকলেডিয়ন, কার্টুন নেটওয়ার্ক); ওয়াজ নসিহত (পিস) ইত্যাদি নানান ক্যাটেগরিতে অলরেডি বাংলার আকাশে এন্তার ইংরেজী, বাংলা ও হিন্দী চ্যানেল পাওয়া গেলেও স্বদেশী একটি চ্যানেলও কোন জাতের মধ্যে পড়ল না। তারা মোটাদাগে রাজনৈতিক কানেকশনে লাইসেন্স পেয়েছে আর চোরাই টাকায় যন্ত্রপাতি কিনেছে। কিন্তু বলাবাহুল্য, রাজনৈতিক কানেকশন আর অবৈধ অর্থের জোরে ভাল স্ক্রিপ্ট, সুর, কথা, ভাবনা, মেধা, মনন, তথ্য, বিশ্লেষন, প্রযুক্তি, আইডিয়া পাওয়া যায়না! ফলে সব শিয়ালের এক রা......বিনাপুঁজির খবর (বেশীরভাগই মতামত গোছের) ও টক-শো (ডাইরেক্ট মতামত!) নামক হাইএন্ড খিস্তিখেউড়ের উপর সম্বল করে চ্যানেলগুলো ২৪ ঘন্টার চ্যালেন্জিং যাত্রা পাড়ি দেয়ার সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে।



এটিএন নিউজ, একাত্তর, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সময়, সিএসবি (ডাউন) পুরোপুরিই সংবাদ ও টক-শো নির্ভর। শুদ্ধ করে বললে, টক-শোই তাদের প্রধান উপজীব্য। চ্যানেল আই, এনটিভি, এটিএন বাংলা, ইটিভি, দিগন্ত (সদ্য ডাউন), ওয়ান (ডাউন), মাছরাঙ্গা, আরটিভি, বাংলাভিশন, চ্যানেল ২৪ আদর্শ বাংলাদেশী খিচুড়ি টিভি চ্যানেল যেখানে নাটক, বাংলা সিনেমা, খবর, রিয়ালিটি শো, টক-শো সবই প্রচার করা হয়। আর সারাক্ষন উপরোল্লিখিত সব চ্যানেলেই পর্দার নীচের দিকে ২ লাইন জায়গা দখল করে সদ্য সংবাদ দেখানো হয়। সবজাতের চ্যানেলেই কেন ২৪ ঘন্টা সদ্যখবর গোছের এ বস্তুটা দেখাতে হবে তা তারাই ভাল জানেন। তবে ২ লাইনেই একই খবর থাকে। একটা বেশী তাজা আরেকটা কম এই যা! ইটিভি আরেক কাটি সরেস শেয়ার বাজার নিয়ে। দুপুর ৩ টায় বাজার বন্ধ হলেও এ চ্যানেলটিতে তা চলতে থাকে তা অনবরত। রাতেও! চ্যানেল ৯ এসেছিল শুধু 'বিনোদন' দেবার প্রত্যয়ে তবে ঠিক কি তারা দিচ্ছে তা আমরা জানিনা। মোহনা, ১৬, মাই টিভি, এশিয়ান, এস এ, বিজয় নামে আরো ক'টি ঘুপছি চ্যানেল আছে! ইসলামিক টিভি ওয়াজ নসিহতের স্ট্রিমে থাকতে পারে নি। খবরে নেমেছে তারাও (এখন ডাউন)।



পর্দার নীচর মার্জিনে ব্রেকিং নিউজ, ঘন্টায় ঘন্টায় নিউজ, সন্ধ্যার খবর, রাতের বুলেটিন, মাঝ রাতের খিস্তিখেউড়, পরদিনের পত্রিকার হেডলাইন পাঠ, তা নিয়ে আরেকদফা চর্বিতচর্বন, মাঝে মধ্যে বাদপড়া অন্যান্য বাসী খবর নিয়ে সাপ্তাহিক! এভাবেই খবর বন্যায় সয়লাব দেশের টিভি চ্যানেলগুলো। সান্তনা পাওয়া যেত যদি এরি মধ্যে সত্যি সত্যি প্রচুর ইনফরমেটিভ, ইনভেস্টিগেটিভ এবং একাডেমিকেক্যালী সাউন্ড খবর পাওয়া যেত। যদি জানা যেত সাগর রুনিকে কে মেরেছে, ইলিয়াস আলী কোথায়, হেফাজতের সমাবেশের সত্যিকার ক্যাজুয়ালটি কত? খুশি হতাম যদি চ্যানেলগুলা ইন্টারন্যাশনাল না হলেও রিজিওনালী অন্তত: ফিট হত। আসাম, বার্মা, কলকাতা, পাকিস্তান, নেপাল, চীনের মত প্রতিবেশী দেশ সমূহ থেকে নিজস্ব সুত্রে রেগুলার রিপোর্ট হত। অন্তত: বাংলায় মিনি বিবিসি হত। তা হয়নি। মোটাদাগে এ বস্তাপঁচা চ্যানেলগুলা আওয়ামীলীগ, বিএনপি, কম্যুনিস্ট ও দরবারী হুজুরদের সভা, সমিতি, গোলটেবিল, বয়ান ইত্যাদি কাভার করে স্লট পুরায়। জুত করতে না পারলে লীগের হানিফরে জিগায়- তত্বাবধায়ক নিয়ে আপনার কি মত! খানিক্ষন পর দলের দুদুরে জিগায় হানিফতো কইছে...জোড়া টা তালি দেয়ার জন্য আকবর আলীখানের কাছে গিয়ে দ্বিমতের কারণ খোজে। এহেন পুওর, ফালতু বিষয় টিভি ব্রডকাস্ট হয়, হচ্ছে। তবে অতখানি ফিল্ডওয়ার্কও কস্টসাধ্য। তাই সর্বনিম্ন খরছে ৩টি সোফা, ৩ টা মগ আর ১ টা ক্যামেরা দিয়ে ২ জন লোক বসে যায়। এক হিসেবে পৌনে ৩ জন। সাধারনত উপস্থাপকরা রেফারীর ভুমিকায় থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের স্পোর্ট জোশ এতটাই বেশী যে তারা সঞ্চালকের নৈর্ব্যক্তিক রোল একেবারেই সইতে পারেননা। সামিয়া জামান, রহমান, অঞ্জন, মুন্নী, নবনীতা, খালেদ ইত্যাদিরা এমনভাবে একপক্ষে মাঠে নেমে যান তা ভারী লজ্জার। খোদ বিটিভির ঘোষকরাও তাদের কাজকম্মে লজ্জা পাবেন। যাহোক এসব টক-শোর বেশীরভাগরেই কোন ভাল শিরোনাম নেই, নেই কোন স্পেসিপিক জাতীয় ইস্যু, সাধারনত 'দেশ কোন পথে ... ইত্যাদি ইত্যাদি........। বলাবাহুল্য, ঘুরেফিরে সকল টকশোতে বক্তারাও সীমিত। এবং সাংবাদিক বর্গের।



সাংবাদিকের কাজ অজানা কোন গোপন ঘটিত অথবা ঘটতে পারে এমন ঘটনাকে জনসমক্ষে হাজির করা। দেশ, জাতির সকল সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞ মত দান নয়! এরকম নিরেট সরল সত্যটাই আজকে মিথ্যা হতে চলেছে।



পত্রিকা মূলত সংবাদ ছাপায় আর কিছু সাময়িকী। কিন্তু টিভির প্রধান কাজ সাময়িকী গোছের অর্থাৎ বিনোদন দান। তাই পত্রিকা শিল্পের পুরোধা রিপোর্টার ও এডিটররা। পক্ষান্তরে টিভির পুরোধা শিল্পী ও প্রডিউসাররা। দু:খের বিষয় এদেশের টিভি চ্যানেল চালায় পত্রিকার সাংবাদিকরা। যারা এক লাইন গান গায়নি, একটি গান লিখেওনি, এক প্যারা সুরও করেনি, তবলা আর তানপুরার তফাৎ বুঝেনা তারা গান, নাচ, নাটক, সিনেমা, ডকুমেন্টারী, শ্যুটিং, এডিটিং, ব্রডকাস্টিং, মার্কেটিংয়ের টেকন্যাকিল দুনিয়ার হর্তাকর্তা। এমনকি রিপোর্টার নয়, নিছক এক চ্যানেলে ক'দিন খবর পাঠ করে আরেক চ্যানেলের নিউজ হেড! এ ধরনের নিকৃস্ট সংবাদ, সাংবাদিকতা, ব্যবস্থাপনার কবলে দেশের প্রধান বিনোদন মাধ্যম- টিভি সেক্টর!!



তবে এটার প্রথম ভুক্তভোগী টিভি মালিক ও সাংবাদিক/ব্যবস্থাপকরাই। যখন তখন যেকোন চ্যানেল বন্ধ হয়, হচ্ছে, সামনেও হবে। অন্যায় ভাবে জন্মলাভ করা প্রথম ইটিভি, সিএসবি, ওয়ান, দিগন্ত, ইসলামিক তার প্রকৃস্ট উদাহরন। কোথায় যাবে এসব চ্যানেলে কর্মরত সামান্য বেতনের চাকুরে মানুষেরা? ঢাকা শহরে একমাস বেতন না পেলেই তো তাদের ইহকাল সাংগ হয় হয়! আওয়ামীলীগের/হাসিনার বগলে উকুনের মত আশ্রয় নেয়া ইনুরা আজ এসব জামাতী/বিএনপি চ্যানেল গায়ের জোরে বন্ধ করছেন; আর সতীর্থরা ক্লীবের হাসি হাসছেন। কাল যে একাত্তর, সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, এটিএন শাটডাউন হবেনা তার গ্যারান্টি কি? বিনাবেতনের চাকরি সাংবাদিকতায় আজকাল ক'টা পয়সা পাওয়া যাচ্ছে। তা অনেকের সয়না। ভিক্ষার থালা হাতে বউ পোলা নিয়ে রাস্তায় বেরুতে চায় আবারো!!!



শেষ কথা: ব্যবসা প্রশাসনের দৃস্টিভংগি থেকে টিভি সেক্টরকে ফালতু খবর/টকশোর রাহুমুক্ত করে বিনোদনের কোন একটি বা একাধিক শাখায় ফোকাস করে দীর্ঘস্থায়িত্ব অর্জন করা সবার রুটি রুজির জন্য জরুরী।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২০

পাললিক মন বলেছেন: বিজ্ঞ সাংবাদিকরা মত দিন

২| ১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২২

আপেল বেচুম বলেছেন: ভাল।

৩| ১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১

লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন: +++++++

৪| ১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: আমি সাংবাদিক না তারপরও মত দিলাম। আপনি যথার্থই বলেছেন। বর্তমানে টিভি চ্যানেল গুলো যেন টক শো টক শো খেলা। বিজ্ঞাপন আর টক শো ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না।

তবু টক শো টাও যদি ঠিকমত করতে পারতো ! সাবজেক্টে রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নাই।বর্তমানে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা এই চ্যানেল গুলো সরকারী দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছা পক্ষে প্রচারের জন্যই লাইসেন্স পেয়েছে। ইনব্যালান্স এই টক শো গুলোতে দেখা যাচ্ছে একজন সরকারী দলের নেতা একজন সরকারদলীয় বুদ্ধিজীবি এবং উপস্থাপক কোন এক বিরোধী দলীয় নেতাকা সমানে প্রশ্নজালে নিষ্পেষিত করে চলেছেন।

৫| ১১ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

জেনো বলেছেন: যথার্থ।

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: ভালো বলেছেন। তবে সমাধান দিলে ভালো হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.