নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মামুনুর রশীদ

মোঃ মামুনুর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে মদ ও মদ্যপান যেভাবে হারাম হল

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৩৮



ইসলামের প্রথম যুগে জাহেলিয়াত আমলের সাধারণ রীতি-নীতির মত মদ্যপানও স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। অতঃপর রসূলে করীম (সাঃ)-এর হিজরতের পরেও মদীনাবাসীদের মধ্যে মদ্যপান ও জূয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। সাধারণ মানুষ এ দুটি বস্তুর শুধু বাহ্যিক উপকারিতার প্রতি লক্ষ্য করেই এতে মত্ত ছিল। কিন্তু এগুলোর অন্তর্নিহিত অকল্যাণ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই ছিল না।

মদীনায় পৌছার পর কতিপয় সাহাবী এসব বিষয়ের অকল্যাণগুলো অনুভব করলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে হযরত ফারূকে-আযম, হযরত মা’আয ইবনে জাবাল এবং কিছুসংখ্যক আনসার রসূলে-করীম (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেনঃ “ মদ ও জুয়া মানুষের বুদ্ধি-বিবেচনাকে পর্যন্ত বিলুপ্ত করে ফেলে এবং ধনসম্পদও ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে আপনার নির্দেশ কি?” এ প্রশ্নের উত্তরে সূরা বাকারায় নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।

“তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এ-গুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়”।

আয়াতটিতে বলা হয়েছে যে, মদ ও জুয়াতে যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে কিছু উপকারিতা পরিলক্ষিত হয়, কিন্তু দু’টির মাধ্যমেই অনেক বড় বড় পাপের পথ উন্মুক্ত হয়; যা এর উপকারিতার তুলনায় অনেক বড় ও ক্ষতিকর। যেমন, মদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় দোষ হচ্ছে এই যে, এতে মানুষের সবচাইতে বড় গুণ, বুদ্ধি-বিবেচনা বিলুপ্ত হয়ে যায়। কারণ, বুদ্ধি এমন একটি গুণ যা মানুষের মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। পক্ষান্তরে যখন তা থাকে না, তখন প্রতিটি মন্দ কাজের পথই সুগম হয়ে যায়।

এ আয়াতে পরিষ্কার ভাষায় মদকে হারাম করা হয়নি, কিন্তু এর অনিষ্ট ও অকল্যাণের দিকগুলোকে তুলে ধরে বলা হয়েছে যে, মদ্যপানের দরুন মানুষ অনেক মন্দ কাজে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে।

মদের ব্যাপারে পরবর্তী আয়াতটি নাযিল হওয়ার ঘটনা নিম্নরূপঃ

একদিন হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফা (রাঃ) সাহাবিগণের মধ্যে হতে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করেন। আহারাদির পর যথারীতি মদ্যপানের ব্যবস্থা করা হলো এবং সবাই মদ্যপান করলেন। এমতাবস্থায় মাগরিবের নামাযের সময় হলে সবাই নামাযে দাঁড়ালেন এবং একজনকে ইমামতি করতে এগিয়ে দিলেন। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় যখন তিনি সুরা আল-কাফিরূন ভুল পড়তে লাগলেন, তখনই মদ্যপান থেকে পুরোপুরী বিরত রাখার জন্যে দ্বিতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল। এরশাদ হলঃ “হে ঈমানদারগণ! নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তোমরা নামাযের কাছেও যেওনা।”

এই আয়াতের মাধ্যমে নামাযের সময় মদ্যপানকে হারাম করা হয়েছে। তবে অন্যান্য সময় তা পান করার অনুমতি তখনও পর্যন্ত বহাল রয়ে গেল।

মদ্যপান সম্পূর্নরূপে হারাম হওয়ার ঘটনাটি নিম্নরূপঃ

হযরত আতবান ইবনে মালেক কয়েকজন সাহাবীকে নিমন্ত্রণ করেন, যাদের মধ্যে সা’দ ইবনে আবী অক্কাসও উপস্থিত ছিলেন। খাওয়া-দাওয়ার পর মদ্যপান করার প্রতিযোগিতা এবং নিজেদের বংশ ও পূর্ব-পুরুষদের অহংকারমূলক বর্ণনা আরম্ভ হয়। সা’দ ইবনে আবী অক্কাস একটি কবিতা আবৃত্তি করলেন যাতে আনসারদের দোষারোপ করে নিজেদের প্রশংসাকীর্তন করা হয়। ফলে একজন আনসার যুবক রাগাম্বিত হয়ে উটের গন্ডদেশের একটি হাড় সা’দ এর মাথায় ছুঁড়ে মারেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে সা’দ রসূল (সাঃ)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে উক্ত আনসার যুবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তখন হুযূর (সাঃ) দোয়া করলেনঃ ‘হে আল্লাহ! শরাব সম্পর্কে আমাদের একটি পরিষ্কার বর্ণনা ও বিধান দান কর।’

তখনই সূরা মায়েদার উদ্ধৃত মদ ও মদ্যপানের বিধান সম্পর্কিত বিস্তারিত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এতে মদকে সম্পূর্ণরূপে হারাম করা হয়েছে।

“হে ঈমান্দারগণ! নিশ্চিত জেনো, মদ, জুয়া, মূর্তি এবং তীর নিক্ষেপ এসবগুলোই নিকৃষ্ট শয়তানী কাজ। কাজেই এসব থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে থাক, যাতে তোমরা মুক্তিলাভ ও কল্যাণ পেতে পার। মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্ত্রুতা ও তিক্ততা সৃষ্টি হয়ে থাকে; আর আল্লাহর যিকর ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখাই হল শয়তানের একান্ত কাম্য, তবুও কি তোমরা তা থেকে বিরত থাকবে না?



সৌজনে: খালিদ ভাই

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৪৩

মদন বলেছেন: +++++++++++++++++++

২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৫৭

কায়সার আহমেদ কায়েস বলেছেন: ভালো লিখেছেন।


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ
فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ অন্য কিছু নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। (সূরা মায়িদাহ আয়াত ৯০)

৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:০৯

আজমান আন্দালিব বলেছেন: ভালো লাগলো কোরআনের আলোকে বিস্তারিত বর্ণনা।

৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৩৯

সুদীপ্ত কর বলেছেন: ভালো লাগলো। +++

৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:৫৫

টুনা বলেছেন: ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম।
ধন্যবাদ।

৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:১১

গুরুদেবজী বলেছেন: তথ্যবহুল গুরুত্বপূর্ণ লেখা---ভাললাগলো। ধন্যবাদ

৭| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৩০

ইসরা০০৭ বলেছেন: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট।অনেক ভাল লাগলো।

ভালো থাকবেন।

৮| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৩

কলম.বিডি বলেছেন: ভাল লেখা, ভাল থাকেন আরো লিখতে থাকেন.........

৯| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২১

েমা আশরাফুল আলম বলেছেন: After the ban of alcohol, the people of madina had thrown out their stock alcohol in the street, many days after the rain they could see the characteristic colour of alcohol on the street.

১০| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৬

টু-ইমদাদ বলেছেন: তীর নিক্ষেপ শয়তানী কাজ . . . আমি যতোটুকু জানি এটা তো ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ. . . আশা করি এ সম্পর্কে আরেকটু বিস্তারিত জানাবেন. . .

১১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১০

েমা আশরাফুল আলম বলেছেন: তীর নিক্ষেপ শয়তানী কাজ- they did it for deciding the fortune, just like horoscope or gambling. So it is considered as evil deed.

১২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৪

মেঘকন্যা বলেছেন: ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.