নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।
আদিবাসীরা অনেকেই স্বধর্ম ত্যাগ করে খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ধর্ম পরিবর্তন যেহেতু একটি চলমান প্রক্রিয়া তাই এটা এখনও চলছে। হ্যা, আদিবাসীরা ধর্ম ত্যাগ করছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটু ভালভাবে জীবন যাপনের আশায়। স্বর্গের ব্যাপারটা তাই সেখানে বেশ গৌন। পাহাড়ী আদিবাসীদের চেয়ে সমতলের আদিবাসীরাই অনেক বেশি পরিমাণে ধর্মান্তরিত হয়েছে বলে আমার মনে হয়। তবে ধর্মান্তরিত হয়ে তারা খৃষ্ট ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করেছে বলে আমার জানা নেই। যেহেতু তারা সনাতন এবং বৌদ্ধ ধর্মের জাতক তাই ধর্ম পরিবর্তন করে সামাজিক বঞ্চনা, নির্যাতন থেকে বাঁচা এবং আর্থিক সুবিধা লাভের জন্য তাদের সামনে দুটি ধর্মই আছে ইসলাম এবং খৃষ্টান।
বিষ্ণু হাসদা খৃষ্টানের ছেলে খৃষ্টান। বিষ্ণুর বাবা খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বিষ্ণুর জন্মের পূর্বেই। তাই বিষ্ণুর বেড়ে ওঠা গরীব এক খৃষ্টান পরিবারে। বিষ্ণুর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোন সার্টিফিকেট না থাকলেও বাংলা লিখতে ও পড়তে তার কোন কষ্ট হয় না। আবার নিজের সাঁওতালী ভাষাটাও জানেন ভালই। আমার কথা হচ্ছিল দিনাজপুরের বিরলের অধিবাসী বিষ্ণু হাসদার সাথে।
আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি তো খৃষ্টান কিন্তু গঙ্গা পূজা করছেন কেন? আমি যখন বিষ্ণুর বাড়িতে যাই তখন তিনি গঙ্গা পূজায় ব্যস্ত। বিষ্ণুকে পূজোর আয়োজন করতে দেখেই আমি জানতে পারি আজ গঙ্গা পূজা। কোন সংস্কৃত মন্ত্রপাঠ নয়! নিজের মতো করেই কিছু বাংলায়, কিছু সাঁওতালী ভাষায় আরাধনা সারলেন বিষ্ণু। বিষ্ণুর গঙ্গা পূজা দেখে আমার মনে হলো এ...ই অনেক ভাল! ব্রাহ্মণ পূজা পড়ালে হয়তো সেটা অনেক বাড়াবাড়ী হয়ে যেতো।
পূজা শেষ করে বিষ্ণু যখন আমার কথা শোনার জন্য বসলেন, আমি আগে তাকে ধর্মীয় ব্যাপারেই কিছু ছোট প্রশ্ন করে বসি।
আমি যতদুর জানি বিষ্ণু প্রতি রবিবারে প্রার্থনার জন্য গীর্জায় যান। খৃষ্ট ধর্মের সমস্ত ধর্মীয় পর্বেও তার সরব উপস্থিতি থাকে।তাহলে.... গঙ্গা পূজা কেন??
প্রশ্ন শুনে বেশ একটু উত্তেজিত হয়ে পড়লেন বিষ্ণু! বললেন, খৃষ্টান হইছি তাই বলে কি গঙ্গা পূজা বাদ দেবো? হাত উচিয়ে অনেকটা ঝাড়ি দেয়ার ভঙ্গিতে বললেন, আমার চৌদ্দগুষ্টিতে পূজা করেছে, আমার বাবাকে দেখেছি গঙ্গা পূজা করতে। তার কাছেই শিখেছি। তাহলে আমি কেন পূজা বাদ দেবো?? সব পূজাতেই তো যাই আমরা, আবার গীর্জাতেও! একই তো ঈশ্বর!
বিষ্ণুর সাথে কথা বলার পর অনেক দিনের পুরোনো কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই আমি। ধর্মান্তরিত হয়ে খৃষ্টান হলে খুব যে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করলে নওমুসলীম হিসাবে যে সুবিধা পায় তার চেয়েও কম পায় ধর্মান্তরিত খৃষ্টানরা।যেমন নওমুসলিমদের বাংলাদেশ সরকার ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়মিত সহায়তা করে থাকে। অনেকটা সরকারী বেতনের মতো পায় নওমুসলিমরা। এছাড়া বিভিন্ন ইসলামিক সংস্থা থেকে মাঝে মধ্যে থোক বরাদ্দ পেয়ে থাকে তারা। যা নব্য খৃষ্টানরা পায় না। আদিবাসিরা সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠদের দ্বারা নির্যাতিত, বঞ্চিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সংখ্যাগরিষ্ঠদের দলে গেলে নির্যাতিত হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তারপরও আদিবাসীরা মুসলমান ধর্মের ধারে-কাছে কেউ যায় না! শতকরা একশ জনই খৃষ্টান হয় কেন??
আমার মতে এর মূল কারণ হচ্ছে খৃষ্ট ধর্ম এবং খৃষ্টানরা, ধর্মে নবাগতদের পক্ষে অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল, অনেক বেশি মানবিক। ধর্মান্তরিতদের ক্ষেত্রে তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তারা অনেক গুরুত্বের সাথে দেখে। ধর্মান্তরিত খৃষ্টান আগের ধর্মের সাথে খৃষ্ট ধর্মের দ্বৈত চর্চা করলেও তারা সেটাকে একোমডেট করার চেষ্টা করে। যেটা ইসলামে কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়। মুসলমান ধর্ম গ্রহণের পর গঙ্গাপূজা তো দুরের কথা পূজায় সহায়তা করলেও তার মুসলমানিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
মানুষ জামা-কাপড় পরিবর্তনের মতো সহজেই তার ধর্ম পরিবর্তন করতে পারে! কিন্তু সংস্কৃতি সে বদলাতে পারে না যুগের পর যুগেও। প্রজন্মের পর প্রজন্ম সাংস্কৃতিক ভাবধারা বহন করে চলে। যেমন ষাট, সত্তর বা আশির দশকেও অসংখ্য বয়স্ক মুসলমান পুরুষ ধুতি পরতো! মুসলমান নারীরা লক্ষীপূজার দিন ঘরদোর ধুয়ে-মূছে পরিষ্কার করতো, ঘরে লক্ষী উঠবে বলে। কারণ ঐ একটাই! সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ভাবধারা।কিন্তু ইসলাম ধর্মান্তরিতদের ক্ষেত্রেও কঠোর অনুশাসন চাপিয়ে দেয়। তাই ধর্মান্তরিতকরণের ক্ষেত্রে খৃষ্টানদের চেয়ে তারা অনেক পিছিয়ে।
২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:৫২
মুহাম্মদ যিয়ান ইলাহী বলেছেন: আপনারা দুজনে ঠিকই বলেছেন। ইসলামে কোন শর্টকাট নেই। সুতরাং যারা ইসলাম গ্রহণ করেন, তারা প্রত্যেকেই নিজের আত্নার পরিশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর রাস্তায় আসে। অন্যদিকে সুবিধা পাবার জন্য ও আরামের জন্য মানুষ অন্য সকল ধর্মে আকরিস্ট হয়।
৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:০৬
মুহাম্মদ যিয়ান ইলাহী বলেছেন: শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।
:-< :-< :-< :-< :-< :-<
৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:১৮
মাহিরাহি বলেছেন: However according to others including the Guinness Book of World Records, Islam is the world’s fastest-growing religion by number of conversions each year:
৫| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:১৯
মাহিরাহি বলেছেন: According to the Carnegie Endowment for International Peace, the World Christian Database as of 2007 Islam is the fastest growing religion in the world.[ http://en.wikipedia.org/wiki/Claims_to_be_the_fastest-growing_religion
৬| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩৭
পাঠক লাল গোলদার বলেছেন: হ্যা! মাহিরাহি ঠিকই বলেছেন! ইসলামই সবচেয়ে দ্রুত প্রসারমান ধর্ম। আর বিশ্বে মুসলমানগণ যেহেতু ধর্মান্তরিত হয়েই তবে মুসলমান হয়েছেন, এমনকি নবীজীও জন্মসূত্রে মুসলমানিত্ব পাননি! মুসলমান হয়েছেন। সেহেতু সবচেয়ে বেশি মানুষ যে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে সেকথাও ঠিক। আমি বিষয়টি তুলে ধরেছি একেবারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে। বর্তমান বাংলাদেশের ধর্মান্তরকরণে খৃষ্টানরা এগিয়ে সেটা বলতে চেয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:৩৪
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: এটা ঠিক যে, ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হলে ধর্মাচার একজন নও মুসলিমের জন্যে কঠিন হয়ে যায়। ভিন্ন ধর্ম থেকে আসবার ফলে তার দিকে দৃষ্টিও থাকে বেশি। কাজেই তার ছোটোখাটো ত্রুটিও অনেক বড় জিজ্ঞাসার জন্ম দেয়। অন্য দিকে মুসলমান থেকেও অনেকে ধর্মের অনুশাসন মানেন না বা নিয়মিত তা পালন করেন না, এ নিয়ে কারো আগ্রহ দেখা দেয় না। ফলে ইসলামে ধর্মান্তরিত মানুষটি হঠাৎ করেই কড়া অনুশাসনের চাপে পড়ে দিশেহারা বোধ করতে পারে। খ্রিস্ট ধর্মে তেমন চাপাচাপি নেই অনেক সময় সপ্তাহে একদিন চার্চে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে পদ্রির সঙ্গে কণ্ঠ মেলানো ছাড়া। ইসলাম এমন সহজ কিছু অনুমোদন করে না। কাজেই বেশি লাভ হলেও ভিন্ন ধর্মীরা খুব কমই আসে ইসলামে।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।