![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাগলদের বেশ লাগে আমার কাছে।কেমন একটা ড্যাম কেয়ার ভাব তাদের।পাগল হয়েও কি উন্নাসিক ভাব।ক্ষুন্নিবৃত্তির প্রয়োজন না হলে সারাদিন মশগুল নিজেদের সুরঙ্গে।যাযাবরের ন্যায় ছুটে চলা,কি সুন্দর অনিকেত জীবন।হ্যাঁ মশাই বুঝতে পারছি এতক্ষনে আপনাদের মনে প্রশ্ন উদয় হয়েছে,যদি পাগলের জীবন এতই ভালো তাহলে আপনি কেন হচ্ছেন না?না মশাই অত বোকা আমি নই।পাগল হবার মত বোকামী আমাদের দ্বারা হবেনা,হয়না।পাগল হওয়া অত সহজ নয়।সে যে পারে সেই পারে।তাছাড়া অন্যদিক দিয়ে দেখলে কেই বা পাগল নয়।আমি ,আমরা কে নয়?
পাগলদের দেখলেই আমার একটি কথা মনে পড়ে।সেটা হল- মাস্টার অফ দ্যা রোড।হ্যাঁ তারা রোডের মাস্টার।তারা যখন নিজেদের টপিকে থাকেন তখন আপনি তাদের কাছে কেউ নন।আমাদের এলাকায় এক মামু আছে,ইয়া লম্বা,কোকড়া চুল।কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন লিখছি পাগল নিয়ে হঠাৎ মামু এল কোথা দিয়ে? আরে আমাদের এলাকায় আমরা উনাদের সন্মানার্থে এই নামে ডাকি।আমাদের এলাকায় রামু নামে এক এই মামু ছিল।কি অদ্ভুৎ ছিল সেই রামু।রাজ্যের যত একদম খাপমতো বড়েঙ্গা(লাঠি) থাকতো তার হাতে এক আঁটি।আর ছিলো একটি ঝোলা।সেই ছিল আমার দেখা প্রথম পাগল এবং শৈশবের অনেকটা জুড়ে ছিল সেই একমাত্র পাগল।অনেকটা বলছি এই কারনে,কারণ আরও একজন ছিলো।তার নাম ছিলো রতি।এতটা নিশ্চিত করে এই দুজনের নাম আমি বললাম কিভাবে?আসলে পাগলদেরতো কোন নাম থাকেনা।কি অদ্ভুৎ কথা!সব মানুষের নাম থাকে অথচ এদের নাম নেই।এটা কি তাদের সন্ন্যাস জীবন যে পূর্বাশ্রমের নাম বলতে নেই?জানিনা।তবে এই যে রতি এবং রামু এরা আমাদের এলাকায় এই নামেই পরিচিত ছিল।রামু আর রতির চরিত্র ছিলো সম্পূর্ন ভিন্ন।রামুর ছিল গা জোয়ারী ভাব অপরদিকে রতি ছিল একদম চুপচাপ।বস্তুত রতির মত চুপচাপ পাগল আমার চক্ষে আর পরেনি।প্রকৃতপক্ষে রতি যে পাগল ছিল সেটাই আমার মনে হয়নি কখনও।কথিত ছিল রামুকে নাকি চিলের মাংস খাইয়ে পাগল বানানো হয়েছিল।চিলের মাংস খেলে মানুষ পাগল হয় কিনা আমার জানা নেই।রামু আর রতি সচরাচর একই সাথে আমাদের গ্রামে আসতনা।রতি আর রামু এই মামুরা যদি কালেভদ্রে একই সাথে গ্রামে আসত তাহলে তাদের যুদ্ধ ছিল অবধারিত।এবং যথারীতি রতি প্রতিবার হারত রামু হত জয়ী।রামুর গলায় সবসময় তুলসীর মালা থাকত।কি অদ্ভুৎ !পিছনের সব স্মৃতি ভুললেও ধর্মটিকে সে ভুলেনি।এহেন রামুর একটা নিবাস ছিল লালমোহন দাসের ঘরে।কিন্তু নসীবাবু যেমন কমলাকান্তকে শতকরেও বেঁধে রাখতে পারেনি,তেমনি করে রামুকেও লালমোহন ধরে রাখতে পারেনি।কেই বা এদেরকে কবে বেঁধে রেখেছে?রতি ছিল লিকলিকে।রতিকে নিয়ে আর এগুনো যাচ্ছেনা।কারন রতির আর কোন খবর আমি জানিনা।তাছাড়া এ কতকাল আগের কথা।বরঞ্চ রামুর কথা একটু বলি।শেষমেষ রামুর আশ্রয় হয়েছিল আমাদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।সেই বিদ্যালয়ের দিদিমনির বদৌলতে শেষজীবনটা মোটামোটি ভালই কেটেছে রামুর।অবশেষে রামুর খবর আর জানিনা।তিনি মরিয়াছেন শুনিয়াছিলাম,কেননা কেহই অমর নহেন।রতি বেঁচেছিল আমার শৈশব পর্যন্ত,আর রামু আমার বিশ পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত।তারপরেও অনেক বছর কেটে গেল।পথে প্রান্তরে ঘুরতে ঘুরতেও কখনও রতি বা রামুর এপিটাপতো দূরে থাক সমাধিই চোখে পরেনি।অথচ কত পাগলরা রামু বা রতির চেয়ে নিকৃষ্ট পাগল হয়েও তাদের সমাধিকে কামেল করে গিয়েছেন।
আমার দেখা পাগলদের প্রকার নিয়ে এই লেখার শেষে লিখব।তার আগে আরেক ধরনের পাগলদের নিয়ে লিখছি।আক্ষরিক অর্থে এরা পাগল নয়।আমার মতে এরাই জাত পাগল।পাগল নিজেকে কখনো পাগল বলে যেতে পারেনা।কিন্তু এরা পারে বা পেরেছে।পাগল সম্পর্কে এইবেলা একটি গোপন কথা বলে নেই।সেটা হল আক্ষরিক অর্থেই যারা পাগল তাদের কোন ফেসবুক অ্যাকাউণ্ট নেই।অতএব নির্বিদ্বায়ে তাদের নিয়ে লেখা যায়।
জাত পাগলদের নিয়ে কথা বলছিলাম।যারা নিজেদেরকে পাগল বলে যেতে পেরেছেন।এইরকম মানুষ অনেক কিন্তু আমি তাদের নিয়ে কথা না বলে পাগলদের নিয়ে লেখা সবচেয়ে সুন্দর(আমার মতে)গানটি নিয়ে লিখব।গানটি লিখেছেন সুমন।কি বলব সুমন চ্যাটার্জী নাকি কবির সুমন?নিজের জাতকে যিনি ধুয়েছেন ভালো করেই।তিনি সুমন হলেও আমার ক্ষতি নেই,কবির সুমন হলেও না।ইদানিং নাকি তিনি জাত মুসলিম হয়েছেন।তাতে তার লেখার মানের কোন ক্ষতি বৃদ্ধি হয়নি।তিনি জাত লিখিয়ে।পাগলদের নিয়ে একখানা মাস্টারপিস।যেমনি কথার গাথনি,তেমনি সুরারোপ,তেমনি জীবনের গভীর উপলব্দি।জাত পাগল না হলে এভাবে কি আর লেখা যায়?
এক মুখ দাঁড়ি গোঁফ
অনেক কালের কালো ছোপ ছোপ
জট পড়া চুলে তার
উকুনের পরিপাটি সংসার
পিচুটি চোখের কোনে দৃষ্টি বিস্মরনে মগ্ন
বাবু হয়ে ফুটপাতে
একা একা দিনরাতে রঙ্গে
পাগল পাগল
সাপলুডো খেলছে বিধাতার সঙ্গে।
চালচুলো নেই তার
নেই তার চেনা বা অচেনা
আদমশুমারি হলে তার মাথা কেউ গুনবেনা......
এবার পাগলদের প্রকারভেদ।এ লিস্টি নবায়নযোগ্য।এ লিস্টির raw material যোগানের দায়িত্ত্ব সকলের।তাহলে আর কথা কি-প্রেম পাগল,সিনেমা পাগল,কাজ পাগল,বই পাগল,টেকো পাগল,জটাধারী পাগল,পাতলুন পরা পাগল,ন্যাংটো পাগল,স্যুটেড পাগল,ব্যুটেড পাগল,কাজ পাগল,রাস্তার পাগল,ঘরের পাগল,নগদে পাগল,পুরাণো পাগল,কথার পাগল,বিটকিলে পাগল,রাশভারী পাগল,ক্ষমতার পাগল,বুর্জোয়া পাগল,ক্ষমতায় যাওয়ার পাগল,রামপাল পাগল,রাম্পাল বিরোধী পাগল,খেলা পাগল,দলকানা পাগল,পা গোল পাগল,পড়তে পড়তে পাগল,পড়াতে পরাতে পাগল,এবং আমি..............................।।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:২৬
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: লিখতে লিখতে পাগল!