নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের গতি প্রকৃতি

রাজনীতির ইনসাইড অফসাইড

পীর হাবিরূর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক। নির্বাহি সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন

পীর হাবিরূর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে কারা?

১৯ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৯

অবসরে অনেক কথাই লিখি। অনেক কথা ভাবি। ভাবতে ভাবতে কখনো সামনে যাই। কখনোবা পেছনে। ভাবনার অনেকটা জুড়েই থাকে বর্তমান। আল্লাহর অশেষ রহমত_ পেশার তারে জীবন জড়ানোর পর যেখানেই কাজ করেছি স্বাধীনতা পেয়েছি। সম্পাদক হিসেবে মতিউর রহমান চৌধুরী, গোলাম সারওয়ার, এবিএম মূসা, নাইমুল ইসলাম খান_ সবার কাছেই অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছি। কাজ শিখেছি মতিউর রহমান চৌধুরী ও গোলাম সারওয়ারের কাছে। বটবৃক্ষের ছায়া দেখেছি এবিএম মূসার মাঝে। আমার হৃদয়ে তিনি মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধার আসনে। সহকর্মী হিসেবে অকাল প্রয়াত আহমেদ ফারুক হাসান, মনজুরুল আহসান বুলবুল ও সাইফুল আলম, আবু হাসান শাহরিয়ারের কথা বলতে হয়। কসকো গ্রুপের জাকারিয়া খান কিংবা যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল যথেষ্ট স্নেহ, সমর্থন ও সাহস জুগিয়েছেন।



যুগান্তর বারবার ছেড়েছি, নুরুল ইসলাম বাবুল বারবার টেনে নিয়েছেন। সর্বশেষ পেশার তরী ভিড়িয়েছি বসুন্ধরা গ্রুপের দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে। সম্পাদক শাহজাহান সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের আন্তরিক সম্পর্ক। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নঈম নিজাম এ পেশায় আমার দেখা হৃদয়বান বন্ধু। নঈম ছাড়াও এখানে আসার পেছনে সেতু হিসেবে বড় দায়িত্ব পালন করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান। স্নেহ-মমতায় টেনেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। তাদের দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনড় অবস্থান, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় অমিত সাহস আমাকে মুগ্ধ করেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসন সরকারের ওপর যখন চাপ সৃষ্টি করেছিল তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাবার বহমান রক্ত ও চেতনা ধারণ করেই স্বাধীন-সার্বভৌম জাতির নেতা হিসেবে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। সেদিন দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরার কর্ণধার আহমেদ আকবর সোবহান স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই তার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের আরও দুটি দৈনিকের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিন সত্য ও সাহসের পথে হেঁটে ভূমিকা রেখেছিল। এখানে যোগদানের আগেই বাংলাদেশ প্রতিদিন দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক হিসেবে পাঠকের হৃদয় এতটাই জয় করেছিল যে, শুধু ঢাকায়ই এর সার্কুলেশনের আশপাশে অনেকে মিলেমিশে আসতে পারেনি। এখানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের চমৎকার পরিবেশ। সকালে এসে ঢুকি, রাতে বের হই। কাজ করতে ভালোই লাগছে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের সঙ্গে গভীর হৃদ্যতা, সহানুভূতি, পারস্পরিক সম্মান মিলিয়ে একটি পারিবারিক পরিমণ্ডল তৈরি করেছেন। এ যেন একটি বিশাল পরিবার। আমি আসার আগেই কাগজের বয়স এক বছর হতে না হতেই চিফ রিপোর্টার পথিক সাহা অকালে মারা যান। তার এ অকাল মৃত্যুতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানকে আফসোস করতেই দেখিনি, তার পরিবারকে ডেকে এনে এককালীন মোটা অঙ্কের অনুদান দিতেও কার্পণ্য করেননি তিনি। আসলে ভালোবাসা কখনো একতরফা হয় না। কি পরিবার, কি প্রতিষ্ঠান, সমাজ-সংসার সব জায়গায়ই একই কথা বলা যায়। জীবনের কুড়ি বছর দুটি প্রতিষ্ঠানেই কাজ করেছি। খালি হাতে ফিরেছি। আমি তো আর মামলাবাজ সংবাদকর্মী নই! আমার অবসরের কলাম নিয়ে বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা তাদের হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে যে বেদনা, কষ্ট ও দীর্ঘশ্বাস তা প্রকাশ করে অনুরোধ করেছেন তাদের নেত্রীকে কিছু পরামর্শ দিতে। তাদের অনুযোগ, আমি নাকি শুধু আওয়ামী লীগকে সঠিক গন্তব্যে রাখার মতো যথেষ্ট খোরাক জুগিয়ে লেখালেখি করি। আমি তাদের কথা দিয়েছি বিএনপিকে নিয়ে আগামীতে লিখব। কারণ রাজনীতির দীর্ঘ যাত্রাপথে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া প্রমাণ করেছেন বিভক্ত জনগণের দুটি সে াতধারা তাদের সঙ্গে। এখনো তারা একজন আরেকজনের বিকল্প। শাসক হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে তাদের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। সেটি সব শাসকেরই কম-বেশি থাকে। সাবেক মন্ত্রী ও ইত্তেফাক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু একজন তুখোড় আড্ডাবাজ ও দিলখোলা মানুষ। বিভিন্ন আড্ডায় বলেন, ঘোড়ার পেছনে আর রাজার সামনে হাঁটতে নেই। ঘোড়ার পেছনে হাঁটলে ভাগ্যে জোটে লাথি। রাজার সামনে হাঁটলে কপালে জোটে থাপ্পড়। দেশ শাসনে যেখানে দুই নেত্রী বার বার জনগণের ভোটে অভিষিক্ত হয়েছেন, মানুষের ভালোবাসায় যারা নন্দিত, তাদের নসিহত করার সাহস কে দেখায়! আমি তাদের দলের নিবেদিত নেতা-কর্মীদের ক্রন্দন, আহাজারি, আলোচনা-সমালোচনার বার্তা বিচার-বিশ্লেষণ করে লিখে দিতে সাহায্য করি। তাদের কাছে মানুষের স্বপ্ন-প্রত্যাশা তুলে ধরার চেষ্টা করি। গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামে বার বার যে জনগণ ও তারুণ্য মিছিলে ছুটেছে, যুদ্ধে গেছে, রক্ত দিয়েছে আমি সেসব শহীদের আত্মার ক্রন্দন কান পেতে শোনার চেষ্টা করি। তাদের স্বপ্নের কথা যেমন স্মরণ করিয়ে দিই, তেমনি মানুষের মুখের ভাষা রানারের মতো ছুটতে ছুটতে পেঁৗছে দেওয়ার চেষ্টা করি। দুই নেত্রী ও তাদের দুটি দল যত দিন না জাতীয় ইস্যুতে ঐকমত্যে পেঁৗছবেন, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সমঝোতায় না আসবেন; ততদিন সংঘাত ও প্রতিহিংসার রাজনীতির ইতি ঘটবে না। উচ্চশিক্ষিত সাবের চৌধুরী প্লেট চুরির মামলায় আদালতে যাবেন। এহসানুল হক মিলনের মতো স্বজনশীল আধুনিক নেতা ভ্যানিটি ব্যাগ চুরিসহ নানা মামলায় মাসের পর মাস জেল খাটবেন। তার বউ আদালতে, জেলে জেলে ঘুরবেন। তরুণ প্রজন্ম এই কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি নয়, তারা চায় দেশ লিকুয়ানের সিঙ্গাপুর বা মাহাথিরের মালয়েশিয়ার পাশে দাঁড়াবে। যাক, আমার লেখার বিষয় অন্যখানে। ভাবছিলাম এবার বিএনপিকে নিয়ে লিখব। কিন্তু সেদিন কবি ও সাংবাদিক দিলখোলা রোমান্টিক সৃজনশীল আড্ডাবাজ মোজাম্মেল বাবুর রাতের আড্ডায় বহুদিন পর দেখা হয় মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব থাকাকালে শাকিল কখনো যোগাযোগ করেনি বা খোঁজও নেয়নি। ক্ষমতার প্রাসাদে থাকলে হয়তো এভাবেই বদলে যেতে হয়। না হয় মিডিয়ার সঙ্গে যে শাকিলের সম্পর্ক ছিল নিবিড়, কোনো এক চঞ্চলা সুন্দরীর জন্য সেই শাকিল মিডিয়া থেকে ক্ষমা পেল না! অথচ নিম ভৌমিকরা রাষ্ট্রদূত হয়ে যেসব কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির জন্ম দিচ্ছেন তার কাছে আগ্রাসী প্রেমিক শাকিল অতি তুচ্ছ ব্যাপার। আওয়ামী লীগের হেরেমে আওয়ামী লীগের বন্দনায় অসংখ্য সুশীল পাখি গান গাইলেও শেখ হাসিনার জন্য সাহসের সঙ্গে কলাম লিখে কিংবা টকশোতে গিয়ে বাৎচিত করে জনমত গড়তে লড়েন মোজাম্মেল বাবু। বাবুর আড্ডায় ছাত্রলীগের সেই শাকিল এতদিন কোথায় ছিল এই প্রশ্নের সুযোগ না দিয়েই তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় আমাকে জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করছিল, যা-ই লিখি না কেন শেখ হাসিনাকে যেন সব বিতর্কের ঊধর্ে্ব রাখি। সে বার বার আমার দুর্বল জায়গা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর, যার হাত ধরে আমি ভালোবেসেছিলাম ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই পঁচাত্তর-উত্তর দুঃসময়ে সুনামগঞ্জই নয়, সিলেট বিভাগের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে উঠে আসা ভাইটির কথাই স্মরণ করিয়ে বলছিল, আপনিও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আপনি বাইরে যাবেন কোথায়? আপনাকে যেতে দেব না। তাকে শুধু বললাম, ছাত্রলীগ করতাম। বঙ্গবন্ধুর কাছে আমার সব দায়বদ্ধতা। কিন্তু তারপর আমি, আমার দেশ ও মানুষ ছাড়া কারও কাছে দায়বদ্ধ নই। কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতি আমার আনুগত্য নেই, দাসত্ব দূরে থাক। পঞ্চম সংসদে বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা যখন নিউজ কাভার করতে ছায়ার মতো ঘুরি তখন ছাত্রলীগের মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, ইকবালুর রহিম, ইসহাক আলী খান পান্না, শাকিলদের পাই সফরসঙ্গী হিসেবে। শাকিলের সঙ্গে এত হৃদ্যতা থাকার পরও আড়াই বছর পর ক্ষমতার বাইরে আসায় সে মানুষের ভাষা শুনতে পাচ্ছে। তাই আমার সঙ্গে কথা বলছে। কথা বললে আমার লাভও নেই, লোকসানও নেই। তারা যখন রাজপথে থাকে তখন আগবাড়িয়ে কথা বলে। যখন ক্ষমতার পাশে থাকে তখন হাওয়ায় ভাসে। কে কথা বলল, কে খোঁজ নিল না_ এ নিয়ে আমি ভাবি না। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরপর এক একান্ত বৈঠকে শেখ হাসিনা তার তৎকালীন ক্ষমতার সময়কার কোন স্টাফদের কারও কারও ভাবসাব নিয়ে বলেছিলেন, '৫৪ সালেই মন্ত্রীর বাড়ি ছেড়ে আমেনা বেগমের বাড়ির পেছনে এক ভাড়া বাড়িতে উঠেছি। কত উত্থান-পতন দেখে বেড়ে উঠেছি। ওরা তা দেখেনি। আজও যারা ওই কার্যালয়ের ভেতরে, তারা যেন ক্ষমতার স্বাদ ছাড়া কিছু বুঝছে না। কেউ কেউ অতিমাত্রায় আখের গোছানোর কাজ সারছে। তাদের কাছে ধান্দারা ঘোরে। মানুষ ঘোরে না। তাই তারা মানুষের ভাষাও পায় না। আমি চারদিকের কথা শুনি আর উপভোগ করি মাত্র। আমার স্বভাব হলো ভালোবাসা পেলে, স্নেহছায়া দেখলে বার বার সেখানে যাই। কেউ বিরক্ত হতে পারে সংশয় জাগলে ভুলেও সেদিকের পথ মাড়াই না। অহেতুক কোথাও ঘুরঘুর করা, স্বার্থের ধান্দায় কারও গুণকীর্তন করা আমার রক্তে বা স্বভাবে নেই। এটা আমার অহঙ্কার। আমার জন্মদাতার কাছে আমি ঋণী। আল্লাহর কাছে আমি শুকরিয়া আদায় করি। অহম ও আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে চলতেই আমি পৃথিবীতে এসেছি। মানুষের জীবন কত ছোট এই কথাটি আমরা অনেকে ভাবি না। আমাকে অনেকে বলেন, অতিমাত্রায় সাহস দেখাই। অনেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তান। তাকে পাঠ করে সাহস সঞ্চয় করতে শিখেছি। এটাই আমার শক্তি। আমার প্রেমের প্রথম পাঠশালা ছাত্রলীগ আমাকে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ কখন কোথায় কেন করতে হয়, কেন রুখে দাঁড়াতে হয় সেই শিক্ষা দিয়েছে। অনেকে বলেন, আমি অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ। স্বচ্ছন্দে বলি, প্রেমিকহৃদয় নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলাম। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথকে হৃদয়ে লালন করে মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবারের স্নেহ-মমতায়, জল-জোছনায় বেড়ে ওঠা বাঙালির সন্তান। যার আবেগ নেই তাকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ মনে করি না। যাক শাকিল বার বার বলছিল, শেখ হাসিনার মানবিক দিকটির কথা। বন্ধু নঈম নিজামের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি একই সঙ্গে আবেগ-অভিমান খেলা করে। সে বলে, 'খাবার টেবিলে আপা যখন খাবার তুলে দিয়ে বলেন, এই খাসির মাথাটা আমি নিজে রান্না করেছি। খেয়ে দেখ। তখন সব ভুলে যাই।' পৃথিবীতে আমার দেখা হাসিনাভক্ত মানুষদের একজন নঈম নিজাম। আরেকজন লন্ডন প্রবাসী নিঃস্বার্থ মিয়া আখতার হোসেন সানু মিয়া, উদাহরণ দিলে অনেক দেয়া যায়। অনুজপ্রতিম শাবান মাহমুদ সহকারী প্রেস সচিব হতে গিয়েও পারেনি। তবু হাসিনার কথা বললে শাবান কাঁদে আবেগে। মরহুম মেয়র হানিফপুত্র সাঈদ খোকনও শেখ হাসিনার মানবিক গুণাবলী নিয়ে একদিন অনেক গল্প করেছিল। ১/১১ এ তাকে যখন যৌথবাহিনী চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে বলেছিল, বাস পোড়ানোর মামলায় তার নেত্রীর বিরুদ্ধে হুকুমদানের অভিযোগ এনে সাক্ষী দিতে, তখন তার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে সে গোপনে তৎকালীন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ব্রিগে. জে. চৌধুরী ফজলুল বারীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিল, 'ফুপুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক উত্তম। দল ছেড়ে দিতে পারি, ফুপুর বিরুদ্ধে যেতে পারি না।' বারী তাকে ওই বিপদ থেকে রক্ষা করায় সে তখন দল ছাড়ার এক সাময়িক নাটক করেছিল। এ নিয়ে তাকে রাজনীতিতে খেসারত দিতে হয়েছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে যারা সারা দেশ ঘুরেছি, তার মানবিক গুণাবলী নিয়ে সবাই একটা করে বই লিখতে পারব। ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সবাই শোকার্ত থাকেন। গোটা পরিবার হারানোর বেদনা-যন্ত্রণায় অশ্রুসজল শেখ হাসিনা আরিচা ফেরিতে ডিলাক্স কেবিন থেকে ভিআইপি কেবিনে যাচ্ছিলেন। আমি সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলাম। ওই অবস্থায় একান্নবর্তী পরিবারের বড় বোনের স্নেহশীল চোখে তাকিয়ে শোকার্ত হাসিনার প্রশ্ন ছিল_ 'খেয়েছ?' জি খেয়েছি। কোন অসুবিধা? না, ঠিক আছে। এভাবে তিনি খোঁজ-খবর নিতেন।



কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক কিছু জানেন না। তার চাটুকাররা তাকে অনেক খবর, অনেক সত্য থেকে দূরে রাখে। সত্য অনেক সময় অপ্রিয় হয়, তাই তা জানতে দেয় না। জানতে পারলে তিনি তড়িৎ সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া সব সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে খাওয়া-থাকা নিয়ে খোঁজ নিতেন। সুবিধা-অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চাইতেন। সবচেয়ে বিপদ হতো তার জেলা গোপালগঞ্জ গেলে। সেখানে সার্কিট হাউসে সকালে নাস্তার টেবিলে সাংবাদিকরা আসার আগেই আবদুল্লাহ নামের এক দলীয় মোটা লোক দলবল নিয়ে সব খাবার খেয়ে ফেলতেন। বাড়ি তার ওখানেই। তবু শেখ হাসিনা জানতে চাইলে সবাই বলতাম, খেয়েছি। টুঙ্গিপাড়ায় এলে শেখ সেলিমের বাসায় যেতাম আমরা। শেখ ফজলুর রহমান মারুফ খাবার আয়োজন করতেন প্রায় সব দর্শনার্থী মানুষের জন্য। আমরাও সেখানে খেতাম শেখ সেলিমের সঙ্গে গল্পে গল্পে।



আরেকবার শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হয়ে উত্তরাঞ্চলে একদিনে তিনি ২২টি জনসভা করেছিলেন। গরমে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। খবর পেয়ে নজিব আহমদকে দিয়ে তার গাড়িতে নিয়ে নানা খাবার খেতে দিলেন। আমার মাথায় সারাপথ জলপট্টি দেন ইত্তেফাকের আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। দিনাজপুর এসেই আমি ইকবালুর রহিমের বাসায় যাই সার্কিট হাউসে না গিয়ে। সারা রাত বর্তমান বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম আমার যে সেবাযত্ন করেন, যে ঋণে বন্দী করেন তা কখনো শোধ করার মতো নয়। পরদিন সকালে নজিবের কাছ থেকে শেখ হাসিনা যখন শুনলেন আমার অবস্থা কাহিল, তখন বললেন, 'পীরের অবস্থা খারাপ তো হবেই, মুরিদের অবস্থাই ভালো যাচ্ছে না।' তিনি দিনাজপুরের তৎকালীন এমপি আমিনুল ইসলামকে ডাকলেন। তাকে বললেন, 'তোমার ঢাকায় যাওয়ার বিমান টিকেটটা আমাকে দাও। সেটি নিয়ে তার হাতে দিয়েই বললেন, 'রহিম সাহেবের বাসা থেকে পীর হাবিবকে নিয়ে বিমানে উঠিয়ে দিবা। চান্স টিকিট পেলে তুমিও সঙ্গে যাবা এবং তাকে বাসায় পেঁৗছে দিবা।' আমিনুল গভীর আন্তরিকতায় তা-ই করলেন।



প্রণব আর আমি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে বিদেশ সফর পাইনি। তাই প্রণব এখনো রসিকতা করে বলে, নেত্রী তো পীরকে আগেই বিমান চড়িয়েছেন। বিদেশ সফরে সঙ্গী কারা হবে তা প্রধানমন্ত্রী দেখেন না। প্রেস উইং করে। সে সময় জাওয়াদুল করিম কাউকে চিনতেন না। বেবি-শামিমরা তালিকা করতেন। এখন কে করে জানি না। তবে শাবান মাহমুদের মতো হাসিনাপাগল ভাইটি বাদ পড়লে অবাক হই। এবিএম মূসার মতো প্রবীণ সাংবাদিকের টিভি আবেদন গৃহীত হলো না! নঈম নিজাম টিভি লাইসেন্স পায় না। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিডিয়া হাউস টিভি লাইসেন্স পেল না।



ঢাকায় এসে নিশাত কবির লিজির বাসায় আমাকে পেঁৗছে দিয়ে গেলেন আমিনুল ও তার মিষ্টি স্ত্রী। লিজি আমার আরেকটি বড় বোন। তার স্বামী প্রকৌশলী মহসিন ফারুক ফিরোজ দিলদরাজ মানুষ। এই বাড়িতে আমরা বন্ধু-বান্ধবরা মিলে দিনের পর দিন খাওয়া-দাওয়াই করিনি, অসুখে-বিসুখে বার বার আশ্রয় নিয়েছি। ফিরোজ স্ত্রীকে ভয় না সমীহ করেন, এটা না বুঝলেও ভীষণ ভালোবাসেন এটা বুঝি। যাক '৯৪ সালে শেখ হাসিনার সঙ্গে কুয়াকাটা সফরে গিয়েছিলাম। তখন সাগর ফুঁসে উঠেছে। বিপদ সংকেত। ফেরি চলাচল বন্ধ। ওখানে আটকা পড়েছিলাম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায়। ওই সময় আবহাওয়া অফিস ও প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা, বিপদ সংকেত উপেক্ষা করে তিনি ঢাকায় ফিরেছিলেন আমাদের নিয়ে। পরে '৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি কুয়াকাটায় মোটেল নির্মাণ করেন। পর্যটনের চেয়ারম্যান তখন রাশিদুল হক নবা। চমৎকার তার আয়োজন। এ ধরনের লোকদের কাজে লাগায় না সরকার! '৬০-এর দশকের ছাত্রলীগ নেতা, বঙ্গবন্ধুর প্রেসসচিব ও সাংবাদিক আমিনুল হক বাদশার ভাই নবা। প্রধানমন্ত্রী পূর্ণিমার রাত সামনে রেখে গেলেন। তার উপ-প্রেসসচিব আবু তৈয়বকে দিয়ে সেই '৯৪ সালে আমরা যারা গিয়েছিলাম তাদের খুঁজে বের করলেন এবং সঙ্গে নিয়ে গেলেন। তিনি আমাদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করলেন। রাতে গান-বাজনা হলো। আল্লাহভীরু, ধর্মপ্রাণ, অসাম্প্রদায়িক শেখ হাসিনার নান্দনিক সৌন্দর্য, প্রকৃতির প্রতি গভীর প্রেম, সারাদেশের নেতাকর্মীর চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অসহায় এতিমদের আশ্রয় দেওয়ার অসংখ্য মানবিক গুণাবলীর ঘটনা নিয়ে একের পর এক সিরিজ উপন্যাস দাঁড় করানো যায়। কিন্তু শাকিলের অনুনয়-বিনয়ের জবাবে তেমন কিছু না বললেও ক্ষুদ্র বিবেচনায় নিজেকেই প্রশ্ন করেছি অনেক। তিনি যখন শুধুই বঙ্গবন্ধু কন্যা, তখন তার জন্য শুধুই আবেগ। কিন্তু তিনি যখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তখন প্রশ্ন করতেই হয়, আজকের আওয়ামী লীগ কী বঙ্গবন্ধুর সেই গণমানুষের দল আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ধারণ করে পথ হাঁটছে? গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার দল যদি আওয়ামী লীগ হয়, তবে কেন শেয়ার কেলেঙ্কারির নায়করা দুই দলের অন্দরে বুক ফুলিয়ে হাঁটে? এক ব্যক্তির হাতে কেন চলে যায় বিদ্যুৎ খাত? খালেদার আমলে দলীয় লোকদের টিভি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। আজ ক'টি খালেদার নিয়ন্ত্রণে? কোমর ভেঙেছে তারেক রহমানের। লাইসেন্স বিক্রি করে টাকাওয়ালা হয়েছে কারা? মোজাম্মেল বাবুর টিভি ছাড়া আর কোনটি দাঁড়াবে বা আওয়ামী লীগের টিভি হবে? দলের মধ্যে কেন আজ উচ্ছিষ্ট বামদের এত প্রভাব? সরকারে কেন এত বামমন্ত্রী? প্রেসিডিয়াম সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন যদি সহকর্মী সতিশ চন্দ্র রায়কে নিয়ে হুড খোলা জিপে রাস্তায় বাঁশি বাজিয়ে যান, মানুষ কী চিনতে পারবে? কিন্তু তোফায়েল-সুরঞ্জিত যদি মুখ ঢেকে হেঁটে যান অন্ধ ভিখারিও হয়তো হাতড়ে হাতড়ে চিনে ফেলতে পারেন। দলে মতপার্থক্য থাকতেই পারে, তাই বলে কেন এতগুলো নক্ষত্রের পতন? দলে বা মন্ত্রিসভায় আমু-রাজ্জাক-তোফায়েল-জলিল-সুরঞ্জিত-মান্না-সুলতান-মান্নান-আখতারদের কেন এই করুণ পরিণতি? নূরে আলম সিদ্দিকীর মতো উত্তাল ষাটের দশকের নেতা বা সৈয়দ মাজহারুল হক বাকি, আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলীদের আওয়ামী লীগে জায়গা হয় না। দেহ-মনে আজন্ম আওয়ামী লীগার মোজাফফর হোসেন পল্টু দলের উপদেষ্টা পরিষদেও ঠাঁই পান না? এ কেমন আওয়ামী লীগ! কেবিনেটে শেখ সেলিম, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের নেই? সরকার ঘিরে মানুষ আর নেতৃত্ব ঘিরে কেন আজ দলে এই হতাশা, স্থবিরতা? আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় আজ নীরব-নিথর। ধানমণ্ডির কার্যালয় গুটিকয়েকের ঝাল মুড়ির আড্ডার স্থল?



'৭৫ সালের পর দুর্গম গিরি পাড়ি দিতে, উত্তাল ঢেউয়ের বিরুদ্ধে সাঁতার কেটে যারা জীবন-যৌবন বাজি রেখে দলের জন্য সংগ্রাম করেছেন, কাজ করেছেন তারা কি আজ দলে মর্যাদা, ছায়া পাচ্ছে। সেদিন এক কর্মী বলেছেন, মুজিব সন্তানরা শেখ হাসিনার কাছে শুধু রাজনীতি করার সুযোগ চান। দল বাঁচাতে চান। তদবির বা ব্যবসা চান না। তাহলে কেন দলকে সাজানো হয় না?



আওয়ামী লীগ আজ নেতৃত্বের সমন্বয়হীন সংগঠনে পরিণত হয়েছে। জেলার নেতারা কেন্দ্র চেনে না, কেন্দ্র চেনে না জেলাকে। দলের সাধারণ সম্পাদক নিখোঁজ থাকেন। তারও দু'চারজন চামচা রাতে ঢুলু ঢুলু চোখে এসব লিখলে কথা বলতে চায়! নিয়ন্ত্রণহীন দল ও সরকারে মহাসুখে আছে কমিউনিস্টরা।



দলে সুবিধাবাদীরা স্পষ্টভাষীদের ঘায়েল করতে খুনি মোশতাকের উদাহরণ টানেন। কিন্তু প্রমাণ হয়েছে '৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত মোশতাকই বঙ্গবন্ধুর কাছে আস্থাভাজন ছিলেন। তাজউদ্দিন ছিলেন না। তাই বলি ১৫ আগস্ট দল থেকে খুনি মোশতাক মীরজাফরই হয়নি। তাজউদ্দিনও জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন আদর্শের বন্ধুর চেয়ে বড় বন্ধু কেউ নেই।



প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আপসহীন থাকায় মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে তিনি পথ চলছেন। এ কথা ঠিক বঙ্গবন্ধুর কন্যা বলেই, গণতান্ত্রিক শক্তির নেত্রী বলেই বার বার তার জীবনের ওপর হামলা এসেছে। তার জীবন নিয়ে তিনি নিজেই উদ্বিগ্ন নন, মানুষ ও তার দলের নেতা-কর্মীরা উদ্বিগ্ন। ক'দিন আগে এক আড্ডায় তার দলের তরুণ নেতা তারেক শামস হিমু বলেছেন, রমনা এলাকায় হরতালের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করতে তিনি একটি জনসভার আয়োজন করতে চান। তার এক বন্ধুর প্রশ্ন ছিল, দলে তার দায়িত্ব কি? হিমু চুপ হয়ে যান। হয়তো গুনেন অতীতে মামলা কতটা খেয়েছেন। অজয়কর খোকন বলেছিলেন, এমপি হইনি, দলের দায়িত্ব পাইনি তাতে কি, সামনে দলের বিপদ এলে রাস্তায় নামব। এনামুল হক শামিমরা বলেন, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী এটাই বড় সখ! আওয়ামী লীগ নামের দলটির লাখো লাখো ত্যাগী নেতা-কর্মীর গায়ে এখনো বুটের ক্ষত চিহ্ন। পুলিশের লাঠির দাগ, প্রতিপক্ষের হামলার দগদগে ঘা। অজস্র আওয়ামী লীগ পরিবারের দেওয়ালে ঝুলে মুজিবের ছবি। ঘরে সন্তানহারা মা, ভাইহারা বোনের কান্না। ওরা ন্যাপ থেকে আসেনি, কমিউনিস্ট থেকে আসেনি। ওরা নির্ভেজাল মুজিব সন্তান। ওরা হাসিনার ভাই। ওদের বিশাল অংশের আজ দলীয় পরিচয় নেই। নেই দলে ঠাঁই। কেন্দ্র থেকে জেলায় জেলায় দুর্যোগের কাণ্ডারিদের তালিকা কি করানো যায় না? ওরা সচল হলে আওয়ামী লীগ সচল হবে। জাগবে। তাই বলি, জাগো আওয়ামী লীগ, জাগো। এদেরকে আজ সংগঠিত করার সময়। বিপদসংকুল পথ শেখ হাসিনাকে পাড়ি দিতে হলে হাইব্রিড বলুন, লুটেরা বলুন, সুবিধাবাদী বলুন ওদের দল থেকে তাড়াতে হবে। আওয়ামী লীগকে আওয়ামী লীগারদের জন্য রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। জনগণের হৃদয় জয় করতে হবে। শক্তিশালী দল আর জনগণের অগাধ ভালোবাসাই দিতে পারে নিরাপত্তা। শাকিলকে প্রশ্ন করেছিলাম, সরকারি হজ প্রতিনিধি দলে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে কারা পাঠায়? মানুষের কাছে জবাবদিহিতা নাই করুন, হাশরের ময়দানে তো করতে হবে, না-কি! জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কারা প্রধানমন্ত্রীর অর্থহীন সফরসঙ্গী হন? এসব তো প্রধানমন্ত্রী করেন না। দলে সারাদেশে কত গরিব ধর্মপ্রাণ মুসলি্ল আছে তাদের পাঠানো যায় না? যার সামর্থ্য আছে তাকে রাষ্ট্রীয় খরচে হজে পাঠানো কতটাইবা নৈতিক। মুনতাসীর মামুন তো আলহাজ হয়ে পরিচিতও হতে চাননি। তবে কেন এটা হলো? জবাব পাইনি। বসুন্ধরার মতো সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান বিপদে পাশে দাঁড়ান। তার মতো অনেক ব্যবসায়ী পাশে দাঁড়ান। অনেক পেশাজীবী পাশে ছিলেন। এদের সঙ্গে কারা দূরত্ব বাড়াতে চায় তা চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে এত ব্যস্ত থাকতে হয় যে, তিনি তো অনেক খবর জানেন না। কোথায় কি আলোচনা হয়, কোথায় কে কার সঙ্গে তার বা তার দূরত্ব বাড়াচ্ছে তা জানেন না।



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে জনগণ তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী করেছে, সেই জনগণ থেকে তাকে সরানোর চেষ্টা চলছে। অসৎ, অদক্ষ কিছু স্টাফ, দলকানা দাস, মোসাহেব, চাটুকার, জনবিচ্ছিন্ন অযোগ্য মন্ত্রী-এমপি, সুবিধাবাদী কর্মী, উচ্ছিষ্টজীবী সুশীল, আজ্ঞাবহ রাজনৈতিক আমলা, কর্মী বিচ্ছিন্ন নেতা মিলেই এটা করছে। দলের বিপর্যয় এলে ওদের উজানে সাঁতার কাটতে হয় না। পুলিশ তাদের স্পর্শ করে না। দলকে টাকা, লোক দিয়ে সাহায্য করতে হয় না। গুলি, মামলা-হামলার শিকার হতে হয় না। এমনকি এদের অনেককে মিছিলেও যেতে হয় না। তাই আওয়ামী লীগের সব ত্যাগী নেতা-কর্মীদের আজ জেগে ওঠার দিন। দল ও তাদের নেতাকে রক্ষায় তারা আজ সংগঠিত হবে মহান নেতা মুজিবের রক্তিম পথে। সবাইকে নিয়ে তাদের নেত্রীকে বলতে হবে, মন্ত্রিসভায় রদবদল ও দল পুনর্গঠন অতীব জরুরি।



আর সরকার ভুল করলে, পথ হারালে, গণবিচ্ছিন্ন হলে, স্বৈরশাসক হলে তো সমলোচনার তীরে প্রধানমন্ত্রীকেও ক্ষতবিক্ষত হতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.