![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ট্রেন যাচ্ছে। প্রচন্ড শব্দ করে। রেল লাইনের পাশে ট্রেনের খুব কাছেই দাড়িয়ে আছে ছেলেটি। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ট্রেনের চাকার দিকে। কিছু একটা পর্বেক্ষণ করছে খুব মনোযোগ দিয়ে।
ট্রেন চলে গেল।
তবু মন্ত্রমুগ্ধের মত পাতের দিকে তাকিয়ে রইল ছেলেটি।
ঘুম থেকে উঠেই অভ্যাসের জেরে চোখ চলে গেল মোবাইলের স্ক্রিনে।ভোর চারটা ছাপ্পান্ন। সটান বসে পড়ল বিছানায়।ঘু মের লেশমাত্র নেই চোখে। হাতমখ ধুয়ে ফ্রেশ হতে সময় নিল তিন মিনিট। ঢোলা ট্রাউজার ও টি শার্ট পরতে এক মিনিট।এখনো কেউ ঘুম থেকে ওঠেনি,গেটের সবগুলো তালা খুলে বাইরে বের হল।পাঁচটা চার মিনিটে রাস্তায় পা দিল ছেলেটি।
সোজা হাটতে লাগল,যেন আগে থেকেই জানে কোথায় যেতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌছে
গেল রেল লাইন এ। এবার রেল লাইন ধরে এগোতে লাগল সোজা। চঞ্চল হয়ে উঠছে দু চোখ।
নির্জন কোন একটা জায়গা খুঁজছে চোখ দুটি। পেয়ে গেল মনে হয় জায়গাটা। বাম পাশে ক্যান্টনমেন্ট এর সীমারেখা, ডানপাশে ঘন হয়ে আসা লম্বা গাছের সারির পরেই হাইওয়ে। মোটামুটি নির্জন। তবে এই ভোরেও তিন চারটি ছেলে দাড়িয়ে আছে। দাতন দিয়ে দাঁত মাজছে আর গল্প করছে। ওদের কাছে গিয়ে দাড়ালো ছেলেটি। শান্তভাবে চলে যেতে বলল। টকটকে লাল দুটি চোখের দিকে তাকিয়ে ছেলেগুলো কি বুঝল কে জানে। নীরবে চলে গেল।
মনোযোগ দিয়ে কিছুক্ষণ রেল লাইন দেখল আবার,হতাশ মনে হলো তাকে। চারপাশে তাকালো,না আর কেউ নেই। থাকার কথাও না এত সকালে। সটান শুয়ে পড়লো ছেলেটি।
গলাটা রেল লাইনের দুটি সমান্তরাল লাইনের একটির উপর।
অপর পাশের লাইন পর্যন্ত পা পৌছায়নি। কিছুক্ষণ শুযে থেকে উঠে পড়ে ছেলেটি। কিন্তু উঠে গেল কেন? পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে আত্নহত্যা করতে চায় সে।
এভাবে বেশ কয়েকবার শুলো ও উঠে বসল সে। সম্ভবত পরীক্ষা করছে কোন কিছু। বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হলনা। ভোরের মৃদু বাতাস ভেদ করে চলে আসল ট্রেন।
লাইনের পাশে দাড়িয়ে তীক্ষ্ণ চোখে ছুটে আসা ট্রেনের দিকে তাকিয়ে আছে সে। তারপর হতাশভাবে মাথা নাড়লো। যা ভেবেছিলো তাই। ট্রেনের সামনে একটা পাত দেওয়া আছে। চাকা পর্যন্ত মাথা যাওয়ার আগেই ধাক্কা খাবে শরীর ওই পাতে। কিছু ট্রেনের ওইরকম থাকেনা। আত্নহত্যার ভাগ্যও তার খারাপ! প্রচন্ডরাগে পায়ের কাছে পড়ে থাকা এক নিরীহ পাথরকে গায়ের জোরে লাথি বসাল সে। গর্জন করে সামনে দিয়ে চলে গেল ট্রেন।
হাতে ঘড়ি নেই। পকেটে মোবাইল নেই। তাই বলতে পারবেনা কতক্ষণ ধরে সে দ্বিতীয় ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছে। তবে ততক্ষণে কড়া রোদ উঠে গেছে।
তবে না। দেখা মেলেনি দ্বিতীয় ট্রেনের।
এবার হাটতে শুরু করল রেল লাইন ধরে।
বড় বড় পা ফেলে।
থপ থপ করে পা ফেলে।
এলামেলো পা ফেলে।
অ-নে-ক-ক্ষণ।
কড়া রোদ। লাল হয়ে হয়ে আছে সদ্য তারুণ্যে পা রাখা তরুণটির মুখ।
ক্ষুদা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি।
বসে পড়ল ছেলেটি।
তারপর শুয়ে পড়ল।
গলাটা রেল লাইনের দুটি সমান্তরাল লাইনের একটির উপর।
অপেক্ষা করছে দ্বিতীয় ট্রেনের।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:৩১
আশিকুজ্জামান পিয়াশ বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রুটাস।
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:০৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমরা মানুষেরা, এই কারণে শ্রেষ্ঠ নই কারণ আমরা নিজেদের ধ্বংস করে দিতে পারি। বরঞ্চ আমরা এই কারণে শ্রেষ্ঠ যে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিজেদের আমরা ধ্বংস করি না।
কে বলেছিলেন কথাটা? সালভাদর দালি?
তবে কিছু অনুভূতি আছে, যেগুলো আত্মহত্যার চেয়ে জঘন্য।
ভাল লিখেছেন। অনুগল্প কেন, বড়সড় গল্পই একটা লিখে ফেলুন না। +
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:৩৯
আশিকুজ্জামান পিয়াশ বলেছেন: সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রোফেসর। আমরা মানুষেরা শুধু নিজেদেরকেই না, ইচ্ছে করলে অন্যকেও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। আমাদের জানা নেই আমাদের ক্ষমতা আসলে কতটা পর্যন্ত বিস্তৃত!
বড়সড় গল্প? চেষ্টা করছি। লিখে ফেলবো ইনশাল্লাহ।
৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:৫০
সোহাগ সকাল বলেছেন: সুন্দর গল্প লিখেছেন। ভালো লাগলো।
শুভ কামনা।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬
আশিকুজ্জামান পিয়াশ বলেছেন: প্রীত হলাম। শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৩৩
এবং ব্রুটাস বলেছেন: ++++++