![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চিকিৎসক, লেখক। কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, আমাদের অর্থনীতি।
আমার কাছে সব সময়ই এটা একটা ধাঁধা ছিল কেন বাংলাদেশের রোগীরা ভারতে চিকিৎসা করতে যায়? কেন বাংলাদেশের চিকিৎসকদের নামে এতো অভিযোগ? কেনই বা চিকিৎসা প্রার্থী রোগীদের বিদেশ গামী মিছিল ক্রমবর্ধমান?
এই বিষয়ে একটা ইন্টারেস্টিং আলাপ করার সুযোগ হল আমার দুই সহপাঠীর সঙ্গে। যারা বাংলাদেশে চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষিত, বাংলাদেশেও ডাক্তারি করেছে এবং এখন ভারতে ডাক্তারি করছে। এই দারুণ অভিজ্ঞতা পরিস্থিতির মূল্যায়নে কাজে লাগতে পারে জন্য ওদের এই একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলাম। দুজনেই দুই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং চিকিৎসার মান নিয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। আমি দুজনের নাম উল্লেখ করছিনা, দুজনেই ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। একজন ভারতের একটি নামকরা ক্যান্সার হাসপাতালের বোন ম্যারো ট্র্যান্সপ্লান্ট ইউনিটের প্রধান এবং আরেকজন হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।
প্রথমেই দুজন বলে নিল, "যে সাধারণভাবে পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি চিকিৎসকদের মান সর্বভারতীয় মান থেকে অনেক পিছিয়ে। তারপরেও সেটা বাংলাদেশের সার্বিক মান থেকে ভালো।" আমি জানতে চাই, ঠিক কোথায় কোথায় ভালো? কেন ভালো?
আমার হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ বন্ধু বলতে শুরু করলো।
১/ আমরা এখানে এককভাবে কোন চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেই না। হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সারে সেটা নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা একসাথে রেডিয়েশন অনকোলজি, মেডিক্যাল অনকোলজি আর সার্জিক্যাল অনকোলজি বিশেষজ্ঞ একসাথে রোগী দেখি প্ল্যান অব ট্রিটমেন্ট একসাথে করি আর রোগী এবং রোগীর সাথের মানুষকে একসাথে কাউন্সেল করি। আমরা ব্যাড নিউজ চেপে রাখিনা। যেই রোগীর ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাঁর চিকিৎসা শুরু করার জন্য উৎসাহিত করি, আর যেই রোগী ভালো হবেনা তাঁর শুধু ব্যাথা বেদনা উপশমের চিকিৎসা করার উপদেশ দেই। সেকারনেই রোগী একেকজনের কাছে থেকে একেকরকম সাজেশন পায়না। ফলে রোগী বা রোগীর মানুষ বিভ্রান্ত হয়না।
২/ রোগীর পুর্নাংগ চিকিৎসায় কত টাকা খরচ হবে সেটার ধারনা দেই। রোগীর যদি সেই আর্থিক সামর্থ্য না থাকে তবে আমরা সেই রোগীর চিকিৎসা শুরু করিনা। কারণ চিকিৎসা শুরু করে মাঝপথে থেমে যাওয়ার কোন অর্থ নেই।
এবার দুজনেই বলতে শুরু করলো। আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলো ভারতীয় চিকিৎসকদের আলাদা দক্ষতা তৈরি করেছে। যেমন সুপার স্পেসালাইজেশন। ধরা যাক একজন ক্যান্সার সার্জন বা অনকোলজি সার্জন হতে চান। তাঁকে আগে জেনারেল সার্জারিতে পৌস্ট গ্রাজুয়েশন করে তার পরে ক্যান্সার সার্জারিতে সুপার স্পেসালাইজেশন করতে হবে। এম বি বি এসের পর মোট সময় লাগবে কমপক্ষে ছয় বছর। বাংলাদেশে সুপার স্পেসালাইজেশনের এই ব্যবস্থা নেই। কেউ কেউ ব্যাক্তিগতভাবে এভাবেই সুপার স্পেসালাইজেশন করে থাকেলও প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে জেনারেল সার্জারি না করেও কেউ কেউ ইউরোলজি সার্জন হয়ে যেতে পারে। এবং সেটাই হচ্ছে। যেমন বাংলাদেশে মেডিসিনে স্পেসালাইজেশন না করেও যে কেউ বক্ষ ব্যাধি বিশেষজ্ঞ হয়ে যেতে পারেন। এর ফলে যেটা হয়; সেটা হচ্ছে সুপার স্পেসালাইজেশনের সুফল বাংলাদেশের রোগী বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই পায়না। পৃথিবীর কোন দেশে এভাবে কেউ সুপার স্পেসালাইজেশন ডিগ্রি নিতে পারেনা, বাংলাদেশ ছাড়া। আগে মেডিসিন স্পেশালিষ্ট না হয়ে কার্ডিওলজিতে ডিগ্রি নেয়া পৃথিবীর যে কোন দেশে এখন অসম্ভব।
বাংলাদেশে এম বি বি এসের পরে রাষ্ট্র ডাক্তারদের লেখাপড়ার কোন দায়িত্ব নেয়না। যারা সরকারি চাকরিতে ঢুকল তারা বাধ্যতামূলক দুই বছর গ্রামে কাটানোর পরে পৌস্ট গ্রাজুয়েশনে ঢোকার সুযোগ পায়। আর ভারতে যারা নিজস্ব মেধায় পৌস্ট গ্রাজুয়েশনে ভর্তির সুযোগ পায় তাঁরা মাসে ভারতীয় টাকায় ৫০ হাজার রুপি ভাতা পায়। তাই লেখাপড়া ছাড়া আর কোন কিছুর চিন্তা করতে হয়না তাঁদের। আর বাংলাদেশে বেসরকারি ডাক্তাররা রাত্রে নাইট ডিউটি করে সকালে পৌস্ট গ্রাজুয়েশনের ক্লাস করতে যায়। দুই জনের আউট কাম তো একরকম হবেনা।
ভারতে সদ্য পাশ করা ডাক্তার যদি একটা যে সে ক্লিনিকেও কাজ করে তবে তাঁর বেতন হয় মাসে ৪০ হাজার রুপি। বাংলাদেশে কোথাও সদ্য পাশ করা ডাক্তার এই বেতন পায়না। আমার পাওয়া তথ্য যদি সঠিক হয়ে থাকে তবে বাংলাদেশী মুদ্রামানে ভারতীয় চিকিৎসকদের এক তৃতীয়াংশ টাকা বেতন পায় বাংলাদেশের সদ্য পাশ করা মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েটরা।
ভারতে মেডিক্যাল এডুকেশনের কোয়ালিটি কন্ট্রোল আরেকটা বিষয়। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ গুলোকেও দুই বছরের জন্য মাত্র ছাত্র ভর্তির অনুমতি দেয়া হয়। দুই বছর পরে আবার ইন্সপেকশন হবে, সেই ইন্সপেকশনে কোয়ালিফাই করলে আবার পরবর্তী দুই বছরের জন্য ছাত্র ভর্তির অনুমতি দেয়া হবে। ভারতে অনেক নামকরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ভর্তির অনুমতি মাঝে মাঝেই বাতিল হয়ে যায়।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে ভারতের ডাক্তারদের অ্যাকাউন্টেবিলিটি। ভোক্তা অধিকার সেখানে রাষ্ট্র দারুনভাবে সংরক্ষণ করে। চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে রাষ্ট্র রোগী বান্ধব অবস্থান নেয়, ফলে চিকিৎসকেরা একটা নিয়ত চাপের মধ্যে থাকে এবং নলেইজ আপ ডেইট থেকে শুরু করে ও অতি সতর্কতার সঙ্গে রোগীর চিকিৎসা চালায়। আমার সেই বন্ধুদের হাসপাতালে সেই সময়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে চলমান মামলা ছিল ১১ টি। একটি হাসপাতালেই এই সংখ্যা। সারা ভারতে তাহলে কতগুলি? বাংলাদেশে চিকিৎসা অবহেলায় স্বাধীনতার পরে মাত্র একজন চিকিৎসক শাস্তি পেয়েছে, তাও একজন চাকমা চিকিৎসক। সবচেয়ে ক্ষমতাহীন সম্প্রদায়ের মানুষ, তাই শাস্তি দেয়া সহজ। ভারতে প্রত্যেক বছর অসংখ্য চিকিৎসক শাস্তি পায়।
শেষে আমার বন্ধুটি কয়েকদিন আগেই পাওয়া রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের একজন প্যাথলজির অধ্যাপকের দেয়া লিম্ফোমার রিপৌর্টের কথা জানালো। তিনি আমাদের দুজনেরই শিক্ষক ছিলেন। তিনি এফ এন এ সি করে লিম্ফোমা বলে রায় দিয়েছেন। আমার বন্ধুটি বলল, “ স্যার এটা জানেন না যে এফ এন এ সি করে লিম্ফোমা ডায়াগনোসিস করা যায়না, ইম্মিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি করতে হয়, এটা আমি মানতে পারিনা। স্যার কে এই কথা কে বুঝাবে?”
আজকের দিনে কোন মানুষ বদ্ধ দুনিয়ায় বাস করেনা। সারা পৃথিবী তাঁর জন্য খোলা। ইন্টারনেট উন্মুক্ত করে দিয়েছে তাঁর সামনে পুরো পৃথিবী। সে নিজেই বিচার করে নিতে পারবে সেরা চিকিৎসাটি সে পাচ্ছে কিনা? বিন্দুমাত্র সন্দেহ দেখা দিলে সে আর সেই চিকিৎসকের কাছে ফিরেও আসবে না। এই হতাশা জনক অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশে চিকিৎসা শিক্ষার এবং সাথে সাথে চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে হবে। আর সেটা না পারলে রোগীর বিদেশ মুখিন মিছিল ঠেকানোর সাধ্য কারো নেই।
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: আপনার কথার সাথে একমত শিশির খান।
২| ২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ২:৩৭
গাজী সুবন বলেছেন: আমরা এখানে এককভাবে কোন চিকিৎসা
সিদ্ধান্ত নেই না। , ফলে রোগী বা রোগীর মানুষ
বিভ্রান্ত হয়না।এটা আমাদের এখানে খুবই দরকার,আশা করি আমাদের এখানেরও উন্নতি হবে,অন্যদেশমুখিতা কমবে
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৩| ২৩ শে মে, ২০১৫ ভোর ৬:০৯
সাঈদ মোহাম্মদ ফাহিম আবরার বলেছেন: ভাই এখানে সেই ছোটকাল থেকে শিক্ষা দেওয়া হয় ডাক্তার হতে হবে। কেন হতে হবে??কেন আবার ডাক্তারীতে অনেক টাকা পয়সা। সকালে পয়সা,বিকালে পয়সা,সন্ধ্যায় পসা,হাগলে পয়সা,ডাক্তারে মুতলেও পয়সা।কিন্তু আমাদের বেশিরভগ এম বইঈ বি এস ডাক্তার যে প্রেস্ক্রাইব করেন দেখবেন একজন ফার্মেসীওলাও একই প্রস্ক্রাইব করে। তাহলে তাদের ডাক্তার হইয়া কি লাভটা হইল?লাভ?অইযে সকালে টাকা,বিকালে টাকা
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: ঠিক বলেছেন আবরার, এটা সত্যই দুঃখজনক অভিজ্ঞতা। চিকিৎসকদের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। সেটা না মিটলে হতাশা জাগে।
৪| ২৩ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৯
আগুনে পাখি বলেছেন: স্যার, ভালো লিখেছেন। ভারতের ডাক্তারদের মধ্যে এই পেশাদারিত্বটা আছে, যেটা আমাদের মধ্যে খুবই কম নেই বললেও ভুল হবে না।
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৮
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আগুন পাখি।
৫| ২৩ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:০৩
আলম৪৩৪ বলেছেন: গত ফেব্রুুয়ারীতে আমার এক কলিককে নিয়ে চেন্নাই গিয়েছিলাম উন্নততর চিকিৎসার জন্য, কারন বাংলাদেশের দুজন বিশেষভাবে (কি বলব জানিনা) ডাক্তার বলেছিল রোগির লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। অথচ চেন্নাই পরীক্ষার পর সেরকম কিছুই পায়নি, কিছু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
বাংলাদেমের ডাক্তারের কথা কিছুটা রোগী শুনে অর্ধ মৃত অবস্থায় হয়ে গিয়ে ছিল এখন মোটামুটি সুস্থ আছে।
এই আমাদের চিকিৎসার অবস্থা।
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: এমন অভিজ্ঞতা মনে হয় বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেরই হয়েছে। বড়ই দুঃখজনক।
৬| ২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭
স্পেলবাইন্ডার বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:২০
পিনাকী ভট্টাচার্য বলেছেন: ধন্যবাদ স্পেলবাইন্ডার মন্তব্যের জন্য
৭| ২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৭
সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন:
আপনার আপত্তি না থাকলে ফেসবুকে শেয়ার দেবো।
৮| ২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬
ভ্রমনবিলাসী বালক বলেছেন: আপনার কিছু পয়েন্ট যুক্তিসঙ্গত। তবে আমার কয়েকটা কথা আছে
১)সবার আগে কর্মস্থলে ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। ভুল চিকিৎসা হইসে কি হয় নাই সেইটা যদি সাংবাদিক আর রোগীরা বলে দেই তাইলে মেডিকেলে কি পাচ বছর ঘোড়ার ঘাস কাটলাম।
২)ডাক্তারদের আইনের আনা উচিত। কেউ আইনের উর্ধে নয়। এই ব্যাপারে বাইরের দেশগুলার আদলে মেডিক্যাল বোর্ড টাইপের কিছু করা উচিত। রোগী যদি সার্ভিস নিয়ে সন্তুষ্ট না হয় তবে আপিল করতে পারবে।
৩) আর সেবার নামে ক্লিনিকগুলা যে গলাকাটা ব্যবসা করতেসে সেইটা সরকারকেই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডাক্তারদের এই ক্ষেত্রে দায় অনেক কম। টাকার পরাই পুরোটাই যায় মালিকের পকেটে।
৪)এম্বিবিএর এর পর আমদের দেশের ডাক্তাররা যে পরিমাণ সংগ্রাম করে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন করেন সেটা নিয়ে খুব কম লোকের ধারণা আছে। ব্যাপারটা একটা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা হলে ডাক্তার,রোগী দুইপক্ষের লাভ। খালি পেটে অনাহারী করে আপনি যদি সেইমানের সার্ভিস চান তাইলে কেমনে হবে??
৫)মেডিক্যাল এডুকেশনের কোয়ালিটি কন্ট্রোল নিয়ে বলার কিছু নাই।এইটার ফল স্বাস্থ্যখাতের সবাইকে ভগ করতে হবে।
৬)স্বাস্থ্যখাতের পলিটিক্স নিয়ে আর কিছু বললাম না। সর্ষের মধ্যে ভুত।
৭)সর্বোপরি স্বাস্থ্যখাত পাল্টাতে হলে পারস্পরিক দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ডাক্তার/রোগি/সরকার তিনপক্ষকে একসাথে কাজ করতে হবে।
ধন্যবাদ।
৯| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১০
ফরহাদ রেজা যশোর বলেছেন: দারুন লেখা। ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: Nice post. ++
১১| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১:২৪
বাংলাদেশী তাজ বলেছেন: [link|http://asiancorrespondent.com/133015/indian-physician-says-hed-rather-his-child-become-a-pole-dancer-than-a-doctor/|view this link
Indian doctors arent in good shape either
১২| ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:০৫
মুশারিয়ার বলেছেন: কথা গুলো খুব ভুল নয়... আবার যেভাবে শুধু আমাদের ডাক্তার - এডুকেশন ব্যবস্থার দোষ দেওয়া হচ্ছে সেটাও ঠিক নয়... এখানে আমাদের রুগী এবং জনগনও খুব সুবিধার কিছু নয়...
একবার একজন ডাক্তার আমাকে তার হাসপাতালে (সরকারী) দুপুরের লাঞ্চ খাওয়ানোর দাওয়াত দিয়েছিল... সকাল ৭টা থেকে ২টা অবধি তার ডিউটি ছিল... আমি আসছি আসছি করতে করতে বিকেল ৫.৩০ নাজার পরে ক্ষুধায় আর না পেরে আমি নিজেই বাইরে থেকে ২ প্যাকেট বিরানী কিনে আনি... ৬টার দিকে ভেতরের একটা রুমে সে আমাকে নিয়ে খেতে বসলে... কয়েক মিনিটের মধ্যে হুড়মুড় করে লোকজন ঢুকে পড়ে... তাদের কথা রুগী মারা যাচ্ছে আর ডাক্তার এখানে খাচ্ছে... শুধু মহিলা ডাক্তার হওয়ার কারনে সে মারের হাত থেকে বেচে যায়... এই হল আমাদের রুগীর আর জনগনের অবস্থা... এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য আমরা কতটুকু সেটাও ভাবার বিষয়...
আমার নিজের বড় ভাই ডাক্তার (সার্জিক্যাল অনকোলজি) হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে তার সাথে দেখা করতে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থার যে প্রক্রিয়া দেখি এবং আমাদের মেডিক্যাল এডমিনিস্ট্রেশন এর যে হাল তাতে ডাক্তারদের এর চেয়ে ভালো কিছু করাটা সহজ কিছু নয়... তবে রুগীদের সাথে তার আচরন... রুগীদের অধিকার নিয়ে তাদের সচেতন করা, সময় নিয়ে তার নিজের সচেতনতা সব মিলিয়ে আমার মনে হয় এদেশেও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো হবে...
সাড়ে চার বছর ইন্ডিয়াতে থাকে ২ বার নিজে হসপিটালাইজড হওয়া এবং অসংখ্য বার বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রুগীদের সাপোর্ট দিতে যেয়ে দেখেছি এদেশের ডাক্তারদের যেমন সমস্যা আছে, এদেশের রুগীদেরও কম সমস্যা নেই...
বিনা পয়সায় তাদের সাহায্য দিতে গেলে আমাদের ধান্দাবাজ বলে মনে করেছে, আকারে ইংগিতে সেটা বুঝিয়ে দিয়ে ভাগিয়ে দিয়েছে... পরের ভারতীয় বা কখনও বাংলাদেশী দালালদের কাছে সর্বশান্ত হয়ে দেশে ফেরত আসার ভাড়ার জন্য আমাদের কাছে হাত পাতার নমুনাও কম নেই...
১৩| ২৪ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:০৫
অমি আজাদ বলেছেন: আমাদের ডাক্তাররা টাকা টাকা টাকা ছাড়া কিছু চিন্তা করতে চায়না। সেলফ ডেভলপমেন্ট করে রুগীদেরকে গিনিপিগ বানিয়ে, সম্মিলিত আলোচনা বা গবেষণার মাধ্যমে না।
১৪| ২৪ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১২
নয়ন বিন বাহার বলেছেন: দারুন একটা বিষয় সামনে এনেছেন পিনাকী ভাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৫| ২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:০১
পাজল্ড ডক বলেছেন: দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে,একটা ভয়াবহ ম্যাসাকার না হওয়া পর্যন্ত যেমন আমাদের টনক নড়ে না তেমনি হতে যাচ্ছে মনে হয়।
কোথাও কোন নিয়ন্ত্রণ নাই,না অসৎ ডাক্তার,না অশিক্ষিত/কুশিক্ষিত জনগন( যারা কিছু হলেই বলে ডাক্তার কসাই ব্লা ব্লা...)।
১৬| ২৬ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:০০
বকরিমিডিস বলেছেন: একটা চমৎকার স্টাডি। লেখকের লেখা, পাঠকের মন্তব্য, সব মিলিয়ে একটা অসাধারন প্রচেষ্টা।
এটার উপরে ভিত্তি করে নিজেদেরকে সংশোধনের মাধ্যমেই আমরা সম্মুখপানে এগিয়ে যেতে পারবো, ইনশাআল্লাহ্।
চলুন, আমরা যেখানে যে অবস্থায় আছি সেখান থেকেই যাত্রা শুরু করি। সবাইকে সচেতন করতে কাজ শুরু করি।
১৭| ২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩
হারুন মোঃ শাহেদ বিন নঈম বলেছেন: ঢাকা মেডিকেলে নবজাতক চুরির পর পরিচালক বলেছিল এতগুলো স্টাফের পেছনে ঘুরে ঘুরে কে কি করছে সেটা দেখা সম্ভব না। এই হচ্ছে তার মানসিকতা। নবজাতক চুরি যে কত বড় একটা অপরাধ সেটা তার কথা থেকে কিছুই বোঝা যায় না। আমি যদি এই ভুক্তভুগি হতাম তাহলে খুন করে ফেলতাম।
যাইহোক, ভোক্তা অধিকারের যে কথা বলা হয়েছে সেখানেই বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। সরকার ধনীবান্ধব কাজেই সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীদের কোন অভিযোগ তারা গুরুত্ব দেয় না। বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরাও বিত্তশালি হওয়াই তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেয়া হয়না।
আমার এক ছোট ভাইয়ের কাছে শুনেছি একজনের পেটে প্রচণ্ড ব্যাথা হত। বাংলাদেশে কয়েক জায়গায় দেখানোর পর তাকে বলা হয় পেটে টিউমার হয়েছে, অপারেশন করতে হবে। পরে তারা ভারতে যায়। ভারতের কোথায় সেটা এখন মনে পড়ছে না। তবে পশ্চিমবঙ্গে না এইটুকু মনে আছে। সেখানে তার ডায়াগনস্টিক টেস্ট করার পর ডাক্তার তাকে কয়েকটা অসুধ দেয় এবং অপেক্ষা করতে বলে। কিছুক্ষণ পরে তার টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে...
ডাক্তাররা পরে বলে যে কোন টিউমার নায়। পেটের ভেতর নাকি মল জমাটবাঁধা অবস্থায় ছিল তাই পেটে ব্যাথা হত। এরকম সম্ভব কিনা জানিনা তবে সে সেখান থেকে সুস্থ হয়েই ফিরেছে এবং বাংলাদেশের চিকিৎসার প্রতি তার আস্থাহীনতা বেড়েছে। ভবিষ্যতে সে তার আশেপাশের মানুষকে অবশ্যই বাংলাদেশে তার যে ভোগান্তি হয়েছে সেটা বলবে এবং ভারতে যেতে উৎসাহিত করবে।
১৮| ২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৫০
হারুন মোঃ শাহেদ বিন নঈম বলেছেন: Indian post graduate medical course duration is 3 years and ours is 5 years. This extra 2 years are for general surgery in case of an urologist or surgical oncologist, the curriculum is made in that way. Moreover, lots of Bangladeshi doctors are having FCPS General surgery/ medicine than a 2 year course of MS/ MD.
১৯| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
সুবির চৌধুরী বলেছেন: নিজের দুর্বলতাকে ডাকার জন্য অনেক যুক্তি দেয়া যায়। দুর্বল দের যুক্তির অভাব হয় না।
আমি বড় কোনো রুগের কথা বলছি না। খুব ছুট রুগের কথা বলছি। ছুটো রুগের বড় ডাক্তার এর treatment এর কথা বলছি। আমি খুব কম ডাক্তার এর কাছে যাই। যে কয়বার গিয়েছি মনে হয় না খুব ভালো অভিজ্ঞতা পেয়েছি।
আমার দুই আঙ্গুলে একবার জিন জিন করা শুরু করলো। গেলাম মেডিসিন স্পেশালিস্ট আর কাছে (প্রফেসর)। আমি বললাম আমার ধারণা আমার হার্ট অসুখের কোনো লক্ষণ হতে পারে। তিনি দেখে বললেন না হার্ট এর কোনো প্রবলেম নয়। আমি বললাম তাহলে ওষুধ লাগবে না। উনি বললেন ৩ তা ওষুধ দিয়া দেই। দিলেন তিনটা, তারপর বললেন আরেকটা দিয়া দেই ভালো হবে। তাও দিলেন। আমি একটাও ওষুধ কি নাই তারপর ওই প্রবলেম তার কাউসে খুঁজে বার করে কাউসে তা রিমুভ করেছি ভালো হয়ে গেছে।
একজন অল্প শিক্ষিত রুগী নিয়া গেলাম প্রফেসর এর কাছে। অল্প শিক্ষিত রা সব সময় ওষুধের উপর নির্ভর থাকতে চায় আর সবসময় নিজেকে রুগী ভাবতে পছন্দ করে। রুগী বললেন যে তিনি ঘুমাতে পারেন না মানসিক চাপের কারণে। মানসিক চাপ সবার থাকে, মানুষ যখন হয়েছে চাপ থাকবেই। আর এই চাপ থেকে সে মানুষ হবার শিক্ষা পাবে। যাই হোক, উনি দিয়ে দিলেন মানসিক শান্তির জন্য ওষুধ। রুগী ৪/৫ টা করে দৈনিক খাওয়া শুরু করলো। ইটা না হয় মানা গেল। ওই রুগী আরেকদিন বললেন যে তিনি গুমাতে পারেন না। আমি বলতে যাচ্ছিলাম যে ওটা ঘুমের এন্ভিরমেন্ট তৈরী না হবার কারণে ও আরো কিছু কারণ। উনি আমাকে থামিয়ে বললেন "সব ডাক্তার হবেন না"।
এই সাভাবিক ছুটো জিনিস গুলোর জন্য তো ১০/১২ তা ডিগ্রী এর দরকার নাই। আর ডিগ্রী ছাড়া যে মানুস talented হতে পারে না সেটা টিক না। কোনো profession দক্ষ হবার জন্য দরকার পড়া (এই পড়া টা হবে মন থেকে, ডিগ্রী অর্জনের পড়া নয়, মন দিয়া এক লাইন একবার পড়লে ডিগ্রী নেবার জন্য ১০০০ বার পরার সমান), ধর্য, একাগ্রতা, আন্তরিকতা, জানার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া, profession কে পছন্দ করা ইত্তাধি।
২০| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:২০
সুবির চৌধুরী বলেছেন: ডিগ্রী আমাদের টোটাল প্রয়োজনের বড়জোর ১/২% পার্সেন্ট গেয়ান দিতে পারে। ইটা মূলত বেক্তির উপর নির্ভর করে। বেক্তির উপর যখন শিক্ষা নির্ভর করে তখন ডিগ্রী এর কতটুকু প্রয়োজন? যে মার্কিন শিক্ষা দুনিয়ার সেরা শিক্ষা ধরা হয় সেটা নিয়া এখন প্রশ্ন করার শুরু হয়েছে।
ডিগ্রী অর্জনের জন্য শিক্ষা টা প্রকৃত শিক্ষা নয়। প্রকৃত শিক্ষা হলো কেমনে জানতে হয় টা জানা।
২১| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:২৭
সুবির চৌধুরী বলেছেন: বাংলাদেশের রিপোর্ট ভুল আসে ইটা টিক আছে। কে কত টাকা পেল সেটা দিয়া তো profession এর দক্ষতা যাচাই করা টিক না। আজ কম পাইলে কালকে যখন দক্ষ হবে তখন বেশি পাবে। মানুষের চাহিদার শেষ নেই। যে ইন্ডিয়ার ডাক্তার এর বেতনের কথা বলছেন সেই বেতনে দেখেন ওরা সন্তুষ্ট নয়। যত দিবেন তত চাহিদা বাড়বে। এটাও খুব বড় যুক্তি হতে পারে না।
২২| ২২ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:২৮
সুবির চৌধুরী বলেছেন: আজ ১০ লক্ষ্য টাকা একজন পাইলে কালকে যদি দেখে আরেকজন ১১ লক্ষ্য পাচ্ছে তখন তার মনে অসন্তুস শুরু হবে।
২৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন!
আমদের দেশের ডাক্তারদের ব্যবহার চরম পর্যায়ের খারাপ...এরা রোগীকে কুকুর-বিড়াল জ্ঞান করে! ভাবে তারা বাদে রোগীরা সব মূর্খ! রোগী কেবল তাদের টাকা কামাইয়ের উৎস...! যতদিন রোগী অসুস্থ থাকবে ততদিন তো তার ইনকাম!
অপরদিকে, ভারতীয় ডাক্তারদের শুধুমাত্র ব্যবহারের করণেই রোগী অর্ধেক সুস্থ্য হয়ে যায়...এটাই বাস্তবতা!
২৪| ২৫ শে জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১২
ঢাবিয়ান বলেছেন: পোস্টে ++++ । ২০১৫ সালে লিখেছিলেন কেন কেন বাংলাদেশী রোগীরা ভারতীয় চিকিৎসকের চিকিৎসায় অধিকতর সন্তস্ট হয়। ২০২৩ এ এসে যেই দুরাবস্থা হয়েছে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবার তাতে মনে হচ্ছে এখন আর জটিল অসুখ নয়, বাচ্চা ডেলিভারী করাতেও মানুষ ইন্ডিয়া চলে যাবে।
২৫| ২৫ শে জুন, ২০২৩ রাত ৮:০১
এইযেদুনিয়া বলেছেন: +++
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ২:২০
শিশির খান ১৪ বলেছেন: বাংলাদেশে সরকারী হাসপাতাল থেকা নবজাতক শিশু চুরি কিন্তু অনেক পুরানো ঘটনা। হাসপাতালে গেলে তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী , দালাল ,ফার্মাসিটিকাল কোম্পানির এজেন্ট দের ধান্দাবাজিতে যে কেউ পাগল হওয়া যায়। এইতো কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম এর একটা মেডিকেল কলেজের ডাক্তাররা সবাই রুগী দেখা বাদ দিয়া রাস্তায় দারায়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিছে। সব চে দুখের বিষয় ডাক্তাররা রোগীদের সাথে যে আচরণ করেন তা তো খুব দুঃখজনক।আসলে মানুষের সাথে আচরণ যাদের এত খারাপ তাদের এই মহৎ পেশাতে না এসে অন্য কিছু করাটাই উত্তম।