নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম। অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার

আমি জাতিস্মর। সপ্তমবার মানব জন্ম, অষ্টমবার মানব জন্ম নিয়ে আবার পৃথিবীর বুকে ফিরবো। সীতারাম নন্দী(১ম), কৃষ্ণকান্ত নন্দী(২য়),কাশিমবাজার রাজা কৃষ্ণনাথ রায়(৩য়),বিজয়কৃষ্ণদুলাল পাল(৪র্থ),হরিদাস মুখার্জী(৫ম),রমেশ সাহা(৬ষ্ঠ),প্রদীপ হালদার(৭ম)।

প্রদীপ হালদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিবশক্তির মহিমা-ঈশ্বর কোথায় আছে?

১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৪



শিবের পূজা করার সময় হয়ে গিয়েছে। তথাপি রাজা এসে উপস্থিত হন নি। পুরোহিত গুরুদেবের কাছে জানতে চাইলেন তিনি এখন কি করবেন? গুরুদেব বললেন পূজা করুন, পূজা বন্ধ রাখা যাবে না। পূজা শেষ হলো। গুরুদেব বললেন, মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিতে। মন্দিরের দরজা বন্ধ হলো।

আর তখনই রাজা এলেন। পুরোহিতকে বললেন মন্দির খুলে দিতে, তিনি আবার পূজা করবেন। পুরোহিত দরজা খুললেন না। রাজা রেগে গেলেন। তখন গুরুদেব রাজাকে বললেন, পুরোহিতের কোন দোষ নেই, সব দোষ আমার।

তখন রাজা বললেন, পূজা যদি আমি করতে না পারি তাহলে আর মন্দিরের দরজা কোনদিন খোলা হবে না।

গুরুদেব বললেন,শিবের মন্দির সকলের জন্য। এভাবে বন্ধ রাখা যায় না।

রাজা আরও রাগান্বিত হয়ে গুরুদেবকে বললেন, আপনি বেদ উপনিষদ পড়েছেন। আগামীকাল রাজসভায় এসে আমার তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেবেন। উত্তর ঠিক হলে তিনি নিজেই শিব মন্দিরের দরজা খুলে দেবেন।

ঘরে ফিরে গুরুদেব চিন্তায় মগ্ন। রাজার প্রথম প্রশ্ন-ঈশ্বর কোথায় থাকে? দ্বিতীয় প্রশ্ন-ঈশ্বর এখন কোন্‌দিকে তাকিয়ে আছে? আর শেষ প্রশ্ন-ঈশ্বর এখন কি করছে?

গুরুদেবের স্ত্রী গুরুদেবকে বললেন,কি হয়েছে? গুরুদেব কিছুই বলতে চাই না। গুরুদেবের নাতি এসে দাদুকে বললো, দাদু তুমি চিন্তা করো না। আগামীকাল আমি যাবো।

দাদু জানে তার নাতি নিতান্ত দশ বছরের বালক। এত জ্ঞান তার ভেতর থাকবে কি করে। তবু দাদু নাতির কথায় রাজি হলো।

রাজসভা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজা সিংহাসনে বসে আছেন। মন্ত্রী,সেনাপতি সবাই বসে আছেন। রাজা উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। সময় চলে যাচ্ছে। তবু গুরুদেবের দেখা নেই। এমন সময় একজন অনুচর এসে রাজাকে বললেন-গুরুদেবের নাতি আপনার সাথে দেখা করতে চাই। রাজা বললেন,নিয়ে এসো।

নাতি রাজার নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে রাজসভায় প্রবেশ করলো। নাতি জানালো-তার দাদুর শরীর খারাপ। তাই সে এসেছে রাজার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে।

রাজা তার মন্ত্রী, সেনাপতিকে বললেন এই বালকের মধ্যে কোন জ্ঞান আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখে নিতে। গুরুদেবের নাতি রাজি হলো। একজন প্রশ্ন করলেন-সূ্র্য ওঠার কারণ কি? নাতি উত্তর দিলো-ব্রক্ষ্ম। সূর্য অস্ত যায় কেন? উত্তর এলো-ধর্ম। সত্য কি? উত্তর এলো-রাজা হরিশ্চন্দ্র। সম্পূর্ণ কি? উত্তর এলো-শিবশংকর।ইত্যাদি ইত্যাদি।

রাজা খুশি হলেন।

রাজা বললেন-তার তিনটি প্রশ্ন। ঈশ্বর কোথায় থাকে? ঈশ্বর এখন কোন্‌দিকে তাকিয়ে আছে? ঈশ্বর এখন কি করছে?

নাতি এই প্রশ্ন শুনে রাজাকে বললেন, একটা পায়রা আর চাকু নিয়ে আসতে। তারপর রাজার সব প্রশ্নের উত্তর দেবে।

রাজা বললেন,পায়রা আর চাকু নিয়ে কি হবে? নাতি জানালো চাকু দিয়ে পায়রার মাথা কেটে আলাদা করবো।

রাজা বললেন সেটা তো পাপ কাজ।

তখন নাতি বললো,ঈশ্বর সব মানুষের মধ্যে দয়া দিয়েছেন। এই দয়ার মধ্যে ঈশ্বর থাকে।

রাজা খুশি হলেন। রাজা প্রশ্ন করলেন,ঈশ্বর এখন কোন্‌দিকে তাকিয়ে আছে? নাতি রাজাকে একটি জ্বলন্ত প্রদীপ দেখিয়ে বললেন,প্রদীপের শিখা কোন্‌দিকে আছে? রাজা বললেন-চতুর্দিকে। নাতি তখন রাজাকে জানালো,ঈশ্বর চারদিকেই তাকিয়ে আছে।

রাজা খুশি হলেন। রাজা বললেন-ঈশ্বর এখন কি করছে?

নাতি রাজাকে বললেন-এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে তাকে রাজ সিংহাসনে বসতে দিতে হবে।

রাজা সিংহাসন ছেড়ে দিলেন। মন্ত্রী এবং সেনাপতি রাজাকে বললেন-সিংহাসনে গুরুদেবের নাতিকে বসতে দেবেন না।

রাজা সে কথা শুনলেন না। রাজা উঠে দাঁড়ালেন। নাতি সিংহাসনে বসলো। নাতি রাজাকে বললেন এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে। এবার নাতি রাজার মতোন করে মন্ত্রীদের বললেন,সব প্রজাদের আমন্ত্রণ জানাতে,তারা এখানে এসে থাকবে।আর তাদেরকে বিভিন্ন মণি মুক্তা দেওয়া হবে।

এই কথা শুনে মন্ত্রীরা বললেন, হবে না।

নাতি আবার সেনাপতিকে বললেন-আমি রাজা। রাজার আদেশ অমান্য করেছে মন্ত্রীরা। ওদেরকে কারাগারে ঢোকান। একমাস খেতে দেবেন না।

সবাই চুপ।

এবার নাতি বললো- আমি ছিলাম সাধারণ বালক,আর আপনি ছিলেন রাজা। অথচ এই সময় আমি রাজা আর আপনি একজন সাধারণ লোক।

অর্থাৎ যে কোন সময় আমরা রাজা হতে পারি আবার সাধারণ লোকও হতে পারি।

ঈশ্বর এখন কি করছে? এর উত্তরে নাতি ঐ কথা জানিয়ে রাজ সিংহাসন ছেড়ে দিলো। সবাই নাতি বিদ্যাপতির জয়ধ্বনি দিতে থাকলো। আর তখন গুরুদেব রাজসভায় ঢুকলেন।

এরপর নাতি তার দাদুর পাণ্ডুলিপি নিয়ে দাঁড়িপাল্লায় রাখলো। রাজাকে বললেন অন্য পাল্লায় সোনার জিনিস রাখতে। কিন্তু পাল্লা আর সমান হয় না। তখন নাতি দাদুর কোমরে রাখা একটা তুলসী ও বেলপাতা নিয়ে পাল্লায় রাখামাত্র পাল্লা দুটি সমান হলো। রাজা বললেন-তুলসী,বেলপাতার এত শক্তি? নাতি জানালো-হ্যাঁ।

রাজা গেলেন শিবের মন্দিরের দরজা খুলতে। চাবি দিয়ে খুলতে পারলেন না। গুরুদেব চেষ্টা করলেন।কিন্তু পারলেন না। গুরুদেব হতাশ হয়ে পড়ে গেলেন। মন্দিরের দরজা আপনা থেকেই খুলে গেলো। নাতি তার দাদুকে ডেকে তুললো।

রাজা দেখলেন মন্দির আপনা থেকেই খুলে গেলো।

এরপর গুরুদেব দেখলেন তার পাশে তার নাতি এসে বললো-দাদু আমি গ্রামে ছিলাম। এইমাত্র এলাম।

গুরুদেব হতবাক। তার অন্য পাশে তার নাতি। তাকে গুরুদেব বললেন-তুমি কে?

নাতি বললো, আমি কে, তাহলে দেখো দাদু-এই বলে শিব মন্দিরে নাতি ঢুকে শিবের মধ্যে বিলীন হয়ে গেলো।

গুরুদেব হা হুতাশ করতে লাগলেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.