নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস– আঁধারে শশী (পর্ব-৩)

২১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০


(পাঁচ)
বাসটি শহর ছেড়ে গায়ের পথে সোজা ঢাকার দিকে একটানা যাচ্ছে। বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মন ও যাচ্ছে ঢাকার পথে, সাথে সাথে ভেসে উঠছে কামালের হৃদয় পটে শিউলির কথা। আজ কদিন হলো সোনা মনির দেখা নেই। না জানি সোনা মনি কেমন করছে। তার পাশাপাশি মনে ভেসে আসছে খালার ভাসুরের মেয়ে ফারজানার কথা। একদিনের তার আদর আপ্যায়ন মন্দ ছিলনা। তার মিস্টি কথা যতœ সহকারে তার সব ধরনের দায়িত্ব পালন দেখে মনে হয় সে তার সংসারের দায়িত্ব নিতে পুরোপুরি সক্ষম হবে। শিউলীকে যে তার মায়ের আদরে পরিপুর্ন করতে পারবে। তাকে অপছন্দ করার কোন কারন নেই। উজ্জল শ্যামলা বর্নের মাঝারী হ্যান্ডসাম চেহারা মায়াবী চোখ এমন কয়জনের হয়। মাথা ভরা চুল সুডৌল খোপা কারনা মন ভোলায়। তবে এ মেয়েটির জন্য প্রয়োজন উঠতি বয়সের একজন যুবকের। সেখানে যতটা ফারজানাকে মানাবে ততটা তার সংগে মানাবে না। বিয়ে করলে ফারজানাকে মনে হয় আমার পক্ষ থেকে অবিচার করা হবে। কারণ তার বয়স আঠার পার হল বলে। আর কামালের আঠাইশ পার হয়ে যাচ্ছে। তাই বয়সের দিক থেকে কেমন একটা বেমানান হচ্ছে।
কিন্তু খালাকে নিয়ে বড়ই বিপদ। কারন বিশ্বের দরবারে নাকি পুরুষের বয়স ধরতে নেই। যত সমস্যা হলো মেয়েদের গায়ের চেহারা ও গঠন প্রনালী নিয়ে। পুরুষ নাকি কর্মক্ষম দায়িত্বশীল বুদ্ধিমান হলেই হল। আর মেয়েদের বেলায় সুন্দরী হতে হবে স্বাস্থ্য সবল হতে হবে। আদব কায়দা কথার ভঙ্গি আরও কত কি ভাল হতে হয়। কি আর করা নিঃসন্তান খালা আম্মা। তাই তার বোনের ছেলে মেয়েকে নিজের সন্তান মনে করে সব ধরনের ঝামেলা নিয়ে টানাটানি করে। তাই তার মতের বিরুদ্ধে কিছু বললেও ভীষন দুঃখ পাবে। তাই কি করা যায় কামাল যেন ভেবে পাচ্ছে না। ভাবতে ভাবতেই যেন তার চোখে তন্দ্রার ভাব এসেছে। এমন সময় বাসটি ঝাকি দিয়ে উঠল। কামালের তন্দ্রার ভাব কেটে গেল দেখল বাসটি যেন ফাঁকা নেই। গাড়িটি যাত্রীতে বোঝাই। তার বাম পাশের সিটে একজন বুড়ো লোক বসে ছিল। দেখে তিনি নেই সেখানে বসে আছে অন্য এক লোক।
এমন সময় মনে হলো বাসটি থেমে গেল। সুপার ভাইজার বলে বসলেন শেরপুরে ২০মিনিট স্টপেজ। আপনারা ইচ্ছে করলে খেয়ে আসতে পারেন। দেখা গেল প্রায় সকলেই নেমে গেল। কামাল আবার সিদ্ধ পানি খায়, তাই বড় খালার দেয়া বোতলের পানি সে বেড় করল। তার নিকট রয়েছে হাল্কা নাস্তা। তাই হাত ধুতে গেল জানালার ধারে, কিন্তু হঠাৎ তার পাশের সিটের মহিলার দিকে চোখ পড়ল একি মহিলার চোখ দুটো তার দিকে জিজ্ঞাসু দৃস্টিতে তাকিয়ে কেন? তার চাহনি থেকে মনে হচ্ছে সে ভীষন ক্ষুধার্ত। একটু অবাক লাগল কামালের। তার মনে হল মহিলাতো ভদ্রঘরের বলে মনে হয়। তার পলকহীন দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সে বড় অসহায়। তাই জিজ্ঞাসা করল আপনি কোথায় যাবেন?
Ñঢাকায়।
Ñ সংগে কেউ নেই।
মাথা নাড়ল বোঝা গেল কেউ নেই।
Ñ কিছু খাবেন?
Ñ দোকানে যাওয়া যাবে কি? অষ্পষ্ট শব্দ বেরুল মুখ থেকে। তাতে বোঝা গেল সে ক্ষুধার্ত।
সে বাইরে ফেরিওয়ালার চা বিস্কুটের দিকে চেয়ে আছে। তাই কামাল বুদ্ধি করে তার হাতের নাস্তার প্যাকেট হতে দুটো পরাটা রেখে বাকী দুটো পরাটা ও ডিম পোচ এগিয়ে দিল মহিলার দিকে। মহিলা কামালের দিকে চেয়ে দেখল এবং নিজকে লজ্জায় কেমন গুটিয়ে নিতে চাইল। কিন্তু কামালের অনুরোধে সে হাতে নিল এবং খুব সংকোচে খেয়ে নিল। কারণ তার পেটটা ক্ষুধায় চইচই করছে। কামালের বোতল থেকে কিছুটা পানি খেয়ে নিল। পরে কামাল ফেরিওয়ালার নিকট হতে দু’কাপ চা নিয়েছে। সে চাও খেল। মনে মনে আল্লাহর নিকট হাজার শোকরানা আদায় করল। হে আল্লাহ এ লোকের মনের কালিমা দুর করে দাও এবং তার জীবনে সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কর।
এদিকে কামাল চায়ের দাম চুকিয়ে দিয়ে মেয়েটির দিকে মুখ ফিরে দেখল, সে যেন ঘোমটা দিয়ে নিজকে আবার গুটিয়ে নিয়েছে। কামাল মনে মনে ভাবল তার এ সাহায্য টুকু হয়তো নিজের আত্মীয় স্বজনকে গিয়ে বলবে। যে এক ভদ্রলোক রাস্তায় তাকে মানবিক সাহায্য করেছে। বাঙালী যুবকের মনে ভদ্রতা বোধ জেগেছে। তার মনে কোন কুলষিত নেই।
বাস আবার চলতে শুরু করল। এবার অপরদিকে সিটে বসা ভদ্রলোকদের দিকে দৃষ্টি দিল কামাল। সেখানে চলছে আসন্ন উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের ভোট সমালোচনা। সরকারের পক্ষে ও বিপক্ষে আলোচনার ঝড় উঠেছে। কামাল আলোচনা শুনে একটু মুচকি হাসল। কারণ আদার বেপারী হয়ে জাহাজের খবর নেওয়া যে কথা, আর রাজনীতি সমন্ধে আলোচনা করাও সাধারণ মানুষের তদ্রুপ কথা। সাধারণ মানুষের যেহেতু কোন হাত নেই সেখানে। তাই সরকারের এবং বিরোধী দলের সমালোচনা করে কান গরম করা ছাড়া আর কিছুই হবে না।
এক ভদ্রলোকের হাতে দৈনিক খবরের কাগজ কামাল হাত বাড়িয়ে চেয়ে নিল। বড় হেডিংগুলো দেখতে থাকল। পাতায় পাতায় শুধু ছিনতাই রাহাজানি ডাকাতি খুন খারাপির খবরে বোঝাই। ধর্ষনের এবং ধর্ষিতার খবরও রয়েছে। তার সংগে রয়েছে আমলাদের দুর্নীতি ঘুষের খবর। সরকারী অর্থ আত্মসাতের খবর। সুদখোর মুনাফাখোর কালোবাজারী নারী পাচার কারীদের খবর। আর রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতার খবর। সন্ত্রাসীদের খবরও রয়েছে মাঝে মধ্যে। হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলা, ডাক্তারদের নিজস্ব ব্যাবসা জমজমাট। গরীব রোগীদের সেবার নামে ধুকে ধুকে মৃত্যুবরণ খবরে কামালের চোখ ঝাপসা হয়ে আসল। তাই কামাল পত্রিকা ফিরিয়ে দিল। সামনের মহিলার দিকে একটু তাকিয়ে দেখল সে যেন ঘুমোচ্ছে। একটু পরেই এসে গেল যমুনা সেতুতে।
হায় কি বিশাল নদী। এ নদী আগে ফেরীতে পার হতে হত। ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরীর জন্য অপেক্ষা করতে হত। আর বন্যার সময় ঘাটের ভাঙ্গন দেখা দিলে ফেরী বন্ধ থাকত তখন যানবাহন সহ সকল যাত্রী সাধারনের কি অসুবিধাই না দেখা দিত। কামাল নিজেও মাঝে মধ্যে এর ভুক্তভুগি হয়েছে। তাই তখনকার কষ্ট তার অন্তরে আজও ভালভাবে গেথে আছে। আজ সেই নদীতে বিরাট সেতু হয়েছে। ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সে সেতু। দুপাশে বাঁধ ও বোল্ডার দিয়ে নদী শাসন করা হয়েছে। দুইতীরে গাছ পালা লাগানো হয়েছে। পিকনিক কর্নার অফিস কলোনী করে কি মনোরম দৃশ্যে সাজানো হযেছে। ভ্রমনকারীদের জন্য মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃস্টি করা হযেছে। সেতুর উপর তিনটি রাস্তা। উত্তর পার্শ্বে রেল লাইন দক্ষিণ পার্শ্বে ঢাকাগামী ও উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার পাশাপাশি দুটো পথ। মাঝখানে রয়েছে প্রায় দু’ফুট উচু ডিভাইডার। নদীতে অসংখ্য নৌকা হয়ত জেলেরা মাঝ ধরছে। বর্ষাকাল আসন্ন তাই পানি তীরের কানায় কানায় ভরা। দেখতে মনে হচ্ছে কি-মনোমুগ্ধকর অবলীলাপূর্ন এক দৃশ্য। দেখতে দেখতে কখন যেন সেতুর শেষ প্রান্তে গাড়ী চলে গেছে বোঝাই গেল না। যাক বিকেল তিনটায়। অবশেষে গাবতলীতে বাসপৌছে গেল। তখনও ঝিরঝির বৃস্টি ঝরছে।
গাবতলীতে পৌছে বড়ই বিব্রত করতে লাগল কামাল। পূর্বে থেকে বলা থাকলে হয়ত বাসার মতিনকে অবশ্য পাঠিয়ে দিত আম্মা। খালাম্মার দেয়া একগাদা মালামাল। এখন এ বৃষ্টির মধ্যে এসব নিয়ে সে কিভাবে বাসায় পৌছবে। ঢাকার রাস্তা ঘাট দেখে মনে হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টি হযেছে এর আগে। গাছপালাগুলো কেমন ঝিমিয়ে আছে।
কামাল একটা বেবী টেক্সী নিল। বেলা থাকতে বাসায় পৌছতে হবে নইলে ঝামেলা হবে। তাছাড়া গাবতলী জায়গাটিও ভাল নয়। এখানে যত সন্ডা পান্ডার আড্ডা আবার মালগুলো লাপাত্তা হয়ে যাবে শেষে। তাছাড়া ছেচ্চর পকেট মারদের পিকেটিং মারামারি তো পরেই আছে। যত তাড়াতড়ি হোক এখান থেকে যেতে পারলেই বাচা যায়।
কামাল বেবীতে মালামালগুলো গুছিয়ে তুলতে সাহায্য করলো ড্রাইভারকে। কিন্তু মাল তুলতে গিয়ে দেখতে পেল তার সামনের সেই মহিলা মালের পাশে দাঁড়িয়ে ড্রাইভারকে জিনিষপত্র এগিয়ে দিচ্ছে। অবস্থা দেখে কামাল হতবাক হয়ে গেল।
Ñ আপনি! যান নি যে? কামাল মুখের দিকে চেয়ে বলল।
Ñ কোথায় যাবো?
এ্যা বলেন কি? কোথায় যাবেন মানে?
ঢাকা কোথায় যাওয়ার জন্য এসেছেন সেখানে যাবেন।
মহিলা আর কথা বলে না। শুধু মিনতি ভরা চোখে চেয়ে থাকল কামালের দিকে। চোখ দুটো ছলছল করছে।
Ñ ও বুঝতে পেরেছি একা সাহস পাচ্ছেন না। তাহলে উঠুন যেখানে যাবেন সেখানে বলবেন নামিয়ে দিয়ে যাবো।
হাতের ব্যাগটা নিয়ে কামাল উঠে পড়ল বেবীতে, বিষন্ন বদনে মহিলা চেয়ে আছে কামালের দিকে। কামাল চেয়ে দেখে মহিলা মনে হয় কাঁদছে। কামাল বিরক্তবোধ করল। আজকাল দেশে ছদ্মবেশী মেয়ে ডাকাত ছিনতাইকারীর অভাব নেই। এ আবার কোন ঝামেলা না জানি কি করে বসে আল্লাই জানে।
মেয়েটি করুন সুরে বলল, দয়া করে আমাকে একটু আশ্রয় দিন ভাই। আমার এজগতে কেউ নেই। আল্লাই আমার একমাত্র ভরসা। আমাকে দয়া করুণ। বলেই সে ছলছল করে কেঁদে ফেলল। মেয়েটির এমন অবস্থা দেখে কামালের ভিতরটা দুর্বল হয়ে গেল।
Ñ তাই বলল আসুন।
মেয়েটি যেন দেহে প্রান ফিরে পেল। আসলে মেয়েটি আল্লাহর নিকট মনে মনে হাজার শুকরিয়া আদায় করল। হে আল্লাহ তুমি মহান তুমি দয়া না করলে হয়তবা এই লোকের মনে দয়ার উদয় হত না। হে আল্লাহ তুমি আমার ইজ্জতের হেফাজত কর।
বাসায় পৌছে বেবী থেকে মালামাল নামিয়ে নিল এবং গেটের কড়া নাড়ল।
মাহমুদা দরজা খুলে কামালকে দেখে যেন জীবন ফিরে পেলেন। বাবা তুই ভাল আছিস তো তোর খালা কেমন আছে?
কামাল সব জবাবে ভাল বলে, সে শিউলীর জন্য উতলা হয়ে উঠল। আম্মা মা মনি কোথায়?
একি বাবা বৃষ্টিতে ভিজে যে একাকার হয়ে গেছিস। তাড়াতাড়ি কাপড় ছাড় বাবা অসুখ করবে তোর।
কথা বলতে বলতে জিনিষ পত্রের দিকে তাকাতেই মাহমুদা অবাক হয়ে গেলেন। এ আবার কে দাঁড়িয়ে আছে, চেনা যাচ্ছে না। নাকি কামাল বিয়ে করেই বউ নিয়ে ফিরল। না তেমন তো মনে হচ্ছে না। তাহলে কে?
মেয়েটি শুধু হাবার মত চেয়ে আছে তাদের দিকে।
এ মেয়েটি কে কামাল? মাহমুদা আশ্চার্য হয়ে জিজ্ঞাসা করল।
কামাল মুখ খুলে কিছু বলতে যাবে তখনি কাজের বুয়া রহিমা চেচিয়ে উঠল। আরে এ দেহি কাজের বেডি লইয়া আইছে দ্যাশ থাইকা। তাইলে তো তোমার আর একজন মাতারী আইল। আমারে কি আবার ছাড়াইয়া দিবেন নি। এ্যাঃ কনছেন দেহি?
মেয়েটি বুয়ার এত চিৎকার আর রসিকতা কথায় দুর্বল হয়ে পড়ল এবং সে যেন মাথা ঘুরে মাটিতে এলিয়ে পড়ল। দম বুঝি তার যায় যায়। এক দিকে দুদিনের অনাহারী অবস্থায় শুধু বাসে কামালের দেয়া একটু নাস্তা খেয়েছে। তাই এমনিতে সে দুর্বল তন্মধ্যে এ করুক্ষেত্রে সে দিশেহারা, না জানি তার ভাগ্যে আাবার কি আছে। তাই সে মুর্চ্ছা গেছে।
কামালের আর ভিজে কাপড় ছাড়া হলো না। এ অবস্থায় কেউ হাতে পায়ে তেল মালিশ করে কেউ বা দুধ গরম করে খওয়ায়। কিছুক্ষণ এমনি ভাবে কাটল। আনেকক্ষণ পর মেয়েটি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে চোখ খুলে তাকাল। কামালের স্বস্তি ফিরে আসল। যাক বাঁচা গেল বাবা। নইলে এখনই ঝামেলায় পড়েছিল আরকি। তারপর কামাল ভাবল মেয়েটি আসলেই খুব অসহায়। তাই আশ্রয় চেয়েছে। তাকে না নিয়ে এসে রাস্তায় রেখে আসলে হয়ত সত্যি সত্যি তার বিপদ হতো আর কি। যাক সুস্থ্য হলে এ বিষয়ে ভাবা যাবে।
মাহমুদা আসলেই ধরে নিয়েছে তার বোন তার জন্য না হয় শিউলীর জন্য কাজের মেয়ে পাঠিয়েছে। এখন মেয়েটি অবস্থা দেখে তারা আর কিছু বলছে না। মেয়েটিকে রহিমা বুয়া আর আম্মা কাপড় বদলানোর ব্যাবস্থা করে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছে। এখন মেয়েটির কাছেই শুনবে আম্মা সে কে এবং কোথা থেকে এসেছে এবং কেন এসেছে? কামালের আর বলার দরকার নেই।
কামাল কাপড় ছেড়ে নিজেকে ফ্রেশ করে নিল। নিজের মেয়েকে বুকে তুলে নিয়ে আদর দিল। তারপর নাস্তা করে নিল। দুদিনের বকেয়া খবরের কাগজগুলোর পাতায় চোখ বুলালো।
কিছুক্ষণ পর মাহমুদা তার ঘরে এসে ঢুলেন। তাকে দেখে মনে হলনা সে রাগ বা বিরক্ত বোধ করছে এমন ঘটনায়। কামালের পাশে এসে বসলেন । শোন বাবা মেয়েটা তো তার নিজের নাম ভাল বলতে পারছে না শুধু বেনু বেনু অস্পষ্ট করে বলতে পারছে। তাও আবার আমতা আমতা করে বলছে। আমার বাবা ভাল লাগছে না। বড় আপা যে কেন এমন কাজ করল। কি দরকার ছিল মেয়েটিকে তোর সাথে পাঠানো। আমি এমন মেয়েকে দিয়ে কি করব বল দেখি।
একটু ইষত হেসে না মা বড় খালা পাঠায় নি। কামাল যেন একটা বিদ্যুত চমকানি দিয়ে দিল তার মায়ের মনে।
এ্যা তার মানে?
ওকে বাসে পেয়েছি মা। আমার পাশের সিটে আসতে ছিল। মাঝে মধ্যে বাস থেকে নামলে ও আমার মাল পত্রগুলো খেয়াল করতে ছিল। পরে আলাপ করে জানতে পারলেম সে বিপদে পেেড়ছে এবং এই বৃষ্টির মধ্যে আমার কাছে আশ্রয় চেয়ে বসল। তাই এই বৃষ্টির ভিতর মানবিক কারণে নিয়ে আসা আর কি।
হায় আল্লাহ একি বলছিস, সংঘাতিক কথা। পড়ে থানা পুলিশের ঝামেলায় পড়বি নাতো আবার।
সে দেখা যাবে মা। প্রয়োজনে আমি না হয় থানায় ইনফরমেশন দিয়ে রাখব। তাই বলি কি এসব কথা যেন তুমি আর আমি ছাড়া কেউ না জানে। জেনে ফেললে অনেক ঝামেলা হবে আমাদের। অতএব তুমি বল আমাদের দেশের বাড়ির আত্মীয় আর কি। শিউলী একা থাকে কিনা তাই কিছু দিনের জন্য এসেছে। তারপর দেখি কি করা যায়।
মাহমুদা বলল, আচ্ছা ঠিক আছে বাবা তাই হবে। কোন ঝামেলা যদি না হয় তবে থাক কিছু দিন। বুয়া ছাড়া আর বাসায় কেউ নেই। শিউলীকে নিয়ে একটু সময় কাটাতে পারবে বলে মনে হয়। কারণ মেয়েটিকে দেখে মনে হয়, সে শিক্ষিত ঘরের মেয়ে এবং মুখের চেহারাটা খুব মায়াবী বলে মনে হয়।
এত তাড়াতাড়ি এত বিশ্বাস করা ঠিক নয় মা। থাক না কয় দিন তারপর কি হয় কে জানে।
Ñ না বাবা মেয়েকে দেখে আমার ভালই মনে হচ্ছে।
Ñ সে দেখা যাবে মা।

(ছয়)
জুন মাস সামনে। তাই অফিসের অনেক কাজ পড়ে আছে। অর্থ বৎসর শেষ করে আবার নুতন অর্থ বৎসরের প্লান জমা দিতে হবে। বাজেট তৈরী করতে হবে। তাই সে কাজের চাপে অফিসের কাজ সেরে বাসায় ফিরতে প্রায়ই রাত করে। বাসায় ফিরে কলিং বেল টিপলে বুয়া দরজা খুলে দিল। কামাল জিজ্ঞাসা করল বুয়া শিউলী কোথায়?
ভাইজান শিউলী তো হেই বেডির লগে। হেই বেডি তো শিউলীরে জানি একবারে কিনা নিছে। একদম ছাইড়া দেয় না। তাই বুঝি- আচ্ছা তুমি যাও।
কামাল ভাবতে থাকে এরকম অবসর সময়ে মেয়েটি তার রুমে আসত এবং কতরকম প্রশ্নের মাধ্যমে বিরক্ত করত। এই অচেনা মেয়েটি এসে তাঁকে একেবারে যেন যাদু করে আয়ত্ব করে নিয়েছে। ঐ মেয়েটি ছাড়া সে আর কিছুই যেন বোঝে না। কিন্তু মেয়েটি বা কে কত দিনই বা তাকে দেখবে? হয়ত বা অচিরেই মেয়েটি চলে যাবে তখন তার কি হবে? ইত্যাদি ভাবনার মাঝে সে অস্থির হয়ে উঠে।
সপ্তাহ খানেক ধরে যে মেয়েটি তাদের বাড়িতে এসেছে কিন্তু তার কোন খোঁজ খবর হচ্ছে না। প্রতিদিন প্রতিটি খবরের কাগজে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও আজও কোন নিখোঁজ সংবাদ বা আবেদন সে বের করতে পারেনি। নিরাপত্তার বিষয়টি ভোলা যাচ্ছে না। বাড়িতে মা একা থাকেন। মেয়েটি সম্পর্কে কিছু জানা না গেলে কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে হবে নতুবা কোন অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
কামালের বন্ধু শামীম তাকে এ বিষয়ে সে খুলে বলল। শামীমও এ বিষয়টি ভেবে দেখেছে। কিন্তু সেও বুঝতে পারছে না। এ সমস্যাটি নিয়ে কি করা উচিৎ।
কিন্তু ব্যাপারটা অন্যদিকে গড়িয়ে যাচ্ছে। ধরা ছোঁয়া যাচ্ছে না অথচ পরিবর্তনটা জাষ্ট চোখে পড়ে। বাড়ি ঘরের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মাহমুদা সব সময়েই একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে থাকেন। ইদানিং তার আর সেই সমস্যা নাই। মুখফুটে চাইবার আগে হটওয়াটার বোতলে পানি ভরিয়ে কোমরে সেঁক দেবার ব্যবস্থা হয়ে যায় সহজেই। ভোরে আঁধার থাকতেই কাজের বুয়ার ঘুম থেকে ওঠার আগেই চায়ের পানি রুটি তৈরীর কাজ হয়ে যায়। যে এই কাজগুলো নিত্য করে যাচ্ছে তার কথা বা মুখ সহজে কেউ দেখছে না। সব চেয়ে যেটা খারাপ লাগছে সেটা হল যে ছোটখাটো কাজগুলো কারো আর করতে হচ্ছে না বলে সবাই আরামে ঘুমোতে অভ্যস্ত হচ্ছে। এমন কি কাজের বুয়াতো কিছুটা অলস হয়ে যাচ্ছে।
কামাল একদিন মাহমুদাকে জিজ্ঞেস করল মা মেয়েটি কি এখনও অসুস্থ্য বোধ করছে না সুস্থ্য। সেকি তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে পারতেছে। তুমি কি ওর সমন্ধে কিছু জিজ্ঞেস করেছিলে।
Ñ করেছি কিন্তু সেতো বোবা সেজে বসে থাকে কিছু বলে না। চাপাচাপি করলে কেঁদে ফেলে তাকে আর কি বলি বাবা। কিন্তু বাসার কাজ তো সে বলার আগেই করে যাচ্ছে। এমন কি দিদার দেখা শুনার কাজটিও সে করছে। দিদাতো আর আমার কাছে আসেই না ওর কাছেই থাকে। এমন কি ওকে ছাড়া কোন খাবারই আর খায় না। সে একটু নিশ্বাস ফেলে বলল, দু’একদিন দেখা যাক। হায়রে না জানি কোন মায়ের বুক খালি করে এসেছে। না জানি কোন দুখেই না এসেছে।
মায়ের কথার ধরন শুনে কামালের আর বুঝতে বাকি রইল না আসলে ব্যাপারটা কি ঘটতে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে ওর মায়ার জালে বন্দি হয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিন ডাক্তার ডেকে ওকে দেখান হয়েছিল। ডাক্তার বলেছিল অন্ততঃ মেয়েটি তিনদিন অনাহারে ছিল। এখানে এসে প্রথম তিনদিন মেয়েটি শুধু কেঁদেছে, আহাজারী করেছে অস্পষ্ট স্বরে। এখন ধীরে ধীরে অনেকটা স্বাভাবিক। শুধু মুখ ফুটে কথা বলছে না।
অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে কামাল একটু বিশ্রামের চেষ্টা করেও মেয়েটির চিন্তার কারণে হারাম তা হয়ে গেছে। সে চিন্তা করছে বাসায় ফিরে আজ একটা কিছু স্থির করতে হবে। নতুবা খবরের কাগজে বিজ্ঞাপণ দিতে হবে, যাতে তার প্রিয়জনরা খুঁজে নিয়ে যেতে পারে।
উঠানে বালতি ভরে ভিজা কাপড় হাতে এসে দাঁড়িয়েছে মেয়েটি। কিন্তু তাঁর হৃদয় জুড়ে চিন্তার ছাপ। সে ভাবছে আমি কে? আমি এখানে কেন? কেন এসেছি? আমি জানি না। ঐ ইতর প্রানীগুলোর সর্বনাশের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমি পালিয়ে এসেছি। কিন্তু এ বাড়িটা বড়ই সুন্দর। এ বাড়ির মুনুষগুলোও সুন্দর। এখানে মাটিতে নরম ঘাসের ছোয়া আছে। কিন্তু ওরা যদি ভুল বুঝে তাড়িয়ে দেয় তখন কি হবে? হঠাৎ তাঁর শরীরটা যেন শিউরে ওঠে। হাত থেকে তার বালতিটা থপ করে পড়ে যায়। এমন সময় একটা কাঁক মাথার উপর দিয়ে কা কা শব্দ করে উড়ে যায়। কাকের শব্দ শুনে চমকে উঠে। বালতি থেকে কাপড়গুলো শুকাতে দিল। আকাশে যেন একটুকরো মেঘ জমেছে। সেদিকে তাকাতে সে যেন এক ঝলক বিদ্যুত চমকানোর মত মনে করল।
মাথার ভিতরে তার যন্ত্রনা করে উঠল। তাঁর ইচ্ছে করছে চিৎকার দিতে। ইচ্ছে করছে আব্বা তুমি কোথায়? আমাকে দুখের সাগরে রেখে গেলে কেন আব্বু। আমি যে হারিয়ে যাচ্ছি আমাকে একটু ডেকে আদর করনা আব্বু। আমি যে আর সইতে পারছি না আব্বু। মনে মনে আত্ম চিৎকার করে কেঁদে ফেলল।
কিন্তু মাহমুদা তার অবস্থা দেখে বুঝে ফেলেছে সে মুষড়ে গেছে। তাই তাকে ধরে বলল মা তোর শরীর মন দুটোই বুঝি আজ ভাল যাচ্ছে না তাই না। তুই যা শুয়ে বিশ্রাম কর গিয়ে। এমন সময় কচি মেয়েটি ছুটে এসে তার হাত ধরে বলে, চল আমরা ঘরে যাই। তখন সে সব দুঃখ ভুলে গিয়ে কচি মেয়ের হাত ধরে ঘরের দিকে যায়। মাহমুদা অধীর নয়নে তা চেয়ে দেখে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে।
প্রতিদিন কামালকে বাসা থেকে খাবার পাঠাতে হয়। অফিসে কামাল সাজ্জাদ ও রফিক ওরা সবাই একসাথে খায়। অফিসে খাবার পাঠানোর পর মাহমুদার হাতে আর কোন কাজ থাকে না। তাই দুপুরে প্রতিদিন বাসার সবাই একটু বিশ্রাম নেয়। তাই বেনু শিউলীর মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারানোর চেষ্টা করে। আবার মাহমুদার মাথায়ও হাত বুলিয়ে দেয়। কখনও টেবিল ক্লথে ফুল তোলে। সেদিনও মাহমুদা ঝিমুচ্ছিলেন। তন্দ্রা অবস্থায় তিনি বেনুকে ডাকলেন।
Ñ শিউলী কি ঘুমোচ্ছে বেনু?
Ñ জি আম্মা।
Ñ তুমি একটু আমার কাছে বস না মা।
Ñ মাহমুদা ওকে সর্বদাই লক্ষ্য করছিলেন। বেনুর চলাফেরা মুখের ভাষা সব কিছুর মধ্যে এক অদ্ভুত লাবন্য আছে। নিশ্চয় কোন বড় ঘরের মেয়ে। কিন্তু অভিজাত ঘরের যদি হবে তাহলে ও পরিচয় লুকিয়ে রেখেছে কেন? নামটাই বা বলতে পারছে না কেন? তবে কি ওর জীবনে কোন রহস্যময় ঘটনা লুকিয়ে আছে। যা থেকে ও নিজকে পালিয়ে বাঁচিয়েছে। ওদিকে গ্রাম থেকে বড় আপার চিঠি এসেছে জানতে চেয়েছেন রুবিনা সাথে কামালের বিয়ের ব্যাপারটা কখন পাকাপাকি করা হবে। মাহমুদা আর ভাবতে পারে না। ওদিকে তার মেয়ে জামাই দুবাই গেছে ওরা থাকলে না হয় ভেবে চিন্তে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া যেত।
বেনু তখন এঘর ওঘর করে বেড়াচ্ছিল। এবার কাছে এসে বসল। তখন মাহমুদা বললেন, বেনু তুমি আমার আলমিরাটা খুলে ড্রয়ার থেকে এ্যালবাম নিয়ে এসো।
বেনু ড্রয়ার থেকে এ্যালবাম নিয়ে এল। এ্যালবাম ভর্তি তাদের পরিবারিক ছবি। এইটা হল কামালের বাবা। সে এক বড় নামের ইঞ্জিনীয়ার ছিল মা। কিন্তু অকালেই হারিযে গেল মা। ধরে রাখতে পারিনি। তখন কামালের লেখাপড়া শেষ হয়নি।
এই ছবিটা আমার একমাত্র মেয়ে জুই। জামাই বড় ডাক্তার। তারা দুবাই থাকে এ বছর দেশে ফিরবে। হঠাৎ মাহমুদা বেনুর দিকে তাকালেন এবং বললেন, হ্যা মা তোমার কি বিয়ে হয়েছিল। তোমার ভাল নামটা যেন কি? তোমার আব্বার নাম কি?
প্রশ্ন শুনে বেনুর মুখ খানা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। কানের মধ্যে যেন ভো ভো শব্দ করতে লাগল। শরীর তার ঘামতে লাগল। তার চোখে সেই অদ্ভুত দৃশ্যটা ভেসে উঠল। সইটা করে দে নইলে ওরা যে তোকে আমাকে মেরে ফেলবে। এর সৎ মায়ের রাক্ষুসী ছবিখানা ভেসে উঠছে। তার শরীর থর থর করে কাঁপছে।
না না না মা দু’হতে কান চেপে ধরে সে বলল, জানিনা জানিনা।
তার চোখে মুখে লাল হয়ে গেল। চোখ ভরে অশ্র“ ঝরতে লাগল। তার গলার স্বর চেপে ধরার মত হল। তাই অস্ফুট স্বরে সে বলল।
কেন কেন মা আমাকে কষ্ট দিচ্ছেন। আমার তো কোন বিয়ে হয়নি। দোহাই আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। এর চেয়ে না হয় আমাকে মেরে ফেলুন, আমাকে যন্ত্রনা থেকে রেহাই দিন না মা। আমি সমাজের কাছ থেকে একটু মুক্তি চাই।
বেনুর কণ্ঠস্বর ধীরে ধীরে কেমন জড়িয়ে আসছে এবং চেহারাটা অসুস্থ দেখাচ্ছে। এমনতর অবস্থা দেখে মাহমুদা ভয় পেয়ে গেল এবং দুহাতে বেনুকে জোরে ধাক্কা দিলেন।
এই বেনু বেনু শোন শোন তুমি স্থির হও মা। তোমার কি হয়েছে? বেনু তুমি এত দুর্বল হচ্ছ কেন? তুমি শান্ত হও, নিজ কে শক্ত কর। সমাজে সকলেই এক সমান নয়। সমাজে ভাল মানুষ আছে। তুমি তোমার ঘটনা খুলে বল আমরা তোমার বিষয় দেখব।
এক সময় অপলক নয়নে চেয়ে থেকে পলক ফেলে। একটু পরে নিজকে শান্ত করল। নিঃশব্দে সে নিজকে সামলে নিয়ে ধীরে ধীরে চলে গেল তার শয়ন কক্ষে। দরজা বন্ধ করে দিল। গুমরে গুমরে কাঁদতে থাকল। অনেকক্ষণ কেঁদে কেঁদে সে নিজকে হালকা করে নিল। মাহমুদা তার কান্না শুনে নিজকে হাল্কা করে নিল। মাহমুদা তার কান্না শুনে নিজকে অপরাধী ভাবল। কেনই বা সে তাঁকে প্রশ্ন করতে গেল?
কতক্ষণ কেঁদেছে বেনু নিজেও জানে না। কেঁদে কেঁদে একবার সে ক্লান্ত হয়ে পড়ল এবং কখন ঘুমিয়েছে তা সে জানেনা। এমন সময় শিউলী ঘুম থেকে উঠেছে। সে বেনুর কাছে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করতে ছিল। হঠাৎ তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। শিউলীর কান্না শুনে সে ধরপর করে উঠে এল। নিজকে সামলে নিয়ে বাইরে এসে শিউলীকে জড়িয়ে ধরল।
শিউলীকে শান্তনা দিয়ে তাকে হাত মুখ ধুয়ে দিল। জামা কাপড় পড়িয়ে দিল। তারপর বাগানের দিকে বেড়াতে নিয়ে গেল। হাত ধরে বাগানে ঘুরে বেড়াতে লাগল।
মাহমুদা তার সব কিছুই লক্ষ্য করল। কিন্তু সে দুঃখ করতে লাগল। এই মেয়েটি কেন এই শিশু বাচ্চাকে মায়া ডোরে বাঁধছে? কোথা থেকে কিভাবে এবং কেন এসেছে? তা জানা গেলনা। কখন যে সে চলে যাবে তাইবা কে জানে। তখন আমার শিউলী আপুর কি হবে? তখন তাকে কে আগলে রাখবে এবং মায়াবী স্নেহ টুকু বা কে করবে। তখন তো নিশ্চয় আমার বিপদ হবে।
ইত্যাদি সে ভেবে ভেবে ক্লান্ত হতে লাগল। ভাবতে লাগল কিভাবে এই মেয়েটির আসল ঘটনা উদ্ধার করা যায়। নইলে তো কোন কিছুরই আর কুল কিনারা করা যাচ্ছে না।
(চলবে)

( আগের পর্ব দেখার জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন )
উপন্যাস– আঁধারে শশী (পর্ব-৩)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.