নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

pramanik99

আমার স্কুল জীবনের স্মৃতিগুলো বার বার মনে পড়ে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে সেই দিনগুলোতে।

প্রামানিক

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

প্রামানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৌকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
অনেক দিন হলো সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ইচ্ছে কিন্তু এর আগে কখনও যাইনি তাই অচেনা সমুদ্র দ্বীপে একা একা যেতে চাইলেও যেতে সাহস পাচ্ছিলাম না। দুপুরে অফিসে বসে সেন্ট মার্ন্টিন নিয়ে আলাপ করতেই মুকুল যেতে রাজি হলো। পরদিন ২৬ মার্চ। অফিস বন্ধ। রাতেই সেন্টমার্ন্টিন যাওয়ার জন্য অফিস থেকে আরো তিন দিনের ছুটি নিয়ে বাসায় চলে এলাম। রাত দশটার দিকে ব্যাগে কাপড়-চোপড় নিয়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে রওনা হলাম। সায়দাবাদ গিয়ে চিটাগাংয়ের বাসে টিকিট কেটে দুইজন সিটে গিয়ে বসলাম।

রাত এগারোটায় বাস চিটাগাংয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিল। ইচ্ছা ছিল ভোরে চিটাগাং পৌঁছেই কক্সবাজারের দিকে রওনা হবো এবং সময় নষ্ট না করে ঐদিনই টেকনাফ গিয়ে পৌঁছব। প্রয়োজনে রাতে টেকনাফে থেকে পরদিন সকালে সেন্ট মার্টিনের দিকে রওনা হবো। কিন্তু বিধিবাম। দাউদ কান্দি পার হয়ে কিছুদুর যাওয়ার পরেই যানজটে আটকে গেলাম। বাস কোনভাবেই আর এগোচ্ছে না। ভোরে যেখানে চিটাগাং যাওয়ার কথা কপালের ফেরে এখানেই ভোর হয়ে গেল। ট্রাকের সামনের চাকা ভেঙে রাস্তার মাঝখানে মুখ থুবড়ে আড়াআড়িভাবে পড়ে আছে। দুইদিকে বাস ট্রাক আটকে গেছে। উভয় পার্শ্বে কযেক মাইল যানজট। উপায়ন্তর না দেখে কিছু বিপদগ্রস্থ উৎসাহী লোক ট্রাকটি ধাক্কাতে ধাক্কাতে রাস্তার এক পাশে সরিয়ে রেখে রাস্তার যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়।

বিশাল যানজট ঠেলে চিটাগাং যখন গিয়ে পৌঁছলাম তখন বিকাল চারটা। বাধ্য হয়ে চিটাগাংয়ের একটি হোটেলে রাত্রী যাপন করে পরদিন ভোরে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে প্রথম বাস ধরে রওনা হলাম। ভোরে রাস্তা ফাঁকা থাকায় যেতে বেশি সময় লাগল না। সকাল আটটায় গিয়ে কক্সবাজার পৌঁছলাম। কক্সবাজার বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে বাস থেকে নেমেই টেকনাফগামী এসি বাস পেয়ে গেলাম। দেরি না করে তাড়াতাড়ি টিকিট কেটে বাসে উঠে বসতেই একটু পরেই বাস ছেড়ে দিল। সকাল দশটায় গিয়ে টেকনাফ পৌঁছলাম।

সেই সময়ে সেন্ট মার্টিন দ্বিপে যাওয়ার জন্য এক মাত্র বাহন হলো বড় বড় কাঠের নৌকা বা ট্রলার। লঞ্চ স্টীমার তখনও চালু হয়নি। বাস থেকে নেমে ট্রলার ঘাটে গিয়ে দাঁড়াতেই কয়েকজন ট্রলারওয়ালা সেন্ট মর্ন্টিন যাবো কিনা জিজ্ঞেস করল। অজ্ঞতা বসতঃ আমরা না যাওয়ার কথা বললাম। মুকুলের কথা হলো হোটেলে কিছু না খেয়ে রওনা দেওয়া ঠিক হবে না। তার কারণও আছে। সকাল দশটা বাজলেও পেটে কোন দানা পানি পড়েনি। দু’জনেরই ক্ষিদে পেয়েছিল। কিন্তু সকাল দশটার পরে টলারে যাওয়া যে বিপজ্জনক সেটা টের পেয়েছিলাম সমুদ্রের মাঝামাঝি যাওয়ার পরে। সেই নাকানি চুবানির কথা পরে বলবো।

টলার ঘাট থেকে ফিরে এসে হোটেলে ঢুকে রুটি পরোটা না খেয়ে দুইজনে পেট ভরে ভাত খেয়ে নিলাম। এগারোটার সময় ঘাটে এসে দেখি সব টলার চলে গেছে। মাত্র একটি টলার আছে। টলারওয়ালা টলার ছাড়ার পূর্বমূহুর্তে আমাদের দেখে স্টার্ট দেয়া অবস্থায় রসি টেনে ধরে টলার আটকিয়ে রেখে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করল আমরা সেন্ট মার্টিন যাবো কিনা? আমরা যেতে চেয়ে ভাড়ার কথা জিজ্ঞেস করলাম। ত্রিশ টাকা করে দুইজনের ষাট টাকা ভাড়া। আমরা ভাড়া নিয়ে আর কোন কথা না বলে ঐ ভাড়াতেই যেতে রাজী হয়ে গেলাম। ট্রলার ওয়ালা তাড়াতাড়ি আমাদের টলারে উঠার জন্য অনুরোধ করল। আমরা টলারে উঠতে যাবো এমন সময় এক লোক বাধা দিয়ে বলল, টলারে উঠার আগে ঘাটের চাঁদা দিয়ে যান।
আমরা দু’জন তো থ মেরে গেলাম। বললাম, আমরা কোনো মাল সামানা নিচ্ছি না। আমরা চাঁদা দিব কেন?
লোকটি বলল, ঘাটের চাঁদা। এটা দিতেই হবে।
জিজ্ঞেস করলাম, চাঁদা কত?
লোকটি বলল, জন প্রতি ত্রিশ টাকা।
চাঁদার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম। সেই সময় ত্রিশ টাকার অনেক মূল্য। দুইজনে ষাট টাকা। ট্রলারের ভাড়ার সমান ঘাটের চাঁদা দাবী করায় আমরা দিতে অস্বীকার করলেও লাভ হলো না। তাদের দাবীকৃত পুরো টাকা ছাড়া টলারে উঠতেই দিল না। ষাট টাকা নিয়েই ছাড়ল। আহাম্মকের মত ষাট টাকা চাঁদা দিয়ে টলারে উঠলাম।

দুই ইঞ্জিনের ট্রলার। এক ইঞ্জিন চালিয়ে নাফ নদী দিয়ে দক্ষিণ দিকে চলল। আমি এবং মুকুল সমুদ্র ভ্রমণের জ্ঞান না থাকায় টলারের মাঝ খানে গিয়ে বসলাম। আমাদের ধারনা টলারের মাঝখানে বসলে আরামে যেতে পারবো। ঢেউয়ে যখন টলারের আগা পাছা দুলবে তখন আমরা মাঝখানে দুলুনি ছাড়াই বসে থাকবো। কিন্তু সমুদ্রের মাঝখানে যাওয়ার পর সে ধারনা ভুল হলো।

প্রায় একঘন্টা চলার পর ট্রলার নাফ নদী ছেড়ে পশ্চিম মুখ করে সমুদ্রের দিকে পাড়ি দিল। সমুদ্রের দিকে মুখ করতেই আরেকটি ইঞ্জিন চালু করে দিল। দুই ইঞ্জিন চালু করায় টলারের গতি বেড়ে গেল। সমুদ্র পাড়ি দেয়ার শুরুতে বুঝতে পারিনি সমুদ্র কত বড়? প্রায় এক ঘন্টা পাড়ি দিয়ে সমুদ্রের মাঝখানে আসার পর আত্মা শুকিয়ে গেল। যেদিকে তাকাই সেদিকেই শুধু পানি আর পানি। কোনো কুল কিনারা দেখা যায় না। বিশাল বিশাল ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। ট্রলার কচুরী পানার মত ঢেউয়ে দুলছে। আমরা দুইজন মাঝখানে বসে অসহায়ের মত দুলুনি থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। এমন দুলুনি যে কখনও কখনও টলার থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ার অবস্থা। টলারের মাঝখানের গুড়ায় বসে সেই গুড়া দুই হাত দিয়ে জাপটিয়ে ধরে আছি। টলারের আগে পিছে যারা আছে তারা আমাদের চেয়ে কিছুটা নিরাপদেই আছে। তাদেরকে আমাদের মত এত কষ্ট করতে হচ্ছে না।

ব্যাগ ছেড়ে দিয়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। ট্রলারের ভিতর কিছু ভুষির বস্তা রাখা আছে। আমরা দুইজন ট্রলারের গুড়া ছেড়ে ভুষির বস্তার উপর বসে দুই হাতে গুড়া জড়িয়ে ধরে আছি। এমন সময় বড় একটি ঢেউ টলারের গায়ে আছড়ে পড়লে ঢেউয়ের ছিটকে আসা পানি আমাদের দুইজনকে আধা ভেজা করে দিল । মুকুলের দিকে তাকিয়ে দেখি মুকুলের মুখ শুকিয়ে গেছে। মুকুল বরিশালের লোক। সেই হিসাবে ওর শক্ত থাকার কথা। কিন্তু সে দেখি আমার চেয়েও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে বসে আছে। সমুদ্রের তান্ডব দেখে আমারও একই অবস্থা। দুইজনেই সাঁতার জানি, কিন্তু কুল কিনারা বিহীন এই সমুদ্রে সাঁতার দিয়ে কতক্ষণ টিকে থাকা যাবে? কখনও কখনও মনে হচ্ছে টলার পানির তলে ডুবে যাচ্ছে আবার একটু পরেই ভুস করে পানির দশ হাত উপরে ভেসে উঠছে। অবস্থা দেখে অন্তর আত্মা শুকিয়ে গেল। আল্লাহ আল্লাহ করতে লাগলাম। মনে মনে চিন্তা করলাম এযাত্রা বেঁচে গেলে আর কখনও সমুদ্র যাত্রা তো দুরের কথা সমুদ্রের ধারে কাছেও আসবো না। এমনি যখন চিন্তা করছি এমন সময় বড় একটি ঢেউয়ের পানি টলারের উপর দিয়ে ছিটকে এসে দুইজনকে একেবারে ভিজিয়ে দিয়ে গেল। অবস্থার আকস্মিকতায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে হা করতেই আরেকটি ঢেউয়ের পানি ছিটকে এসে মুখের ভিতর ঢুকে গেল। সমুদ্রের পানি মুখে ঢুকতেই বেদিশা হয়ে গেলাম। মনে হলো এ যেন পানি নয়, এক খামছা লবন মুখে ঢুকে গেছে। পুরো মুখ লবানাক্ত হয়ে গেল। আমি মুখ পরিস্কার করার জন্য থুথু ফেলতে লাগলাম। তাকিয়ে দেখি আমার মত মুকুলও থুথু ফেলছে। মুকুলের অবস্থা দেখে এত কষ্ঠের মধেও হাসি পেল। হাসি দেয়ার আগেই প্রকান্ড ঢেউ এসে টলার উল্টে ফেলার অবস্থা। মৃত্যু ভয়ে মুহুর্তেই হাসি মিলিয়ে গেল। মনের অজান্তেই চোখের পানি ছেড়ে কেঁদেই ফেললাম।

এমনি মরাণাপন্ন অবস্থায় সমুদ্র পাড়ি দিতে লাগলাম। সময় যেন কাঁটতে চায় না। প্রতি মুহুর্ত প্রতি বছরের মত মনে হচ্ছে। ঘনঘন পশ্চিম দিকে তাকাচ্ছি কিন্তু কোনো কিনারা দেখা যাচ্ছে না। হাতে ঘড়ি আছে সেদিকে খেয়াল নেই। কতক্ষণ যে কেটে গেছে বলতে পারছি না। এক পর্যায়ে অনেক দুরে আবছা আবছা গাছের চিহ্ন চোখে পড়ল। একটু মনের ভিতর সাহস এলো। কিন্তু গাছগুলো কত দুরে তা বোঝা গেল না। আরো অনেক পরে আস্তে আস্তে ঢেউয়ের তান্ডব কমতে লাগল সেই সাথে গছের আকারও বাড়তে লাগল। মনে হলো আরো প্রায় এক ঘন্টা চলার পরে সেন্ট মার্টিন এসে পৌছলাম। টলার একবারে কিনারে পৌছল না। এক বুক পানিতে এসে থেমে গেল। টলার থামতেই কয়েকটি ছোট নৌকা এসে টলারের গায়ে লাগল। আমরা দুইজন একটি ছোট নৌকায় উঠে কিনারে এলাম। নামার সময় দুইজনকে নৌকা ভাড়া পাঁচ টাকা দিয়ে নামতে হলো।

কিনারে নেমে মুকুল এক হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে হাত মুখ পরিস্কার করছে। তার দেখাদেখি আমিও ব্যাগটা ডাঙায় শুকনা বালুর উপর রেখে হাঁটু পানিতে নেমে মুখে পানি দিতেই আহাম্মক হয়ে গেলাম। এ তো পানি নয় যেন লবনের দ্রবণ। সমুদ্রের মাঝে ঢেউয়ে ছিটকে আসা পানিতে মুখের লবনাক্তভাব ধুয়ে পরিস্কার হওয়া তো দুরের কথা উল্টো আরো লবন দিযে মুখ লেপ্টে গেল। ‘ওয়াক থু’ করতে করতে সমুদ্রের পানি ছেড়ে ডাঙায় উঠে এলাম।

উপরে উঠেই মুদি দোকানসহ কয়েকটি ছোট ছোট দোকান চোখে পড়ল। একটি মুদি দোকানে থাকার হোটেলের কথা জিজ্ঞেস করতেই পশ্চিম দিকে যেতে বলল। দোকানগুলোর সামনে থেকেই ছোট একটি পাকা রাস্তা শুরু হয়েছে। পাকা রাস্তা ধরে আমি আর মুকুল পশ্চিম দিকে চলে গেলাম। পাকা রাস্তাটি খুব বেশি লম্বা নয়, এক কিলোমিটার হবে কি না সন্দেহ আছে? দ্বীপের উত্তর পার্শ্বে সমুদ্রের পূর্ব প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে পশ্চিম প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়েছে। পাকা রাস্তার শেষ প্রান্তে সমুদ্রের কাছাকাছি একটি দোতালা হোটেল চোখে পড়ল। হোটেলের অফিস রুমে গিয়ে ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করে কোন রুম বা সিট পেলাম না। রুম না পেয়ে দুই জনের মধ্যে হা হুতাস শুরু হয়ে গেল। এই অপরিচিত জায়গায় কোথায় থাকবো? হোটেলের উত্তর পার্শ্বে দু’টি আধাপাকা বাড়ি আছে। হাঁটতে হাঁটতে সেই বাড়ির সামনে চলে গেলাম। একটি বাড়ির ফলকে লেখা ‘সমুদ্র বিলাস’। বুঝতে আর বাকি রইল না এটাই হুমুয়ুন আহমদের বাড়ি। বাড়ির গেটে তালা ঝুলছে। হোটেলে থাকার জায়গা না পাওয়ায় ইচ্ছা ছিল যত টাকা ভাড়া হোক না কেন এই বাড়িতেই থাকবো। কিন্তু কোনো লোক খুঁজে পেলাম না। অবশেষে আবার পাকা রাস্তা ধরে পূর্ব দিকে রওনা হলাম।

যাওয়ার পথে রাস্তার পাশেই পুলিশের ব্যারাক চোখে পড়ল। দশ বারো ফুট উঁচু পিলারের উপর দালান ঘর। নিচে কোনো দেয়াল নেই, দেখতে ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের মত। পুলিশের সাহায্য নেয়ার জন্য সিঁড়ি বেয়ে দুইজনে উপরে উঠে গেলাম। গিয়ে দেখি ছয় সাতজন পুলিশ শুয়ে আছে, দুইজন বসে গল্প করছে, একজন দরজার কাছেই ভাত রান্না করছে। ভাত রান্না করছে তাকে বললাম, ভাই আমরা ঢাকা থেকে এসেছি, হোটেলে থাকার জায়গা পেলাম না, আপনারা কোন ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?
পুলিশটি জানালো, আপনারা পূর্ব দিকে চলে যান, মসজিদের পূর্ব পাশে চেয়ারম্যানের বাড়ি আছে, সেখানে গিয়ে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। যদি সেখানে থাকার কোন ব্যাবস্থা না হয়, তখন এখানে চলে আসেন আমরা ব্যাবস্থা করে দিব।

পুলিশের কথামত পূর্ব দিকে যাওয়ার জন্য দোতালা থেকে নেমে এলাম, কিন্তু পুলিশদের চেহারা দেখে থাকার জায়গার অনিশ্চয়তার মধ্যেও হাসি আটকাতে পারছিলাম না। তাদের শরীরের আকৃতি দেখে রুপ কথার গল্পের কথা মনে পরে গেল, আগে নাকি রাজারা ‘অলস’ পালন করতো। তিন বেলা খাওয়া আর ঘুমানো ছাড়া তাদের আর কোন কাজ ছিল না। এই পুলিশগুলোও তৎকালীন রাজার পালনকৃত আলসদের মত অবস্থা। তাদের কোন কাজ নেই, তিন বেলা খাওয়া আর দোতালায় উঠে শুয়ে থাকা। শুয়ে বসে খেয়ে অলস জীবন-যাপন করতে করতে তাদের শরীরের এমন অবস্থা হয়েছে একেক জন ফুলে ফেঁপে দ্বিগুন। দৌড়িয়ে চোর ধরা তো দুরের কথা স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতেও এদের কষ্ট হয়। সবগুলো পুলিশেরই একই অবস্থা। আমি আর মুকুল হাসতে হাসতে পূর্বদিকে রওনা হলাম।
(চলবে--)

নৌকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ (দ্বিতীয় পর্ব)
নৌকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ (তৃতীয় পর্ব)

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৪

সাাজ্জাাদ বলেছেন: apnar kota sune amar nijer golpo mone pore gelo. sei ki sundor din cilo. sentmartin jaoar somoi protobar touba kortam je ai bar beche gele ar kono din sentmartin jabo na. gele-o boat e kore jabo na. kintu basai asar por nesa cepe dorto. protobochor-i jetam.

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সাজ্জাদ। আপনার অবস্থা আমার মাঝেও বিরাজ করছে। যদিও সমুদ্রের মাঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর কোনদিন সেন্টমার্টিন যাবো না কিন্তু বাসায় আসার পরে আবার যেতে মন চাইছে। মন্তব্যর জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা ।

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৮

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: অনেক বন্ধুর মুখে তাদের নৌকায় করে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার গল্প শুনেছি। লোভ হয়েছে অনেক যাওয়ার কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন যেতে পারিনি। টেকনাফ গেছি শুধুমাত্র একবার তবে আমি এখনো আশা ছাড়ি নাই একবার আমার নৌকাই করে যেতেই হবে।

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই। ভালো থাকবেন।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

প্রামানিক বলেছেন: বর্তমানে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নৌকায় যাওয়া রিস্কি। কারণ এখন যেহেতু স্টীমার চলে সে কারণে নৌকায় কেউ যাতায়াত করে না। এখন নৌকায় গেলে ডাকাতের কবলে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। আমি যে সময় গিয়েছি তখন নৌকাই একমাত্র যাতায়াতের বাহন ছিল। দৈনিক অনেক নৌকা টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাতায়াত করতো। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যে আপনার মনোভাব প্রকাশ করার জন্য।

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: প্রামানিক ভাই গরমের সময় মনে হয় স্টীমার সার্ভিস বন্ধ থাকে।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪

প্রামানিক বলেছেন: গরম মানে বর্ষাকালে বন্ধ থাকে কারণ তখন টু্রিস্ট থাকে না।

৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কাহিনী পড়ে ভালো লাগলো । সাথে সাথে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রগাঢ় হলো ।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১০

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রুপক বিধৌত সাধু। সময় থাকলে বেরিয়ে আসতে পারেন এখন যোগাযোগ খুব ভাল। অনেক অনেক শুভ্চেছা রইল।

৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯

সাহসী সন্তান বলেছেন: ভ্রমন গল্প হলেও পড়তে পড়তে বেশ এ্যাডভেন্সারের গন্ধ পাচ্ছিলাম। তখন লঞ্চ বা ইস্টিমার চালু হয়নি, তার মানে ভাই এটা কত আগের ভ্রমন?

আমি কখনো সেন্ট মার্টিন যায়নি। তবে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু আপনি যে ভয়াবহ বর্ননা দিলেন তাতে তো আমার "আত্মারাম খাচা ছাড়া"র জোগাড়। আচ্ছা এখনকার যোগাযোগ ব্যবস্থা কি ভাল?

-ভ্রমন গল্প ভাল লাগছে। শুভেচ্ছা জানবেন!!

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১২

প্রামানিক বলেছেন: আমার ভ্রমণটা ছিল দুইহাজার সালের আগে। ভ্রমণ করতে গিয়ে কান্দাকাটির অবস্থা। এখন অবশ্য এই সমস্যা নাই এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৬

কালীদাস বলেছেন: জাহাজগুলো চালু হয়েছে মনে হয় ২০০৩ বা ০৪এ। এর আগে যাওয়াটা বেশ রিস্কি ছিল শুনেছিলাম। ফেরার সময়ও কি একই অবস্হা হয়েছিল নাকি?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৭

প্রামানিক বলেছেন: না ভাই ফেরার সময় জোয়ার ছিল না তাই ঢেউ কম ছিল। ধন্যবাদ ভাই কালীদাস।

৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২০

কাবিল বলেছেন: ভাল লাগলো, চলুক সাথেই আছি।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৩

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই কাবিল। অনেক অনেক শুভ্চেছা রইল।

৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:

কোন সালের দিকে গিয়েছিলেন?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

প্রামানিক বলেছেন: ৯৮সালে

৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২১

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপনি চিটাগাং থেকে সরাসরি টেকনাফের বাস ধরলেন্না কেনো জাতি জান্তে চায়

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৮

প্রামানিক বলেছেন: এটা দুই হাজার সালের আগের ভ্রমণ তখন চিটাগাং থেকে ডাইরেক্ট টেকনাফের বাস ছিল না। এই কারণে ভাঙ্গা বাসে যেতে হয়েছে। ধন্যবাদ কামাল ভাই।

১০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন:

বড় একটি ঢেউ টলারের গায়ে আছড়ে পড়লে ঢেউয়ের ছিটকে আসা পানি আমাদের দুইজনকে আধা ভেজা করে দিল । মুকুলের দিকে তাকিয়ে দেখি মুকুলের মুখ শুকিয়ে গেছে।

…………..ভিজে যাওয়ার পরও মুখ শুকায় কেম্নে?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২৯

প্রামানিক বলেছেন: ঐ সময়ে গায়ে পানি পড়লেও মুখে পড়ে নাই এই জন্য মুখ শুকনা ছিল।

১১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: ট্রলারে সেন্টমার্টিন যাওয়ার অভিজ্ঞতা নাই, তবে অনেক গল্প শুনার অভিজ্ঞতা আছে, আজকে আরো একটি যোগ হলি, বাকিটাও পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল ভাই, ট্রলারে না যাওয়াই ভাল আমি ট্রলারে গিয়া আচ্ছামত শিক্ষা পাইছি। অবশ্য এখন ট্রলারে গেলেও অসুবিধা হইবো না কারণ ধাক্কা খায়া ট্রলারের কোন জায়গায় বসলে আরামে যাওয়া যায় সেটা বুইঝা গেছি।

১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২২

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: তয় আমার একটা কথা হইলো এতোদূর গেলেন, মিঞা একটা প্যান্ট তো পড়ে যেতে পারতেন, লুঙ্গী পড়েই ওখানে ছুটে গেলেন কারণটা কি?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: প্যান্ট খু্ইলা লুঙ্গি পরছি, তার কারণ আছে, তখন তো এত টু্রিষ্ট ছিল না প্রবাল গুলা পিছলা আছিল, যদি প্রবালের উপর দিয়া হাঁটতে গিয়া পিছলা পইড়া আছাড় খাই এইজন লুঙ্গি পরছি আছাড় খাইলেই সমুদ্রে ডুবায়া গোসল করমু।

১৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: লুঙ্গী নিয়া আছাড় খাইলে তো লুঙ্গী ছিড়বো, তখন হোটেলে ফিরবেন কেবা করি?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

প্রামানিক বলেছেন: নতুন লুঙ্গি ছিঁড়বো ক্যান, টাইট কইরা পিনছি তো।

১৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রামানিক ,




লেখা পড়ে আপনার মতো ঢেউয়ের দোলায় দুলছি ..........

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আহমেদ জি এস। অনেক অনেক শুভেচছা রইল।

১৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

নৈশ শিকারী বলেছেন: অসাধারন এক অভিজ্ঞতার গল্প! গল্পের প্রতিটা অংশ অত্যন্ত সুন্দর এবং সাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। পাঠক লেখাটা পড়া শুরু করলে পুরোটা শেষ না করে পারবেনা। আপনার যাত্রাটা সামান্য পেইনফুল হলেও চাঁদের আলোয় আলোকিত সমুদ্রের বেলাভূমির নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের কাছে তা একেবারেই তুচ্ছ। আর রূপচাঁদা মাছের ঝোলের স্বাদের আর আপনাদের খাবার খাওয়ার যেই বর্ণনা দিয়েছেন তাতে আমারই জিভে জল এসে গিয়েছিল। এক কথায় অসাধারন একটা ভ্রমন কাহিনী; খুব... খুব.... খু.......উব ভালো লেগেছে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৩

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নৈশ শিকারী। আপনি কষ্ট করে পড়ে মূল্যবান মন্তব্য করায় খুশি হলাম। অনেক অনেক শুভ্চেছা রইল।

১৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮

সুমন কর বলেছেন: আপনার বর্ণনা পড়েই তো গলা শুকিয়ে গেল !! আর যাবো কিভাবে?

আপনাদের দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সুমন কর। গলা শুকানোর কোনো কারণ নেই যাতায়াতের এখন অনেক উন্নত ব্যাবস্থা হয়েছে।

১৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

জুন বলেছেন: প্রামানিক ভাই আপনারতো দেখি ভয়ংকর অভিগগতা :-&
আমিতো প্রথমবার যেবার গেলাম তখন সবচেয়ে বড় জাহাজ ছিল এল সি টি কুূতুবদিয়া । তাতেই নাফ নদী থেকে সমুদ্রে পড়লো যখন তখনকার অবস্হা অবর্ননীয় ।
সুন্দর লিখা
+

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ জুন আপা। সমুদ্রের মাঝে যাওয়ার পর সমুদ্রের ঢেউ আর নৌকার দুলুনি দেখে আমার কান্না করার অবস্থা হয়েছিল। জাহাজে তো সেরকম কিছু পান নাই। আপনার মন্তব্যর জন্য শুভ্চেছা রইল।

১৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২

বুলস আই বলেছেন: সাগর ডরাই

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

প্রামানিক বলেছেন: এখন ডর নাই জাহাজ আছে। ধন্যবাদ

১৯| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৩

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: অনেক অনেক অনেক ভাল লাগল!!!!!

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪১

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ নাহার আপা অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

২০| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৯

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার একটা ভ্রমণ কাহিনী পড়লাম, মনে হচ্ছিল আমি নিজেই আপনার সাথে সেন্টমার্টিন যাচ্ছিলাম। ভয়ে আমারও গলা শুকিয়ে আসছিল। :( ভ্রমণ কাহিনী বর্ণনা বড়ই সাবলীল এবং গতিশীল, কোথাও থেমে যেতে হয় নাই। একটানা পড়ে গেলাম। +++ সাথে লাইক।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪২

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, আপনি আমার লেখা কষ্ট করে পড়েছেন এতেই আমি খুশি।

২১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

অগ্নি সারথি বলেছেন: শুরু করলাম। বেশ লাগছে, এডভেন্চারাস।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৩

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই অগ্নি সারথি। শুভেচ্ছা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.