নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্সডচড

িকছু না

ক্সডচড › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের শুরুটাই ----এরকম

১৫ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:২০

জীবনের প্রতিটি মুহুতে আনন্দ, হাসি আর সুখ আসে অল্প সময়ের জন্য। সময়টা চলে গেলে শুধ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। এই আনন্দ, হাসি আর সুখ খুঁজে পাওয়া যায় ভালোবাসার মধে। যখন ভালোবাসা শব্দটির সাথে পরিচয় তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। অবশ্য সবাই মনে হয় এই সময়টাতেই প্রেমে পরে। যারা বেশি পাকনা তারা আগেই প্রেমে পরে। যাইহোক আমি যার প্রেমে পড়ি সে আমাদেরই পাড়ার ছেলে। সম্পকটা প্রথম দিকে বন্ধুতের মধে সীমাবদ্ধ ছিলো। আস্তে আস্তে তা ভালোবাসার দিকে যেতে থাকলো। হয়তো এই ব্যপারটা মনেহয় কমন কিছু। ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই। আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষটির নাম হলো দীপন্জয়, সংক্ষেপে আমি ওকে দীপ বলে ডাকি। প্রথম বলেছি বলে কি খুব অবাক লাগছে! অবশ্য অবাক আমি নিজেই হয়েছি। কারন আমি নিজও মেনে নিতে পারি নাই। দীপকে আমি যতটুকু জানি বা চিনি ও আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছে তা বলা যাবে না। ও আমাকে অনেক ভালোবাসত। তবে ওর থেকে মনেহয় আমি ওকে একটু বেশি ভালোবাসতাম। অনেক জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছি, বিশেষ করে আমরা দুজনেই রিক্শায় ঘোরাটা বেশি পছন্দ করতাম। সময় পেলেই আমরা ঘুরতে বের হতাম- ঢাকা শহরে প্রেম করার মতো জায়গা হলো টি এস সি। তাই দীপের সাথে বেশিরভাগ সময়টা কেটেছে টি এস সি তে। হঠাৎ করেই যে জীবনে এত বড় একটা ঝড় আসবে তা ভাবতেও পারিনি। সালটা ছিলো ২০০৭। আমি তখন ভারসিটিতে পড়ি ২য় সেমিস্টারে। দীপ তখন প্রাইভেট মেডিকেলে শেষ সেমিস্টারে। পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন দীপের। আমার কাছে এিশ হাজারের মতো টাকা ও চেয়েছিলো। কিন্ত আমার পক্ষে এতগুলো টাকা জোগার করা সম্ভব ছিলো না। ও বলল - " তুমি তোমার বাসায় বলো, তোমার সেমিস্টার ফি লাগবে। আমি বললাম - তারপর আমার যখন সত্যি সত্যি টাকার দরকার হবে তখন কোথায় পাবো। ও বলল- তোমার সেমিস্টারের টাকা আমি ম্যানেজ করে দিবো এখন তুমি বাসা থেকে নিয়ে আস"। আমিও এই বিষয়টা নিয়ে অনেক ভেবেছি। ভাবলাম এই টাকাটা হলে ও পরীক্ষা দিতে পারবে। আমি পরদিন বাসায় ফোন দিলাম..মা ফোন ধরলো..আমি বললাম- "মা আমার সেমিস্টার ফি লাগবে। মা বলল- এই তো সেদিন সেমিস্টার ফি দিলাম আবার কিসের ফি? আমি মাকে বুঝিয়ে বললাম- ঔটা ১ম সেমিস্টারের ফি

ছিলো। এখন ২য় সেমিস্টারের ফি লাগবে। মা বলল- ঠিক আছে আমি তোমার বাবাকে বলে টাকা পাঠিয়ে দিবো"। স্বতি পেলাম! সাথে সাথে আমি দীপকে ফোন করলাম আর জানালাম যে- "মা কিছুদিনের মধ্যে টাকা পাঠিয়ে দিবে, তুমি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাক। তবে ওকে আমি এিশ হাজার দিতে পারিনি বিশ হাজার দিয়েছিলাম"। আমার ২য় সেমিস্টারের ফিও এসেছিলো বিশ হাজার টাকা। তবে আমাদের ভারসিটিতে একটা অপশন আছে যে মিডটারম পরীক্ষার আগে অধেক পেমেন্ট করতে পারা যায়। বাকীটা ফাইনাল পরীক্ষার আগে দিতে হয়। আমি দীপকে ফোন করে বললাম- আমার সেমিস্টার ফি বিশ হাজার টাকা আসছে। তুমি কি করবে। টাকা কি ম্যানেজ করতে পারবে। দীপ বলল- এখন কি করে এতগুলো টাকা ম্যানেজ করবো। আমার কাছে তো কোন টাকাই নাই"। ওর কথা শুনে আমার মাথা ঘুরতে লাগলো। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। খুব রাগ লাগছিল। আমি ওকে বার বার ফোন করতেছিলাম। ওর একটাই কথা "আমি কিভাবে দিবো এতগুলো টাকা, দেখি কি করা যায় আরো কিছুদিন অপেক্ষা কর"। আমি কিছু ভাবতে পারছিলাম না। সেমিস্টার মিস্ করা যাবে না। বাসায় জানলে খবর বারোটা বাজাবে। আমাকে হয়তো আর পড়তেই দিবে না। দীপের সাথেও সম্পকটা ভালো যাচ্ছিল না এই টাকার জন্য। এখন মনে হচ্ছে টাকাটাই আমাদের সম্পকটা নষ্ট করে দিছে। ওর সাথে দিন দিন দূরুত্ব বাড়তেই লাগল। অবশেষে ও বলল- আজকে দেখা করবো, তুমি ঠিক সময়ে চলে এস। আমি বললাম- কি টাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছো। ও বলল- তুমি আস তখন কথা হবে"। আমরা অনেকদিন পর সেই পুরানো জায়গা টি এস সি তে দেখা করলাম। কিন্তু এবারের দেখা একটু ভিন্ন ধরনের। আমার কাছে মনে হলো ওর সাথে আমার কোন সম্পকই নাই। শুধু একটা বিশেষ কারনে আমরা হয়তো দেখা করেছি। ওর মুখে কোন কথা নাই। আমি জিগ্ঘাসা করলাম- কি করলে? ও বলল- তুমি তো আমার অবস্থা জানো। আমি বললাম এর মানে তুমি টাকা আননাই। ও বলল- তোমার সব টাকাই আমি দিয়ে দিবো। ওর এই কথা শুনে আমার খুব শান্তি পেলাম। আমি বললাম- আমি জানি টাকাটা জোগার করতে তোমার খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমারও তো কিছু করার নাই। বাসায় যে বলবো তারও কোন উপায় নাই"। ও খুব ভাব নিয়ে মানিব্যাগ থেকে ২ হাজার টাকা বের করল আর বলল- এর থেকে বেশি টাকা আমার কাছে নাই। আমি তখন কি করব হাসবো না কাদবো ভুলে গেছি। এতদিন এতকথা বলার পর সে আমাকে ২ হাজার টাকা দিচ্ছে। আমি ২ হাজার টাকা নিলাম আর বললাম-তুমি আর আমার সাথে যোগাযোগ রাখবে না"। আমি একটা রিকশা নিয়ে হোস্টেলে চলে আসলাম। খুব খারাপ লাগছিল দুইটা কারনে একটা হলো বাকি টাকা কিভাবে ম্যানেজ হবে আর ওর সাথে সম্পকটা থাকল না। আর আট হাজার টাকা হলে আমি মিডটারম পরীক্ষা দিতে পারব। কিন্তু টিউশন থেকে টাকা পেলাম তিন হাজার। মোট টাকা হলো পাচঁ হাজার। ভারসিটিতে জমা দিলাম ৫ হাজার। বাকি ১৫ হাজার টাকা জমা দিতে পারলাম না। আমি জানতে পারলাম আমাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। আরো ৫ হাজার জমা দিলে পরীক্ষা দিতে পারবো। তখন কি করবো বুঝতে পারলম না। ডিপারটমেন্টের চেয়ারম্যানের কাছে গেলাম। কিন্তু কোন লাভ হলো না। আমাকে একটা ম্যাম খুব ভালোবাসত। পরে ঔ ম্যামের সাহায্যে পরীক্ষা দিলাম। মিডটারম পরীক্ষা পার করলাম কিন্তু ফাইনালে তো টাকা দিতে হবে। এমন সময় আমার সামনে একটা বাড়িয়ে দেওয়া হাত দেখতে পেলাম। আমার মনে হলো হাতটা ধরা উচিৎ। এখান থেকে বলা যায় আমার দ্বিতীয় জীবন শুরু। যে কথাগুলো আমি কারো সাথে শেয়ার করতে পারিনি সে কথাগুলো শেয়ার করতে পারবো। ভালো একজন বন্ধু পাব যে আমাকে বুঝতে পারবে। জীবনের কষ্টগুলো ভোলার জন্য আমি তখন সেই বাড়িয়ে দেওয়া হাতটা ধরলাম। ও আমাকে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিলো। শুধু তাই না যখন যা প্রয়োজন হতো ও দিতে চেষ্টা করতো। এখন পযন্ত ও আমার একটা ইচ্ছাও অপূন রাখেনি। এরকম একজন ভালো বন্ধু, ভালো মানুষ এর সান্নিদ্য পেয়ে আমি সত্যিই খুবই খুশি। আমি কারো সাথে কম্পেয়ার করার চেষ্টা করি না এই মানুষটাকে। পৃথিবীতে ভালো মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও- আছে। এদের জন্যই আজও পৃথিবীটা ভারসাম্যতায় আছে। ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ জানাই এরকম একজন মানুষের সঙ্গ পাওয়ার জন্য।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫৮

বুমকেশ বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.