নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার বাংলা কবিতা(ইফতেখার হোসেন)

আমি ইফতেখার হোসেন---গ্রাম-শিবনগর,পোষ্ট-অর্জুনপুর,থানা-ফরাক্কা,জেলা-মুর্শিদাবাদ (পশিম বঙ্গ) পিন - ৭৪২২০২ পেশায়- ব্যবসায়ী,বাংলা সাহিত্য,বাংলা ভাষা, আর মানুষের জীবনকে নিয়ে পড়তে,জানতে এবং লিখতে ভালোবাসি।

আমার বাংলা কবিতা(ইফতেখার হোসেন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবর্তন নাকি অবক্ষয়

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১২:২৯

ইফতেখার হোসেনের
পরিবর্তন নাকি অবক্ষয়

অতি নগণ্য নগ্ন রাস্তাধরে হাঁটতে হাঁটতে
প্রকৃতিতে ভরা অতীব সুন্দর চৌরাস্তায়
কখন এসে পৌঁছে গেছি বুঝতে পারিনি
বুঝতে পারিনি অতীতের
ধামাধরা নগ্ন সমাজটাকেও
যারা সত্যিই নগ্ন;
খোলসের ধার ধারে না –।
ধার ধারে না মুখোস পরা উল্লসিত
বিজয়ী সমাজের ক্রিয়াকলাপের।
আজ এখানে এসে পৌঁছে গেছি –
হয়তো ভুল করে ; না।… না,…
নগ্ন সমাজের আড়ষ্টতায় ।
না! ‘আঁতে ঘা’ দিয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করা আমার উদ্দেশ্য নয়,বরঞ্চ বলা যেতে পারে যাদের ‘আঁত’ দিন দিন চুপসাতে চুপসাতে ছোটো হয়ে যাচ্ছে কিংবা শেষ হয়ে যাচ্ছে ;তাদের হৃদয়কে,বিবেককে জাগ্রত করে মানবিকতার তথা মানবতার জয় ঘোষনা করায় আমার মূল উদ্দেশ্য।

পরিবর্তন! হ্যাঁ পরিবর্তনই আমাদের সবচেয়ে বেশি আধুনিক করে তুলেছে।তাইতো আমরা অতি সহজেই ‘একেল’ আর ‘সেকেল’-র পার্থক্য দেখাতে পারি। অসংখ্য ইচ্ছে আর উদ্দীপনা নিয়ে আমরা আধুনিক থেকে আধুনিকতর হয়ে উঠেছি । চলাফেরা, ভাবনা, সংস্কৃতি,খাওয়া-দাওয়া,রুচিশীলতা,পোশাক,ধর্ম,রাজনীতি বলা যেতে পারে সব কিছুতেই আমাদের আমুল পরিবর্তণ এসেছে । পরিবর্তণ ভালোবাসাতেও এনে দিয়েছে। ভালোবাসা এখন পার্থিব সম্পদ দিয়ে কেনা যায় ; এমনকি প্রেমও। তাহলে বাকিই বা কি থাকলো ? সব কিছু উন্নত করতে গিয়ে আমরা পায়ের তলার মাটিকে সরিয়ে ফেলেছি, যেটা আমাদের নিতান্তই প্রয়োজন। আমরা বিবেককে হারিয়ে ফেলেছি, আমরা মানবিকতাকে,নৈতিকতাকে উপদেশ হিসেবে লিপিবদ্ধ করি ঠিকই কিন্তু সেটার বাস্তব রূপ দিতে আমাদের সম্মানে বাধে, আমাদের কষ্ট হয় –।“তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে,মনে সাধ কালো মেঘ ফুঁড়ে যায় একেবারে উড়ে যায়—কোথা পাবে পাখা সে”।আমরা “খাল কেটে কুমির এনে”চলেছি। আমরা পরিবর্তণের নেশায় মাতোয়ারা হয়ে ফেলে আসা ‘মায়া’গুলোকে চিরতরে মুছে ফেলে চলেছি। বিবেকের সিঁড়িগুলো এক এক করে ধ্বংস স্তুপে পরিণত হচ্ছে । আর নতুনের আগমনে সম্পর্কের বাঁধন আলগা হতে হতে একেবারে দূরে চলে গিয়ে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।আমরা অবক্ষয় এনেই চলেছি সব জায়গায়—শিক্ষায়,সাহিত্যে,কর্তব্যে,সামাজিকতায়।সর্বপরি মানুষের ধর্মে—মানবিকতায়।

যারা ‘প্রেম’ শব্দটিকে দেহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখে; তারা আসলে দেহ পিপাষু - এখানে ‘মায়া’ বা ‘সৌন্দর্যের’ কোনো মূল্য নেই । দুঃখ হয় আজ যারা সাহিত্যের ধারক-বাহক এবং যারা এটাকে ব্যবসা,পণ্য , নম্বর পাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখে অনায়াসে ফায়দা লুটছে তারা ‘শুধু গিলেই গেলো সারা জীবন আউড়ালো না কোনো দিন’ । ব্যবহারিক জীবনে এরা সাহিত্যের ধার ধারে না । সাহিত্যকে এরা উপলব্ধী করতে পারবে না কোনো দিন ।আমি জানি এটাকে নিয়েও হেও করবে ‘তোমরা’ । না! তোমাদের ‘অজ্ঞ’ বলতে আমরা ভয় পাই না , অবশ্য এটা তোমরা নিজেরাও জানো , শুধু স্বীকার করোনা । সাহিত্য ‘মা’ সমান ; আর ‘মা’-এর ব্যাখ্যা দেওয়ার দরকার নেই । ‘মা’কে উপলব্ধী করতে হয় । আর এটাকে যারা পণ্য করে ,বিবীকা করে তারা পৃথিবীর জঞ্জাল । এদের সাফ করবার জন্যই আমরা কলম ধরেছি ।
হ্যাঁ এমনই সত্য কথা বলার সাহস আমার আপনার অনেকেরই আছে । কিন্তু হয়তবা বলি না । কিন্তু তার মানে এই নয় যে মুখ বুজে বসে থাকব।সময় এসেছে পাল্টার এবং পালটে যাওয়ার। পরিবর্তনের নামে যারা ‘চোরাবালি’ সাজিয়ে রাখে এদের কাছে আমরা একদম বোকা- সেকেলে ; আমরাও খালি কথায় কথায় উপদেশ দিই । বোকার মতো জ্ঞানের ভান্ডার উন্মুক্ত করে দিই অনায়াসে । বন্ধু! একটা পরিষ্কার জায়গায় একটা কাচড়া ফেলা দেখে - অন্য জন আরেকটা ফেলে ,এই ভাবে দুটো থেকে তিনটা-চারটে ............। আর এই করেই ,দুনিয়াটাকে নোঙরা করে চলেছি । সমস্ত দিক দিয়ে , সমস্ত বিষয়ে । আসুন নোঙরা না করে,বরঞ্চ ওগুলকে উপড়ে ফেলি । আর এটা না করলে আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি তুমিও একদিন ওই নোঙরার দলদলে হাবুডুবু খাবে । হতে পারে সেটা প্রেমে , শিক্ষায়, রাজনীতিতে ,সম্পর্কে কিংবা আরো অন্য কিছুতে ।
আমরা যখন যা ইচ্ছে তাই করি,এবং কখনোবা সেটাকেই আঁকড়ে ধরে চলার চেষ্টা করি । কোনটা ভুল কোনটা ঠিক বুঝবার চেষ্টাও করি না । এই ভাবেই আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়ে যাই।সক্রেটিস বলতেন—“জ্ঞানই পূণ্য-সুতরাং সকলকে শিক্ষা দেওয়ার দরকার –শিক্ষার আলোতে অন্যায় পালিয়ে যাবে, সব কিছুকে যুক্তি দিয়ে গ্রহণ করতে হবে” কিন্তু কোন শিক্ষার কথা বলেছেন ! নিশ্চয় সেই শিক্ষা নয়;যে শিক্ষা আমাদেরকে কলুষতা থেকে মুক্তি না দিয়ে বরঞ্চ আরো বেশি কলুষিত করে। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন – “মুচি,মেথর,অজ্ঞান,দরিদ্র –আমার রক্ত আমার ভাই”। সত্যিই কি আমরা ভাই বলতে শিখেছি।শিক্ষাকে আজ আমরা পণ্য করে ফেলেছি । প্রয়োজন অপেক্ষা আত্ম মর্যাদা গড়তে আমরা শিক্ষাকে পেছনের সারিতে দাঁড় করিয়ে রেখে দিই। আর এই চরম বাস্তবটা সামাজিক নামক নেটওয়ার্ক গুলিতে- পোস্ট, মন্তব্য করা থেকেই অনুধাবন করা যায় অনায়াসে। নানাবিধ অবাঞ্ছিত ছবি, ভি.ডি.ও,কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে দিই কোন দ্বিধাবোধ না করে । অথচ – ই-বুক, মুক্ত বিশ্বকোষ, অনলাইন লাইব্রেরি ইত্যাদি সাইট বা ব্লগ গুলি খুলেও দেখি না। এইভাবে একপা দুপা করে এগোতে এগোতে আমরা পথভ্রষ্ট হতে চলেছি। সত্যকে ছেড়ে অসত্যকে আপন করে ফেলেছি ।প্রতিনিয়ত কেবলি নিজেকেই প্রাধান্য দিয়ে চলেছি। ‘আমরা শুধুই পেতে চাই-এটা চাই ওটা চাই; প্রয়োজনে ঈশ্বরের সঙ্গেও সওদা করি । এটা দিলে ওটা করবো, হ্যান করবো ত্যান করবো। আর ঈশ্বর আড়াল থেকে হাসে! পার্থিব চাওয়ার শেষ নেই- সবকিছু পাওয়ার পরও, “আট বছর আগের একদিন”-র কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয় ! আমাদের নির্মলানন্দের অভাব এখনো রয়েছে—এখনো আমরা হারানোর ভয় করি। অথচ যেটা অবশ্যই ঘটবে’।

“আমারও পরান যাহা চাই”-- সত্যিইতো আমাদের পরান যখন যা চাই আমরা সেটাই করি । কিন্ত ভেবে দেখেছি কি এতে অন্যের কতোটা ক্ষতি হলো ! না এমনটা করার সময় আমাদের কাছে নেই, কেননা আমরা আজ বড়োই ব্যস্ত , কিন্তু কেন ? “মরিতে চাহিনা আমি এই সুন্দর ভূবনে”- আর বাঁচার জন্য চাই টাকা, এতে কার কতোটা ক্ষতি হলো তাতে আমার কিবা আসে যাই – আমার ভাই,আমার বাবা,এমনকি মা জননী,ভগিনীগনও এই ‘কুকুর দৌড়ে’ সামিল হয়ে যায় আনায়াসে । ‘প্রয়োজনের সীমা আছে কিন্তু লোভের সীমা নেই’ ।আমরা দিন দিন লোভের কাছে,চাওয়ার কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি । হিংসায় বশীভূত হয়ে তার কাছে আত্মসমর্পণ করছি । আজ আমাদের ভাঁড়ার ঝুলি শুন্য; ‘কিছুই জানলাম না অথচ সব কিছুই জানি’— মানে ‘সব জানতা বাবু’ আমি । “হাম হি হ্যাই কামাল কে” । ভালো করে , নিজের নামটাই লিখতে জানলো না – অথচ উনিই দেশের নেতা । মাতৃভূমি কি , দেশ কি, প্রতিবেশি কি, কাকে গর্বিত বলে, কষ্ট কাকে বলে জানলো না - বুঝলো না , মা’টি কাকে বলে যে বুঝলো না – তিনিই মাস্টার। নিজের মা’কে পারিশ্রমিক দিয়ে ;- অন্যকে আবার মা’য়ের সংজ্ঞা মুখস্ত করায় !প্রয়োজনে মায়ের কোখের ভাড়াও জিজ্ঞেসা করতে এদের বুক কাঁপেনা। “আমরা কি কেবল কলসিতে জল ভরিতে থাকিবো” । বিষয়টা খানিকটা এরকমই, ‘যাহারা মুর্খ্য তাহারা নিজেদের বিজ্ঞ বলিতে পারে’—কিন্তু পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও যারা নিজেদের শিক্ষিত,বিদ্বান,বিজ্ঞ এমনকি সব জানতা বাবু বলে ঢোল বাজাই –তাদের- কি আখ্যা দেওয়া যায় সেটা আপনারাই ঠিক করবেন। আসুন আত্মত্যাগ দিয়ে অন্যের জন্য কোনো কাজে লাগি ,ভালোবাসতে শিখি,শুধু ভক্ষণ নয় আসুন কিছু সৃজন করি, ভালোকে ভালো বলতে শিখি ।
-----------------------------------: সমাপ্ত ------------------------

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.