নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক
আজ ঘুম থেকে উঠেছি অনেক বেলা করে। সকালের নাস্তা করলাম বেলা ১২:৩০ এ। ভাবছেন "নাস্তা" কেন বলছি? আসলে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া বলতে আমি মূলত রুটি বা পরটা খেতে পছন্দ করি। পরটা দিয়ে হোটেল থেকে নিয়ে আসা চানার ডাল, আলু ভাজি আমার সবচেয়ে প্রিয়। সাথে ডিম ভাজা হলে তো কথাই নেই। আমি একটু আলসে প্রকৃতির, সকালে উঠে নাস্তা বানাতে বিরক্ত লাগে, কিন্তু তারপরেও পরটা আর ভাজি গরম করে খেতে হলো। অবশ্য অফিসে গেলে, সাধারণত নাস্তাটা বাইরেই করি। সেক্ষেত্রে নাস্তাটাও অন্যরকম হয়।
আমার অফিসের আসে পাশে ভারতীয় বা বাংলাদেশেী কোন রেস্টুরেন্ট নেই। যেটা আছে সেটা বেশ দূরে, যদিও ফোন করে অর্ডার করা যায়, কিন্তু ঘুম থেকে উঠে গোসল করে, অফিসে আসতে আসতে ঘন্টা খানেকের উপরে লেগে যায়। তাই অফিসে এসে আর দেরী করতে ভালো লাগেনা। অফিসে গেলে, সাধারনত টোস্টেড বেইগল এর উপর বাটার আর জেলী দিয়েই চলে যায়। মাঝে মাঝে রোল এর সাথে এগ এন্ড চিজটাও খাওয়া হয়। নাস্তা যেটাই হোক, খাবারের শেষে কফি আমার চাই-ই চাই।
দেশে যখন ছিলাম, তখন অবশ্য চা চলতো। মা'র হাতের সে চা-টা ভীষণ মিস করি। প্রবাসে আসার পর থেকে চা খাওয়াটা ছেঁড়ে্ই দিয়েছি, অনেকটা ইচ্ছে করেই। চা খেতে গেলেই মা'র কথা মনে হয়, ভীষণ খারাপ লাগে। মা'র হাতের বানানো সেই পরটা, ডিম পোস, আলু ভাজি সবই এখন দুর্লভ কোন খাবার মনে হয়। ফোনে মা'র সাথে প্রায়ই কথা হয়, কিন্তু মা'কে কথাগুলো বলতে পারিনা, জানি মা কষ্ট পাবে। সন্তানকে সামনে থেকে দেখেন নি আজ প্রায় আট বছর হলো। আমিওতো মা'-বাবাকে দেখিনা, কষ্ট কি আমারও হচ্ছেনা?!
এ বছরের শেষ নাগাদ দেশে যাওয়ার একটা প্রবল ইচ্ছে আছে। তবে যাওয়ার ব্যাপারে ভয়টা অন্যখানে। ব্যাপারটা হলো মা ইদানীং আমার বিয়ে নিয়ে বেশ তোড়জোড় শুরু করেছেন। কিছুটা চিন্তিততো বটেই, রীতিমত ভীত-স্বন্ত্রস্ত্ব। বিয়ে ব্যাপারটাই আমার কাছে বিরাট চিন্তার বিষয় মনে হয়।
মাঝে মাঝে মনে হয়, হিমু হয়ে যেতে পারলে হয়তো ভালো হতো। কিন্তু সেটাতো আর সম্ভব হচ্ছেনা। এই ঠান্ডার দেশে হিমুর মতো খালি পায়ে, পাজামা-পাঞ্জাবী পড়ে হাটার মতো মানসিক সাহস আমার নেই। খুব সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদ স্যার যখন হিমুকে নিয়ে লিখেছিলেন তখন আমেরিকাতে বসবাস করছে এমন কাউকে চিন্তা করে লেখেননি। স্যার বেঁচে থাকলে হয়তো ফোন করে জানার চেষ্টা করা যেত, ঠান্ডার দেশের হিমুরা কি পড়ে?
পাজামা-পাঞ্জাবী আমার ভীষণ প্রিয় পোশাক, কিন্তু খালি পায়ে হেঁটেতো লাভ নেই। নিউ ইয়র্ক শহরের কোথাও মাটির রাস্তা আমার চোখে পড়েনি। সমস্যা কিছুটা গভীর, কিন্তু হিমু হওয়ার ইচ্ছেটা আমার এখনও আছে। দু'দিন আগেই আমার এক গায়েন বন্ধু জিজ্ঞেস করছিলো দেশে থেকে আসার সময় ও আমার জন্য কি আনবে? বলেছিলাম, কাঁচের বোতলে ভরে দেশের কিছু মাটি, ঘাস আর একটা পতাকা নিয়ে আসার জন্য। ও শুনে কিছুক্ষণ চুপ ছিলো। জানিনা ও আমাকে পাগল-টাগল ভাবলো কিনা! ভাবছি ওকে বলে দিবো একটা হলুদ পাঞ্জাবী নিয়ে আসতে।আপনাদের কারো আছে নাকি? থাকলে কোথায় হলুদ পাঞ্জাবী পাওয়া যাবে জানালে উপকৃত হতাম।
এই লিখাটা যখন লিখছি, তখন একটা ফোন আসলো কানাডা থেকে। নাম্বারটা অপরিচিতি। হ্যাঁলো বলতেই ওপাশ থেকে বাঙালী নারী কণ্ঠের শব্দ পেলাম। জিজ্ঞেস করলো তার নাম্বার সেভ করা নেই কেন?! এর কোন সদুত্তর দিতে পারলাম না। সে জানতেও চাইলো আমি তাকে মনে করতে পারছি কিনা! বললাম পারিনি। খুব সম্ভবত মেয়েটি মন খারাপ করেছে। পরিচিত কাউকে ফোন দেয়ার পর যদি সে বলে তার নাম্বার সেভ করা নেই, তার নামটাও মনে করতে পারছিনা, তাহলে মন খারাপ করাটাই স্বাভাবিক। বেশী কথা না বলে বললো, তার আর কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা। আমি বললাম ঠিক আছে রেখে দিন। আসলে বলার মতো কিছু খুঁজেও পাচ্ছিলাম না।
হিমুর বাবার মতো, আমার বাবা আমাকে কোন উপদেশবাণী লিখে দেননি। কখনো "মহান মানুষ" হতেও বলেননি। শুধু ছোটবেলায় আর সব মা-বাবার মতোই বলতো, মিথ্যে বলোনা, মুরুব্বীদের দেখলে সালাম দিবা। কিন্তু এভাবে কি আর মহা মানব হওয়া যায়?
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:১০
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন:
২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
স্বপনচারিণী বলেছেন: আপনার চেয়ে আপনার বাবা-মায়ের কষ্টটা বেশি। যখন নিজে বাবা হবেন শুধু তখনই এটা উপলব্ধি করতে পারবেন, তার আগে না। শুভ কামনা।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:১০
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আপনার কথাটার সাথে পুরোপুরি একমত। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্যেও। ভালো থাকবেন।
৩| ০৮ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:১৪
ইমোশনাল কিলার বলেছেন: দারুণ লিখেছেন। মজা পেলাম। ঠাণ্ডার দেশের হিমুরাও একই পোশাক পরে। মহাপুরুষদের অনুভূতি কম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২৫
কালোপরী বলেছেন: