নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারণ একজন মানুষ। বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। মনের ভাবনাগুলো তুলে ধরতে চাই। ভালো লাগে কবিতা, লিখা-লিখি আর ছবি তোলা, এইতো! https://prokashoni.net

ইফতেখার ভূইয়া

গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক

ইফতেখার ভূইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা রক্তাক্ত ৫ই আগস্ট

২১ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:৫৬


ঐ দিন সকালবেলা নাস্তা করে বের হওয়ার প্ল্যান করছি। শুরু হলো বৃষ্টি। ছাতা সাথে নেই নি ইচ্ছে করেই কারন জানি দৌড়ের উপর থাকতে হতে পারে। ফোন করলাম দুটো ব্লক পরের প্রতিবেশী মিরাজ ভাইকে। লন্ডন ফেরত এই ব্যারিস্টারের পরিবার আমেরিকায় থাকে। তিনিও আমার মতোই বাংলাদেশ আর আমেরিকায় দৌড়াচ্ছেন। যাইহোক, মিরাজ ভাইকে সাথে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে যাচ্ছিলাম নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। ব্যারিস্টার সাহেব হাতে ততক্ষণে লাঠি উঠে গেছে, আইনের মানুষের হাতেও লাঠি! যাইহোক, আমার হাতে ক্যামেরা। আরো তিন চারজন বড় ভাই তাদের বাড়ির গেইটে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

আমাদের সবার বয়স ৪০-৫০ কোঠায়। সবারই পরিবার রয়েছে, বাচ্চা-কাচ্চা। তখন অবশ্য ওসব ভাবার সময় ছিলো না। মাথায় ছিলোনা অসুস্থ স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি রেখে এসেছি। আমার প্রথম সন্তান রায়ান যার বয়স ৬ বছর ও একটু পরেই আমাকে ফোন করবে। আমার মা-ও জানতেন না আমি তাকে আর স্ত্রীকে মিথ্যে বলে বাসা থেকে বের হয়েছি। যাইহোক, বৃষ্টিতে ভিজে জবে জবে অবস্থায় হেটে এন.এস.ইউ. যাবার পথে জোরে চিৎকার করে ডাকলাম আরো মানুষকে নেমে আসার জন্য। জানালা দিয়ে অনেকে তাকিয়ে দেখছিলেন আমাদের। কিন্তু কেউ নিচে আসলেন না। আমরা এই সাত/আটজন অর্ধ-বয়স্ক মানুষ কিছুটা হতাশ হলেও দমে না গিয়ে হাজির হলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। ততক্ষণে দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, ছাত্রদের একজন মাথায় গুলি খেয়ে ইতোমধ্যেই শহীদ হয়েছেন, অন্যজন বুকে গুলি নিয়ে হাসপাতালের পথে আছেন।

ছাত্ররা আমাদের দেখে খুশি হলেন। দূর থেকে দেখেই চিৎকার করে শ্লোগান দিয়ে আমাদের যেন স্বাগত জানালেন। ভিড়ে মিশে গেলাম সবার মতোই। হেটে রওনা হলাম যমুনা ফিউচার পার্কের পাশের রাস্তা দিয়ে। মূল রাস্তার কাছাকাছি আসতেই শুরু হলো, টিয়ার গ্যাস মারা। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ শুরু হলো, এক এর পর এক সাউন্ড গ্রেনেড ফাঁটছে। মুহূর্তেই শুরু শটগানের ফায়ারিং। নাইকির একটা ফ্যানিপ্যাক কোমরে না বেঁধে কাঁধে ঝোলালাম আড়াআড়ি করে। ওটার ভেতর ফোন, কেবল, ক্যামেরার ব্যাটারি, টাকা, মাস্ক, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিচয়পত্র হিসেবে আরো টুকটাক জিনিস ছিলো। দুই রাস্তার মাঝখানের ডিভাইডারে (বেশী উঁচু নয়) দাঁড়িয়ে ভিডিও করছি, ওমনি এক ছেলে এসে বললো, "আঙ্কেল, নেমে যান গুলি করবে"। ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই ছররা গুলির একটা প্যালেট এসে আমার ফ্যানিপ্যাকেই লাগলো। বুঝে ওঠার আগেই দেখি আরেক বড় ভাই তার থুতনি চেপে ধরেছেন। হাত সরাতেই দেখলাম উনার থুতনির চামড়া উঠে সাদা মাংস কিছুটা দেখ যাচ্ছে। প্রাণঘাতী নয়, কিন্তু কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।

ছেলেটার কথা মতো ডিভাইডার থেকে নেমে গেলাম। মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ জানালাম, সেই সাথে ফ্যানিপ্যাককেও। কয়েকজন ছাত্র সামনের দিকে থাকাতে বেশ কিছু ছররার তাদের গায়ে লাগলো (উপরের ছবি)। হঠাৎ করেই পুলিশ এগিয়ে আসতে শুরু করলে আমরা পিছু হটলাম। ততক্ষণে এই ভারী শরীর নিয়ে দৌড়ে বেজায় তৃষ্ণা পেয়ে গেল। গলির ভেতর দাঁড়িয়ে পুলিশের দিকে খেয়াল রাখছি ততক্ষণে পুলিশ মূল রাস্তা থেকে বসুন্ধরার গেইট পেরিয়ে গ্রামীণ ফোনের অফিসের কাছে চলে এসেছে।

গলির ভিতর দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি, পাশের বাড়ির এক আন্টি জানালা দিয়ে আমাকে দেখছিলেন ৪র্থ তলা থেকে। তৃতীয় তলার বারান্দায়ও একটা ছোট বাচ্চা তাকিয়ে ছিলো। আন্টি জিজ্ঞেস করলেন, "বাবা, কিছু লাগবে?" বললাম আন্টি একটু পানি হলে খুব ভালো হতো। ছোট বাচ্চাটা দৌড়ে কোথা থেকে যেন আন্টির আগেই পানি নিয়ে হাজির। খুব সম্ভবত বাচ্চার বাবা-মা-ই দিয়েছে কিন্তু বাচ্চাটা গ্রিলের ফাঁক দিয়ে দিতে পারছিলো না। আমি বললাম, আব্বু পানি আসছে, তুমি ভেতরে চলে যাও। বাচ্চাটা পানি কোথাও রেখে এসে আবার তাকিয়ে রইলো। উপর তলার আন্টি কাউকে নিচে পাঠালেন ঠান্ডা পানি দিয়ে। নিচে আমরা ৮/১০ জন ছিলাম, সবাই কম-বেশী ভাগাভাগি করে খেলাম। ধন্যবাদ জানিয়ে আবারও ধীরে ধীরে রাস্তায় আসলাম। শ্লোগান চলছে, টায়ার জ্বলছে, রাস্তা আবার আমাদের দখলে এলো। ঘন্টা খানেক পরেই আর্মির দুটো এপিসি এলো, আমাদের শান্ত থাকার জন্য বললো।

তাদেরকে ফুল, পতাকা, ঠান্ডা পানি দিয়ে জনগণ স্বাগত জানালো। তারা আমাদের আশ্বস্ত করলেন আমাদের উপর আর কোন আঘাত আসবে না। তারা আমাদের নিরাপত্তার জন্যই এসেছেন। তাদের কথায়, মানুষের আনন্দে চোখে জল চলে আসলো। অনেকেই এপিসিতে উঠে পড়লো, সেনা ভাইদের জড়িয়ে ধরলেন।

সেনাবাহিনী প্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের কথা শুনতেই সবাই বুঝে গিয়েছিলো কি হতে যাচ্ছে। তবে পুরোপুরি দুঃশ্চিন্তা কেটে যায় নি তখনও। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত হলো শাহাবাগ যাবো। হেটে হেটে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আসতেই আবারও গুলির শব্দ। ইতোমধ্যেই হাসিনার পালানোর খবর পেয়ে গেছি। রাস্তায় সবাই উল্লাস করছে। তবু থেমে থেমে বাড্ডা থানার গলির ভেতর থেকে গুলি করছিলো পুলিশ। কিছুক্ষন পর পরই মানুষ গুলি বিদ্ধ হচ্ছে আর সবাই ধরাধরি করে হাসপাতাল নিয়ে যাচ্ছে। একজনের চোখে গুলি লেগেছে, সম্ভবত তিনি ওখানেই শহীদ হয়েছেন। আরেকজনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায়। সে এক করুন দৃশ্য যা আমি কোনদিনও এই জীবনে ভুলতে পারবো না। এত রক্ত একসাথে আমি কখনো দেখিনি। প্রায় সন্ধ্যে হয়ে আসছিলো, পায়ের ব্যাথায় হাটা আর সম্ভব হচ্ছিলো না। ফিরতি পথে দেখলাম লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন।

ভাটারা থানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। আমি ক্লান্ত শরীরের বাসায় ফিরছি, বসুন্ধরার কাছে আসতেই শত শত মহিলাদের রাস্তায় দেখা গেল, অনেকেই পরিষ্কার জামা, ছেলেরা পাঞ্জাবী পড়ে বের হয়েছেন, সেলফি তুলছেন স্বৈরাচারমুক্ত নতুন বাংলাদেশে। আমি তখন আর হাটতে পারছি না, পায়ের ব্যাথায় প্রাণ যাবার উপক্রম, রাস্তার এক কোনে বসে বসে মানুষের আনন্দ দেখছিলাম। মনে হলো এরাইতো তারা যারা সকালে উঁকি দিয়ে দেখছিলো জানালা দিয়ে। যারা ঘরে বসে দেশ স্বাধীন করেছে। আমি অন্ধকারে একা রাস্তার পাশে বসে আছি, ভীষণ ক্লান্ত, ঘামে ভেজা শরীর, তৈলাক্ত মুখ আর ময়লা জামা-কাপড়ে জড়ানো। চারিদিকে পটকা ফুটছে, গাড়ির হর্ন বাজছে, বোকার মতো আমি বসে বসে কাঁদছি, আমার আনন্দ হচ্ছে না একটুও, ঐ ছোট ছোট ছেলেগুলোর কথা মনে পড়ছে, ওরা কোথায় আছে, কেমন আছে? ওরা কি ওদের রক্তে ভেজা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ দেশ দেখে যেতে পেরেছে? ওরাতো মরে না, ওদের মৃত বলো না, ওরা বেঁচে থাকে কোটি হৃদয়ে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: ইফতেখার ভূইয়া,





একাধারে চমৎকার, দুঃসাহসিক এবং মর্মান্তিক!!!!

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: ৭১ - এ স্বাধীন হওয়ার পরেও এ ধরনের আন্দোলন হওয়ার কথা ছিলো না, এটা আমাদের দূর্ভাগ্য। আর কখনো বাংলার বুকে এমন আঁধার কালো রাত না আসুক। গণতন্ত্র মুক্তি পাক, পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক। ধন্যবাদ।

২| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ ভোর ৪:৩০

রবিন_২০২০ বলেছেন: যদিও মর্মান্তিক অনেক ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে তারপরও আপনি সৌভাগ্যবান, স্বাধীনতা প্রাপ্তির মুহূর্তটির প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে।

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: অনেক মূল্য চুকাতে হয়েছে এদেশকে, এদেশের মানুষকে। কত মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তান এক বুক হাহাকার নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমুতে যাবে তা কল্পনা করাও কঠিন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবার সহায় হোন। এটাই চাওয়া। ধন্যবাদ।

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:০৫

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: আহমেদ জী এস ভাই বলেছেন যে, একাধারে চমৎকার, দুঃসাহসিক এবং মর্মান্তিক!!!! সহমত

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সত্যিই তাই। ধন্যবাদ।

৪| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



২০২৪ এর বিপ্লব আপনি যেমন সচো্ক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন আমারও দেখার সুযোগ হয়েছে। ভয়াবহ কিছু স্মৃতি লেখার ইচ্ছে আছে।

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: লিখুন, সত্যটা সবাই জানুক। ধন্যবাদ।

৫| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:১৭

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান এমন একটা আন্দোলনে অংশগ্রহন করতে পেরেছেন। ঢাবিতে পড়াকালীণ সময়ে মিছিল মিটিংএ অংশগ্রহনের অভিজ্ঞতা আছে । রক্তে যে কি কাপন ধরায় , তা খুব ভালই জানা আছে। এবারে রাজপথে না থাকতে পারাটা অসম্ভব মিস করেছি। অনেক আত্মগ্লানিতে ভুগেছি।

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৫৯

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছিলাম জাতীয় নির্বাচনের দিন। সরকার গঠন ও পতনও হলো আমার চোখের সামনেই। সামনে থেকে দাঁড়িয়ে ছাত্রদের আন্দোলন দেখা ও তাতে শরীক হওয়া বিরাট একটা ভাগ্যের ব্যাপার বিশেষ করা আমরা যারা প্রবাসী তাদের জন্যেতো বটেই। তবে অনেক রক্তের দামে এসেছে এই স্বাধীনতা। ধন্যবাদ।

৬| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:২২

শায়মা বলেছেন: ঠিক এসব আমিও দেখেছি আমার বাড়ির বারান্দা থেকে। ভাইয়া তুমি বসুন্ধরা আর আমি তোমাদের কাছেরই প্রতিবেশী বলা যায়। আমাদের বারান্দা থেকে ঐ যে আর্মিরা ছেলেদেরকে শান্ত করলো তখন ১টা বেজে২০ মিনিট ছিলো তাইনা?


কিন্তু সকাল থেকেই গুলির আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছিলো। শুনতে পাচ্ছিলাম কেউ কেউ আহত নিহত হয়েছে। কি দূর্বিসহ দিন গেছে! :(

২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:৫৪

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: হুম মোটামুটি ঐ সময়টাতেই আর্মি এসে আমাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করলেন। জানালেন একটু পরেই সেনাবাহিনী প্রধান জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দেবেন। ততক্ষণে আমরা মোটামুটি ধারনা পেয়েছি যে ইতিবাচক কিছু একটা হতে যাচ্ছে।

সকাল থেকেই পুলিশ বেশ মারমুখী ছিলো। ঐ দিনের ভিডিও বেশ দীর্ঘ হওয়ার কিছুটা এডিটিং শেষ করতে পেরেছি, কিছুটা বাকি আছে। দিনগুলো এখন অনেকটাই স্বপ্নের মতো মনে হয়। সামনে না থেকে দেখে না বুঝে অনেকেকেই দেখছি প্রবাসে বসে আন্দোলন দিয়ে আবোল-তাবোল বকছে। বিষয়টা বেশ বিরক্তিকর মনে হয় তাই খুব বেশী কিছু লিখিনি। জুলাইয়ে কিছু ভিডিও করেছিলাম তার একটা নিচে শেয়ার করছি। ভিডিওটিতে RAB এর হেলিকপ্টার থেকে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ার দৃশ্য ধারন করতে পেরেছিলাম।

৭| ২৮ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার এই লেখাটি পড়ে মন ভরে গেল। ৫ই আগস্টের ঢাকার রাজপথের বর্নণা এই ব্লগে এই প্রথম পড়লাম।

আমেরিকা থেকে গিয়ে আপনি এই আন্দোলনে যোগ দিতে পেরেছিলেন জেনে আপনাকে অনেক অভিনন্দন। আপনাদের ৪০-৫০ বছর বয়সী ৭/৮ জনের দলটির সাহস এবং সদিচ্ছা দেখে মুগ্ধ হলাম এবং শ্রদ্ধা অনুভব করলাম।

২৯ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:৫২

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: এ বছরের নির্বাচনের দিন, মানে ৭ ই জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছি। কিছু পারিবারিক কাজ নিয়ে আসলেও পরিস্থিতি ততটা সহায়ক হয় নি, অগত্যা বেশ অনেকদিন থাকতে হলো। বলতে পারেন কাকতালীয়ভাবেই এই আন্দোলনে জড়িয়ে গিয়েছি, তা না হলে বাংলাদেশে সাধারণত এক বা দু'মাসের বেশী বিগত ১৭/১৮ বছরেও কখনো থাকা হয় নি। প্রবাসী হওয়ার পর, খুব সম্ভবত এবারই প্রথম একসাথে এতটা দিন বাংলাদেশে থাকা হলো, আগামীতে আর হবে কি না জানি না।

আন্দোলনে যুক্ত হওয়াটা মূলত নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই কর্তব্যের অংশ বলে মনে হয়েছে। তরুনদের দাবীগুলো যৌক্তিক। অন্যায়-অন্যায্য ইস্যু মেনে নেয়া আমার জন্য কঠিন বরাবরই। বাবা-র কাছ থেকে এতটুকু শিক্ষা আমরা অবশ্যই পেয়েছি যদিও পরিবার আমাকে নিয়ে কিছুটা ভীত ছিলো। বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টি আমার জন্যেও সহজ ছিলো না কিন্তু জীবনে মাঝে মাঝে এমন সময় আসে যখন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ থাকে না। আমার বাবাও খুব সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধে যাবার আগে এমনটাই ভেবেছিলেন অবশ্য কখনো জিজ্ঞেস করা হয় নি।

এই প্রজন্ম বয়সে আমাদের চেয়ে বেশ ছোট, অনেকেই আমাকে "আঙ্কেল" বা "বড় ভাই" বলে ডেকেছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে ওদের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি একটা আত্মিক দায়বদ্ধতা অনুভব করেছি। যৌক্তিক দাবীতে তরুনদের রক্তঝরা মেনে নেয়া কোনভাবেই সম্ভব হয় নি। চেষ্টা করেছি ওদের পাশে থাকতে, এই যা। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.