![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি যেন সবার চোখে পাপী হয়ে থাকি...!
ফাহাদ অনার্স ২য় বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে ৩য় বর্ষে উঠবে! আগামীকাল তার পরীক্ষা, কিন্তু কোন ভাবেই সে পড়ায় মনযোগী হতে পারছেনা। সেই সকাল থেকে তার আম্মুকে ফোন দিয়েই যাচ্ছে, কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে কোন রেসপন্স পাচ্ছেনা সে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হল, এখনো কোন খবর নেই! ফোনটা বেজেই যাচ্ছে। দুপর হয়ে গেল, তার আম্মু এখনো তার কল ব্যাক করলনা! আম্মুর কোন সমস্যা হয়নিতো? এমনিতেই আম্মু খুব অসুস্থ, না জানি আম্মুর কি হয়ে গেল; ভাবতেই ফাহাদ অঝোরে কাঁদতে লাগল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল, ফাহাদ সেই সকালে ২ টা পরটা আর সাথে ডাল ভাজি খেয়ে আছে, এখন পর্যন্ত তার পেটে কোন খাবার পড়েনি। একদিকে আম্মুর জন্য টেনশন অন্যদিকে পরীক্ষার টেনশন ফাহাদকে অসুস্থ বানিয়ে দিচ্ছে। ফাহাদের কান্না, কষ্ট আর টেনশন কয়েকশো গুণ বেড়ে গিয়েছে। কাউকে কিছু বলতেও পারছেনা। আজকে রাতুলের ফোনটাও খারাপ হয়ে গেছে মনে হয়, অথবা চার্জ নেই হয়তো তাই তাকেও ফোনে পাওয়া যাচ্ছেনা। সন্ধার ঠিক আগ মুহুর্তে হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল, ফাহাদ অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়ে ফোনটা তুলল, আলহামদুলিল্লাহ্... বলে ফোনটা রিসিভ করল। আম্মু ফোন দিয়েছে, আম্মুর ফোন পেয়ে ফাহাদ যারপরনাই খুশি, আনন্দে আত্মহারা। নিমিষেই তার সকল কষ্ট যেন উধাও হয়ে গেল।
ফাহাদ ফোন রিসিভ করে শুধু কাঁদছে কিছু বলতে পারছেনা সে। অপর প্রান্ত থেকে মায়ের স্যরি! কিন্তু ফাহাদ থামতেই পারছেনা, সে শুধু কাঁদছেই। আম্মু একটা কাজে খালামনির বাসায় গেছে সকালে, সেখানে ব্যস্ত হয়ে গিয়ে সব ভুলে গিয়েছে, ফোনের কথাও তার মনে নেই। ফাহাদ কেঁদে কেটে শান্ত হল। আম্মু বলল, আচ্ছা আব্বু আমি তোমাকে রাতে ফ্রি হয়ে ফোন দিব, আম্মু এখন রাখি? আচ্ছা 'আম্মু রাখো' বলে ফোন রাখল ফাহাদ। পুরো এক বছরের পড়া তাকে একদিনে শেষ করতে হত, কিন্তু সারাদিন তো পড়তেই পারলোনা। পুরো এক বছরের পড়া ফাহাদকে এখন এক রাতেই পড়তে হবে। শুরু হল ফাহাদের পড়া, রাত ১২ টা ১ টা ২ টা... ৫ টা, এমনকি ফজরের নামাজ শেষ করে আবারো পড়া শুরু করল ফাহাদ। সারারাত পড়ে ক্লান্ত সে, সকাল ১০ টা বেজে গেছে তার খুব ঘুম পাচ্ছে। ১ ঘন্টা টানা ঘুম দিয়ে ফ্রেশ হয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর আম্মুকে ফোন দিচ্ছে দোয়া চাইতে। আম্মু ফোন তুলছেইনা, যাইহোক ১ ঘন্টা পর আম্মুকে ফোনে পাওয়া গেল। আম্মু থানায় আছে একটা কাজে, পরে ফোন দিবে বলে রেখে দিল। ফাহাদের আম্মু একজন জনপ্রতিনিধি ২৪ ঘন্টাই তার জনগণ নিয়ে কাটে। পারিবারিক সমস্যা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় সমস্যা পর্যন্ত তার আম্মুকেই সমাধান করতে হয়।
ফাহাদ এটা বুঝে, কিন্তু করবে সে? সেওতে তার আম্মুর একটু ভালবাসা প্রত্যাশী, একটা ফোনের অপেক্ষায় তার অসংখ্য সময় চোখের জলেই কেটে যায়। বারবার ফোনের বাটনগুলোতে টিপে, কল দেয় আবার কল ডেলিভারি হওয়ার পূর্বেই কেটে দেয়, রিসিভ না হওয়ার সন্দেহে। ফাহাদ ঢাকায় থাকে আর তার আম্মু থাকে প্রায় *** মাইল দূরে। সে কি করবে, চাইলেইতো আর যেতে পারছেনা আম্মুর কাছে! আম্মু এই মাসে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় আসার কথা, ফাহাদ তার মাকে নিয়ে ঘোরার জন্য ৩ দিনের একটা প্ল্যানও করে ফেলল! কিন্তু আজ আম্মু বলল, তার আসার নিশ্চয়তা নেই। ফাহাদের মনটা নিমিষেই খারাপ হয়ে গেল....! আসলে ফাহাদরা কি চায়?
তারা চায় মায়ের কাছ থেকে একটুখানি ভালবাসা, একটুখানি স্নেহমাখা উপদেশ। সারাদিনে সকল কাজের ফাঁকে মায়ের দু'টি ফোন পেলে ফাহাদরা যে পরিমাণ খুশি হয়, তা দুনিয়ার কেউই বুঝবেনা। ফাহাদরা তাদের মায়ের কাছে টাকা চায়না, বাড়ি গাড়ি চায় না। তারা শুধু একটু ভালবাসাই চায়, যা কোটি টাকা দিয়েও কেনা সম্ভব নয়। ফাহাদ তার আম্মুকে অনেক বেশি ভালবাসে, অনেক বেশি.....!
কিন্তু তাদের আম্মুরা সেটা বুঝেতো? নাকি বুঝেও ব্যস্ততার কারণে কিছু করতে পারেনা, নাকি অন্যকিছু? কি তাহলে? ফাহাদদের মানসিক অবস্থা ঠিক রাখার জন্য খুব বেশি কিছু লাগেনা, শুধু দিনে ২ টা ফোন দিলেই ফাহাদরা খুশি.....!!!
আপনার হাজারো ব্যস্ততার মাঝে জনগণের জন্য রেখে দেয়া সময় থেকে ১০টা মিনিট ফাহাদদের দিন, তারা এতেই খুশি।
-বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে [”ফাহাদ” ছদ্মনাম]
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৬
প্রক্ষাপন বলেছেন:
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০০
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আপনার হাজারো ব্যস্ততার মাঝে জনগণের জন্য রেখে দেয়া সময় থেকে ১০টা মিনিট ফাহাদদের দিন, তারা এতেই খুশি।
ঘর ফেলে জনসেবা
চুলোয় যাক সংসার;
ফাহাদেরা ঝরে যায়
কিবা এসে গেলো কার??
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:০৯
প্রক্ষাপন বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫১
আমি বন্দি বলেছেন: খুব কষ্ট লাগল পড়ে ।