![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অসমাপ্ত
"গল্পের সমাপ্তি হয় সুখে আর জীবনের সমাপ্তি হয় মৃত্যুতে।"
সেদিন হঠাৎ দেখেছিলাম তোমায়, আমি রাস্তার এই পাশে আর তুমি অন্য। অপলকে তাকিয়ে ছিলাম তোমার দিকে, হয়তো তুমিও তাকিয়ে-ছিলে। না, কেন তাকাবে, কি রূপ আছে আমার। তুমি তাকাও না তাকাও তাতে আমার কি, আমি তাকাবই, বেহায়ার মত।
রাস্তা পার হব, তুমি উঠে গেলে বাসে। সেদিন আর কথা হল না।
জান, তার পর কয়েক দিন ঐ একই সময় গিয়েছিলাম, যদিও কোন কাজ ছিল না, মিথ্যা কথা, অনেক বড় কাজ ছিল। তোমার সাথে দেখা করার ছিল, তোমাকে বলার ছিল আমি তোমায় ভালবাসি।
না, কপালে আর হল না, হয়তো আর কোন দিনও দেখা হবে না তবুও খুঁজে যাব, ভালবাসি যে তোমায়।
মনের মাঝে কেবল নজরুলের একটি গান বাজছে -
"পরদেশী মেঘ যাও রে ফিরে।
বলিও আমার পরদেশী রে।।"
আজকে বন্ধুদের বললাম বেপার টা, তারা যা উত্তর দিলো তাতে আমি সন্তুষ্টি হবার চেয়ে রাগই বেশি হল। তাদের ভাষ্য এই যে কত মেয়ে আসবে-যাবে, তা ছাড়া যার পরিচয় কিছুই জানি না তার জন্য কষ্টকরে কি লাভ, এই পৃথিবী তো আর ছোট না যে চাইলেই খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তাদের কে বুঝাবে যে তুমি আলাদা, আর ভালবাসা তো একবারই আসে, তা আর যায় না। যারা বলে এই বড় পৃথিবী তে তোমায় কোথা, কিভাবে খুঁজবো, তারা বোকা, আমার ভালবাসা কি এই পৃথিবী থকে ছোট না কি।
প্রায় এক মাস কেটে গেছে, তোমার আর দেখা পেলাম না, রোজকার রুটিন অনুযায়ী সন্ধ্যার সময় আমি বাস-স্ট্যান্ড এ দাঁড়িয়ে আছি। যদি আর একবার তোমার দেখা পাই। ভাগ্য আজ আংশিক ভাল, দেখা পেলাম বটে কিন্তু ধরতে পারলাম না, আমি তোমার কাছে পৌঁছানোর আগেই বাসে উঠে গেলে, হাত দেখালাম কিন্তু বাস থামল না।
তবে এই ঘটনা আমার আশা আরও বাড়িয়ে দিল, যে তোমার দেখা আমি পাবই । ইদানীং কবিতা লেখেছি, যদিও কবিতার সাথে আমার তেমন ভাব নেই কিংবা আমি মানুষ হিসেবেও অত রসিক নই। তবুও লিখছি, তোমায় নিয়ে দু এক লাইন। এখন এমন অনেক কিছুই করছি যা আমি আগে করতাম না, যেমন- বাস-স্ট্যান্ড এ কোন মেয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা, রাতে স্বপ্নে রাজকুমারী দেখা, আরও কত কি। বন্ধুরা-তো আমায় এখন পাগল বলেই ডাকে।
" কি করে ভুলি সেই সন্ধ্যা
যা মরে দিয়েছিল এক রাশ নিস্তব্ধতা
কি করে ভুলি
তোমার সেই কাজল কালো চোখ
আমার জাগরণে স্বপনে
যে কেবলই ভেসে উঠে তোমার কোমল মুখ
তোমার চুলে আমি বাধি স্বপ্ন
তোমার হাসিই যে আমার ভ্যালসার অন্ন। "
"চারি দিক নীরব, কেউ নেই কোথাও, শুধু আমি আর তুমি হেটে চলেছি একা, নিস্তব্ধতায় এক অন্য রকম ভালবাসার সৃষ্টি করেছে।" হঠাৎ মায়ের দাকে ঘুম ভাঙ্গায় বুঝতে পারলাম এটা একটা স্বপ্ন, তবে সত্যি হতে দোষ কি।
ইদানীং পুরানো ছবি আকার অভ্যাস টা ঝালাই করছি, তোমার ছবিও আকবর চেষ্টা করছি কিন্তু আমার পেন্সিলের কি এত ক্ষমতা আছে যে তোমার রূপকে ধারণ করে, না নেই।
" তুমি বিনা এই মন
বিরহে করিছে ক্রন্দন
ভাঙ্গিতেছে মোর
গড়ে তোলা ভালবাসার স্বপন "
কয়েক দিন ধরে কিছুই ভালো লাগছে না। জানি না কেন যেন সব খালি খালি লাগছে। নিয়মিত ডাইরিও লিখছি না, যা না লিখলে আমার ভাত হজম হয় না।
"শূন্যতা
তুমি ছাড়া
শূন্যতা ভরা এই বসন্ত
নেই বিরহের কোন অন্ত।"
আজ সকালে মনটা আরও খারাপ লাগছে। পত্রিকা খুলতেই দেখি বড়ো করে তোমার ছবি, দেখে এত আনন্দিত হয়েছি যে শিরনামটা খেয়ালই করিনি। শিরনাম টা পরতেই এক মুহূর্তের জন্য যেন মৃত্যু কে আলিঙ্গন করলাম, সব কেমন জানি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। তুমি নেই, কিছু নর খাদক তোমাকে থাকতে দেয় নি। সেদিনই তোমার নাম জানতে পারলাম, অনামিকা।
তোমার নামও তোমার রূপের মত, শুরু আছে শেষ নেই। থাক, এসব ভাবার সময় আমার আর নেই। এখন আমার একটাই লক্ষ, তোমার হত্যা কারিদের বিচার। তোমার কবরে গিয়েছিলাম, যে ফুল জীবিত থাকতে দিতে পারিনি তা দিতে। সবার মুখে এখন একটাই নাম, 'অনামিকা' আর একটাই স্লোগান, 'হত্যা কারির বিচার চাই'।
জানি কিছু দিন পর আর কেউ মনে রাখবে না কিন্তু আমি রাখব। আমি আমার জীবন থাকা পর্যন্ত তোমার হত্যাকারীর বিচার এর জন্য লড়ব।
অনেকটা সময় চলে গেছে, নিয়ম মত সবাই সব ভুলে গেছে কিন্তু আমি একা লড়ে যাব। শুনেছি তোমার হত্যা কারিদের নাকি অনেক ক্ষমতা, তাতে কি আমার ভালবাসার কি ক্ষমতা কম। মা বন্ধুরা সবাই বলছে এবার থাম, আমি থাম বোনা, কেন থামবো, আমি সত্যের পথে।
কদিন ধরে লক্ষ করছি কারা যেন আমায় ফলো করছে। জানি না তোমায় সুবিচার দিতে পারব কিনা, নাকি নিজেই অবিচারের শিকার হব। থানায় একটা ডায়রি করেছি। মা কে সব খুলে বলেছি আর এটাও বলেছি যে আমাকে যেন তোমার পাশে কবর দেয়। মা অনেক ক্ষণ কাঁদল, তারপর একটা থাপ্পড়। সব কেন থম ধরে আছে।
অনিন্দ্য, আমার দূর সম্পর্কের ভাই। আমি যখন তার এই ডাইরিটা পরছি তখন সে তার প্রিয়ার কবরের পাশে ঘুমিয়ে আছে, একটা গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে, আজ এক মাস।
[ এই গল্পের সব ঘটনাই কাল্পনিক।]
©somewhere in net ltd.