নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ১২

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৪



চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?

অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।

চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ ৯ থেকে ১৫ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। তারপর চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি ১৬ ও ১৭তম পর্বে। ১৮তম পর্বে ছিলো ইন্দু নামের কবিতাংশ গুলি। আর সব শেষে ১৯ মত পর্বে ছিল চাঁদের আরেক নাম বিধু সংক্রান্ত কবিতাংশ। সব মিলিয়ে ১৯ পর্বে ১৮১টি চন্দ্র পংক্তি দিয়েছে।

এবার কাজী নজরুল ইসলাম তার কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদেকে তুলে এনেছেন তার খোঁজ করলাম। এবার দেখুন কি কি পেলাম।





১১১।
কবে সে মদিনার পথে, গিয়াছে সুজন।
বহায়ে নয়ন বারি, ভিজিল বসন।।
রমজানের ঐ চাঁদ নবী,
পাঠাইলেন নূরের খুবী,
পাগল করে আমার হিয়া করেছে হরণ।।




১১২।
বল সই বসে কেনে একা আনমনে
চল সই সই পাতাবি গাঁদা ফুলের সনে।।
নিয়ে পাথর কুচি, আউস ধানের গুছি
অজয় নদীর ধারে খেলব নিরজনে।।
দেখিস আসবে ফিরে তোর চাঁদ নতুন চাঁদে,
চাঁদ-মুখ রেখে ঘরে কে সই রইতে পারে
আঁধার কয়লা খাদে!



১১৩।
আনমনে খেলে জল-বালিকা
খুলে পড়ে মুকুতা মালিকা
হরষিত পারাবারে উর্মি জাগে
লাজে চাঁদ লুকালো গগন তলে।।




১১৪।
তব চঞ্চল আঁখি কেন ছলছল হে।
হেরি মোরা অবিরল জলে ভাসে কমল
হেরি আজি কমলে উথলে জল হে।।
চিরদিন কাঁদায়েছে যে জল নিঠুর
আজি অশ্রু করেছে তারে একি সুমধুর
বঁধু সাধ যায় ধরি তব সমুখে মুকুর
যেন বরষিছে চাঁদ মুকুতাদল হে।



১১৫।
আমি কলহেরি তরে কলহ করেছি বোঝনি কি রসিক বঁধূ।
তুমি মন বোঝ মনোচোর মান বোঝ নাকি হে —
তুমি ফুল চেন, চেন নাকি মধু?
তুমি যে মধুবনের মধুকর,
তুমি মধুরম মধুরম মধুময় মনোহর
কলহেরি কূলে রহে অভিমান-মধু যে, চেন নাকি বঁধু হে —
রাগের মাঝে রহে অনুরাগ-মধু যে, দেখ নাকি বঁধু হে —
কলঙ্কী বলে গগনের চাঁদ প্রতি দিন ক্ষয় হয়
তুমি নিত্য পূর্ণ চাঁদ সম প্রিয়তম চির অক্ষয়
এ চাঁদে একাদশী নাই হে —
শুধু রাধা একা দোষী হলো নিত্য কেন পায় না
মোর কৃষ্ণ চাঁদে যে একাদশী নাই হে —
সেই ব্রজগোপীদের ঘর আছে পর আছে
কৃষ্ণ বিনা নাই রাধার কেহ
আমিও জানি যেন আমাও শ্রীকৃষ্ণ কেবল রাধাময় দেহ।
সে রাধা প্রেমে বাঁধা সে রাধা ছাড়া জানে না, রাধাময় দেহ
সে রাধা প্রেমে বাঁধা।




১১৬।
জানি আমার সাধনা নাই আছে তবু সাধ।
তুমি আপনি এসে দেবে ধরা দূর-আকাশের চাঁদ।।



১১৭।
বাসন্তী রং শাড়ি পরো খয়ের রঙের টিপ।
সাঁঝের বেলায় সাজবে যখন জ্বালবে যখন দীপ॥
দুলিয়ে দিও দোলন খোঁপায়
আমের মুকুল বকুল চাঁপায়,
মেখ্লা করো কটি-তটে শিউরে-ওঠা নীপ॥
কর্ণ-মূলে দুল দুলিও দুলাল চাঁপার কুঁড়ি,
বন-অতসীর কাঁকন পরো, কনক-গাঁদার চুড়ি।
আধখানা চাঁদ গরব ভরে
হাসে হাসুক আকাশ পরে,
তুমি বাকি আধখানা চাঁদ ধরার মণি-দীপ॥




১১৮।
আশা-নিরাশায় দিন কেটে যায় হে প্রিয় কবে আসিবে?
প্রতি নিঃশ্বাসে নয়ন প্রদীপ মোর আসিছে নিভে।।
ফুল ঝরে যায় হায়, পুন ফুল ফোটে
কৃষ্ণা তিথির শেষে চাঁদ হেসে ওঠে
আমারি নিশীথের অসীম আঁধার ওগো চাঁদ কবে নাসিবে।।
শীত যায় মনোবনে ফাল্গুন আসে গো আসিল না আমারই ফাল্গুন
চাঁদের কিরণে পৃথিবী শীতল হায় মোর বুকে জ্বালে সে আগুন।
নিশীথে বকুল শাখে
পিয়া পিয়া পাপিয়া ডাকে
আমারই প্রিয়তম ‘জাগো পিয়া’ বলে কবে ডাকিবে।।



১১৯।
আজো বোলে কোয়েলিয়া
চাঁপাবনে প্রিয় তোমারি নাম গাহিয়া।।
তব স্মৃতি ভোলেনি চৈতালি সমীরণ,
আজো দিকে দিকে খুঁজে ফেরে কাঁদিয়া।।
নিশীথের চাঁদ আজো জাগে
ওগো চাঁদ, তব অনুরাগে।
জলধারা উথলে যমুনার সৈকতে
খোঁজে তরুলতা ফুল আঁখি মেলিয়া।।




১২০।
নতুন চাঁদের তকবীর শোন কয় ডেকে ঐ মুয়াজ্জিন —
আসমানে ফের ঈদুজ্জোহার চাঁদ উঠেছে মুসলেমিন।।
এলো স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুজ্জোহার এই সে চাঁদ,
তোরা ভোগের পাত্র ফেল রে ছুঁড়ে ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ।
কোরবানি দে তোরা, কোরবানি দে।।





আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।


=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০১, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০২, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৩, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৪
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৬, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৭, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৮
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৯, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১০ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১১



রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৯

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:



সবগুলো কবি নজরুল ইসলামের কবিতা? উনি চাঁদকে দেখে উৎফুল্ল হতেন নিশ্চয়।

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: জ্বী সবগুলিই নজরুলের কবিতাংশ।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আরবি শব্দ হেলাল মানে অর্ধচন্দ্র। হেলাল শব্দ অনেক বাংলা কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে। নজরুলের কবিতায়ও হেলাল ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন -

বেলাল! বেলাল! হেলাল উঠেছে পশ্চিম আসমানে,
লুকাইয়া আছ লজ্জায় কোন মরুর গরস্থানে।
হের ঈদগাহে চলিছে কৃষক যেন প্রেত- কংকাল
কশাইখানায় যাইতে দেখেছ শীর্ণ গরুর পাল?

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: হেলাল মানে অর্ধচন্দ্র এটা জানা ছিলো না।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১০

আমারে স্যার ডাকবা বলেছেন: আজ কিন্তু পূর্ণিমা!
ছোটবেলায় শুনেছি চাঁদ হচ্ছে মামা, এখন শুনি সে হচ্ছে প্রেমিকা, আবার কবি বলে গেছেন চাঁদ হচ্ছে ঝলসানো রুটি! :|
ভয়ংকর বিভ্রান্তিকর :-<

২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আমিওতো বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলাম!!!

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫০

মাওয়ি বলেছেন: কবিরা তো এমনই, চাঁদ, নদী, ঝর্ণা, বুনোহাঁস যা পায় তাকে নিয়েই কবিতা লিখে!
তবে চাঁদ এদিক দিয়ে ভাগ্যবান, সবাই তারে নিয়ে লেখালেখি করে। সবাই এতো বেশি পাত্তা দেয় বলেই চাঁদ আমাদের হাতের নাগালের বাইরে থাকে

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১২:০৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: অতি মনোরম পোষ্ট।
উপভোগ করলাম।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.