নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যু

মরুভূমির জলদস্যুর বাগানে নিমন্ত্রণ আপনাকে।

মরুভূমির জলদস্যু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাভারতের গপ্পো - ০২৫ : দ্রোণের প্রতিশােধ

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২১



দ্রোণাচার্য তার শিষ্যদের ডেকে বললেন যে তাদের সমস্ত শিক্ষা শেষ হয়েছে, এখন তাকে গুরুদক্ষিণা দিতে হবে। তাঁদেরকে যুদ্ধ করে পাঞ্চালরাজ দ্রুপদকে পরাজিত করে জীবন্ত ধরে নিয়ে নিয়ে আসতে হবে গুরুদক্ষিণা হিসেবে।

রাজকুমাররা দ্রোণাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে সসৈন্যে পাঞ্চাল রাজ্য আক্রমণ করলেন। দ্রুপদ রাজা ও তাঁর ভাইয়েরা রথা নিয়ে ছুটে এসে কৌরবদের দিকে তীর বর্ষণ শুরু করলো। দুর্যোধন ভাইয়েরা যুদ্ধ শুরু করলো। তখন অর্জুন তার ভাইয়েদর নিয়ে নগর থেকে অর্ধ ক্রোশ দূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। অর্জুন দ্রোণকে জানালো দুর্যোধনরা দ্রুপদকে বন্দী করতে পারবে না। দুর্যোধনরা যখন ব্যর্থ হবে তখন অর্জুনরা যুদ্ধে নামবে।

দ্রুপদের তীরবর্ষণে দুর্যোধনরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেলো। তাঁদের সৈন্যের উপর নগরবাসীরা মুগুর আর লাঠি নিক্ষেপ করতে লাগলো। কৌরবদের মার খেয়ে আর্তচিৎকার করতে লাগলো।
যুধিষ্ঠিরকে পঞ্চপাণ্ডবভ্রাতারা যুদ্ধ করতে নিষেধ করলো। ভীম যমের মত গদা হাতে ঝাপিয়ে পড়লেন। পাঞ্চালরাজের হাতি, সৈন্য, ঘোড়া, রথ প্রভৃতি ধংস করতে লাগলেন। তারপর অর্জুনের সঙ্গে দ্রুপদের এবং তাঁর ভাই সত্যজিতের ভীষণ যুদ্ধ হল। অর্জুনের শরাঘাতে সত্যজিতের ঘোড়া মারা পরলে সত্যজিৎ পলিয়ে গেল। তখন অর্জুন দ্রুপদকে ধরে ফেললো আর পাঞ্চাল সৈন্যরা যে যেদিকে পারলো পালাতে শুরু করলো। দ্রুপদকে ধরে অর্জুন ভীমকে দ্রুপদের সৈন্যদের আর হত্যা করতে নিষেধ করলো, কারণ দ্রুপদ রাজা ছিলো কূরবদের আত্মিয়। আর গুরুদক্ষিণা দেবার জন্য শুধু দ্রুপদকে জীবিত ধরে নিলেই হবে।

রাজকুমারা দ্রুপদ আর তাঁর অমাত্যকে ধরে এনে দ্রোণকে গুরুদক্ষিণা উপহার দিলেন।
দ্রোণ বললেন, দ্রুপদ, আমি তােমার রাষ্ট্র দলিত করে রাজপুরী অধিকার করেছি, তােমার জীবনও আমার হাতে, এখন আমিই এই রাজ্যের রাজা। আমি ক্ষমাশীল ব্রাহ্মণ। তুমি ছোটোবেলায় আমার সঙ্গে খেলেছিলে, সেজন্য তােমার প্রতি আমার স্নেহ আছে। অরাজা রাজার বন্ধু হতে পারে না, তােমাকে আমি আমার অর্ধেক রাজ্য দিচ্ছি, এবার তুমি চাইলে আমার বন্ধু হতে পারো।
দ্রুপদ সাথে সাথে দ্রোণাচার্যের প্রস্তাব মেনে নিয়ে তার সাথে বন্ধুত্ব স্বীকার করে নিলো। তখন দ্রোণাচার্যও সন্তুষ্ট হয়ে দ্রুপদকে মুক্তি দিলেন।

গঙ্গার দক্ষিণে চর্মন্বতী নদী পর্যন্ত দেশ দ্রুপদকে দেয়া হলো, দ্রোণাচার্য গঙ্গার উত্তরে অহিচ্ছত্র দেশ নিলেন। কিন্তু মনঃক্ষুন্ন দ্রুপদ পুত্রলাভের জন্য চেষ্টা করতে লাগলেন।



====================================================================

বিশেষ ঘোষণা : হিন্দুদের ধর্মীয় সাহিত্যের মহাকাব্য মহাভারতের কথা আমরা সকলেই জানি। আমি এটিকে পড়ছি একটি কল্পকাহিনীর সাহিত্য হিসেবে, ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নয়। আমি মনে করি "যার যার বিশ্বাস তার তার কাছে। অন্যের বিশ্বাস বা ধর্মানুভূতিতে খোঁচা দেয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।" এই গ্রন্থে প্রচুর কল্পকাহিনী রয়েছে। সেগুলিই আমি এই সিরিজে পেশ করবো। যারা মহাভারত পড়েননি তারা এখান থেকে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি জেনে যাবেন। মনে রাখতে হবে আমার এই পোস্ট কোনো ভাবেই ধর্মীয় পোস্ট নয়।

লেখার সূত্র : কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস কৃত মহাভারত : অনুবাদক - রাজশেখর বসু।
ছবির সূত্র : এই সিরিজে ব্যবহৃত সকল ছবি বিভিন্ন সাইট থেকে সংগৃহীত।



=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
মহাভারতের গপ্পো - ০০১, মহাভারতের গপ্পো - ০০২, মহাভারতের গপ্পো - ০০৩, মহাভারতের গপ্পো - ০০৪
মহাভারতের গপ্পো - ০০৫, মহাভারতের গপ্পো - ০০৬, মহাভারতের গপ্পো - ০০৭, মহাভারতের গপ্পো - ০০৮
মহাভারতের গপ্পো - ০০৯, মহাভারতের গপ্পো - ০১০, মহাভারতের গপ্পো - ০১১, মহাভারতের গপ্পো - ০১২
মহাভারতের গপ্পো - ০১৩, মহাভারতের গপ্পো - ০১৪, মহাভারতের গপ্পো - ০১৫, মহাভারতের গপ্পো - ০১৬
মহাভারতের গপ্পো - ০১৭, মহাভারতের গপ্পো - ০১৮, মহাভারতের গপ্পো - ০১৯, মহাভারতের গপ্পো - ০২০
মহাভারতের গপ্পো - ০২১, মহাভারতের গপ্পো - ০২২, মহাভারতের গপ্পো - ০২৩, মহাভারতের গপ্পো - ০২৪
=================================================================

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

জুল ভার্ন বলেছেন: বরাবরের মতোই সুলিখিত।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সকল কৃতিত্ব মূল লেখকের।

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১৩

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: শুকরিয়া

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৩

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: আদিম কালের রাজা-বাদশাদের জীবনের বেশীরভাগ সময়ই যেত মনে হয় যুদ্ধ-বিগ্রহে বা এর চিন্তায় । আর সময় পেলেই চলত নাচ-গানের আসর ও ভোগ। তার সাথে সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ছিল নিত্য সংগী।

সময়াভাবে সব গুলি পর্বে মন্তব্য বা পড়া হয়ে উঠেনা তবে সময় পেলেই একবার ঢু মেরে দেখি ভাইজান। ভাল লাগে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঠিক বলেছেন। তবে সবচেয়ে বেশী যা থাকতো তাদের জীবন জুড়ে তা হচ্ছে যৌনতা। যদিও প্রায় সবটাই কল্পকাহিনী।

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: মহাভারতের চরিত্র গুলোর নাম এত কঠিন কেন?

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সেই সমযটাই কঠিন ছিলো হয়তো। তবে কিছু কিছু সহজ নামও আছে।

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৬

অপু তানভীর বলেছেন: আজকের পর্ব একটু ছোট মনে হল নাকি আজকে ছবি কম এই জন্য এমন মনে হচ্ছে ।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এই অংশের কাহিনি ছোট, তার উপরে আবার ছবিও নেই।
আগামী পর্ব বড় হবে।

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



গ্রীকদের পরেই হিন্দুধর্মের রূপকথার অবস্হান; কিন্তু হিন্দুধর্ম গ্রীকধর্ম থেকে অনেক বেশী পুরাতন; মনে হচ্ছে, হিন্দুধর্মের রূপকথার লেখকেরা গ্রীকদের মতো শক্তিশালী লেখক ছিলো না।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৬

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গ্রীক আর হিন্দু রূপকথাগুলির মধ্যে বেশ ভালো রকমের পার্থক্য আছে। যদিও আমি খুব বেশী জানি না এগুলি সম্পর্কে।

৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৫

বিটপি বলেছেন: এই গল্পে ভীমের চরিত্র অনেকটা বাহুবলীর মত। একটা মূর্তি উঠাতে শ'খানেক লোক হিমশিম খেয়ে যায়, বাহুবলী একা এসে একটানে মূর্তি উঠিয়ে ফেলে। দূর্যোধনের একশ ভাই আর তাদের সৈন্য সামন্ত মিলে পাঞ্চালরাজের সামনে দাঁড়াতে পারলনা, আর এক ভীম এসে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিল। এখানে দ্রোণের গুরুবিদ্যার কোন প্রয়োগ আসলে নেই - আছে ভীমের অতি মানবীয় (সুপার হিউম্যান এবিলিটির) গুণের প্রয়োগ। তাই দ্রোণ আসলে গুরুদক্ষিণা হিসেবে পাঞ্চাল রাজ্য দাবি করতে পারেনা।

দ্রোণ আগাগোড়া একটা প্রতারক।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:১৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ পছন্দ হয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর বিশ্লেষণের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.