নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

raajkobi

I am a simple man....

রাজকবি

রাজকবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার বাঁশি শেখার গল্প – ৪

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:১১

সে বছরের কোন এক মাঝামাঝি মাসের শুক্রবার মোহাম্মদপুর এলাকায় বারী সিদ্দিকী ভাইয়ের বাসা খুজে এক বুক আশা, আবেগ, কিছুটা সংকোচ নিয়ে উনার বাসায় হাজির হলাম। বারী সিদ্দিকীর মত এরকম একজন শিল্পীর সামনে আমি বসে আছি ব্যাপারটা অনুধাবন করতেই কেমন জানি লাগল। আমাকে বাঁশিতে ফুঁ দিতে বললেন। দিলাম। কিন্তু উনার মনমত হলোনা। সারেগামা বাজিয়ে শুনাতে বললেন। আমি শুনালাম। এতদিনে বাসায় দুএকটি গান বাজাতে পারতাম। কারো ভাললাগার কোন কারন ছিলনা। কিন্তু আমি চেষ্টা করতাম। জানতাম কিছুই হচ্ছেনা। বারী ভাই আমাকে দেখিয়ে দিলেন কীভাবে বাঁশি ধরতে হয়। বাম হাতের মাঝের তিনটি আঙুল বাঁশির উপরের তিনটি ছিদ্র এবং ডান হাতের মাঝের তিনটি আঙুল দিয়ে নীচের তিনটি ছিদ্র বন্ধ করতে হবে আঙুলের মাথা দিয়ে। এতদিন আমি এভাবে বাঁশি ধরিনি। আঙুলের মাঝের অংশ দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করার চেষ্টা করতাম। আমার বেশ কষ্ট হচ্ছিল। বারী ভাই বললেন এটাই নিয়ম। বারী ভাই’র ওস্তাদ ছিলেন পন্ডিত পান্নালাল ঘোষের শিষ্য। এখানে পন্ডিত পান্নালাল ঘোষ সম্বন্ধে একটু না বললেই নয়। বাঁশি যন্ত্রটি কিন্তু অনেক আগে থেকেই সঙ্গীতের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বেশীরভাগ সময়ই বাঁশি ছিল একটি সাপোর্টিং ইন্স্ট্রুমেন্ট। গানের সাথে বাজানো হত। কিন্তু শুধু বাঁশি কখনো মুলযন্ত্র হিসেবে ছিল না। মানুষের ধারনার বাইরেই ছিল যে বাঁশিতে ক্লাসিকেল কোন রাগ যেখানে সুরের বিভিন্ন রকমের উঠানামা গমক কিংবা মীর আছে তা বাজানো সম্ভব। বাংলাদেশের পান্নালাল ঘোষ উপমহাদেশে বাঁশের বাঁশিতে প্রথম একজন শিল্পী যিনি এই কাজটি অতি দক্ষতার সাথে করে দেখালেন। বাঁশিকে নিয়ে গেলেন সঙ্গীতে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্য এক উচ্চতায়। উনাকে বলা হয় আধুনিক বাঁশির জনক। উনার ছবি আমি ইন্টারনেটে দেখেছি। উনার ধরার স্টাইলটা হচ্ছে আঙুলের মাথা দিয়ে ছিদ্র বন্ধ করা। আমি খুব চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোনভাবেই পারছিলাম না। বারী ভাই বল্লেন চেষ্টার অসাধ্য কিছুই নেই। মানুষ চেষ্টা করলে পাহাড় জয় করতে পারে। আর বাঁশিতে কোন ফাঁকি নেই। কোনকিছুই এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। আর তাছাড়া আমার বাঁশিগুলোও টিউন করা নেই। আমি কিছুটা অবাক হলাম। এত এত টাকার বাঁশি কিনলাম লাবু ভাইয়ের কাছ থেকে, উনি আমাকে কি একটা টিউনার দিয়ে যেন পরীক্ষা করে দেখিয়েওছিলেন বাঁশি ১০০% টিউন্ড। ৪৪০ তে। আমি অবশ্য কিছুই বুঝতাম না। টিউন মানে কী কিংবা ৪৪০ ই বা কী তা জানতাম না। অনেক কিছু ঘাটাঘাটি করলাম কিন্তু কোথাও এই ব্যাপারে কিছুই পেলাম না। আর তাছাড়া উনিতো বল্লেন বারী ভাই উনার কাছ থেকে রেগুলার বাঁশি কেনেন। যাই হোক। বল্লেন উনি নিজে বাঁশি বানান। এবং স্টুডিওতে টেষ্ট করেন। একহাজার টাকা করে নেন। যতদিন না উনার বাঁশি হাতে পাচ্ছি ততদিন আমারগুলো দিয়েই প্রাকটিস করতে হবে। ৪৪০তে টিউন করার বিষয়টি কী সেটা জানতে চাইলাম, বল্লেন নার্সারীর স্টুডেন্ট কিন্তু প্রশ্ন করেছি মাস্টার্সএর। প্রশ্ন করার উৎসাহে ভাটা পড়ল। কয়েক মাস উনার বাসায় আসা যাওয়া করলাম, আঙুলই বসাতে পারছিলাম না। একদিন উনার বাঁশি হাতে পেলাম। অনেক ছোট একটা বাঁশি। কিন্তু তাতেও আঙুল বসাতে পারলাম না। কিছুটা বিরক্ত হয়ে গেলাম। নিজের উপর রাগ হল। আর যাওয়া হলনা বারী ভাইয়ের বাসায়।

দেখা করলাম লাবু ভাইয়ের সাথে। বললাম আমি উনার কাছেই বাঁশি শিখব। বললেন শেখাবেন। তবে প্রথমে আমার হাতের মাপ অনুযায়ী একটি বাঁশি বানাতে হবে। দাম একটু বেশী পড়বে। খুব যত্ন করে ভাল বাঁশ দিয়ে এই বাঁশি উনি বানাবেন। বারশ টাকা পড়বে। রাজী হয়ে গেলাম। প্রতি শনিবার উনার বাসায় যেতাম। উনি আমাকে বিভিন্ন সারগাম শিখাতেন।
সরগ রগম গমপ
সরগম রগমপ গমপধ
সগ রম গপ
এইসব।
এভাবে কয়েকমাস গেল।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

মোঃ ইমরান কবির রুপম বলেছেন: এই ধরনের লেখা আগে কোথায় যেন পড়েছি ! তখন কিন্তু সামুতে ছিলামেই না । মনে করে দিতে পারেন কি ?

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:২৪

রাজকবি বলেছেন: আগে কোথাও পড়ার সম্ভাবনা নাই। এই লেখাটি এখানেই আমি প্রথম লিখেছি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: আমারও বাঁশি শিখার খুব শখ, কিন্তু শিখা হয়ে উঠছে না।। :(

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৩০

রাজকবি বলেছেন: আমার মনে হয়, বাঁশি শেখা আগে যতটা কঠিন ছিলো এখন ততটা নয়। স্ট্রাকচার্ড ওয়েতে শিখতে পারলে এখন খুব কম সময়েই শেখা সম্ভব। তবে শেখার ইচ্ছে, ধৈর্য্য ধরে রাখতে হয়। আর সেটিতো যেকোন কিছু শেখারই পূর্বশর্ত।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.