![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধর্মের মুখোশে রাজনীতি: ইসলামী দলগুলোর স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থান প্রকাশ্যে
বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল এক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, যেখানে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, লক্ষ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন। এই সংগ্রাম ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য। অথচ সেই স্বাধীন বাংলাদেশের ভেতরেই বহু ইসলামী দল এখনো সরাসরি কিংবা আড়ালে এই দেশের জন্মকেই অস্বীকার করে চলছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এক জামায়াত-ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মঞ্চে জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে একত্রিত হয়ে যারা অংশ নিয়েছে, তারা একবারেই নিজেদের আসল চেহারা জনসম্মুখে তুলে ধরেছে। এদের মধ্যে রয়েছে – ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ফ্রন্ট, আহলে সুন্নাত জামাত, ইসলামী ঐক্যজোট ইত্যাদি নামধারী দলসমূহ, যারা মুখে ইসলাম, কিন্তু ভেতরে স্বাধীনতাবিরোধী আদর্শের ধারক ও বাহক।
ইতিহাসের দায়: জামায়াত এবং তাদের অনুসারীরা
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ছিল অগ্রগণ্য। তারা রাজাকার, আলবদর, আলশামস গঠন করে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধের দায়ে এই দলের বহু নেতার ফাঁসি হয়েছে—গোলাম আযম, আলী আহসান মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মোঃ কামারুজ্জামান, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী সহ অনেকে।
এই দল আজও “শহীদ” শব্দ ব্যবহার করে তাদের বিচারপ্রাপ্ত নেতাদের স্মরণ করে। এবং সম্প্রতি তারা আবারও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে, যেখানে বিভিন্ন তথাকথিত ইসলামী দল তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে।
ধর্মের অপব্যবহার ও মোল্লাতন্ত্রের তাণ্ডব
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, যারা মুখে রাজনীতি করে না বললেও, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে তাণ্ডব চালিয়ে সরকার পতনের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছিল। তাদের ১৩ দফা দাবির মধ্যে ছিল—
১, নারীদের শিক্ষা ও কর্মজীবন নিষিদ্ধ করার আহ্বান,
২,ব্লগার হত্যাকে জায়েজ করার মনোভাব,
৩,ধর্মনিরপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা।
তাদের দাবির মূল লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রকে তালেবান কায়দায় পরিচালনা করা।
আজকের চক্রান্ত: একাত্তরের শত্রুরা আবারও একজোট
যেসব দল আজ জামায়াতের সাথে এক মঞ্চে দাঁড়িয়েছে, তারা সকলেই একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকার নিন্দা তো করেনই না, বরং নানাভাবে সেই ইতিহাস ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা চরমোনাই পীর রেজাউল করীম বারবার মুক্তিযুদ্ধকে 'ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ' বলে অপমান করেছেন।
রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য ও তৎপরতা
নানা ইসলামী দলের বক্তা ও নেতা-উপনেতারা ওয়াজ মাহফিলে প্রকাশ্যে:
বঙ্গবন্ধুকে 'কাফের' বলেছে,
জাতীয় সংগীত ও পতাকার বিরুদ্ধে কথা বলেছে,
কওমি শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বাইরে রাখতে চায়,
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়েছে।
রাষ্ট্রের জন্য হুমকি
এই দলগুলো আসলে এক নতুন পাকিস্তান কায়েমের স্বপ্নে বিভোর। তারা ১৯৭১-এ হেরেছে, কিন্তু মনে-প্রাণে এখনও পাকিস্তানের আদর্শেই বিশ্বাসী। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো:
গণতন্ত্র ধ্বংস করে ইসলামি শাসনতন্ত্র চাপিয়ে দেওয়া,
ধর্মীয় বিভেদ বাড়িয়ে জাতিকে খণ্ডিত করা,
এবং বাংলাদেশের মূল চেতনা গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার এসবকে মুছে ফেলা।
উপসংহার: তাদের প্রতিরোধে গণচেতনার জাগরণ জরুরি
ধর্মীয় অনুভূতিকে হাতিয়ার করে যারা রাজনীতি করছে, তারা শুধু ধর্মের অবমাননাই করছে না, রাষ্ট্র ও জাতিকেও বিভ্রান্ত করছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
স্বাধীনতাবিরোধীদের নতুন রূপে প্রকাশ জামায়াতের ছায়াতলে সংগঠিত হওয়া ইসলামি দলগুলো আসলে বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য এক ভয়ঙ্কর হুমকি।
আমরা ভুলে যাইনি একাত্তরকে, ভুলে যাইনি রাজাকারদের। আমরা ভুলব না এই নতুন মুখোশধারীদেরও।
সালাউদ্দিন রাব্বী
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:৪৯
ধুলো মেঘ বলেছেন: হাইকোর্টের ৭ জন বিচারক সম্মিলিত রায় দিয়েছে যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কোন আইনী ভিত্তি ছিলনা।
আমরাও তো দেখেছি, কতগুলো ফেইক সাক্ষী আর পেপার কাটিংয়ের উপর ভিত্তি করে আইন পরিবর্তন করে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে।