![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝে মাঝে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে দূরে বহু দূরে। কাছের মানুষ গুলো বড় বেশি অচেনা লাগে মাঝে মাঝে। তবুও ভালোবসি সবাই কে। সবাই যখন নিজেকে চালাক ভাবে আমি ঠিক বুঝতে পারি এরা কতটা বোকা । তাই একা একা সাইলেন্ট হাসা হাসি। এটাই আমার জীবন লীপি।
১৯৭১ ফ্রেব্রয়ারী। বাবা গ্রাম থেকে লুকিয়ে পরিবারের বড় ছেলে মুক্তিযোদ্ধা গোপালের খোজে ঢাকায়। খবর পেল গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে খাবার সরবরাহ করা এবং তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করায় বাবা কে খোজা হচ্ছে। গ্রামের ঘর গুলোতে আগুন দেয়া হয়েছে গুলি করে মারা হয়েছে আমাদের বাড়ীর ১৭ জন কে। চারিদিকে তান্ডবে মা ছোট ছোট ভাই বোন গুলোকে নিয়ে দাদা বাড়ী লুকিয়ে গেলেন। দাদা বাড়ীতে বড় মামা কে রাজাকার রা পিটালো। বড় মামা ছিলেন স্কুল শিক্ষক উনি রাগে ও গৃনায় মেজদা কে নিয়ে চলে গেলেন ইন্ডিয়া। আশ্রয় নিলেন রিফুজি কেম্পে। জগন্নাথ হলে বাবা আশ্রয় নিলেন । আমাদের কিছু আত্নিয় সজন জগন্নাথ হলে তখন কাজ করতেন। বাবা তখনও জানতে পারেনি তার জন্য কি ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে। বাবা খেয়ে ঘুম দিলেন। হটাৎ চারিদিকে গোলাগুলি। বাবা যে বাসাটিতে ছিলেন তা ও ঘিরে ফেলা হোল। এরষ্টে করা হোল বাবা সহ সবাই কে। তখন রাত অনেক তাই সাবাই কে জগন্নাথ হলে নিয়ে লাইন ধরে দার কারানো হোল। বাবার ভাষায় উনি দেখতে পেলেন ওনাদের নেবার আগে শয়ে শয়ে লাশ এর স্থুপ জমা করেছে পাক হানাদাররা। বাবা সহ সবাই কে বলা হোল হলে হলে গিয়ে সব লাশ এখানে এনে জমা করতে। প্রানের ভায়ে জমা করতে লাগলেন বাবা সহ সবাই। পালাবার কোন উপায়ই ছিল না তখন। এভাবে গভির রাত পর্যন্ত তান্ডবের পর হটাৎ করে বাবা সহ সবাই কে আবার ধরে এনে লাইন ধরে দার করানো হোল । এবার সরাসরি করা হোল গুলি । এক সাথে গুলি। বাবার পাশের লোকটি একটি গুলি খেয়ে বাবার শরিরের উপর পড়ল এবং বাবার গুলিটাও তার গায়ে লাগলো। বাবা বুদ্ধি করে পড়ে রইল। গুলি শেষ পাক বাহিনি এদিক ওদিক হাটা হাটি করছে। এ ফাকে বাবা লাশের স্থুপের ভিতর ঢুকে পরলেন। সরারাত এ ভাবে পার করে যখন বুঝলেন হানাদর বাহিনের উপস্থিতি নেই উনি দেয়াল টপকে ময়লার স্থুপের পাশে মেন হোলের মধ্যে লুকিয়ে রইলেন। ঐ দিন যদি বাবা প্রানে না বাঁচতেন তবে আজ আমার ব্লগে লেখা হোত না। যাই হোক যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে বাবার সময়টা ছিল আরও ভয়াবহ । জমি জমা ঘর বাড়ী গোয়ালের গরু থেকে শুরু করে মার গহনা সব রাজাকার রা লুটে নিল। শুরু হোল নতুন অধ্যায়। দেশ স্বাধীন হবার পর নিজেকে পরাধীন ভেবে অলিখিত খেতাব ও অন্যান্য কাগজ পত্র আগুনে পুরিয়ে ফেলেন। চাকরি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আই আর এ।
আমার বাবার মুক্তিযুদ্ধের ভুমিকা অনেক কিছু আজ ও অজানা আমার যা শোনা সব মার মুখ থেকে। তবে বাবাকে আমি সেলুট করি তিনি তার অবস্থান থেকে দেশ এবং পরিবার রক্ষার যে যুদ্ধ করেছেন তার জন্য। বাবা ২১ বছর আগে আমাদের ছেরে চলে গেছেন। স্কুলে যাবার সময় বাবার দেয়া ২ টাকার কথা আজ ও মনে পড়ে। বাবা স্বর্গবাসী হোক।
©somewhere in net ltd.