নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্টিগমা

রাফিন জয়

স্টিগমা

রাফিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেমন্ত প্রভাতে অতিথি প্রভু ভক্ত সারমেয়

২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৩৫


হেমন্তের কুয়াশা সিক্ত সকাল। শিশির বিন্দু হেমন্ত প্রভাতের মিষ্টি রোদ্রের দিপ্তিচ্ছটায় দুব্বা ঘাসের উপর যেন স্বর্ণ বিন্দু হয়ে ছিল। নদীর ধারের সারিবাঁধা নানা বৃক্ষের সমাহার ঐদিন যেন নতুন রুপ দেখাচ্ছিল! এমন দৃশ্য প্রায়শই দেখতে পায়না শহুরে ছেলেরা। তাই আমার ও একি অবস্থা! শহুরে কংক্রিটের আড়ালে মোবাই, টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদি নামক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের পর্দায় ক্রিতিম পৃথিবী দেখে অভ্যস্ত আমরা। প্রভাতের ৯ প্রহর থেকে রাতের দেড় প্রহর অবধি আমার নিত্য রুটিন কলেজ, ক্যাম্পাস-ক্যান্টিন-ক্যাফ আড্ডা, কোচিং, টিউশান আর সাইবার। এর পরে নেহাত প্রকৃতি দেখারে মত একবিন্দু সময় কোথায়?

বন্ধের দিবসে প্রভাতের ৬ প্রহরে আমার দরজার কড়া নাড়লো আমার এক বন্ধু। তন্দ্রায় রক্তিম চক্ষু ডোলতে ডোলতে ও হাই তুলতে তুলতে দরজা খুলে দেখি মহাশয় হাজির। ও আমাকে বলেছিল- চল আজ এখন ঘুরতে বের হই। যদিও প্রথমে ক্রোধে ফেটে উঠছিলাম, পরক্ষণেই আবার চুপ চাপ সম্মতি প্রকাশ করে দুজনে বের হয়ে পড়ি।

বাসা খেকে প্রায় দুই কি.মি. দুরে বুড়ি-গঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষা একটি গ্রাম্য অঞ্চল দিয়ে হাটছিলাম ও উপভোগ করছিলাম হেমন্তের প্রভাত প্রকৃতি। মৃদু ঠান্ডায় গরম চিতই না হলে মটেয় হয় না অন্তত আমাদের। পথের ধারে কোনো রকম খড় কুটা দিয়ে জড়সড় করে তৈরি করা ছোট্ট একটি চিতই’র দোকান। দোকানের সম্মুখে রাখা বসার টেবিল টাতে বসতেই সম্মুখে আসলো গরম চিতই। অন্যদিকে পূব আকাশে রক্তিম রবি তির্যক ভাবে সূর্যকিরণ দিচ্ছিল। মিষ্টি রোদেলা পরিবেশে বেশ জমছিল। ‍হয়তো আরো জমতো যদিনা জীর্ণ-শীর্ণ দেহের অধিকারী একটি অতিথি কুকুর এসে চিতই ভিক্ষা না করতে চাইত! তাছাড়া শৈশব থেকেই কুকুরের প্রতি আমার তিব্র এক ভয় কাজ করে। তাই প্রথম বারেই একটু ছিড়ে অতিথিকে খেতে দেই, কিন্তু তাতে কোন আনুকূল্য পাওয়া গেল না। বরং বিপদ যেন মাথায় চেপে বসেছিল। কুকুরটা যেন নড়তেই চাচ্ছিল না! পুলক তাই একটা চিতই কিনে কুকুরের দিকে প্রক্ষেপ করে। খাবার পেয়ে সে যেন অন্তরের অন্তরীক্ষ থেকে করুণ ভাষায় একবার ধন্যবাদ বলে একটু দূরে গিয়ে খাচ্ছিল।

সময় তখন প্রভাতের ৯। বাসায় ফেরার উপক্রম করছি। রিকশায় উঠে বসা মাত্রই দেখলাম কুকুরটার দৃষ্টি আমাদের দিকে। সব কিছু উপেক্ষা করে রিকশা চলতে শুরু করল। ১ মিনিট অতিবাহিত না হতে একটি চার চক্রের যান, মানে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে আমাদের রিকশার পশ্চাতে জোরে-সোরে আঘাত করে। রিকশা থেকে আমি ও পুলক উভই পড়ে যাই। পুলকের হাত কেটে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো, ভাজ্ঞের জোরো আমি বেঁচে যাই! লোকজন জড় হয়ে ট্রাক চালক কে ধরলে তখন ঘটে আরেক অদ্ভুত ও অপ্রত্যাশিত কাণ্ড। সেই অতিথি কুকুর দৌরে এসেই চিৎকার করতে করতে মদ্যপ চালককে কামড়ে দেয়। সবাই আমাদের অতিথি কুকুরকে লাঠি দেখিয়ে তাড়াতে গেলে আমি সেই কুকুর ভীতু, তাদের বারণ করি অতিথিকে তাড়াতে।

অতিথির কাছে একটা বিষয় খুব ভালো করে শিক্ষা পেয়েছি যে, ম্যাকি মানবের ক্রোকোডাইল টিয়ার্স এর চাইতে প্রভু ভক্ত সারমেয় শ্রেয়!
--জয়

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫১

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: লেখা সুন্দর হয়েছে।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০০

রাফিন জয় বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.