নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্টিগমা

রাফিন জয়

স্টিগমা

রাফিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবন

১৬ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪১

কলেজের রচনা প্রতিযোগিতায় এটা লিখে দিলাম

ভূমিকা: “পৃথিবীর সর্ব বস্তু নশ্বর, কিন্তু সত্য ও সততা অবিনশ্বর।” পৃথিবীর প্রত্যেক বস্তু ক্ষণস্থায়ী হলেও সত্য ও সততা অক্ষয়-অবিনশ্বর। এমন অবিনশ্বররা স্বীয় চেতনা দিয়ে দেখায় দীপ্তচ্ছটা। দেখায় আলোর পথ। বাঙালি জাতির এমন একটি চির অবিনশ্বর কিংবদন্তীর নাম বঙ্গবধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি মুক্তির কাণ্ডারি। স্বাধীনতার ঘোষক। সে শুধু কোন ব্যাক্তি নয়, সে বাঙালি জাতির পিতা। তার দৃঢ় চেতনার জাগরণ শুরু হয় তার কৈশোর ছাত্র জীবন থেকেই। ক্রমেই সে হয় বাঙালি মুক্তির কাণ্ডারি, বাঙালির কিংবদন্তী।

ছাত্র জীবন : বাঙালির কিংবদন্তী, চির উদ্দামি বীর বঙ্গবধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তী তিনি গ্রাম থেকে গোপালগঞ্জ শহরের মিশন স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। বাঙালির দৃঢ়চেতা মুক্তির কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান স্কুল জীবনে চোখের বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। কলকাতার একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. টি. আহমদ তার চোখে অস্ত্রপাচার করেন। ফলে দুবছর তার বিদ্যালয় যাওয়া হয় নি। পরবর্তীতে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তৎকালীন ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মাওলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু উক্ত কলেজ থেকে ১৯৪৪ সাল এবং ১৯৪৭ সাল যথাক্রমে আই.এ. এবং বি.এ. পাশ করেন। অতঃপর তিনি ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।

ছাত্র জীবনে চেতনার উন্মোচন : ‍স্কুল জীবনে বাঙালির দৃঢ়চেতা অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর চেতনা উন্মোচনের বা জাগরণের সূত্রপাত ঘটে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের আন্দোলক, বীর সংগ্রামী ও বঙ্গবন্ধুর গৃহশিক্ষক কাজী আব্দুল হামিদ থেকে। কাজী আব্দুল হামিদ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের আন্দোলক হওয়ায় তাকে আত্মগোপন করতে হয়। বঙ্গবন্ধুর চির সংগ্রামী পরিবার তাকে নিজ বাড়িতে আত্মগোপনের সুযোগ দেয়। তার মুখ থেকেই বঙ্গবন্ধু শুনেছিল সবল শাসকদের দুর্বলদের প্রতি শোষণ ও নিপীড়নের ইতিহাস। তার থেকেই প্রথম বঙ্গবন্ধু রপ্ত করতে শিখেছিল বিপ্লবী চেতনা। বঙ্গবন্ধুকে প্রথম প্রজ্বলিত করেছিলেন তিনি। সেই বিপ্লব অগ্নি শিখা কে চেতনায় ধারণ করে বঙ্গবন্ধু এগিয়ে ছিলেন জীবনে।

ছাত্র জীবনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড : স্কুল জীবনেই বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে নেন। মুক্তির দ্বিশারী বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবনে একবার তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ. কে. ফজলুল হক ও মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ ভ্রমণে গিয়ে তার বিদ্যালয়ে যান। কৈশোরকালের দৃঢ়চেতা, সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু তার বিদ্যালয়ের ফুটো ছাদ মেরামতের দাবি উত্থাপন করেন সকলের সম্মুখে। তার দীপ্ত কণ্ঠ্যের উদ্দীপ্ত বাণী শুনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাকে কাছে টানেন এবং তার সম্পর্কে জানার অভিলাষ প্রকাশ করেছিলেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার মাথায় হাত রেখে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন তার জন্য। পরে বঙ্গবন্ধু তার আদর্শ চিত্তে ধারণ করে সামন আগান। বঙ্গবন্ধু সিরাজগঞ্জে প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সম্মেলনে ১৯৩৮ সালে মুসলিম লীগের ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেছিলেন। প্রতিবাদ ধ্বনি উচ্চারণ করেছিলেন দাঙ্গা হাঙ্গামার বিরুদ্ধে। অগ্নি শিখার মত কাজ করচেছিলেন ১৯৪৬’র নির্বাচনের সময়। তিনি মাতৃভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার পাঁয়তারার বিরুদ্ধ করেছিল রণ। “উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের এক মাত্র রাষ্ট্রভাষা” এই বাক্যের বিরুদ্ধে রাজপথে সারি বেঁধে তৎকালীন পেটোয়া বাহিনীর সামনে দাঁড়িয়েছে, ঘাতক বাহিনীর বুলেটের আঘাতে মৃত্যুর ভয়কে তুচ্ছ করে অনড় হয়ে সংগ্রামে অব্যাহত ছিলেন। তাই সে ১৯৪৮ সালে তাকে অনেকের সাথে কারাবরণ করতে হয়েছিল। পরে পূর্ব বাংলার মুখ্য মন্ত্রী ছাত্রদের দাবি মানতে বাধ্য হলে, তৎকালীন ছাত্র নেতা বঙ্গবন্ধু ও ছাড়া পান। পরে কৃষক আন্দোলন এবং তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর দাবি দাওয়ার আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এর কারণেও তাকে বার বার কারা বরণ করতে হয়েছিল ছাত্র জীবনে।

ছাত্র জীবনে বহিষ্কার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর দাবি দাওয়ার আন্দোলনে উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ঘেরাও কালে অনেকের সাথে বঙ্গবন্ধুও পুনরায় কারাবরণ করেন। সাথে তাকে অনেক মামলায় ফাঁসানো হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কার করে। তবে সরকার তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যদি সে রাজনীতি ছেড়ে দেয়, তবেই ছাত্রত্ব ফিরে পাবে। শ্রেয়তার পরিচয় বহন করে বঙ্গবন্ধু উক্ত প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন। জেল থেকে বের হয়ার পরে বঙ্গবন্ধুর বাবা তাকে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যেতে প্রস্তাব করেন। কিন্তু পাকিস্তানি ঘাতক এবং শোষকদের নরপৈশাচিক শাসন ব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধু কি করে যায় তার দেশের মানুষকে ছেড়ে! সে তার শ্রেষ্ঠ মানবী বোধকে জ্ঞাত করেছেন জাতির সম্মুখে। তাই বর্তমান মুক্তমনা কবি এবং শহীদ বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব সরকারি কলেজের ছাত্র বঙ্গবন্ধুর এমন আচরণ কে নিজে গদ্য আঁকারে প্রকাশ করেছেন যে,
মম চেতনা যদ্যপি তোমা বোধগম্য নয়,
তত্র হেতা কিইবা মদীয় দায়?
মম বাঙ্গালিত্ব অধিষ্ঠিত রবে হেতা স্বীয় চেতনায়!

কাহারো বিলোপ ক্রিয়ায়
কেহ বিলাপ করে,
আর সেই আর্তনাদ স্পর্শ ও পীড়িত করে
হৃদপিণ্ডের হৃদপিণ্ড কে,
আর সে বস্তু রহে বিবেকের শুভ্র বেদিতে।
আমি মর্মগ্রহণ করিতে পারি সেই
বিলাপ কারির হৃদয় ভাষা!
দরূন আমি তো মনেপ্রাণে বাঙালি!

সেই তো মম চেতনা,
ভাব তুমি যাতনা!
পুনরাবৃত্তি করিহে ভাই,

“মম চেতনা যদ্যপি তোমা বোধগম্য নয়,
তত্র হেতা কিইবা মদীয় দায়?
মম বাঙ্গালিত্ব অধিষ্ঠিত রবে হেতা স্বীয় চেতনায়!”
--আল আমিন হোসাইন জয়

শিক্ষার্থী চেতনার উন্মেষকারী ছাত্রত্ব : অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবধুর ছাত্রত্ব ও তার ছাত্র জীবনের কীর্তি, বর্তমান শিক্ষার্থীদের চেতনার উন্মোচন নিঃসন্দেহে করতে সক্ষম। তাই বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্বের চেতনাকে সকল ছাত্রই নিজের ভাষায় বলতে পারে যে,
মোরা রক্ত লহরী সিন্ধুর
মত রক্তিম,
মোরা করিগো আঁধার নিশার
নিস্তব্ধতা অন্তিম,
মোরা ভাঙ্গিগো দানব হস্ত,
ওরে হবে নাগো কেউ দুস্থ,
মোরা আগ্নেয়গিরির লাভার
মত তপ্ত,
মোরা দেই নাকো অত্যাচারে হতে
দুর্দশাগ্রস্ত।
মোরা বাঘা, মোরা ক্ষুদিরাম,
মোরা উন্মাদ, মোরা উদ্দাম।
মোরা নজরুল, মোরা সূর্য,
মোরা অগ্নি, মোরা রণ-তূর্য।
মোরা প্রীতিলতা, মোরা নির্মল,
মোরা স্ফুলিঙ্গ, মোরা দাবানল।
মোরা লড়াই নেশায় সবে মত্ত,
মোরা স্বাধীনতাকামী কল্পপনা দত্ত।
মোরা মনোরমা বসু, অপূর্ব,
মোরা তেজী, মোরা দিগন্ত পূর্ব।
ওরা হামলা চালায় যত বার,
মোরা রফিক-শফিক তত বার!
মোরা আমানুল্লাহ আসাদ,
মোরা জুহুরুল,
মোরা শত্রুকে করি প্রতিহত,
করি নির্মূল।
মোরা একাত্তর নামক অঙ্ক,
মোরা সদা আছি নিঃশঙ্ক,
মোরা মুজিব বঙ্গবন্ধু,
মোরা উদারতার ঐ সিন্ধু।
ওরা বুলেট ছুড়েছে যত বার,
মোরা বুক পেতেছি তত বার!
মোদের শিশির সিক্ত মাঠ যতত,
মোরা পঙ্ক মাখা তথা সতত।
আছি উত্থাপিত করে মোদের শীর,
লড়াই করবো মোরা, থাকবো চির
বীর!
মোরা চির উদ্দামি, করি গণ-প্লাবনের
ভিড়,
মোরা সততই চির রণবীর!
ওঠো বীর, তন্দ্রাহীন, জাগো বীর!
--আল আমিন হোসাইন জয়

উপসংহার : বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবনকে নব প্রজন্মের সকল শিক্ষার্থীর সুস্থ জাতি গঠন করতে অনুসরণ অনিবার্য । কিংবদন্তীর নেতা তার জীবনের কীর্তি আমাদের শিখিয়েছে, বিপ্লব, শিখিয়েছে স্বাধীনতার স্বাদ, গড়তে শিখিয়েছে স্বনির্ভরশীলতা। আর তার ছাত্র জীবনের কৃতিত্ব, উদ্দীপ্ত করে সকল শিক্ষার্থীকে। তার হয়েই আজ সুশীল নব প্রজন্ম বলতে পারে,
“উদীয়মান কর তব চেতনা,
ঘুচিয়ে কালিমা দেখ দেখ দীপ্তোজ্জ্বল
আলোক প্রতিবিম্ব ছড়ানো মোহ
স্রোত বহমান মহনায়।
ধর ধুয়া সাম্য মূর্ছনায়!”
--আল আমিন হোসাইন জয়

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


রচনার শিরোনাম কি ছিল?

১৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:৪৬

রাফিন জয় বলেছেন: বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.