নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সায়ন্তন রফিক

অপেক্ষায় আছি কেউ একজন আসবেই আলোয় ভরিয়ে দেবে সব।

সায়ন্তন রফিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেসবুকে ভাষাজ্ঞান বিতরণ এবং অনুসারী সমাচার-১

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৩

দুদিন আগে আমার ফেসবুক পাতায় ঢুকলাম। আমার বন্ধু সংখ্যা খুবই নগণ্য। নেই বললেই চলে। আর বন্ধু বানাবার ইচ্ছা থেকেও আমি ফেসবুকে একাউন্ট খুলিনি। আমি মনে করি প্রেম যেমন করবার বিষয় নয়, তেমনি বন্ধুও বানাবার বিষয় নয়, হয়ে উঠবার বিষয়। সে যাই হোক, আমি ফেসবুকে মাঝে মাঝে ঢুকি মূলত আমার পছন্দের পেইজগুলোতে কোনো নতুন কিছু আছে কিনা তা দেখতে। আমার পছন্দের পেইজগুলোর বাইরে কারো স্ট্যাটাসে চোখ আটকে গেলে দেখি। সেদিন এমনটাই ঘটলো। দেখলাম আমাদের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক কিছু শব্দ ও বানান নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এবং তাঁর কিছু অনুসারী না জেনে, না বুঝে তাতে নানা মন্তব্য করেছেন। আমি কৌতূহলবশত তাঁর পাতাটা ঘুরে দেখলাম। দেখলাম একই ধরনের আরো কিছু স্ট্যাটাস আছে। দেখলাম তাঁর ভাষাজ্ঞান বিতরণে কিছু ত্রুটি আছে। শুধুই তিনিই নন, এরকম অনেকেই ফেসবুকে ভাষা জ্ঞান বিতরণ করেন। তাতে দোষের কিছু নেই, যদি তা সঠিক হয়। সেই প্রসঙ্গেই আজকের লেখা।
স্ট্যাটাস-১
“প্রকাশিত” অর্থ যার প্রকাশ হয়ে গেছে। তাহলে “প্রকাশিত হচ্ছে” বা “প্রকাশিত হবে” লিখছি কেন? একই অবস্থা “অনুষ্ঠিত”কে নিয়ে।
অনুসারীদের মন্তব্য -
১) আপনি বলার পর থেকে আমরা আর লিখি না।
২) প্রকাশিত হবে না লিখে প্রকাশিতব্য লেখা বিধেয়।
৩) প্রকাশ হবে লেখা উচিত।
আমার মত -
‘প্রকাশিত হচ্ছে’ ও ‘প্রকাশিত হবে’ লেখাতে কোনো ভুল হয় না। বাংলা একাডেমি প্রণীত ‘ব্যবহারিক বাংলা অভিধান’ এবং কোলকাতার সাহিত্য সংসদ প্রণীত ‘সংসদ বাংলা অভিধান’ দেখলেই তা স্পষ্ট হবে। উভয় অভিধানেই ‘প্রকাশ্য’ শব্দের অর্থ লেখা হয়েছে ১.প্রকাশযোগ্য ২. প্রকাশিত হবে এমন। তবুও যদি স্পষ্ট না হয়ে থাকে, তবে আরো স্পষ্ট করার চেষ্টা করি। ‘প্রকাশিত’ শব্দটি বাক্যে বিশেষণ পদ রূপে ব্যবহৃত হয়। আর ‘প্রকাশিত হচ্ছে’ ও ‘প্রকাশিত হবে’ বাক্যে মিশ্র ক্রিয়াপদ রূপে ব্যবহৃত হয়। আমরা জানি, বিশেষ্য, বিশেষণ বা অনুকার অব্যয়ের সাথে কর্, হ, পা, দে প্রভৃতি মৌলিক ধাতু যুক্ত হয়ে সংযোগমূলক ধাতু গঠিত হয়। এই ধাতুর সাথে বিভক্তি যুক্ত হয়ে মিশ্র ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। সুতরাং ‘প্রকাশিত হচ্ছে’ ও ‘প্রকাশিত হবে’ লেখা ভুল নয়। তেমনি ‘অনুষ্ঠিত হচ্ছে’ ও ‘অনুষ্ঠিত হবে’ লেখাও ভুল নয়।
স্ট্যাটাস-২
“জ্ঞান হারানো” না “সংজ্ঞা হারানো”?
অনুসারীদের মন্তব্য -
১) পাগল হলে জ্ঞান হারায়, অসুস্থ হলে সংজ্ঞা হারায়।
২) সংজ্ঞাহীন, সংজ্ঞালোপ।
৩) জ্ঞান হারানোর চেয়ে সংজ্ঞা হারানো ভালো- জ্ঞান হারালে বুদ্ধি বিবেক সব লোপ পায়, সংজ্ঞা হারালে সংজ্ঞা ফিরে পাবার সম্ভাবনা থাকে।
আমার মত -
‘জ্ঞান হারানো’ লেখা ভুল নয়। জ্ঞান শব্দের একাধিক অর্থের মধ্যে দুটি অর্থ হচ্ছে ‘সংজ্ঞা’ও ‘চেতনা’। তেমনি ‘সংজ্ঞা’ ও ‘চেতনা’ শব্দ দুটির একাধিক অর্থের মধ্যে একটি অর্থ হচ্ছে ‘জ্ঞান’। সুতরাং ‘জ্ঞান হারানো’ ভুল হবে কেন? তবে কি ‘জগৎ ধ্বংস হবে’ না লিখে ‘পৃথিবী ধ্বংস হবে’ লিখলে ভুল হবে?
তাই বলছি, ইন্টারনেটে অনেক জঞ্জাল জমা হয়েছে, হচ্ছে প্রতিদিন। সেখান থেকে সঠিক তথ্য খুঁজে নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ভাষা ও বানানের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের উপর নির্ভর না করে কিছু পড়াশোনা করা প্রয়োজন। আর বানানের জন্যে দু একটি ভালো অভিধান হাতের কাছে রাখাটাই উত্তম।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০১

রাইসুল ইসলাম রাণা বলেছেন: বানান ভুল এবং কুম্ভলিকদের স্বর্গরাজ ফেসবুক

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৬

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

বার্ণিক বলেছেন: ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৬

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: খুশি হলাম।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

আরজু পনি বলেছেন:

বাহ খুব ভালো শেয়ার ।
প্রিয়তে রাখলাম ।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৭

তাসলিমা আক্তার বলেছেন: আমি একজন ফেইসবুকার। কিন্তু এর সবকিছু যে ভালো লাগে তা না। একদিন একজন অতি পন্ডিত লিখেছেন, যে “ঘাগরি” শব্দের মানে যানেনা তার বাংলা বলার কোনো অধিকার নাই। বোঝেন ব্যাপার!!! আপনার লেখা ভালো লেগেছে।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। প্রকৃত পণ্ডিত ব্যক্তি কখনো এমন কথা বলে না । আপনার মন্তব্য থেকে আমি একটা নতুন শব্দ শিখলাম 'ফেইসবুকার'। ধন্যবাদ।

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

মহা সমন্বয় বলেছেন: আসলে পুস্তকময় জ্ঞান বাস্তবে সব ক্ষেত্রে ফলপ্রসু হয় না। শুধু মাত্র পুস্তক জ্ঞানের উপর নির্ভলশীল জ্ঞান পরিপুর্ণ নয়। পুস্তক জ্ঞান আর বস্তবজ্ঞানের সমন্বয়ের মাধ্যমেই জ্ঞান পরিপুর্ণ হয় না।
পৃথিবীর কোন জাতিকে দেখলাম না যে, তারা সংবিধান পরোপুরিভাবে মেনে চলে কিন্তু তাই বলে সংবিধান মিথ্যা না।
পৃথিবীর কোন মানুষকে দেখলাম না যে ব্যাকারণ অনুযায়ী কথা বলে কিন্তু তাই বলে ব্যাকারণ মিথ্যা না।
পৃথিবীর কোন মানুষই ধর্মগ্রন্থ পুরোপুরি মেনে চলতে পারে না কিন্তু তাই বলে ধর্ম বলতে কিছু নাই সব মিথ্যা না।
পৃথিবীর কোন নাস্তিককে দেখলাম না যে পুরোপুরি নাস্তিকতা মনে চলে, আর এটা অসম্ভব কারণ নাস্তিকদের নিদ্রিষ্ট কোন বিধান নেই আর তারা যার যার মতবাদ অনুযায়ী বীক্ষিপ্ত ভাবে মতবাদ প্রচার করছে। কিন্তু তারা ব্যার্থ কারণ সকল নাস্তিকরা মিলেও একটা নাস্তকিতা গ্রন্থ রচনা করতে পারে নাই যা সকল নাস্তিকের মেনে চলবে আর এটা অসম্ভব। কিন্তু তাইলে নাস্তিকতা বলে কিছু নাই তা হতে পারে না।
আসলে সবকিছুই আছে আর সবকিছুর মধ্যেই সম্ভবনা রয়েছে।

৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১

মহা সমন্বয় বলেছেন: পুস্তক জ্ঞান আর বস্তবজ্ঞানের সমন্বয়ের মাধ্যমেই জ্ঞান পরিপুর্ণ হয় হবে :`>

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.