নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সায়ন্তন রফিক

অপেক্ষায় আছি কেউ একজন আসবেই আলোয় ভরিয়ে দেবে সব।

সায়ন্তন রফিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ পদক বা পুরস্কার ভিক্ষা

২২ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৫০

একজন সাহিত্যিক বা শিল্পীর আত্মমর্যাদাবোধ থাকা দরকার। তা না থাকলে তার সৃষ্টির স্বকীয়তা প্রশ্নের সম্মুখীন হবেই। যত জনপ্রিয়, বিখ্যাত, নন্দিতই হোক না কেন, যে সাহিত্যিক বা শিল্পীর আত্মমর্যাদাবোধ নেই, তার কোনো মূল্যই নেই আমার কাছে। তখন তার মতো তার সৃষ্টিও আমার কাছে মূল্যহীন মেকি মনে হয়। কবি নির্মলেন্দু গুণকে এখন আমার তেমন একজন মনে হচ্ছে।
একজন প্রকৃত সাহিত্যিক বা শিল্পী কখনো পুরস্কারের কাঙাল হয় না, পুরস্কার ভিক্ষে করে বেড়ায় না। যদিও আমাদের দেশে নয় শুধু, বহু দেশেই পুরস্কারের জন্যে সাহিত্যিক, শিল্পীদের নানারকম কলা কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান নানা উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জনকে পুরস্কারের জন্যে নির্বাচিত করে থাকে। এমন কি নোবেল পুরস্কার নিয়েও আছে নানা বিতর্ক। তাই এসব পুরস্কার খুব কম ক্ষেত্রেই নির্মোহ, নিরপেক্ষতার দাবি করতে পারে।
আমাদের দেশে বাংলা একাডেমি পুরস্কারই ভীষণরকম বিতর্কিত ইদানিং। অন্যান্য পুরস্কারে যে দলবাজি, গোষ্ঠীপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি থাকবে, সে কথা না বললেও চলে। এখানে সাধারণ মানের একটি মাত্র গ্রন্থ লিখেই কেউ পুরস্কার বাগিয়ে নেয়। কেউ অবিকল নকল করে পুরস্কার পেয়ে যায়। কেউ চুরি করে পুরস্কার পেয়ে যায়। পুরস্কার নয় শুধু, জনপ্রিয়তা অর্জনেও উপর্যুক্ত বিষয়গুলো ক্রিয়াশীল। এ ব্যাপারগুলো সচেতন সাহত্যিক , শিল্পী মাত্রেই জানেন। তবুও তারা সাধারণ ভিক্ষুকের মতো পুরস্কারের জন্যে হাত বাড়িয়েই থাকেন না শুধু, নাছোড়বান্দা ভিক্ষুকের মতোও নানা কলাকৌশলের আশ্রয় নেন। সাহিত্যিক, শিল্পীর মর্যাদাকে পঙ্কিল জলে ডুবিয়েও পুরস্কার উচ্চে তুলে ধরতে তৎপর থাকেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তাদের সংখ্যাই বেশি। আবার কেউ কেউ আছেন পুরস্কার যোগাড় করতে না পারার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার প্রদান পদ্ধতি, দলবাজি, গোষ্ঠীপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি সম্পর্কে অগ্নিকণ্ঠ থাকেন। পুরস্কার জুটে গেলে চুপ হয়ে যান কিংবা প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন।
পুরস্কার প্রদান ও গ্রহণের যখন এই অবস্থা, তখন এসব পুরস্কারে কোনো গৌরব আছে বলে আমি মনে করি না। তাই এমনিতেই কেউ পুরস্কার পেলে আমার মনের পর্দার এক কোণে তার ভিখিরি অবয়বটা ভেসে উঠে। আমি ভাবি এই পুরস্কারের জন্যে তাকে কতো কৌশল করেই না কোনো না কোনো ব্যক্তির কাছে, গোষ্ঠীর কাছে বা দলের কাছে হাত পেতে দাঁড়াতে হয়েছে! ব্যতিক্রম যে নেই, তা নয়। তবে তার সংখ্যা নগণ্য। সেই নগণ্যদেরও অমর্যাদাকর পুরস্কার প্রদান পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর প্রকাশভঙ্গির সারল্যের কারণে আমার একজন প্রিয় কবি। নির্মলেন্দু গুণের চেয়ে অযোগ্য অনেকেই হয়তো এ পুরস্কারটা পেয়েছে, ভবিষ্যতেও পাবে। তা পাক। কিন্তু নির্মলেন্দু গুণের পুরস্কার বাগানোর কৌশলটা ভালো লাগেনি। এ ভাবে চেয়ে পুরস্কার পাওয়াতে তাঁর মর্যাদা বাড়েনি। আবার কেউ চাইলো বলে তাকে পুরস্কার দেয়ায় বাড়েনি পুরস্কারের মর্যাদাও। বরং আমার মতো অনেকের মনেই হয়তো তাঁর একটা অমর্যাদাকর অবয়ব আঁকা হয়ে গেলো।
আমি মনে করি একজন সাহিত্যিক বা শিল্পীকে পুরস্কার, পদকের কাঙাল নয়, আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। আত্মমর্যাদাহীন কাউকে সাহিত্যিক বা শিল্পী বলতে গেলে কুণ্ঠা এসে কণ্ঠ চেপে ধরে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: আমি মনে করি একজন সাহিত্যিক বা শিল্পীকে পুরস্কার, পদকের কাঙাল নয়, আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।

সহমত।

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মনস্বিনী বলেছেন: " কিন্তু নির্মলেন্দু গুণের পুরস্কার বাগানোর কৌশলটা ভালো লাগেনি। এ ভাবে চেয়ে পুরস্কার পাওয়াতে তাঁর মর্যাদা বাড়েনি। আবার কেউ চাইলো বলে তাকে পুরস্কার দেয়ায় বাড়েনি পুরস্কারের মর্যাদাও।" - যথার্থ বক্তব্য।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৫২

বার্ণিক বলেছেন: আত্মমর্যাদাহীন কাউকে সাহিত্যিক বা শিল্পী বলতে গেলে কুণ্ঠা এসে কণ্ঠ চেপে ধরে। -- সুন্দর!

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯

সায়ন্তন রফিক বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.