নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই ২০০৮ সাল থকে ব্লগিং করতেছি অতিরিক্ত ঘাড় তেড়ামির কারনে আগের আইডি ব্লক খাইছি।আমার এই আইডিতে ঘাড় তেড়ামি বাদ দিয়া ব্লগিং করতেছি।

রাঘব বোয়াল

নিক নাম দেইখা ডর খাইয়েন না।আমি আসলে খুব সাধারন মানুষ।আর জানতে ভালোবাসি জানাতে ভালোবাসি তাই নিজে যা জানব অন্যকেও তা জানাবো।

রাঘব বোয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ আদম ও হাওয়া (আঃ) এবং তাঁদের ব্যাপারে সমাজে প্রচলিত তিনটা ভুল ধারনা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৪

১। ফলের নাম কি 'গন্দম' ছিল?

আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটি কথা - আদম এবং হাওয়া (আঃ) ‘গন্দম’ গাছের ফল খেয়েছিলেন।

কথাটি পুরোপুরি সত্যি নয়। কুরআন কিংবা সহীহ হাদিসের কোথাও এই গন্দম নামক ফল বা গাছের কথা উল্লেখ নেই।

মূলকথা, আদম ও হাওয়া (আঃ) কে আল্লাহ বিশেষ একটি গাছের নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেন। পরবর্তীতে তাঁরা শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে সেই গাছের নিকটবর্তী হয়েছিলেন এবং সেই গাছের ফল খেয়েছিলেন। তবে কী ছিল সেই ফল কিংবা গাছটির নাম - এই ব্যাপারে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল কিছুই বলেননি আমাদেরকে।

২। শুধু হাওয়া (আঃ) কি দায়ী?

সমাজে বহুল প্রচলিত আরেকটি ভুল ধারনা - আদম (আঃ) কে হাওয়া (আঃ) নিজে সেই বিশেষ গাছের ফল খেতে দিয়েছিলেন।

হাওয়া (আঃ) কি সত্যিই আদম (আঃ) কে সেই বিশেষ গাছের ফল খেতে দিয়েছিলেন? চলুন দেখি নেই, পবিত্র কুরআনে কি আছে এই ব্যাপারেঃ

“হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে এ বৃক্ষের কাছে যেয়োনা, তাহলে তোমরা গুনাহগার হয়ে যাবে। অতঃপর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয়। সে বললঃ তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও চিরকাল বসবাসকারী। সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বললঃ আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্খী। অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।”

[আল কুরআন, সূরা আল-আরাফ, আয়াত নং. ১৯-২৩]

পবিত্র কুরআনের কোথাও এই কথা উল্লেখ নেই যে হাওয়া-ই আদম (আঃ) কে সেই ফল খেতে দিয়েছিলেন। এ তো বরং ইয়াহুদি এবং খ্রিস্টানদের দৃঢ় বিশ্বাস যে সাপের সাহায্যে শয়তান হাওয়া (আঃ) কে প্ররোচিত করেছিল সেই গাছের ফলটি খেতে, নিজে খাওয়ার পর হাওয়া (আঃ) স্বয়ং তা আদম (আঃ) কে খেতে দিয়েছিলেন।

একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিন, বাইবেলের Old Testament-এ:

“…সেই নারী (হাওয়া) দেখল গাছটা সুন্দর এবং এর ফল সুস্বাদু, আর এই ভেবে সে উত্তেজিত হল যে ঐ গাছ তাকে জ্ঞান দেবে। তাই নারী গাছটা থেকে ফল নিয়ে খেল। তার স্বামী (আদম) সেখানেই ছিল, তাই স্বামীকেও ফলের একটা টুকরো দিল আর স্বামীও সেটা খেল।”

[বাইবেল, জেনেসিস, ৩/৬]

“…আদম প্রভুকে বলল, আমার জন্য আপনি যে নারী তৈরি করেছিলেন, সেই নারী গাছটা থেকে আমায় ফল খেতে দিয়েছিল, তাই আমি সেটা খেয়েছি।”

[বাইবেল, জেনেসিস, ৩/১২]

“…(সেই অপরাধের কারনে) প্রভু নারীকে বললেন, ‘তুমি যখন গর্ভবতী হবে, সেই দশাটাকে আমি দুঃসহ করে তুলব, তুমি অসহ্য ব্যথাতে সন্তানের জন্ম দেবে। তুমি তোমার স্বামীকে আকুলভাবে কামনা করবে, কিন্তু সে তোমার ওপর কর্তৃত্ব করবে।’”

[বাইবেল, জেনেসিস, ৩/১৬]

কুরআনের কোথাও একতরফাভাবে হাওয়া (আঃ) কে দোষ দেয়া হয়নি। বরং আদম (আঃ) এবং হাওা (আঃ) দুজনকেই সমানভাবে তিরস্কার করা হয়েছে। কিংবা এটাও বলা হয়নি যে হাওয়া (আঃ) এর ভুলের কারনেই জান্নাত থেকে দুজনকে বিতাড়িত করা হয়েছিল বা হাওয়া (আঃ) আদম (আঃ)-কে বিপথে পরিচালিত করেছিলেন।

মূলকথা, আদম এবং হাওয়া (আঃ) দুজনেই সমান অপরাধ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন, আর আল্লাহ সুবহান ওয়া তায়ালা তাঁদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আর গর্ভধারণের মত এত পবিত্র যাতনা কোন অবস্থাতেই মা দের ওপর আল্লাহ সুবহান ওয়া তায়ালার চাপিয়ে দেয়া শাস্তি হতে পারেনা।

৩। শয়তান কি সাপ ও ময়ূরের সাহায্য নিয়েছিল বা আকৃতি ধারন করেছিল?

শয়তান সাপ ও ময়ূরের সাহায্যে আদম এবং হাওয়া (আঃ)-কে সেই বিশেষ গাছের ফল খেতে প্ররোচিত করেছিলেন বলে সমাজে যেসব কথা প্রচলিত আছে, সেগুলো সবই বাইবেলের Old Testament-এর কথা, কুরআন কিংবা সহীহ হাদিসের নয়। এই ব্যাপারের জন্য জেনেসিস অধ্যায়ের ৩/১-৪ পড়ে দেখুন।

ইমাম ইবনে কাসিরের মতে, মুসলিম সমাজে প্রচলিত উপরের সব ঘটনাগুলো ইসরায়েলিদের বর্ননা থেকে প্রাপ্ত – এগুলোর ওপর বিশ্বাস করা যায়না।

আল্লাহু আলাম।

----------------

রেফারেন্সঃ

১. হাদীসের নামে জালিয়াতি

ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, PHD (Riyad), MA (Riyad)

সহযোগী অধ্যাপক, আল হাদীস বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

২. ইসলামে নারী বনাম ইয়াহুদি-খ্রিস্টান ধর্মে নারী

ড. শরীফ আব্দুল আযিম, PHD, (Canada)

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


এই গল্পগুলো পুরাতন আমলে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্নভাবে ছিল; মুলকথা এটি মানুষের প্রাছীন সাহিত্যার গল্পদের একটা সেরা গল্প।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

রাঘব বোয়াল বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আসলে কোনখানা বিশ্বাস করব, কোরআন না বাইবেল? আপনার মতে কোরান করতে হবে, অন্য কেউ বলে বাইবেল| কোনখান করব

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮

রাঘব বোয়াল বলেছেন: অবশ্যই কোরআন।ইঞ্জিলও (বাইবেল) আল্লাহর বানী কিন্তু এটা পরিবর্তিত রুপ।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৪

এনামুল রেজা বলেছেন: বাহ। চমৎকার ব্যাখ্যা করেছেন। একমত। :)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮

রাঘব বোয়াল বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩২

দ্য েস্লভ বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়রান। রসূল(সাঃ) পূর্বের কিতাবের ব্যাপারে চুপ থাকতে বলেছেন। সেটার সাথে যেহেতু সত্য ও মিথ্যা দুটোই রয়েছে,তাই আমরা সেটার ব্যাপারে চুপ থাকব। তবে যুগে যুগে বাইবেল পরিবর্তিত হয়েছে। এখন তো বাজারে শতাধিক বাইবেল পাওয়া যায়। এর অর্থ হল সেগুলো পরিবর্তিত।

আমাদের কাছে সকল বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা আসেনি,প্রয়োজনও নেই। আর আপনি যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন,তা অতি সুন্দর। এটাই আসল কনসেপ্ট। পৃথিবেতে মানুষ পাঠানো ছিল আল্লাহর ইচ্ছা। ...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪০

রাঘব বোয়াল বলেছেন: সুন্দর এবং যুক্তি সাপেক্ষ কমেন্টের জন্য +

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫১

আহলান বলেছেন: হুম ... সব কথা কি আর এমনি এমনি জানা যায় ? ;)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

রাঘব বোয়াল বলেছেন: =p~ =p~

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

নিজাম১৪৩ বলেছেন: চমৎকার ! পুরোপুরি একমত ।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৭

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১২

নতুন বলেছেন: মানুষ ধমের নামে যে কোন কাহিনিই বিশ্বাস করে... সত্য খুজতে যায় না....

এই বিশ্বাসের প্রবনতাকে সবাই ব্রবহার করে...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯

রাঘব বোয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ

৮| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫২

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: এ পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি ধর্ম আছে, ভারতীয় উপমহাদেশে বার শ এর বেশি। তারও আগে হাজার হাজার ভাষা, ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সব ধর্মেই সাহিত্য অাছে, শুধুই সাহিত্য সম্পদ..

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১২

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনার কাছে আল্লাহ্‌র নবী আদম (আঃ) এর এই কাহিনীকে সাহিত্য মনে হয়?

৯| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১২

আরিফুর রহমান বাবুল বলেছেন: যে বিবরন দিলেন, আমার মতে আর গাঠাগাঠি না করাই ভাল। বাইবেলকে বেশি প্রাদান্য দিলেন। বাইবেলকে মুটেও প্রাদান্য দেয়া ঠিকনা। আপনার লেখা ডিলেট করেন। আর ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৬

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনার কাছে তাই মনে হয়??? আমি প্রথমেই পবিত্র কোরআনের রেফারেন্স উল্লেখ করেছি।

১০| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: কুরান এবং হাদীসের বাইরে যত কাহিনী প্রচলিত আছে, আর কোনটিই বিশ্বাস করা ঈমানদারদের জন্য জায়েজ নেই। বিশ্বাস করতে হলে একমাত্র কুরআনকে করতে হবে। জ্ঞান অর্জনের জন্য ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি, হিস্ট্রি, মিথলজি, রুপকথা-গল্পকথা রয়েছে। কিন্তু বিশ্বাস করার মত জিনিস দুনিয়াতে একটাই আছে - আল কুরআনুল কারীম!

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৮

রাঘব বোয়াল বলেছেন: সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ

১১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫

হানিফঢাকা বলেছেন: Thanks. I already knew these. But I have a curious question regarding this incident. The Holy Quran says, satan influences Adam to taste the tree that was forbidden as you rightly mentioned. But before that he (satan) was expelled from the paradise as he denied to prostrate before Adam. so.....

1. How come satan reached the paradise or his influence reached there to Adam as he was expelled from there? THIS IS A BIG QUESTION (cause it was the breaking of God's command as God says get out and he returned without noticing anyone???)

2. If the satan did success on that time, does it mean he can still do the same thing? meaning can enter or influence in paradise anytime? isn't he banned from there?

Brother, if you know the answer, please let me know. I have been searching this info from out of curiosity, and the answer that I got seems vague.

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:২৩

রাঘব বোয়াল বলেছেন: যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা আপনাকে বলি, আপনি আপনার এই প্রশ্ন গুলো নিয়ে কোন হক্কানি আলেমের কাছে যান।সে ইনশাল্লাহ আপনার প্রশ্নের জবাব দিবে।

১২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০১

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লিখেছেন, চমৎকার লাগল্ !

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

রাঘব বোয়াল বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকাবাসী

১৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪

প্রামানিক বলেছেন: এ কাহিনী কোরানে নাই তাওরাতে আছে। তাওরাতের বাংলা অনুবাদ পড়লে পাবেন।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮

রাঘব বোয়াল বলেছেন: ভাই এই কাহিনি যে কুরআনে আছে সেটা কি আমি একবারও বলেছি????? উপরে কুরআনে কি কথা বলা আছে তা উল্লেখ করেছি।

১৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০

ইমরান আশফাক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৯

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.