নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই ২০০৮ সাল থকে ব্লগিং করতেছি অতিরিক্ত ঘাড় তেড়ামির কারনে আগের আইডি ব্লক খাইছি।আমার এই আইডিতে ঘাড় তেড়ামি বাদ দিয়া ব্লগিং করতেছি।

রাঘব বোয়াল

নিক নাম দেইখা ডর খাইয়েন না।আমি আসলে খুব সাধারন মানুষ।আর জানতে ভালোবাসি জানাতে ভালোবাসি তাই নিজে যা জানব অন্যকেও তা জানাবো।

রাঘব বোয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রানী ক্লিওপেট্রা কথন

০১ লা মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৭



ক্লিওপেট্রা(Cleopatra) নামটি দুহাজার বছর ধরে হাজারো কিংবদন্তীর নায়িকা হয়ে আছে।অবশ্য ইতিহাসে এই সময়ে আরও সাতজন ক্লিওপেট্রার দেখা পাওয়া যায়।আমাদের ক্লিওপেট্রা এদের সবার ছোট, কুইন ক্লিওপেট্রা দা সেভেন।।ক্লিওপেট্রার জীবনকাল ধরা হয় খ্রিস্টপূর্ব উনসত্তর থেকে ত্রিশ অব্দ পর্যন্ত।খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে মহামতি আলেকজান্ডার প্রথম মিশরে আধিপত্য বিস্তার করেন।আলেকজান্ডার তার বিশ্বজয়ের মিশন শেষে ফেরার পথে মৃত্যুবরণ করেন।এসময় তার প্রধান সেনাপতিগন বিজিত রাজ্যগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেন।মিশরের প্রশাসক ও আলেকজন্ডারের সেনাপতি টলেমি আলেকজান্দ্রিয়াকে রাজধানী করে মিশরে টলেমী রাজবংশের সূচনা করেন।এইরাজবংশ আলেকজান্ডারের মৃত্যুরপর থেকে রোম কর্তৃক মিশর দখলের আগ পর্যন্ত মিশর শাসন করেন।রানী সপ্তম ক্লিওপেট্রার মৃত্যুর মধ্যদিয়েই মিশরে টলেমী রাজবংশের অবসান ঘটে।তার বাবা ছিলেন দ্বাদশ টলেমি(অনেকে বলেন সপ্তম টলেমী)।

মিশরের রানী হলেও ক্লিওপেট্রা কিন্তু মিশরীয় ছিলেন না।তিনি ছিলেন মেসিডোনিয়ান গ্রিক।টলেমী রাজবংশের কোন রাজারাই মিশরের কৃস্টি কালচারকে অনুসরন করেননি,মিশরীয় ভাষাও শিখেননি,তাদের ভাষা ছিল গ্রিক।এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন ক্লিওপেট্রা।তিনি নিজ চেস্টায় মিশরীয় ভাষা শিখেন এবং নিজেকে মিশরীয় সূর্য় দেবতা রা(sun God Re) এর কন্যা বলে প্রচার করতেন।তার পোষাক- আশাকও ছিল ফারাওদের(ফেরাউন) মতো।পরতেন সর্পশোভিত রাজমুকুট।অবশ্য ঐতিহাসিকগন এটাকে ক্লিওপেট্রার রাজনৈতিক চাল বলে থাকেন।তাঁর জীবনীকাররা বলেন ক্লিওপেট্রা ছিলেন নজরকারা ও অসম্ভব রকমের সুন্দরী।তার ঠোট দুটি ছিল গোলাপ পাপড়ির ন্যায়,নাকছিল সুউন্নত,আর
চোখজোড়া ছিল অত্যন্ত মায়াময়।তার কন্ঠস্বর ছিল বীণার তারের ধ্বনির মতো।জীবনিকাররা আরও বলেন,স্বর্গের দেবতা প্লেটোর ছিল মাত্র চারধরনের তোষামোদকারী কিন্তু ক্লিওপেট্রার ছিল হাজারো ধরনের গুনমুগ্ধ ভক্ত ও তোষামোদকারী।ক্লিওপেট্রা অসম্ভব বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন।
ক্লিওপেট্রার বয়স যখন আঠারো বছর তখন তার বাবা মারা যান এবং তিনি মিশরের রানী হিসাবে স্থলাভিসিক্ত হন(খ্রিস্টপূর্ব একান্ন অব্দে)।সেই সাথে রাজা হন তার আপন ছোট ভাই ও স্বামী পনের বছর বয়স্ক টলেমী অস্টম(মতান্তরে ত্রয়োদশ)।অবশ্য ভাই-বোনের এই বিয়ে টলেমী রাজবংশে নতুন কিছু ছিল না।তার বাবা-মাও ছিলেন আপন ভাই বোন।আসলে টলেমী রাজবংশের উত্তরাধিকার যাতে অন্যকারো হাতে না যায় এজন্যই ক্লিওপেট্রার বাবা এই রাজনৈতিক বিয়ের ব্যবস্থা করেন।পিতার মৃত্যুর পর এই কিশোর-কিশোরী সিংহাসনে বসলেও বেশীদিন টিকতে পারেনি।কিছুদিনের মধ্যেই বিদ্রোহীরা ক্লিওপেট্রাকে বিতাড়িত করেন,যদিও রাজা থেকে যান তার স্বামী/ভাই অস্টম টলেমী।এসময় রাজনৈতিক ডামাডোলে রোমের সিনেট মিশরে নাক গলানো দরকার মনে করে।এগিয়ে আসেন জুলিয়াস সিজার।সিজার অবশ্য তার প্রতিদ্বন্দি পম্পেইকে পিছু ধাওয়া করেই মিশরে আসেন(যদিও এর আগেই পম্পেইয়ের মৃত্যু হয়)।পম্পেইয়ের দেখা না পেলেও সিজার দেখা পান ক্লিওপেট্রার।রাজ্যহারা ক্লিওপেট্রা সিজারের সাথে দেখা করে তাকে আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব করেন এবং বিনিময়ে সিজারও ক্লিওপেট্রাকে মিশরের সিংহাসনে বসাবার প্রতিশ্রুতিদেন।প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন জুলিয়াস সিজার, বসিয়েছিলেন ক্লিওপেট্রাকে মিশরের সিংহাসনে।।সিজার-ক্লিওপেট্রার প্রেম- বিয়ে নিয়ে অনেক কিংবদন্তী আছে।তাদের এক সন্তানের কথাও শোনা যায়(টলেমি সিজার)।টলেমি সিজারের বাবাকে তা জানা না গেলেও ক্লিওপেট্রার সন্তান ছিল ওই একটাই।পম্পেইয়ের সৈন্যদের শায়েস্তা করতে সিজারের দুবছর সময় লাগে।রোমে ফিরে গিয়ে সিজার তার সাফল্য ও বীরত্ব উদযাপনের জন্য এক বিশাল বিজয় উতসব পালন করেন।সেখানে তিনি ক্লিওপেট্র-টলেমী দম্পতিকেও আমন্ত্রিত করে।ক্লিওপেট্রার ছোট বোন আরসিনিও সেই অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধকরেন বলেও ইতিহাসে জানা যায়।সিজার এই উতসবে ক্লিওপেট্রাকে অসম্ভব সম্মান দেখান।রোম নগরীতে স্থাপিত গ্রিকদেবতা জেনট্রিক্স(Venus Gentrix)এর মন্দিরে তিনি ক্লিওপেট্রার স্বর্ণমূর্তি স্থাপন করেন।মূর্তির বেদীতে লিখা ছিল : “মিশরের দেবী”(Goddes of Egypt)।
রোমে ক্লিওপেট্রা অনেকদিন বেড়িয়েছিলেন।সিজার যেদিন নিহত হন তখনও ক্লিওপেট্রা রোমেই ছিলেন।সিজারের মৃত্যুর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন ও রোম সাম্রাজ্যের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে মিশরকে স্বাধীন ওস্বার্বভৌমদেশ হিসাবে ঘোষনা করেন।ক্লিওপেট্রাকে দমন করতে রোম থেকে পাঠনো হল সেনাপতি এন্টনিওকে। সিডনাস নদীর তীরে প্রচুর উপঢৌকন সাথে নিয়ে ক্লিওপেট্রা দেখাকরেন
এন্টনিওর সাথে।ক্লিওপেট্রার রুপের কাছে হার মানেন এন্টনিও।এখানে তিনি তিন বছর চুটিয়ে প্রেম করেন ক্লিওপেট্রার সাথে আর ওদিকে তার বউ (সম্রাট আগাস্টসের বোন) অক্টাভিয়া স্বামীর প্রতারনা সহ্য করতে না পেরে অকালে প্রান হারান।রোমে ফিরে গিয়ে এন্টনিও সম্রাটের সাথে আপোষ করতে চাইলেও বিষয়টির মিমাংসা হয়নি।রোম থেকে এন্টনি আবার মিশরে ফিরে আসেন এবং ক্লিওপেট্রাকে বিয়ে করেন।এই বিয়েই কাল হল এন্টনি-ক্লিওপেট্রার জন্য।রোম সাম্রাজ্য ফুসে ওঠে এন্টনিওর এহেন কাজের বিরুদ্ধে। সিনেট থেকে এন্টনিওকে রাস্ট্রদ্রোহী ঘোষনা করা হয়।তাকে দমনে প্রকান্ড এক নৌবহর নিয়ে এগিয়ে আসেন সম্রাট আগাস্টাস(বোন হত্যার বদলা নিতে ?)।খ্রিস্টপূর্ব একত্রিশ অব্দের ২,সেপ্টেম্বর তারিখে অক্টাভিয়ান সেনাদের সাথে যুদ্ধ হয় এন্টনি-ক্লিওপেট্রার যৌথ বাহিনীর।কিন্তু এক অঞ্জাত কারনে এন্টনিওকে একা ফেলে ক্লিওপেট্র তার বাহিনী নিয়ে ফিরে আসেন মিশরে।ফলে নৌযুদ্ধে এন্টনিও পরাজিত ও নিহত হন।আগাস্টাস সিজার এগুতে থাকেন মিশরের দিকে।
রোম শাসক আগাস্টাস সিজার যখন আলেকজান্দ্রিয়ার রাজ প্রাসাদ দখল করে ক্লিওপেট্রার শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন তখন দেখেন হাজারো রত্নমালা বিভূষিত হয়ে রানী ক্লিওপেট্রা শুয়ে আছেন তার সোনার সিংহাসনে।তবে জীবিত নয় মৃত।কিংবদন্তী আছে ক্লিওপেট্রা নাকি সাপের দংশনে আত্মহত্যা করেছিলেন।
ক্লিওপেট্রার মৃত্যুরপর তার একমাত্র সন্তান টলেমি সিজার দেশ থেকে পালিয়ে যান।(শুনা যায় ভারত বর্ষে এসেছিলেন)তবে আগাস্টাস সিজারের
গুপ্তঘাতকের চোখ এড়াতে পারেননি।জুলিয়াস সিজারের সন্তান হিসাবে যদি সে কখনো রোম সাম্রাজ্যের সিংহাসন দাবি করে বসে এভয়ে আগাস্টাস তাকে হত্যা করেন।এভাবেই ক্লিওপেট্রা সবংশে নিহত হন আগাস্টাস সিজারের হতে।ক্লিওপেট্র যদিও ক্ষমতালোভী ও বিলাসী জীবন যাপন করতেন তবুও তার ব্যক্তিগত জীবনে সস্তা নোংরামির কোন ঘটনা দেখা যায় না।কুতসাগুলি ছড়িয়েছে মুলতরোমান গল্পকারেরা ।রোমানদের সাথে ক্লিওপেট্রার যখন বিরোধ চলছিল তখন তার নামে অপবাদমূলক ও মিথ্যা গল্প ছড়ানোর কৌশল
অবলম্বন করেন রোমান কর্তৃপক্ষ।
সাহায্য ঃ গাজি মাহাবুব আলম পাঠশালা ফ্যানপেজ

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭

মুক্তকণ্ঠ বলেছেন: ভালো লেগেছে।

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১০:১১

রাঘব বোয়াল বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ

২| ০১ লা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১

ইমরান আশফাক বলেছেন: ভালো, তবে আরেকটু বিষদভাবে জানতে পারলে খুশী হতাম।

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১০:১৫

রাঘব বোয়াল বলেছেন: আপনাকে এ মুহুর্তে খুশি করতে পারলাম না বলে দুঃখিত।তবে পরে যদি কখনো এর চাইতে বেশি কিছু জানি তাহলে আপনাকে জানাবো।আর হে কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১০:৩০

মিতক্ষরা বলেছেন: ক্লিওপেট্রা অবশ্যই স্বৈরাচারী ফারাও ছিলেন। তা সত্ত্বেও মার্ক এন্টনিও এবং জুলিয়াস সিজারকে তিনি প্রকৃতই ভালবাসতে পেরেছিলেন। এটাই তার চরিত্রের সবচেয়ে আশ্চর্য দিক।

০২ রা মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

রাঘব বোয়াল বলেছেন: যতার্থ বলেছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.