![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিক নাম দেইখা ডর খাইয়েন না।আমি আসলে খুব সাধারন মানুষ।আর জানতে ভালোবাসি জানাতে ভালোবাসি তাই নিজে যা জানব অন্যকেও তা জানাবো।
নমরুদ হিব্রু শব্দ । এর অর্থ বিদ্রেহী। Hitchcock’s বাইবেলীয় অভিধানে বলা হয়েছ- Nimrod (নিমরোদ): Rebellion
(but probably an unknown Assyrian word). অর্থাত এটা কারো নাম নয়,বরং শব্দটি দিয়ে একজন বিদ্রেহীকে
(আল্লাহ বিদ্রোহী?) বুঝানো হয়েছে।[তাই মনেহয় এটা একটি বিশেষন।তবে ইতিহাসে দেখা যায় অনেক বিশেষনও শেষ পর্যান্ত নামেই পরিনত হয় আর ব্যক্তির আসল নাম হারিয়ে যায়।]
প্রাচীন ব্যবিলনীয় প্রেক্ষাপটে বা বাইবেলে নমরুদ/নিমরোদ :
বংশ পরিচয় - নমরুদ ছিল হামের বংশধর কুশের সন্তান।তার রাজত্ব প্রথমে শুরু হয়েছিল বাবেল থেকে।একারনে মিখাহতে আশেরকে “নমরুদের দেশ” বলা হয়েছে।ওল্ডটেস্টামেন্টে নমরুদ সম্পর্কে বলা আছে:
(১) হামের ছেলেরা হল কুশ,মিশর,পুট ও কেনান।কুশের ছেলেরা হলো সাবা,হাবিলা,সপ্তা,রয়মা ও সপ্তকা।কুশের একটি ছেলে হয়েছিল যার নাম নমরুদ।(আদিপুস্তক,১০:৬-৭)
(২)হামের ছেলেরা হল কুশ,মিশর,পুট ও কেনান।কুশের ছেলেরা হলো সাবা,হাবিলা,সপ্তা,রয়মা ও সপ্তকা।রয়মার ছেলেরা হলো সাবা ও কেনান।কুশের একটি ছেলে হয়েছিল যার নাম নমরুদ।(প্র.বংশাবলী, ১:৮-১০)
ইশ্বর-নমরুদ সম্পর্ক:
(ক)নমরুদ দুনিয়াতে একজন ক্ষমতাশালী পুরুষ হয়ে উঠেছিল।মাবুদের চোখে তিনি ছিলেন একজন বেপরোয়া শিকারী(mighty
hunter)।সেজন্য কথায় বলে,‘লোকটা যেন মাবুদের চোখে একজন বেপরোয়া নমরুদ’।(আদি পুস্তক,১০:৮-৯)
(খ)তিনি দুনিয়াতে একজন ক্ষমতাশালী পুরুষ হয়ে উঠেছিলেন।(প্র.বংশাবলী,১:১০)
নমরুদের রাজ্য সীমা:
“বেবিলন দেশের বেবিলন শহরে এরক,অক্কাদ,কলনি নামে জায়গাগুলি তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেন।তিনি সেখান থেকে বের হয়ে তার রাজ্য বাড়াতে বাড়াতে আশেরিয়া দেশ পর্যন্ত গেলেন।সেখানকার নিনেভ,রাহোবোত ও রেশন নামে শহরগুলি তারই তৈরী।এর মধ্যে রেশন ছিল নিনেভ ও কেলহের মাঝামাঝি জায়গায়।এগুলি একসংগে মিলে একটা বড় শহর তৈরী হয়েছিল।”(আদিপুস্তক,১০: ১০-১২)
আশেরিয়া যে নমরুদের শাসিত দেশ ছিল তার প্রমান পাওয়া যায় মিখাহর ভবিষ্যতবাণীতেও (মিখা.৫:৫-৬)
মিশরীয় পুরানে নমরুদ (এর ইহুদী রুপান্তর ?)
এরকম ধারনাও রয়েছে যে,নমরুদ হচ্ছে মিশরীয় পুরানের ইহুদী সংস্করন।বলা হয়, মিশরীয় সূর্যা দেবতা “রা” এর পুত্র এবং মহান দেবতা ও সম্রাট ওসিরিস বা আশারই ছিলেন নমরুদ।ওসিরিসের নৃশংস হত্যাকান্ড প্রকৃতপক্ষে নমরুদেরই।এ হত্যাকান্ড মিশরের মানুষের মানষ-পটে গেঁথে গিয়েছিল।কারন পুরান মতে,ওরিসিস তার জাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসছিলেন।তাদেরকে শিখিয়ে ছিলেন কৃষি,ধর্ম, এবং সভ্যতা।ওরিসিসের সমাধিক্ষেতত্রের ভিতর থেকে তার মমিকৃত দেহের সংগে রক্ষিত উদ্ধার করা কাহিনী সূত্রটি বলে, ওরিসিস বা নমরুদের মৃত্যু হয়েছিল তার দুস্টভ্রাতা ও শত্রু শামের হাতে।এর সংগে জড়িত ছিল ৭২ জন গোত্র প্রধান।হত্যাকান্ড সফল হলে তার মৃতদেহ খন্ড-বিখন্ড করে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল পুরা মিশর রাজ্য জুড়ে।
এবার দেখি সাম- নমরুদের কাহিনীর কথা বাইবেল কি বলে :নমরুদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে শাম উচ্চতর ৭২জন বিচারককে বিচারের জন্য রাজী করাতে সক্ষম হন, রায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যাকর করেন এবং বিচারপতিদের সম্মানে নমরুদের লাশ খন্ডবিখন্ড করেন।(বিচার,১৯:২৯,শামুয়েল,১১:৭ ইত্যাদি)
সমস্যা হলো সাম :ওরিসিসের ভাই শাম ছিলেন একজন প্রাচীন হারকিউলিস।তাকে শক্তি যোগাত স্বয়ং ইশ্বর।সেই শক্তি দিয়ে তিনি বিজয়ী হন স্বর্গের বিরুদ্ধে “ব্রিদ্রেহী দৈত্যের”(mighty hunter)।আমরা আগেই দেখেছি নমরুদকেই আদি পুস্তকে “মাইটি-হান্টার” বলা হয়েছিল।শাম এখানে তাহলে নমরুদকেই পরাজিত করেন,যে ছিল তার ভাই(মিশরী পুরান মতে)।তা হলে শাম আর নমরুদের বাবা হলেন মিশরী দেবতা “রা”।কিন্তু বাইবেলে সামকে বলা হয়েছে নূহ এর পুত্র (সামের বংশধর বলেই ইহুদী,খ্রীস্টান,আরবরা সেমেটিক)।কোনটা তবে ঠিক ? নূহ ছিলেন মেসোপটেমিয়ন।কিন্তু তার ছেলে মিশরী হয় কি করে ? কাজেই ধরে নেয়া যায় মিশরে বন্দী জীবন বসবাস কালে সাম-নমরুদের এই আখ্যান ইহুদীরা শুনেছিল এবং পরে এরই বাইবেলীয় রুপ দিয়েছে।অন্তত মিশরী পুরাণের ও আবিস্কৃত মমির কাহিনী মানলে ঘটনাটা তেমই দাঁড়ায়।কিন্তু পুত্রের মিশরী অার বাবার মেসোপটেমিয়ান হওয়ার গোঁজামিলটা ঠিক করতে পারেনি।
কোরআন ও নমরুদ :
শুনতে বিসদৃশ লাগলেও সত্য হলো নমরুদ বা নিমরোদ নামটি কোরআনে নেই।সহীহ হাদিসেও নেই।কিন্তু ইসলামি ইতিহাস,তাফসির ও সিরাত গ্রন্থগুলিতে অযাচিত ভাবেই নামটি টেনে আনা হয়েছে।এমনকি ইব্রহীম(আ)এর আগুনে পোড়ানোর কাহিনীর সাথেও নামটিকে জড়িয়ে দেয়া হয়েছে।কোরআন বলে-
(ক)তুমি কি সেই ব্যক্তির(নমরুদ) কথা ভেবে দেখনি যে ইব্রাহীমের সাথে তার প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল,যেহেতু আল্লাহ তাকে রাজত্ব দিয়েছিলেন।যখন ইব্রাহীম বলল,“তিনি আমার প্রতিপালক যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান।”সে বলল,“আমিওতো জীবন দান করি আর মৃত্যু ঘটাই।”ইব্রাহীম বলল,“নিশ্চয়ই আল্লাহ সূর্যাকে পূর্ব দিক থেকে উদয় করান, তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করাও।”তখন সে (নমরুদ) হতবুদ্ধি হয়ে গেল।(খ)“একে হত্যা করো বা আগুনে পুড়িয়ে মার”-এছাড়া ইব্রাহীমের সম্প্রদায়ের অন্যকোন কিছু বলার ছিল না।(সুরা বাকারা,২৫৮-২৫৯)
আয়াতে স্পস্ট দেখা যাচ্ছে নমরুদ নামটি এভাবেই বন্ধনীবদ্ধ করে ঢুকিয়েছেন তাফসিরকারগন।এটা মহান রাব্বুল আলামিনের বলা নাম নয়।পরের আয়াতেও যে সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে বুঝা যাচ্ছে তারা ইব্রাহীম(আ)এর স্বগোত্রীয়।কিন্তু এখানেও আদেশদাতা রাজা বা শাসকের নাম নেই।নমরুদ সম্বন্ধে আরো কয়েকটি ইসলাম প্রচলিত ধারনা (তাফসিরকার,ওয়ায়েজদের বর্ননা মতে)
১।তার নাম- নমরুদ ইবনে কিনআন ইবনে ফালিখ ইবনে আবির ইবনে শালিখ ইবনে আরফাখশাশ ইবনে শাম ইবনে নূহ।(তাফসিরে মুজাহিদী)
২।চার ব্যক্তি পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত তথা সমগ্র পৃথিবী রাজত্ব করেন।তাদের দুইজন মুমিন,দুইজন কাফের।মুমিন হলেন সুলায়মান(আ) আর যুলকার নাইন(ওনাকে আবার অনেকে বলেন আলেকজান্ডার দা গ্রেট)।আর কাফির দুজন নমরুদ ও বখতনাসার(তাফসিরে ইবনে কাছির) প্রকৃতপক্ষে কোরআন শুধু ইব্রাহীম(আ)এর সাথে একজন খোদাদ্রোহীর ঘটনা বর্ননা করেছে।তার বংশ পরিচয়,রাজত্ব কোথায় ছিল ইত্যাদির বর্ননা নেই।কারন নামটা গৌন।কাহিনী বর্ননা করা কোরআনের কাজ নয় বরং কাহিনীর আড়ালের শিক্ষনীয় দিকটির দিকেই ইংগিত করা হয়েছে।একজন ইমানদারের/মুমিনের আল্লাহ সম্বন্ধে বিশ্বাস বর্ননা করা এবং বিপদে আল্লাহ কিভাবে মুমিনদের সাথে থাকেন সেটা ব্যক্তকরাই কোরআনের উদ্দেশ্য।এর সাখে নমরুদ নামটি যুক্ত করেছে আমাদের তাফসিরকারগন ইহুদী-খ্রীস্টান কাহিনীর আলোকে।
তথ্য সূত্র ঃ উইকিপিডিয়া এবং কাজী মাহমুদ রুমনের লিখা থেকে সাহায্য নিয়েছি
১২ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪
রাঘব বোয়াল বলেছেন: " দ্বিতীয় প্লাস " নয়া শব্দের সাথে পরিচিত হইলাম
২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:৫৭
ইমরান আশফাক বলেছেন: এই ব্যাপারে আরও কিছু জানতে চাই কোরআনের আলোকে, ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: দ্বিতীয় প্লাস।