নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝা এবং মানুষের চিন্তার গতি প্রকৃতির সাথে পরিচিত হতে প্রয়াসী

বাঙলি

আমি প্রথমে মানুষ, পরে বাঙালি, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি- এই আমার পরিচয়। এ পরিচয় নিয়েই মরতে চাই.........

বাঙলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্যসন্ধানী চোখ চিনিয়া লইবে সব

১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮

অকস্মাতই মহাবিশ্বের মিল্কিওয়ে নামক ছায়াপথের সৌরজগতের নবগ্রহের পৃথিবী নামক ৭০০ কোটি হোমো সেপিয়েন্স অধ্যুষিত গ্রহের এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বঙ্গপোসাগরীয় ব-দ্বিপে বসবাসরত ১৬-১৭ কোটি শান্তিপ্রিয় হোমো সেপিয়েন্সের মহাবৈশ্বিক ব্যবস্থায় একটি নিম্নচাপ ঘনাইয়া উঠিয়াছে।







অত্যাধুনিক নাকি প্রগৈতিহাসিক একপাল জীব হঠাৎ করিয়া উদয় হইয়া বিচিত্র সব কাণ্ড ঘটাইয়া ব-দ্বিপটিতে তুলকালাম বাধাইয়া দিয়াছে, দ্বিপবাসীর সৌরতান্ত্রিক ব্যবস্থা লণ্ডভণ্ড হওয়ার উপক্রম হইয়াছে। অনাকাক্সিক্ষত, অবাঞ্ছিত হোমো সেপিয়েন্স সদৃশ্য এহেন জীবের আকস্মিক উপস্থিতিতে দ্বিপবাসী সাধারণ হোমো সেপিয়েন্সগণ যারপরনাই বিস্মিত ও দিশেহারা হইয়া দিগি¦দিক ছুটাছুটি করিতেছে।



হোমো সেপিয়েন্সের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান সত্ত্বেও উহাদের চলন-বলন, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিন্তা-চেতনায় ভুত-ভবিষ্যত ও বর্তমানের বিচিত্র মিশ্রণ তাহাদেরকে দুর্বোধ্য এবং অদ্ভুত প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করিবার যৌক্তিক কারণ হইয়া পড়িয়াছে।



উহারা কোথা হইতে আসিল? উহাদের সৌরতান্ত্রিক ব্যবস্থা কিরূপ? আদৌ কি তাহারা মিল্কিওয়ের বাসিন্দা নাকি অন্য কোনো মহাবৈশ্বিক ব্যবস্থা হইতে পৃথিবী গ্রহে আবির্ভূত হইয়াছে? নাকি টাইম মেশিনে ভ্রমণরত অতি উৎসাহী পর্যবেক্ষক এই হোমো সেপিয়েন্সগণ সৌরপরিক্রমার কয়েক শত আলোক বর্ষ পিছাইয়া কিংবা কয়েক শত আলোক বর্ষ আগাইয়া বর্তমান সময়ের হোমো সেপিয়েন্সের মাঝে হাজির হইয়াছে?



এইরূপ কত শত জিজ্ঞাসা ব-দ্বিপবাসী হোমো সেপিয়েন্স গণের মস্তিষ্কের নিউরণে অনবরত টঙ্কার দিয়া ঝঙ্কার তুলিতেছে তাহার ইয়ত্তা নিউরো কম্পিউটারেও গণনা করা দুঃসাধ্য হইয়া পড়িয়াছে।



এই সকল হোমো সেপিয়েন্স সাদৃশ্য প্রাণীর জেনেটিক গঠন নিশ্চিত করিবার মানসে তাহাদের ডিএনএ পরীক্ষা এবং জিন ম্যাপিং করিবার অবিরাম প্রস্তুতি চলিতেছে অগ্রগতি ছাড়াই- কেননা উহাদের কেশাগ্র কিংবা ত্বক স্পর্শ করিয়া নমুনা সংগ্রহের উপযুক্ত যন্ত্রাংশ নির্মাণ করা এ যাবৎ সম্ভব হয় নাই







বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন দ্বিপবাসীগণ তাহাদের বাহ্যিক আচরণ দেখিয়া একটি আনুমানিক সিদ্ধান্তে উপনিত হইতে গিয়াও হোঁচট খাইয়া মুখ থুবড়ে সদন্ত ভূপতিত হইতেছেন।



উহাদের শুচিবায়িতাও অত্যন্ত প্রখর, অনুভূতিবোধ তদাপেক্ষা তীক্ষ্মতর। উহাদের অনুভূতিবোধ এবং শুচিবায়িতার তুল্য প্রকৃত জগতে এহেন কোনো প্রজাতি জীব ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা অদ্যাবধী আবিষ্কার করিতে ব্যর্থ হইয়া এমন বিস্মিত হইয়াছেন যে এ যাবৎ কালের সকল বিস্ময়ের অতীত ইতিহাস মুছিয়া নতুন ইতিহাস রচনায় ব্রত হইয়াছেন।



শুনিলাম, প্রাণীর আধুনিক শ্রেণিবিন্যাসকে আরও নির্দিষ্ট এবং কার্যপেযোগী করিবার নিমিত্তে অনুভূতি ও শুচিবায়িতার ভিত্তিতে হোমো-সেপিয়েন্সকে অধিকতর পর্ব এবং উপ-পর্বে বিভক্ত করিবার নিমিত্তে গঠিত নিখিলবিশ্ব বিজ্ঞানী পরিষদের সেমিনার ভণ্ডুল হইয়াছে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের প্রশ্নে বিজ্ঞানীরাই দ্বিধা-ত্রিধা-বহুধায় বিভক্ত হইয়া কেহ সন্যাস, কেহ ধর্মসাধক কেহবা আত্মসন্ধানে নিমগ্ন হইয়াছেন।



বিজ্ঞান চিন্তায় আরও একটি নতুন ভাবনা সংযোগ ঘটাইবার জন্য বিজ্ঞানীদের একটি অংশ বিগ-ব্যাংয়ের ‘ফসিল’ আবিষ্কারে গোপনে নৃত্বাত্ত্বিক গবেষণা শুরু করিয়াছেন।



কেহ নিশ্চিত করিলেন, অত্যাধুনিক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে নতুন প্রজাতির এই হোমো সেপিয়েন্স তৈরি করা হইয়াছে, কিন্তু গুগুল অনুসন্ধান চালাইয়া অপর একদল বিশেষ জ্ঞানী কহিলেন- ডাঁহা মিথ্যা কথন। পৃথিবী গ্রহের কোনো গোপন গুহাগবেষণা প্রতিবেদনে এ ধরনের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারংয়ের বিন্দু-বিঃসর্গও উল্লেখ নাই।







তাহারা দাবি করিলেন- সমকামিতার কারণে জেনেটিক মিউটেশনের দ্বারাই ইহাদের সৃষ্টি। এ প্রসঙ্গে তাহাদের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হইল- গ্লোবাল ওয়ার্মিংজনিত কারণে সৃষ্ট অতি নীল বেগুনি রশ্মির সহিত বাতাসের অতিমাত্রার কার্বন বিক্রিয়া করিয়া কার্বো-ভায়োলেট বৃষ্টির পানিতে মিশিয়া হাইড্রো-কার্বো-ভায়োলেট যৌগ গঠন করে। এই যৌগ (ীু) ক্রোমোজোমবাহী হোমো সেপিয়েন্সের স্ট্রজেন হরমোনে আমৃত্যু সুপ্ত অবস্থায় বিরাজ করিতে পারে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই। কিন্তু সমকামিতার ক্ষেত্রে দারুণভাবে সক্রিয় হইয়া ওঠে যৌগটি এবং জেনেটিক মিউিটেশন সংঘটিত হয়। কিন্তু এই ব্যাখ্যাও সকলে গ্রহণ করিতে পারিলেন না।



শোনা যাইতেছে, ব-দ্বিপের বাহিরে অপরাপর ভূখণ্ডের বিশেষ জ্ঞান সম্পন্ন হোমো সেপিয়েন্সগণের সহায়তা গ্রহণের সিদ্ধান্ত স্থির হইয়াছে।



তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ইহাদিগকে নবাগত, অনাহুত নাকি রবাহুত বলিয়া চিহ্নিত করা হইবে তাহা লইয়াও চলিতেছে বাদ-বিসংবাদ ও গবেষণা। দ্বিপবাসীর জন্য ইহারা উপদ্রব নাকি আশীর্বাদ তাহাও স্থির করা সম্ভব হইতেছে না।



উৎপাত ভাবিয়া কেহ অতিশয় বিরক্তি লইয়া মাছি খেদাইবার মতো ব্যর্থ প্রয়াস করিয়া হাঁপাইয়া উঠিয়াছে, কেহবা আশীর্বাদ ভাবিয়া উৎফুল্ল চিত্তে তাহাদিগকে সাদর সম্ভাষণ জানাইয়া অতিথি সৎকার করিতেছেন।



এত সব বৈচিত্র্যময় বিভ্রান্তির বেড়াজালে ব-দ্বিপবাসী হোমো সেপিয়েন্সের একটি বৃহৎ অংশ- যাহারা হাঁস ও বাঁশের ধ্বনিগত প্রভেদে বিভ্রান্ত নহেন, দাঁত ভাঙার শব্দে বাঁধ ভাঙার গুজবে কর্ণপাত না করিয়া সত্য সন্ধানে ব্রত, ভুত ও বর্তমান ঘাটিয়া সত্য উদঘাটনে অবিচল আস্থায় ভবিষ্যতের পথে আলো জ্বালাইয়া অবিরাম গতিতে ছুটিতেছে- তাহাদের দৃষ্টি হোমো সেপিয়েন্স সদৃশ্য নতুন প্রজাতির প্রকৃত ইতিবৃত্তান্ত চিনিয়া লইয়াছে- অবাঞ্ছিত এই উপদ্রব রুধিবার উপায়ও খুঁজিয়া নিয়াছে তাহারা- আর গৃহে বসিয়া থাকা নহে, লাঠিহস্তে বাহিরিয়া জোটবদ্ধ হই মিছিলে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.