নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝা এবং মানুষের চিন্তার গতি প্রকৃতির সাথে পরিচিত হতে প্রয়াসী

বাঙলি

আমি প্রথমে মানুষ, পরে বাঙালি, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি- এই আমার পরিচয়। এ পরিচয় নিয়েই মরতে চাই.........

বাঙলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিটি নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের কি বোধোদয় হবে

১৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৮

চার সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হেরেছে বিপুল ব্যবধানে- এটা বর্তমান সরকারের জন্য গুরুতর সতর্ক বার্তা। জনগণ সরকারকে লালাকার্ড দেখিয়েছে- জাতীয় নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে। কাজেই পরাজয়ের কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো যতদ্রুত সম্ভব অতিক্রম করতে হবে, যদিও তার জন্য সময়ও হাতে নেই।



বিরোধী দল বিএনপির প্রার্থীরা (১৮ দলীয় জোট) চার সিটি কর্পোরেশনে জয়ী হয়েছেন। তবে এই জয়ের বড় কারণও সরকারি দল আওয়ামী লীগ। তাদের জয়ের পেছনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের জনপ্রিয়তা বা তাদের আন্দোলনে জনগণের সমর্থন যতটা না কাজ করেছে তার চেয়ে বেশি কাজ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা হলো জনগণের সাথে সরকারের দূরত্ব কমাতে না পারা, সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে না পারা, সরকারের সাফল্য সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হওয়া, দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ত্বরিত ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের পক্ষে সরকারের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সাফাই গাওয়া। আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক উল্লেখ করা এবং সংসদে দাঁড়িয়ে রানাপ্লাজার মালিক সোহেল রানা যুবলীগের কেউ নন বলার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তি ইমেজ তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তী সাধারণ মানুষের কাছে হাস্যকর হয়ে গেছে। এছাড়াও অন্যান্য অনেক মন্ত্রীর অসংলগ্ন বক্তব্য মানুষকে যেমন হাসির কারণ যুগিয়েছে তেমনি ক্ষুব্ধও করেছে।



তবে এই নির্বাচনের ইতিবাচক দিকটা হলো বর্তমান সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি স্বাধীন করেছে আর সেজন্যই এমন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হয়েছে। উপরোন্তু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে সরকারের দৃঢ় অবস্থান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন।



এ কারণে অনেকেই ব্যাপারটিকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে বিচার করছেন, খোঁজার চেষ্টা করছেন এর পিছনে সরকারের কোনো দূরভিসন্ধী আছে কি না। এখানে একটি বিষয় বলা প্রয়োজন- সম্প্রতি আমাদের মধ্যে সন্দেহ বাতিকটা চাগিয়ে উঠেছে। কোনো কিছুই আমরা সহজভাবে দেখি না, সবকিছুতেই আমাদের সন্দেহ।



১৭ দিন ধ্বংসাবশেষে আটক বিস্ময় কন্যা রেশমার বিষয়টিকেও অনেকেই সহজভাবে নেননি। সন্দেহ করেছেন। রানাপ্লাজার ধ্বংসাবশেষে উদ্ধার কার্যক্রমকেও সন্দেহের প্রশ্নে জর্জরিত করা হয়েছে- অথচ বিশ্বের কোথাও উদ্ধার তৎপরতার এমন নজির নেই- যেখানে পেশাগত তৎপরতার সাথে মিশে ছিল নিখাঁদ আবেগ ও ভালোবাসা। এমন অতুলনীয় কর্মকাণ্ডেও লাশগুমের অভিযোগ তোলা হয়েছে।



শিশুদের ভিটামিন-এ এবং ক্রিমিনাশক ওষুধ খাওয়ানোর কার্যক্রমও বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা হয়েছে।



একটি গোষ্ঠী বা মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কাজগুলো করে যাচ্ছে। ইন্টারনেট সুবিধা তুলনামূলক সহজলভ্য হওয়ায় তাদের পোয়াবারো। দেশেকে ডিজিটাল করার লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া সরকারকে ডিজিটালি বাঁশ দিচ্ছে মহলটি।



তার বিপরীতে সরকারের প্রচার-প্রপাগান্ডা দায়সারা। ভাবটা এমন কাজ করলেই কাজের মূল্যায়ন করবে জনগণ। মনে হয়, ২০০১ সালের নির্বাচনী ভরাডুবী থেকে এই সরকার কোনো শিক্ষাই নেয়নি।



বিরুদ্ধ প্রচার-প্রচারণা সরকারের ভালো কার্যক্রমকে যে কোন পাতালে তলিয়ে দিতে পারে তার জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত তো চোখের সামনেই।



এটা হওয়াই স্বাভাবিক। সরকারি দল আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখন নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তবে সবাই নয়, যারা আখের গুছাচ্ছেন তারা এ উদ্দেশ্যেই এই দলে এসেছেন। দলের নীতি-আদর্শের সাথে এদের কোনো পরিচয় নেই। শীর্ষ নেতাদের খুশি করে, মন যুগিয়ে দলের পদ নিয়েছেন। এখন তার ফল পাড়ছেন। দল ভোটে জিতল কি হারল তাতে তাদের কিছুই এসে যায় না। নিজেদের অবস্থান শক্তই রাথেন তারা। বিরোধী দল সরকারে থাকলেও তাদের কোনো সমস্যা হবে না।



কার্যতঃ বর্তমান আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি'র প্রভেদ খুবই সামান্য- শ্লোগানে জয় বাংলা এবং বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, আদর্শ পুরুষে মুজিব এবং জিয়া।



দলটিতে তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতৃত্ব উঠে আসছে না। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী রাজনীতির কোনো চর্চা নেই। অর্থ ও পেশিশক্তির পুঁজি নিয়ে অসাংগঠনিক, আওয়ামী রাজনীতির চেতনাশূন্য ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যুরা নেতৃত্ব পাচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছেন ত্যাগী সাংগঠনিক আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণকারীরা, ধীরে ধীরে তারা নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়ছেন। এভাবে দলটির গোড়ায় পচন ধরার কারণে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য-আদর্শ, ঐতিহ্য হারিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী লুটেরা দলে পরিণত হচ্ছে।



এখনও ষাটের দশকের কিছু প্রবীণ নেতা দলটিতে রয়েছেন এবং সেই সাথে দেশে লাখ লাখ মুজিবভক্ত নিবেদিতপ্রাণ ভোটার রয়েছেন- এ কারণেই দলটি এখনও টিকে আছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:২৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: এই একান্নটা মন্ত্রীসহ দলনেত্রিকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আসলে যদি কিছু হয়। ৩০ বছর ধরে তো এক মুখ!

১৭ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

বাঙলি বলেছেন: নতুন নেতৃত্ব এলেই বা লাভ কি? পুরনোদের মধ্যে এখনও কিছুটা অতীত ঐতিহ্য এবং দলীয় আদর্শ টিকে আছে। নতুন যারা আসবেন তাদের ভাবনা তো একটাই- ধরো, মারো খাও।

২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩০

আহলান বলেছেন: শিক্ষা নেয়ার দিন শেষ, হিসাব চুকানোর দিন শুরু। ভেবেছে ৪সিট ছেড়ে ৩০০ সিট চুরির করবে, সেটিও হবে না, জরগন এখন যেমন খেল দেখালো, তখনও দেখাবে। পাপ বাপকেও ছাড়ে না।

১৭ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪২

বাঙলি বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত চার দলীয় জোট সরকারের পাপের বিরুদ্ধে জনগণ ২০০৮ সালে রায় দিয়েছিল মহাজোটের পক্ষে। এবার মহাজোটের পাপের বিরুদ্ধে রায় দেবে। কিন্তু রায়টা যাবে সেই পুরনো পাপীদের পক্ষে।

কারণ আমরাই সবসময় পাপীদেরকে নির্বাচন করি।

৩| ২১ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

একজন আরমান বলেছেন:
আমার এলাকা বরিশালে সাবেক মেয়র হিরন গত ৫ বছরে এতো উন্নতি করা সত্যেও নির্বাচনে হেরে গেছেন ! এই থেকে এইটা বুঝেছি যে পাবলিক কাজ দেখে ভোট দেয় নি দিয়েছে মার্কা দেখে !

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৮

বাঙলি বলেছেন: আমার জানা মতে এবং বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমান মহাচোর সরি, মহাজোট সরকারের চেয়ে চুরি, দুর্নীতি এবং অপকর্মে বিগত চারদলীয় চোর সরি জোট সরকারই বেশি পরাঙ্গম ছিল। পাবলিক কি তাহলে . . . . বেশি পছন্দ করে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.