নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব জটিল,ভীষণ সহজ এবং আবেগী নিতান্তই সহজ-সরল খোলা মনের মানুষ...আমার অভিধানে কান্না বলে কিছু নেই, তবে কষ্ট পাই খুব সহজে... যে যা দেয় তা ফিরিয়ে দেই। সে যদি হয় ভালোবাসা, তবে ভালোবাসা, অবহেলা হলে অবহেলা, কষ্ট হলে কষ্ট... আমার এ নীতি থেকে আজ পর্যন্ত বিচ্যুত হইনি,হতে চাইও না...।
বিকেল থেকেই কেমন জানি একধরনের বিষন্নতায় ভুগছি!!! মাঝে মাঝে আমার এমন হয়... তখন সব মানুষের উপর কেমন জানি একধরনের অভিমান জাগে!! নিজেকে খুব প্রতারিত মনে হয়!! এমন অবস্থায় মন ভালো করার জন্য গান শুনি... কিন্তু আজকে কেমন জানি কিছুতেই মন ভালো হচ্ছেনা...!! ভাবলাম বন্ধুদের সাথে দেখা করে আসি!!! অনেককেই ফোন দিলাম!! কেমন জানি কেউ ফোন রিসিভ করলনা!!! সবাই মনে হয় খুব ব্যস্ত...!! ব্যস্ততা মনে হয় তাদেরকে আমার কাছ থেকে দিন দিন অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে...!! আগে অনেক বন্ধুই সপ্তাহে একবারের জন্য হলেও খোঁজখবর নিত!! আর এখন ???? ছয় মাসে হয়তোবা একবার ফোন করে!! আমি কেমন আছি সেইটা জানার জন্য না!! বরং আমি তাদের কিভাবে সাহায্য করতে পারি, সেইটা শোনার জন্য...!! আগে এই ধরনের স্বার্থপর আচরনের জন্য খুব কষ্ট লাগত..!! কিন্তু এখন আর লাগেনা!! কারন আমি নিজেও অভ্যস্ত হয়ে গেছি!! বন্ধুরা আমাকে ব্যবহারের জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করে, তবুও তো যোগাযোগ করে!!! সেটাই আমার জন্য অনেক!!!
......ফোন রিসিভ করলনা দেখে ভাবলাম এক বন্ধুর বাসায় গিয়েই দেখা করে আসি!! কলিং বেল চাপতে গিয়েই কলিং বেলের পাশে ছোট্ট অক্ষরে লেখা বন্ধুর নামের পাশে বন্ধুর কর্মক্ষেত্রের উপাধিটাও দেখলাম!! ভালোই লাগল!! সেই সাথে কেমন জানি এক ধরনের হতাশা মনে ভর করল!!! হয়তোবা, আজ আমার নামের পাশে ঐরকম উপাধি শোভা পেতো...!! কিন্তু ভাগ্যের এক নির্মম পরিহাসে আজ আমি অনেক কিছু থেকে বন্চিত !! রাজনীতি নামক জিনিসটা আমার আপন অনেকের কাছ থেকে আমাকে দুরে নিয়ে গেছে। বাবার মার চোখে সবসময় আমাকে নিয়ে এ ধরনের সংশয় আমি দেখতাম!! কিন্তু কি করার ছিল!! তাদের সংশয় দুর করার সামর্থ সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেয়নি!!!
রাজনীতির কারনেই বাবার সাথে আমার বৈরী সম্পর্কের সুএপাত যার কারনে বাবা আমাকে হাত খরচের টাকা দিতেন না। রাজনীতির খরচ নিবারণের জন্য মার কাছে হাত খরচের টাকা চাইতে আমার খুব লজ্জা লাগতো..!!! তবুও চাইতে হত!!! মা হয়তোবা আমার মনের কথা একটু বেশীই বুঝতেন, তাইতো পর পর কয়েকদিন হাত খরচের টাকা না চাইলে আমাকে জোর করেই টাকা হাতে দিয়ে যেতেন যা নিতে লজ্জা লাগতো!! কারন আমি জানতাম কত কষ্টে জমানো টাকা মা আমাকে দিতেন!!তবুও নিতাম!!!
খুব ইচ্ছে করত মা কে কিছু কিনে দিই!! কিন্তু আমার সেই সামর্থ ছিলনা!! তবুও হাত খরচের টাকা থেকে কিছু টাকা বাঁচিয়ে মা-ছোটবোনের জন্য এটা সেটা কিনে আনতাম!!! আমি যখনই এই কাজটা করতাম তখনই মার চোখে অশ্রু টলটল করতে দেখতাম!!! আমি জানতাম আনন্দ অশ্রু বলতে যা বুঝায়, এটাই সেটা!!! তাইতো তাদের মাঝে মাঝে কাঁদাতে চেষ্টা করতাম... !!! মা তো মাঝে মাঝে অশ্রু ভরা চোখে বলেই বসতো "বাবা, দোয়া করি একদিন তুই অনেক বড় হবি, সেই দিনটা দেখার জন্য আল্লাহ যেন আমাকে বাঁচিয়ে রাখে...!!!" (পরক্ষনেই এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলত) " দেশের রাজনীতির যেই অবস্হা তোদের নিয়ে খুব চিন্তা হয়....." মায়ের সেই দীর্ঘশ্বাসের অর্থ আমি তখন বুজতাম না!!! কিন্তু এখন শতভাগ বুঝেও কিছু করার নেই!!! কপালে যা আছে তাই হবে এটা ভেবেই পথ চলতাম কারন ভাগ্য নামেও যে কিছু ব্যাপার-স্যাপার পৃথিবীতে এখনের মত তখনও ছিল......!!!
সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহন করা বলতে যা বুঝায় সেভাবেই জন্ম হয়েছিল আমার… কিন্ত অল্প বয়সেই পিতার কিছু ভূলের কারনে কিছুটা দৈন্যতা চলে আসলেও মোটামুটি বিলাসীতায় কেটেছিল আমার শৈশবের প্রথম অংশ... আর্থিক কষ্টে দিনযাপন কি জিনিস, তা তখনো বোঝার সৌভাগ্য হয়নি আমার!! ভালো ক্রিকেট খেলতাম কিন্তু হঠাত করেই বাবার সাথে বৈরী সম্পর্কের কারনে হাতে নগদ প্রাপ্তি কমে যাওয়াও বন্ধুদের মত কথায় কথায় ভালো ব্যাট বল আমার কখনোই কেনা হয়নি!!! বরং আমার পকেটের সব টাকা দিয়েই তাদের সাথে মাঝে মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করতাম!! তারা হয়তো নাক সিটকাত...কিন্তু তারা একবারের জন্যও ভাবতনা যে, তাদের সাথে তাল মিলানোর জন্য আমি আমার কতগুলো সুখকে বলি দিচ্ছি....!! বন্ধুদের মত রাত জেগে মেয়ে পটানো আমার কখনোই হতোনা!!! মেয়ে পটাতেও তো টাকা এবং সময় লাগে!! কিন্ত সেই সময় বা টাকা আমার তখন ছিলনা....!! তাইতো মাঝে মাঝে বন্ধুদের কাছ থেকে টিটকারী শুনতে হত.... অনেকেই এব্যাপারে আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করতো...আমিও তাদের সুকৌশলে এড়িয়ে যেতাম... কারন ঐসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নিজেকে অন্যের সামনে আরো একবারের জন্য অযোগ্য প্রমাণ করতে ইচ্ছে করতো না.... আর জানতাম উত্তর দিলেও তারা বুঝবেনা......!!! [তবে কঠিন বাস্তবতা হল কখন এবং কেন যে মেয়েরা আমার অজান্তে আমার প্রতি দু্র্বল হয়ে পড়ত আমি নিজেই বুজতাম না….] স্কুল জীবনে ক্লাস মনিটর ছিলাম টানা ৩য় থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত, জাতীয় স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগীতায় ২য় সেরা বক্তা নির্বাচিত হয়েছিলাম, নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ২য় সেরা রান সংগ্রাহক এর পাশাপাশি ৩য় সর্বচ্চো উইকেট শিকারী হয়েছিলাম... ক্রিকেট দলের পাশাপাশি স্কুল ফুটবল দলের অধিনায়কও ছিলাম... স্বভাবতই বন্ধু মহলের পাশাপাশি শিক্ষক মহলেও ভাল জনপ্রিয় ছিলাম... আজ রাজনীতির কারনে শৈশবের সেই সব বন্ধুদের কাছ থেকে আমি বহু দুরে…
যাই হোক যে কারনে এ কথা মনে হওয়া, আমি যাদেরকে এখন আমার কাছের বন্ধু মনে করি তাদের একজনের বিবাহ বার্ষিকী ছিল আজ, সময় মত দাওয়াত ও পেলাম কিন্তু কেন যেন মনে হল সেখানে আন্তরিকতার অভাব ছিল…. যাব কি যাব না এই চিন্তার মাঝে আরেক কাছের বন্ধুর অনুরোধে সেখানে ঠিকই গেলাম…. কিন্ত আমার মনে যে নতুন প্রশ্ন এল তার উওর খুজে না পাওয়া পর্যন্ত আমি যে আর শান্তি পাব না… সকল বন্ধু এবং পরিচিতদের যে কোন রকম বিপদে আমি নিস্বার্থ ভাবে নিজের বিপদ মনে করে ঝাপিয়ে পড়ি, এটা আমার দুর্বলতা নাকি ভালো দিক...?? সে প্রশ্নটার উওর খুজে না পাওয়া পর্যন্ত আমার শান্তি নেই কারন আমার মনে হয় ভীষণ সহজ এবং আবেগী নিতান্তই সহজ-সরল খোলা মনের মানুষ আমি আর তাই কষ্ট পাই খুব সহজে যা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহন করা লোকদেখানো পরোপকারী আমার বন্ধুরা কখনোই বুঝবেনা!!! শুধু বন্ধুরা কেনো....???!!! কেউ বুঝবেনা....!!! আজ আবার মনে হল পুরানো সেই কথা, এক সাথে চলতে গেলে পরিচয় অনেকের সাথে হয় কিন্ত সম্পর্ক সবার সাথে হয়না তেমনি বন্ধু অনেকে হয় কিন্ত বন্ধুত্ব সবার সাথে হয়না । ভাবছি কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কঠিন জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হবার জন্য প্রস্তুতি নিব, যারা আমার জন্য করবে তাদের জন্য জীবন দিয়ে করব আর বাকীদের বেলায় ধরি মাছ না ছুই পানি... জানি এটা শেষ পর্যন্ত করতে আমি পারবনা তথাপি চেষ্টা করে দেখতে দোষ কই...????
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: বিষন্নতায় ভূগবেন না।
মন থেকে সমস্ত জড়তা মুছে ফেলুন।