নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার সাথে সমান

সময় এসেছে জাতিয়তাবাদী শক্তির ঘুরে দাড়াবার...আর নয় হিনমন্যতা-কাপুরুষতা।

রায়হান রাহী

ভাল কাজে সবসময়

রায়হান রাহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ের সাহসী সিদ্ধান্ত

১৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪৪





সময়ের প্রয়োজনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। মানবতাবিরোধীদের অপরাধে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে শাহবাগীদের আস্ফালনের সচিত্র খবর মিডিয়ার একচেটিয়াভাবে প্রচার করায় জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষ, তৌহিদী জনতা, ওলামা-মাশায়েখ চরম ক্ষুব্ধ হন। শাহবাগের নেতৃত্ব দেয়া ব্লগাররা নবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করার পর ফুঁসে ওঠে তৌহিদী জনতা। কিন্তু পুলিশের জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। সরকার শাহবাগীদের নেপথ্যে সমর্থন দেয়া এবং অধিকাংশ মিডিয়ায় তাদের পক্ষে প্রচারণা চালানোয় মাঠে থাকলেও ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ছিল। তৌহিদী জনতাকে ‘জামায়াত-শিবির’ হিসেবে চিহ্নিত, মিডিয়ার ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে বিভক্তির অপচেষ্টা করা হয়। বিরোধীদলীয় নেতা সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে এলে বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের দেয়া ফুল ছুড়ে ফেলে দেয়ায় পাল্টে যায় চিত্র। তৌহিদী জনতা ও জনপ্রত্যাশা ধারণ করে ‘ব্লগারদের বিরুদ্ধে’ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নামেন খালেদা জিয়া। তিনি ধর্ম বিদ্বেষীদের নাস্তিক হিসেবে অভিহিত করে দেশে কোটি কোটি মানুষের মানসিকতা ধারণ করে মাঠে নামেন। অবশ্য ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত ছিলই।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল যুদ্ধাপরাধীদের (মানবতাবিরোধী) অপরাধের বিচার করা। সরকার গঠনের পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ট্রাইব্যুানালও গঠন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের শুরুতেই প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বিচারকে সমর্থন জানিয়ে ট্রাইব্যুনাল স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ করার দাবি করে। বিরোধী দল হিসেবে সরকারের কর্মকা-ের বিরোধিতা করার মতো বিএনপির দাবি অযৌক্তিক ছিল না। তাদের দাবির স্বপক্ষে শুধু দেশেই নয় বিবৃতির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সমর্থন জানিয়েছে। এদিকে বিচারের স্বচ্ছ-অস্বচ্ছতা প্রশ্নের জবাব হাতেনাতে মেলে ট্রাইবুন্যালের বিচারপতির স্কাইপি কেলেঙ্কারিতে। এসময় জামায়াতে ইসলামী ট্রাইবুন্যাল ভেঙে দেয়ার দাবি জানালেও তাতে সমর্থন দেয়নি বিএনপি। বরং রাখার পক্ষেই মত দিয়েছে দলের মুখপাত্রের মাধ্যমে।

বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন থেকে শুরু করে তৃণমূলের এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলয়াস আলী এবং বিএনপি নেতা ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর চৌধুরী আলমসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুম, অপহরণ, খুন হয় ১৫৪ নেতাকর্মী। বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তার ৪০ বছরের বাড়ি থেকেও উচ্ছেদ হতে হয়েছে। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পুরো জিয়া পরিবারকেই মামলা জালে জড়ানো হয়েছে। রেহায় মেলেনি দলের মহাসচিব পর্যন্ত। দফায় দফায় তাকে বিড়ালের ইঁদুর ধরার মতো কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ধুকিয়ে চলছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। তাতে কাঁটা ঘাতে লবনের ছিঁটা পড়ে ট্রইব্যুনালে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায়ের পর থেকে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়। ট্রইব্যুনাল, প্রসিকিউশন, তদন্ত কর্মকর্তাসহ যা যা প্রয়োজন তা সবই সরকারের নিযুক্ত বা গঠিত। এরপর শাহবাগে নামানো হয় লাখো জনতা। নাম দেয়া হয় গণজাগরণ মঞ্চ। শাহবাগ চত্বরের নাম পাল্টে করা হয় প্রজন্ম চত্বর। সে মঞ্চ থেকে তাদের দাবি একটাই ‘ফাঁসি’। মামলার মেরিট বা সাক্ষ-প্রমাণের ধার-ধারের না তারা। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টের ব্যানারে মঞ্চের ভিত রচনা করেন গোটা কয়েকজন ব্লগার। এই ব্লগারদের কয়েকজন দীর্ঘদিন আগে থেকে পবিত্র ধর্ম ইসলাম এবং মহানবী (সা.) ও ধর্মের দিশারীদের নিয়ে জগন্য ও অকথ্যভাষায় কটূক্তি করেন। কটূক্তির একাংশ ইনকিলাবে প্রকাশিত হওয়ার পর তৌহিদী জনতা ক্ষোভে-ক্রোধে ফেটে পড়েন। সকল ধর্ম-গোত্রের সহাবস্থানের দেশে নব্বইভাগ মুসলমান। এখানেও ধর্ম বিদ্বেষীদের অভয়ারণ্য হতে দিতে চায় না বলেই ১১ ফেব্রুয়ারি নাস্তিকদের রুখে দিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় ওলামা-মাশায়েখ। তাতে চলে নির্বিচারে গুলি। পুলিশ পাখির মতো গুলি চালায়। সারা দেশে মারা যায় প্রায় শতাধিক মানুষ। দিশেহারা হয়ে পড়ে পুরো জাতি। কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় তৌহিদী জনতা। কারণ যেহারে গুলি, হামলা, ভাংচুরসহ ভীতিকর পরিস্থিরি সৃষ্টি হয়েছিল তা কোনো স্বাধীন দেশের চিত্র ছিল না। যুদ্ধবিধ্বংসী দেশের মতোই চিত্র ফুটে ওঠে দেশের। এ অবস্থায় পুরো জাতি তাকিয়ে ছিল তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপির চেয়ারপার্সনের দিকে। কারণ দেশের সঙ্কটমুহূর্তে তিনি অতীতে হাল ধরেছেন। জনগণের রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন বেগম খালেদা জিয়া। শতমানুষ গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনাটিকে তিনি গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। গুলি বন্ধ করতে সরকার ও পুলিশের প্রতি হুশিয়ারি দেন।

দূরদর্শিতার পরিচয় দেন ফায়দা লোটা শাহবাগীদের মঞ্চের বিপরীতে বক্তব্য দিয়ে। অবশ্য তার দলের বেশকিছু নেতাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তরুণদের বিপরীকে অবস্থান নিলে ভোটের রাজনীতিতে ধাক্কা লাগতে পারে। তবে তা আমলেই নেননি বিএনপি চেয়ারপার্সন। এরপর কয়েকটি সভাতে তিনি প্রশ্ন রাখেন- দেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৫ কোটি যুবক-তরুণ। গুটিকয়েক ব্লগারই (নাস্তিক) এই ৫ কোটি যুবক-তরুণীর প্রতিনিধি নয়। তারা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় রাস্তায় মঞ্চ করে শুধু সরকারের ব্যর্থতার পাহাড়কেই আড়াল করতে চাচ্ছে না ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত করেছে। এরা নাস্তিক। এরা সত্যিকারের যুবক নয়। যারা দেশপ্রেমিক যুবক তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষায় ব্রত এবং দেশের স্বার্থে আন্দোলন করে। তার এ অবস্থানে হাফ ছেড়ে বাঁচে দেশের কোটি মানুষ। তারা আশান্বিত হন। এতে রাজনীতির হালচালের পুরো চিত্রই পাল্টে যায়। অপরদিকে নির্বিচারে পুলিশি গুলিও থেমে যায়। আর গণহত্যার ব্যাপ্তি ঘটেনি। ধর্মরক্ষায় রাজপথে থাকা তৌহিদী জনতাও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এদিকে হতাশাগ্রস্ত দলের নেতাকর্মীরা নতুন করে রাজনৈতিক প্রাণ ফিরে পান। হুলিয়া নিয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া হলেও রাজপথে ফিরে তারা। এর আগে দলীয় কর্মসূচিও পুরোটা সফল হতো না। এদিকে ‘আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন’-এই তিন লক্ষ্য নিয়ে গড়া ১৮ দলীয় জোট আরো ঐক্যবদ্ধ হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ধর্ম, নবী রাসূল (সা.)-কে নিয়ে যারা কটূক্তি করেছেন তাদের প্রতিরোধ করতে তৌহিদী জনতা সোচ্চার। এরই মধ্যে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ধর্মবিদ্বেষীদের বিপরীতে অবস্থান নেয়ায় আমাদের আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।

বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে বিরোধীদলীয় নেতারা হতাশাগ্রস্তই ছিল। কারণ এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এক নম্বর থেকে শুরু করে সকল স্তরের নেতাই আসামি। নেতারা হুলিয়া নিয়ে ফেরারি থাকার ফলে কর্মীরাও হতাশ ছিল। কিন্তু চেয়ারপার্সন শক্ত অবস্থান নেয়ার ফলে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। অধিকাংশ নেতা কারাবন্দি থাকলেও আন্দোলনে তেমন বাধা পড়েনি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বিরোধীদলীয় নেতার অবস্থান প্রসঙ্গে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক নিয়মে নির্বাচন হবে এটাই স্বাভাবিক। সংকটকালে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে আলোচনা হবে সঙ্কটের সমাধান হবে। কিন্তু বাস্তবে তা দেখছি না। বিএনপি চেয়ারপার্সন যেহেতু বিরোধী দলের চলমান সঙ্কটে তার অবস্থান সঠিক বলেই মনে করছি। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে বিরোধীদলীয় নেতা সময়ের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে তিনি শুধু দেশেই নয়, ভিনদেশেও সমর্থন পাবেন। ইতোমধ্যে তার প্রতি সমর্থন দিয়েছে কয়েকটি দেশও।



মূল লেখা- আফজাল বারী

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৩:০১

শিপন মোল্লা বলেছেন: দেশের চলমান প্রেক্ষাপটে বিরোধীদলীয় নেতা সময়ের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে তিনি শুধু দেশেই নয়, ভিনদেশেও সমর্থন পাবেন। ইতোমধ্যে তার প্রতি সমর্থন দিয়েছে কয়েকটি দেশও।

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:২৫

এস এইচ খান বলেছেন: ++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.