নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...............

শ্রাবণধারা

" আমাদের মতো প্রতিভাহীন লোক ঘরে বসিয়া নানারূপ কল্পনা করে, অবশেষে কার্যক্ষেত্রে নামিয়া ঘাড়ে লাঙল বহিয়া পশ্চাৎ হইতে ল্যাজমলা খাইয়া নতশিরে সহিষ্ণুভাবে প্রাত্যহিক মাটি-ভাঙার কাজ করিয়া সন্ধ্যাবেলায় এক-পেট জাবনা খাইতে পাইলেই সন্তুষ্ট থাকে......."

শ্রাবণধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজাকার-আলবদর চাই না, কিন্তু হাসিনাকেও চাই না!

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৫



হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের সবচেয়ে অপকৃষ্ট দৃষ্টান্ত ছিল হাসিনার মুখের ভাষা। পৃথিবীতে আর কোনো সরকার প্রধান তার মতো ইতর ভাষায় জনগণকে হুমকি-ধামকি দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। মনে পড়ে তার সেই উক্তি: "তাহলে বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ করে দেই, পানি দেওয়া বন্ধ করে দেই, সার বন্ধ করে দেই। সব বন্ধ করে বসাই রাখি। আমার রিজার্ভ ভাল থাকবে।" লক্ষ্য করুন "আমার রিজার্ভ।' দেশের সরকার প্রধান থেকে তিনি দেশের মালকিন হয়ে গিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ, পানি, সার - সবই তার; জনগণ তার প্রজা মাত্র। রিজার্ভের ডলারও তার। আর তার ক্ষমতাকে কেউই চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। চ্যালেঞ্জ করা দূরের কথা, কোনো প্রকার সমালোচনা করলেই র‌্যাব উঠিয়ে এনে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেবে।

পদ্মাসেতু উদ্বোধনের বক্তৃতায় খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন: "মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে, সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত।" এখানে তিনি ক্ষমতার অধিকারি বিশেষ মাস্তান। তিনি যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন। তার ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য, কটু কথার জন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।

গণতন্ত্রের সব কাঠামো তিনি ধ্বংস করেছেন। নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা, গণমাধ্যম এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- সব জায়গাতেই তার স্বেচ্ছাচারিতা ও দুঃশাসন কাজ করেছে। ভারতের সঙ্গে আঁতাত করে তিনি ভেবেছিলেন ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করে ফেলেছেন। ভোটের আগের রাতে ব্যালট ভর্তি করা, কেন্দ্র দখল এবং হাতুড়ি-হেলমেট বাহিনীর মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ - এসবই জনগণের প্রতি হাসিনার তীব্র তাচ্ছিল্যের প্রকাশ মাত্র।

হাসিনা শাসনের সবচেয়ে অন্ধকার দিক ছিল গুম, খুন এবং পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন। বিরোধী কর্মী, সমালোচক বা ভিন্নমতের মানুষ নিখোঁজ হয়ে যেত। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মানুষ আর ফিরে আসত না। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুকে নিয়মিতভাবে "হৃদরোগে মৃত্যু" বলে ঢেকে ফেলা হতো। রাষ্ট্র-সমর্থিত এই দমননীতি শুধু ভয় সৃষ্টি করেনি, বরং জনগণের নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের ধারণাকেও ধ্বংস করেছে।

অর্থনীতির নামে হাসিনা গোষ্ঠী পুরো জাতিকে ধোকা দিয়েছিল বাংলাদেশে এক ধরনের দস্যুতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। কয়েকজন লুটেরা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছিল। তাদের দোসর, কর্মচারী ও চাকর-বাকরেরা স্বল্প মেয়াদে কিছু টাকা পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এই উন্নয়ন টেকসই হয়নি, এবং সেটা ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় পৌঁছেছিল। ব্যাংকগুলো ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।

হাসিনার পতন আমাদের কাছে মুক্তির সম্ভাবনা এনেছিল ঠিকই, কিন্তু পরবর্তী ঘটনাবলি দেখিয়েছে সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের বদলে দেশ নতুন ধরনের অস্থিরতার দিকে ধাবিত হয়েছে। মানুষ ভেবেছিল রাজনৈতিক পরিবর্তন সামাজিক স্থিতি, নিরাপত্তা এবং সুশাসন নিয়ে আসবে, কিন্তু সেই আশা অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে।

এতদিনে স্পষ্ট হয়েছে যে ক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণ করেছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি - রাজাকার, আলবদর ও জঙ্গি-মৌলবাদীরা। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, সরকারের উচ্চ পদগুলোতে তাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটেছে। প্রকাশ্যে আবির্ভূত হয়েছে কুখ্যাত রাজাকারের সন্তানেরা, যারা মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত এবং রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বক্তব্য দিয়ে জনমানসকে বিভক্ত করেছে।

তাই বলতেই হচ্ছে - রাজাকার-আলবদর চাই না, কিন্তু হাসিনাকেও চাই না!

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জামাতের আমীর আদাজল খেয়ে মেয়েদের পিছনে লেগেছেন । মেয়েদের চাকুরি উনার ভালো লাগছে না । নিজের ওয়াইফ চিকিৎসক এবং ২০০১ সালের সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ছিলেন । মৌলবাদি যতই এডুকেটেড হোক দিন শেষে মৌলবাদিই থেকে যায় । :-B

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: এটার কারণ আপনার কি বলে মনে হয়? এই বুইড়া গাধাটাকে সামনে রেখে পিছনে জামাত আর কাউকে তৈরি করছে বলে আমার মনে হয়। মনে রাখবেন, জামাতের এবিসিডি টিমের মত, এবিসিডি প্রতারনা স্কৃপ্টও রেডি আছে।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: আলজাজিরার প্রতিবেদনঃ নতুন শাসনে পুরোনো পদ্ধতিতে খুন বিচারবহির্ভূত হত্যা অব্যাহত, ১৪ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৪০ জন

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: এটা অব্যাহত না থাকার কারন ঘটেনি। ড. ইউনূস বিদেশি প্রভু নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে মনে হয়।

৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনাকে কেউ চায় না নিজ দলের লোকজন ছাড়া ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫০

শ্রাবণধারা বলেছেন: হ্যা, পুরাতন সংস্কার মনের মধ্যে ময়লার যে স্তর তৈরি করে, সেটাকে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে পরিষ্কার করা কঠিন কাজ বটে।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৩৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একমাত্র নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।
আওয়ামী লীগ কখনো নির্বাচন বাদে বিদেশী শক্তির সাহায্যে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে সরকার দখল করেনি।
একমাত্র আওয়ামীলীগই নির্বাচন ক‌রে সাম‌নের দরজা দি‌য়ে বারবার ক্ষমতায় এসে‌ছে।
আওয়ামী লীগ কখনো সেনাতন্ত্র বা ষড়যন্ত্র করে বা খুনখারাপি করে সরকার দখল করেনি। ইতিহাসে নেই।
আওয়ামী লীগ কখনো পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। ইতিহাসে বাংলাদেশ পাকিস্তান কোন সেনাতন্ত্র কখনোই আওয়ামীলীগের পক্ষে ছিল না।
ব্রীটিষরা চলে যাওয়ার পর ইতিহাসে এই অঞ্চলে একমাত্র শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর কারি সরকারি দল আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ ও পাক-বাংলার ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ এরপর ৫ বছর পর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল ২০০১ এ।
রাজনৈতিক দল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে,এবং আজকের দিন এপর্যন্ত আওয়ামীলীগই মুক্তিযুদ্ধকে বুকে ধারন করে। এটা ৫৫ বছর পর আবারও প্রমানিত।

রাজনীতিতে আওয়ামীলীগ ফেরেস্তা না,তাদেরও ভুল ত্রুটি আছে,
কিন্তুু স্বাধীনতার পর এই ৫৫ বছরের ইতিহসে বাংলাদেশে এ জাবৎ যা কিছু অর্জন হয়েছিল এটা একমাত্র, হ্যা একমাত্র আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫

বিষন্ন পথিক বলেছেন: যে কেউ চাকরি করলে যত ছোট আর বড় চাকরি করুক, সাধারণত বলে "আমার কোম্পানি " এতে কি সে কোম্পানির মালিক হয়ে যায়? এখনকার শাসন নিয়ে কিছু বলুন, নাকি দেশে এসে শান্তিনিকেতন খুঁজছেন?

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬

নতুন বলেছেন: হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একমাত্র নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।


হাকা ভাই আয়ামীলীগই নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই নির্বাচন করে ক্ষমতায় ছিলো। B-)) ( এটা একটা জোকস, আয়ামীলীগের অল্প কিছু অন্ধ ভক্ত ছাড়া বাকী সবাই মজা পাবে)

৭| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৬

আমি নই বলেছেন: বার বার নতুন মোড়কে পুরাতন পন্য দেখে হতাশ হয়ে যাচ্ছি। বিএনপির নেতাদের কথা লীগের নেতাদের মতই মনে হচ্ছে আর জামাত ক্ষমতায় যেতে পারবেনা।

@হাসান কালবৈশাখী, আপনি অন্ধ মুরিদ, যে কোনো রাজনৈতিক দলের অন্ধ মুরিদরা দেশের শত্রু, কারন তারা দলের অপকর্ম খুজে পায় না। আপনার কাছে একটা প্রশ্ন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনিতির মুল দুই শক্তি পোশাক রপ্তানি (এরশাদ) আর মানব সম্পদ রপ্তানি (জিয়া) এই দুইটার একটাও আওয়ামীলীগের হাত ধরে হয় নাই। আজকেই এই দুইটা খাত বন্ধ হরে কালকেই ভিক্ষা শুরু করতে হবে, এর চাইতেও বড় অর্জন আর কি আছে??

@বিষন্ন পথিক, আমার কোম্পানি বললেও তার আচরনে কখনই প্রকাশ পায় না সে মালিক।

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



ফ্যাসিবাদ আর নয়।

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১০

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:



আপনি ২০ কোটীর মাঝে ১ জন, যিনি মিলিটারীর ( জিয়া, এরশাদ, বেগম জিয়া ও ইউনুসের ) সাগরেদ, থাকেন কানাডায়, কোনদিন চাকুরীও করেননি। দেখা যাক, আপনার চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টি কিভাবে কানাডিয়ান সরকার পুরণ করে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.