![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
গত যায় কতদিন , আসে কতদিন
তবু ছাড়তে পারিনা এরই মায়া ,
অলিগলি পথে যায় চলে কতদিন
তবু আমার কাছে প্রিয়, এই ঢাকা চিরদিন ।
ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করে রাখতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে রাজউক। এই শহরে জনসংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে ৫০ লাখই বস্তিবাসী !!!!! প্রতিদিন এই শহরে আসে ২৩০০ জন। আয়তন ৫৯০ বর্গমাইল। মোট রাস্তা প্রায় ২২০০ কিলোমিটার। ফুটপাত ৪০০ কিলোমিটার। রিক্সা চলে ছয় লাখ। প্রতিদিন ২০০ যান নিবন্ধন হয় এর মধ্যে ১০০ টিই কার! নয় শতাংশ যাত্রী বহন করে এই কার, আর জায়গা দখল করে রাখে ৩৪ শতাংশ ! যানজটের ক্ষতি প্রতিদিন ক্ষতি হয় ৮৬ লাখ কর্মঘন্টা বছরে ক্ষতি সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা ! ঢাকা শহর দ্রুতগতিতে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহরে পরিণত হতে যাচ্ছে। ভূমিকম্প এখানে মারাত্মকভাবে আঘাত করে, তাহলে কী যে হবে সে কথা ভাবলেই শিউরে উঠতে হয়। ঢাকা একটি মেগাসিটি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান শহরও বটে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এই শহর বাংলাদেশের বৃহত্তম শহর। ঢাকা শহরটি মসজিদ শহর নামেও পরিচিত । ঢাকা বিশ্বের রিকশা রাজধানী নামেও পরিচিত। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে। খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দীর শেষের দিকে মুসলমানেরা ঢাকা অধিকার করে। বায়তুল মুকাররম এদেশের জাতীয় মসজিদ, মক্কার কাবা শরিফের নকশায় অনুপ্রাণিত হয়ে এই মসজিদের ডিজাইন করা হয়েছে। হকার, ছোটো দোকান, রিকশা, রাস্তার ধারের দোকান শহরের মোট জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ। শুধুমাত্র রিকশা চালকের সংখ্যাই ৪০০০০০ এর বেশি।
রাজউক সূত্র জানায়, ঢাকা শহরে আবাসন সমস্যা দূর করার জন্য উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পের ১৮ নম্বর সেক্টরে ২১৪ দশমিক ৪৪ একর জমিতে মোট ২০ হাজার ১৬০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। আমাদের প্রিয় ঢাকা শহর। কোটি মানুষের শহর। লাখ খানেক যানবাহন আর হাজারো অলি-গলির শহর। লোড শেডিং, ট্রাফিক জ্যাম, পলিউশনের শহর। পৃথিবীর সেরা শহরগুলোর অনেক সুযোগ-সুবিধার কিছুই নেই এখানে। তারপরেও বলবো, ঢাকা বিশ্বের অন্যতম জীবন্ত শহর। আমাদের না ঘুমানো শহর। প্রাণ-মুখরিত মানুষগুলোর হৈ-চৈ আর ভালবাসার শহর। উৎসবের শহর। ঢাকা শহরের মূল আকর্ষণ ছিল নদী, পুকুর, খাল ও জলাশয়। আমাদের শহরে পাহাড় নেই। এছাড়া যে কোনো শহর মূল তিনটি অপরিহার্য বস্তু বা উপাদান নিয়ে গঠিত হয়। মাটি, বৃক্ষরাজি এবং জলাশয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে মুঘল শাসকদের অধীনে এই শহর জাহাঙ্গীর নগর নামে পরিচিত ছিল। আধুনিক ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসনে। এই সময় কলকাতার পরেই ঢাকা বাংলা প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে ঢাকা স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা, সামরিক দমন, যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তাণ্ডবলীলার মতো একাধিক অস্থির ঘটনার সাক্ষী থাকে এই শহর। সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ শহরে 'ঢাক' বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই শহরের নাম ঢাকা হয়ে যায়। টেক্সটাইল শিল্পে প্রায় ৮০০,০০০ এরও বেশি মানুষ কাজ করছেন। তারপরও এখানে বেকারত্বের হার প্রায় ১৯%। ঢাকার বার্ষিক মাথাপিছু আয় ১৩৫০ মার্কিন ডলার এবং এখানে প্রায় ৩৪% লোক poverty lineদারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে।
আমাদের ঢাকা শহর রক্তের উচ্চচাপ ব্যাধিগ্রস্ত একজন অসহায় রোগীর করুণ অবস্থায় যে দশা হয়, তার মধ্যে পতিত হয়েছে। সেই প্রায় চারশ’ বছরের পুরনো জনপদ আজ অপরিকল্পিতভাবে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মতো ক্রমাগত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হচ্ছে তো হচ্ছেই। প্রবল জনসংখ্যার চাপ এবং প্রতিটি বিষয়ে অনিয়মই একটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে খাল-বিল ছিল সব ভরাট করে বহুতলবিশিষ্ট বাণিজ্যিক আর আবাসিক ভবন তৈরি হচ্ছে এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষ প্রদত্ত নির্দিষ্ট আইন মান্য করার কোনো সদিচ্ছা নেই। যে যার মতো করে চলেছে। কর্তৃপক্ষের প্রচ্ছন্ন দুর্নীতির মাধমে এসব বাস্তবায়িত হয় এবং এখনও হয়ে আসছে। আমাদের দেশে আইন মান্য করার মানসিকতা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ঢাকা শহরের যে অপরূপ সৌন্দর্য ছিল তাকে আমরা হত্যা করেছি। বর্তমানে এই শহর প্রচুর বিদেশী বিনিয়োগ টানতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। সারা দেশ থেকে প্রচুর মানুষ ঢাকায় আসেন জীবন ও জীবিকার সন্ধানে। এই কারণে ঢাকাও হয়ে উঠেছে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান নগরী। ঢাকা শহরটি মোট ১৩০টি ওয়ার্ড ও ৭২৫টি মহল্লায় বিভক্ত। প্রতি বছর ৯৭ লক্ষ টন কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। ঢাকা শহরের পানির চাহিদা পূরণের জন্য ঢাকা ওয়াসা, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বা বিদ্যুৎ সরবারহ করার জন্য ডেসা এবং ডেসকো, গ্যাস সরবারহ করার জন্য তিতাস গ্যাস প্রভৃতি সেবামূলক সংস্থা নিয়োজিত রয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান বানিজ্যিক এলাকাগুলো হলো মতিঝিল, চকবাজার, নবাবপুর, নিউ মার্কেট, ফার্মগেট ইত্যাদি এবং প্রধান প্রধান শিল্প এলাকা গুলো হল তেজগাঁও, হাজারীবাগ ও লালবাগ। ঢাকায় মোট দুটি ইপিজেড-এ মোট ৪১৩টি শিল্প স্থাপনা রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ কর্মীই নারী।
সাধারণত সামনের রাস্তা বিশ ফুট চওড়া হলে সীমানা থেকে পাঁচ ফুট ছেড়ে ভবন তৈরি করতে হয়। তখন ভবনের উচ্চতা হবে পঞ্চাশ ফুট অর্থাত্ পাঁচতলা। এখন দেখা যায়, অনেকেই এই আইন মানেন না। তারা একেবারে জমির সীমানা পর্যন্ত বারান্দসহ ভবন নিয়ে আসেন। ঢাকা শহরের অলিগলিতে অবস্থিত পনের-বিশ ফুট চওড়া রাস্তার পাশেই বহুতল দশ-বারো তলা উচ্চতাবিশিষ্ট ভবন গড়ে উঠছে। ঢাকা শহরকে ঘিরে যে ৪৮টি খাল ও ৬টি নদী বিদ্যমান ছিল, এদের কোনোটার কিছু আছে, কোনোটার কিছু নেই। সেগুলো পুনর্খনন করে নাব্য করা দরকার। ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটের সংখ্যা আরও প্রচুর পরিমাণে বাড়াতে হবে, বুড়িগঙ্গার দুই পাড় জাতীয় উদ্যানে পরিণত করতে হবে। মোঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো। প্রতি ৫ বছর পরপর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে একজন মেয়র নির্বাচন করা হয়, যিনি প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী প্রধান হিসাবে কাজ করেন। বর্তমানে সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার মেয়র হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত আছেন । রিক্সা ঢাকা শহরের রাস্তার যানজটের অন্যতম কারণ এবং কিছু বড় বড় রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই শহরেই নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান গ্রামীন ব্যাংক,ব্র্যাক এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ব্যাপকভাবে শহরের উন্নয়ন চলছে, নতুন নতুন বহুতল ভবন তৈরী হচ্ছে ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শহরের পরিবর্তন হয়েছে। ঢাকায় বসবাসকারীদের কিছু অংশের পূর্বপুরুষরা ভারতীয়। তারা অনেকেই ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশ বিভাগের সময় ভারত থেকে এসেছিলেন। ঢাকায় বসবাসকারী প্রায় সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলেন, পুরনো ঢাকা'র লোকেরা উর্দুতেও কথা বলে থাকেন। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের অনেকেই ইংরেজী ও হিন্দী ভাষা ভাষা ব্যবহার করে। ঢাকা নগরী অনেকগুলো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল আছে যারা ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।
সবাই চায় মাটির কাছাকাছি খোলা জায়গায় আলো-হাওয়ায় জীবন কাটাতে। বিশেষ করে মা-বাবার সন্তান পালনে বহুতল দালান খুবই অনুপযোগী; যেখানে শিশুদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফার্মের মুরগির মতো তাদের জীবন-মনের অবচেতনায় কৃত্রিম আবহাওয়ায় অমানবিক-অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি করে। ঢাকা নগরীকে বর্তমানে বর্তমানে দুইভাগে বিভক্ত করা হয়েছে - ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর। ঢাকা দক্ষিণই মূলতঃ মূল নগরী। ঢাকা উত্তর ঢাকার নবীন বর্ধিত উপশহরগুলো নিয়ে গঠিত। ঢাকায় মোট ২৪ টি থানা আছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা শহর ২৫টি সংসদীয় এলাকায় ভিভক্ত। এখানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল হল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। রমনায় সচিবালয় অবস্থিত এবং এখানেই সরকারের প্রায় সকল মন্ত্রণালয় রয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এবং ঢাকা হাই কোর্ট এই শহরে অবস্থিত। ঢাকা রাজধানী হওয়ায় সারা বাংলাদেশ থেকেই এখানে লোকজন উন্নত জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযকে মূল ধরে তার পার্শ্ববর্তী এলাকা হচ্ছে ঢাকা শহরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র । বেইলি রোডকে নাটকপাড়া বলা হয় সেখানকার নাট্যমঞ্চগুলোর জন্য। এছাড়াও নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমী । কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে নাট্যোৎসব ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলার আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম সৃষ্টি হয়েছিলো বৃটিশ শাসনামলে। বুদ্ধদেব বসুর মতো ছাত্র এবং বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের মতো শিক্ষক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকে উচ্চ শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন। এক সময় প্রতি বছর ঢাকা স্টেডিয়ামে আগা খান গোল্ড কাপ-এর মতো আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট সারাদেশের মানুষকে উদ্দীপিত করে রাখতো। আামদের ঢাকা কিন্তু কলকাতার চেয়েও প্রাচীন নগরী। অথচ এখন কলকাতা কতটা এগিয়ে। তার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সে এমনভাবে তুলে ধরেছে যে পর্যটকদের কাছে তার গুরুত্ব বেড়ে গেছে অনেকখানি। আর আমাদের যতটুকু আছে সেসব সমেত আমরা জনারণ্যে হারিয়ে যাচ্ছি, ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছি, ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছি। নদীর ধারে ফরাসিরাও একটি কুঠি করেছিল। সেটি ছিল আহসান মঞ্জিলের পুকুর পাড়ে। ফরিদপুরের জমিদারের কাছ থেকে তারা একটি বাড়ি কিনে নিয়েছিল। সেটিই এখনকার আহসান মঞ্জিল। ফরাসিরা একটি বাজার বা গঞ্জ কিনে সেটিকে ফরাশগঞ্জ নাম দিয়েছিল। এটা তখন ছিল ঢাকা শহরের পূর্ব সীমানা। পলাশী যুদ্ধের পর ফরাসিদের কুঠি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বর্তমান পুরনো ঢাকার অনেক স্থান-নাম হিন্দু নামে দীর্ঘকাল ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। অনুমান করা হয় এখানে প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু বসতি এবং তাদের বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান উর্দু ভাষায় লেখা তাঁর ‘ঢাকা পঁচাশ বরস পহেলে’ গ্রন্থে বলেছেন বিক্রমপুর যখন সেন রাজাদের রাজধানী তখন ঢাকার দক্ষিণাংশে হিন্দু বসতি গড়ে উঠেছিল। ৮০০ বছরের গৌরব নিয়ে ঢাকা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহরের মর্যাদা পেতে পারে।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:০২
হিমালয়ের মাস্তান বলেছেন: ঢাকাকে নিয়ে লিখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।ঢাকার থানার সংখ্যা ২৪ টি নয় প্রায় ৫০ টি।