নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সহজ সরল সত্য কথা হলো- বিলাসিতা বন্ধ করুন। বন্ধ করতে হবে। আপনি হয়তো বলবেন- আমার টাকা আছে- আমি বিলাসিতা করব'ই। যদি আপনার মধ্যে সামান্যতম মনুষ্যত্ববোধ থাকে তাহলে বিলাসি বন্ধ করুন। দরিদ্র দেশে বিলাসিতা মানায় না। এই দরিদ্র দেশে যারা বিলাসিতা করেন- তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আপনার পাশের লোক না খেয়ে আছে- আর আপনি পেট ভরে হাজীর বিরিয়ানী খাচ্ছেন। লজ্জা করে না আপনার। আপনি দামী ব্র্যান্ডের জামা কাপড় পড়ছেন- আর আপনার আসে পাশে কত লোক খালি গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে- তা দেখে আপনার লজ্জা লাগে না?
এই দেশের দরিদ্র মানূষ গুলো শীতে কষ্ট করে। আর আপনি সপরিবারে বেড়াতে যান সিঙ্গাপুর, লন্ডন অথবা আমেরিকা। যদিও আগে বেশ কয়েকবার আপনার এই দেশ গুলো বেড়ানো হয়ে গেছে। ধরুন আপনি এবার ট্যুরে গিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করলেন। যদি আপনি বেড়াতে না যেতেন- তাহলে এই দরিদ্র দেশের কম পক্ষে ২ লক্ষ মানূষকে শীতের কাপড় দিয়ে সাহায্য করতে পারতেন। আমি যখন শীতের জামা পড়ে কোথাও যাই- আর দেখি দরিদ্র মানূষ গুলো খালি গায়- তখন আমার খুব কষ্ট হয়। লজ্জা হয়। গত পাঁচ বছর ধরে আমি শীতের জামা পড়ি না। আমি ঠিক করেছি যেদিন আমি ১০০ দরিদ্র লোক শীতের জামা দিতে পারব- সেদিন আমি শীতের জামা পড়বো। আমি দরিদ্র মানূষ। ছোট চাকরি করি। বছরের পর বছর যায়, কিন্তু সাহায্য আর করতে পারি না। ছোট একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অল্প কিছু টাকা পাই- সেই টাকা দিয়ে খুব হিসাব করে মাস পার করি। বিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাঁচানোর জন্য হাঁটি। খুব ক্ষুধা পেলেও ফাস্ট ফুডের দোকানে গিয়ে বার্গার আর কোক কিনে খেতে পারি না। যখন কোনো ফাস্টফুডের দোকানের সামনে দিয়ে যাই- দেখি কত লোক জন বার্গার খাচ্ছে, স্যান্ডউইচ খাচ্ছে। আর বাইরে থেকে ভিক্ষুকদের সাথে আমিও হা করে তাদের খাওয়া দেখি। পকেটে আমার টাকা আছে- আমিও ইচ্ছা করলে একটা বার্গার আর কোক কিনে খেতে পারি কিন্তু এই ফালতু খরচ করলে আমার হবে না। বউ ফোন দিয়েছে- আসার সময় আলু, আটা আর ডিম নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আমার পকেটে পর্যাপ্ত টাকা থাকলেও আমি তাদের মতো খেতে পারতাম না। আমি আরাম করে খাবো- আর দোকানে কাঁচের দেয়ালের বাইরে একদল ক্ষুধার্থ মানুষ হা করে আমার খাওয়া দেখবে। আমি খাবো, তাদের খাওয়াতে পারব না!! এই রকম খাবার খেয়ে আমি শান্তি পাবো না। আমার তো ইচ্ছা করে- দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরী সবাইকে নিয়ে- দোকানে যাই। তাদের সবাইকে তাদের পছন্দের খাবার গুলো খাওয়াই। স্বাদ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। দিনের পর দিন এই সাধ্য না থাকার কারণে- খুব দুঃখ কষ্ট লাগে।
আমাদের পাশের বাসার মালিকের মেয়ের বিয়ে হলো। তারা দুই কোটি টাকা খরচ করল। আমি কথার কথা বলছি না- আসলেই দুই কোটি টাকা। জামাই বাবুকে গাড়ি কিনে দিয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে। মেয়ে আর মেয়ের জামাই নামে একটা ছয় তলা বাড়ি লিখে দিয়েছে। আপনারা আবার ভাববেন না- আমি হিংসা করছি। আমি একটুও হিংসা করছি না। আমার দুঃখ- এটা দরিদ্র দেশ, দরিদ্র দেশে এত বিলাসিতা কেন? বিলাসিতা না করলে কি হয়? এখনও সারা বাংলাদেশে অজস্র ছেলে মেয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যায়। স্কুলের অবস্থা নড়বড়ে। এই সব ধনী লোকেরা কি পারে না- একটা কালভাট ব্রীজ করে দিতে? কত দরিদ্র পরিবার তাদের সন্তানের লেখা পড়ার খরচ চালাতে পারে- এই সব ধনী লোকেরা কি পারে না- তাদের লেখা পড়ার দায়িত্ব নিতে? ধনী লোক গুলোর স্ত্রীরা পাগলের মতো টাকা খরচ করে। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি! বিশ্বাস করুন- পার্লারে গিয়ে এক ঘন্টায় ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ করে। আমি নিজে পার্লার নিয়ে সার্ভে করেছি। এই তথ্য ১০০% সত্য। আর তাদের ছেলেরা বারে গিয়ে বন্ধু বান্ধব নিয়ে দেড় দুই লাখ টাকা নারী সঙ্গ আর মদ খেয়ে খরচ করে।
যেহেতু আমি একজন ফোটোগ্রাফার তাই ছবি তোলার কাজে কোটিপতিদের অনেক অনুষ্ঠানে যাই। যদিও ইদানিং আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছবি তোলা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি। আমার নিজের চোখে দেখা কয়েকটা অনুষ্ঠানের কথা বলি- ফুল দিয়ে স্ট্রেজ তৈরি করেছে- খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। তিন চার রকমের ফুল সুতা দিয়ে বেঁধে দিয়েছে, সাথে আছে লাল নীল পাতলা মশারীর কাপড়। চারপাশ ডেকোরেশন করেছে- খরচ হয়েছে- ১ লক্ষ ষাট হাজার টাকা। নানান রকম বেলুন দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে। খাবারের আয়োজন বিশাল। কি নেই? গরু মুরগী এবং খাসী। সাথে আরও যা যা থাকার কথা তার চেয়ে বেশি'ই আছে। কিছু চেংড়া ছেলে বিকট শব্দে গান-বাজনা করছে। যা অবশ্যই শ্রুতি মধুর নয়। এই রকম আজাইরা খরচ লোকজন করে থাকে। অবশ্যই এই সব অসৎ পথের টাকা। আমি সারা মাস হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে টাকা পাই- টিপে টিপে প্রতিটা টাকা খরচ করতে হয়। মাসের শেষের দিকে হাত পাততে হয়। মানুষের কাছে টাকা চাওয়া খুব'ই লজ্জার বিষয়। খুব'ই অপমানের।
কিছু মানুষের নানান রকম বিলাসিতা আমার সত্যিই খারাপ লাগে। খুব কষ্ট হয়। আমি তো পাঁচ টা টাকা বাচানোর জন্য বাসে উঠি না। হাঁটি। দুপুরবেলা ক্ষুধা লাগলে- ভালো একটা হোটেলে খাই না। রাস্তার পাশের দোকান থেকে ২৫/৩০ টাকার মধ্যে লাঞ্চ করে নিই। কিন্তু আমি ইচ্ছা করলে ১৫০ টাকা খরচ করতে পারতাম। দেশটা দরিদ্র, আর তুমি বিলাসিতা করছো! দরিদ্র লোকদের জন্য তুমি কিছু করছো না! মানুষ হিসেবে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করছো না। কোরআন হাদীসে আছে- বিয়ে বা পারিবারিক অনুষ্ঠান গুলোতে যেন খরচ কম করা হয়। হাদীসে স্পষ্ট বলা হয়েছে- খেজুর খাইয়ে বিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করা হোক। আমি বলতে চাই- দেখানোর কিছু নেই। দেশকে ভালোবাসুন। দেশের মানূষের জন্য কিছু করুন। আমি জানি, আপনার দামী গাড়ির একটা চাকার দাম আর আমার সারা বছরের বেতনের চেয়ে বেশি। পবিতে কোরআনে লেখা আছে- যার যত সম্পদ, আখেরাতে তার তত হিসাব দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমি লেটার মার্ক নিয়ে পাশ করবো।
মানুষের মানসিকতা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে- অমুক তার ছেলে/মেয়ের বিয়েতে ৫ লাখ খরচ করেছে, আমি দশ লাখ খরচ করবো। অমুক মসজিদে দুই লাখ টাকা দান করেছে, আমি ৫ লাখ টাকা দান করবো। এ প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পড়ল- বাংলাদেশের বেশির ভাগ মসজিদ কালো টাকায় হয়েছে। অসৎ টাকায় হয়েছে। শুধু মসজিদ না, স্কুল এবং মাদ্রাসা। রাজনীতিবিদিদের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু লোক কয়েক বছরের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। কিছু কিছু জিনিস লুকিয়ে রাখা যায় না। যেমন টাকা। তখন তারা মহৎ সাজার জন্য স্কুল করে, মাদ্রাসা করে হাসপাতাল করে। এই সমাজের বেশির ভাগ দুর্নীতিবাজরা ধার্মিক হয়। ধনী লোক গুলো মৃত্যুর কথা একদম ভুলে যায়।
দুর্নীতি কমিশনের লোকেরা কি দুর্নীতি করে না? করে। অবশ্যই করে। যে যত বড় দায়িত্বশীল পদে থাকে, সে তত বড় দুর্নীতিবাজ। আমি দূঃখিত, লেখার বিষয় বস্তু এলোমেলো হয়ে গেছে। আসলে এক বিষয় নিয়ে লিখতে গেলে আরও অনেক বিষয় অবধারিত ভাবে চলে আসে। যদিও সব কিছুই সাথে সব কিছুর সামঞ্জস্য আছে। যাই হোক, এই লেখা আর টেনে লম্বা করবো না। পরে আবার এই বিষয় নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবো।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
"বিশ টাকা রিকশা ভাড়া বাঁচানোর জন্য হাঁটি। খুব ক্ষুধা পেলেও ফাস্ট ফুডের দোকানে গিয়ে বার্গার আর কোক কিনে খেতে পারি না। "
-আপনি নিজের অজান্তেই ভালো স্বাস্হের অধিকারী হয়ে যাচ্ছেন।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার অসুখ বিসুখ হয় না। সব মিলিয়ে ভালোই আছি।
৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩২
শায়মা বলেছেন: চাঁদগাজীভাইয়ার সাথে একমত!
ভাইয়া সত্যি অন্যের কথা ভাবতে গিয়ে তুমি নিজেরও ভালো করছো! অনেক অনেক শুভকামনা!
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: ছোট বোন ভালো থাকো। সুখে থাকো। অনেক শুভ কামনা।
৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সবাই যদি একটু বিলাসিতা কমাতো সমাজ আরো ভালো হত...
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই ব্যাপারটাই কেউ বুঝতে চায় না।
৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪২
আহা রুবন বলেছেন: আমি সারা মাস হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যে টাকা পাই- টিপে টিপে প্রতিটা টাকা খরচ করতে হয়। এ জন্যই আপনি সুখী মানুষ। খুব ভাল একটি পোস্ট। শুভ কামনা জানবেন।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: আসলেই প্রচুর টাকা নেই বলেই আমি ভালো আছি।
৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
কানিজ রিনা বলেছেন: আপনার মত গরীব মানুষের ভাবনা যদি কটি
পতিরা করত তাহলে দেশে কেউ খায় কেউ
তাকিয়ে থাকতনা। উৎকৃষ্ট লোকের টাকা
হলেও সে আস্তে আস্তে নিকৃষ্ট হয়। ধন্যবাদ
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
৭| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫১
মাজুবিবি বলেছেন: আপনার পোষ্টটা আদ্য-পান্ত খুব মনযোগ দিয়ে পড়লাম। এরকম মনোভাব সবারই থাকা উচিৎ। আমিও আপনার মত অনেকটা চিন্তা করি। গত ঈদে সাহেব ১২৫০০ টাকা দিয়ে একটা শাড়ী কিনে আনে। পরে দাম শুনে বললাম আমি শাড়ী বেশী পরি না, তাছাড়া এতো টাকা দিয়ে শাড়ী! ফেরৎ দিয়ে আস আমি ড্রেস নিব। পরে ঔ দোকান থেকে ৪৫০০ টাকা দিয়ে ড্রেস আনি এবং বাকি টাকা দিয়ে গ্রামের বাচ্চাদের ড্রেস এবং জুতা কিনি।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভেরি গুড।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:২৪
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: হে দ রিদ্র তুমি মোরে করেছ মহান।
পোষ্টে +++++ রেখে গেলাম।