নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আন্দামানের গল্প

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪


আন্দামান হচ্ছে এমন একটি স্থান, যেখানে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধাচরণকারী অভিযুক্ত অপরাধীদের নির্বাসনে পাঠনো হত। অষ্টদশ শতাব্দীতে, ব্রিটিশরা ভারতে আসার পর এই দ্বীপটি বিশ্বব্যাপী দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছে। নবম শতাব্দীতে আরব বেদুঈনদের কাছ থেকে সর্বপ্রথম এই দ্বীপপুঞ্জের অস্তিত্ব সম্বন্ধে জানতে পারা যায়, তারা সুমাত্রা যাত্রা করার সময় দ্বীপপুঞ্জের এই পথ ধরেই পাড়ি দিয়েছিল। সর্বপ্রথম পশ্চিমী পর্যটক মার্কো পোলো এটিকে ‘দ্য ল্যান্ড অফ হেড-হান্টারস’ রূপে আখ্যা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফ থেকে সরাসরি দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর আর আন্দামান সাগরের মিলনস্থলে, ভারত মহাসাগরের উত্তরপ্রান্তে। কলকাতা থেকে দুই ঘণ্টার বিমানের পথ এ দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্টব্লেয়ার। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব ১২৫৫ কিমি।


আন্দামান অঞ্চলটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত। ভৌগোলিকভাবে অঞ্চলটিকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অংশ মনে করা হয়। এই জনপ্রিয় দ্বীপপুঞ্জটির লোকসংখ্যা হল ৬,৮০,৩৮১ জন এবং জনসংখ্যার ঘনত্বে এখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪৬৬ জন ব্যাক্তি বাস করে। এই দ্বীপপুঞ্জে ১০০০ জন পুরুষের অনুপাতে মহিলার সংখ্যা হল ৯৭৮ জন। এই দ্বীপপুঞ্জের প্রধান ভাষা হল নিকোবরী। তবে, আধিকারিক ভাষাগুলি যেমন হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু ও ইংরাজী ভাষারও এখানে ব্যাপকভাবে প্রচলন রয়েছে। আন্দামান-নিকোবার দ্বীপপুঞ্জে ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ৩৭২টি দ্বীপ। এর বেশিরভাগ ছোট ছোট কোরাল দ্বীপ। প্রায় দ্বীপে জনবসিতও তেমন নেই। মার্কোপোলো পাশ্চাত্য পরিব্রাজকদের মধ্যে প্রথম যিনি দ্বীপগুলো ভ্রমণ করেন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চলাকালে ১৯৪২ সালের ২১ মার্চ জাপানিরা আন্দামান দখল করে নেয়। সমুদ্র পথে রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে পৌঁছতে প্রায় তিনদিন সময় লাগে। আন্দামানের প্রধান অর্থকরী ফসল হল ধান, অন্যদিকে নিকোবরে প্রধান অর্থকরী ফসল হিসাবে নরিকেল ও সুপারির ফলন হয়। ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন, এই স্থান হল ভাসমান পান্না দ্বীপ ও পাথরের একটি সমষ্টি। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জটি নারকেল ও পাম গাছ দিয়ে ঘেরা সুন্দর সমুদ্র-সৈকত ও তার স্বচ্ছ নীল জল এবং তার জলের নীচে ডুবে থাকা কোরাল ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীবের অবস্থানের জন্য বিখ্যাত।


অনেক বইতে পড়েছি- দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের হাত-পা বেঁধে জাহাজে করে নিয়ে যেয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করা হতো। অনেককে দ্বীপগুলোর নির্জন স্থানে বা জঙ্গলে ফেলে আসা হতো। একে বলা হতো নির্বাসন বা দ্বীপান্তর। তারা হিংস্র প্রাণী বাঘ, শিয়াল, শকুন ইত্যাদির খাদ্যে পরিণত হতো। যাদের হত্যা ও নির্যাতন করা হয় তাদের অপরাধ তারা ভারতের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। শুনেছি সেখানে অসভ্য অধিবাসীরা বাস করে। তারা মানুষের মাংস খায়। আমার বহু দিনের ইচ্ছা সেই দ্বীপ দেখার। ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ২শ জনকে দীপান্তর দেয়া হয় আন্দামানে। ওই সব বন্দীরা ছিলেন ওহাবী আন্দোলনের অগ্রসেনা। যাদের সংখ্যা গরিষ্ঠই ছিলেন বাঙালি।
নেতাজী সুভাষ বোস ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে আন্দামান গমন করেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে ভারত সরকার ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে সেলুলার জেলকে জাতীয় স্মারক হিসেবে ঘোষণা করে তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সেখানে সুভাষ বোস এর একটি শ্বেত পাথরের মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে।


পাখি ও ফুল এই দ্বীপপুঞ্জের অন্য আরেক আকর্ষণ, যা বহু সংখ্যক পর্যটকদের প্রলুব্ধ করে। গ্রীষ্ম ও শীত এই উভয় ঋতুতেই এই স্থান পরিভ্রমণের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। এখানে প্রচুর রিসর্ট, রেস্তোঁরা ও ক্যাফে রয়েছে, যা ভ্রমণার্থীদের সমস্ত প্রকারের চাহিদা পূরণ করে। জনসংখ্যা সাড়ে ৩ লাখ।আয়তন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বর্গ কি।মি। এই দীপে তাপমাত্রা সার বছর ২১-৩১ ডিগ্রী এর মধ্যে থাকে।তবে ভ্রমনের বেস্ট টাইম ডিসেম্বার টু এপ্রিল। পোর্টব্লেয়ার শহর শুধু পৌরসভা কেন্দ্রীক। অন্যান্য দ্বীপগুলি বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত-এর অন্তর্গত।


আন্দামানে পরিদর্শনযোগ্য স্থান
* লং আইল্যান্ড।
* সেলুলার জেল।
* আ্যনথ্রোপলোজিক্যাল মিউজিয়াম।
* মহাত্মা গান্ধী মেরিন্ ন্যাশনাল পার্ক।

এখানে খাওয়া নিয়ে কোনই ঝামেলা নেই। মাছ-মাংশ, সব্জ্বি সহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক মানের খাবার পাওয়া যায়। একেবারে তাঁজা রুপচান্দা, সামুদ্রীক বিশাল সাইজের বিভিন্ন প্রকার চিংড়ি খুব সহজলভ্য। তবে, আন্দামান-নিকোবর হল মশার আড়ত। মশা ঠেকানোর সরঞ্জাম তাই আবশ্যিক। সেটা ধূপ বা ক্রিম হওয়াই বাঞ্ছনীয়। উপজাতি, বিশেষত জারোয়া অধ্যুষিত এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ওষুধপত্র প্রয়োজন মতো সঙ্গে রাখবেন। এখানেও পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা জরুরি।

আন্দামানে বেড়াতে গেলে- সাথে এই বই গুলো রাখা যেতে পারে। ভ্রমণকাহিনি - কাকাবাবু হেরে গেলেন?, জারোয়াদের দেশে কয়েকদিন, নীল দ্বীপান্তরে, অথবা আন্দামানের দিনলিপি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


আন্দামান বোধ হয়, জীবনে যাওয়হা হবে না; তবে, অভিরামের কেহ ওখানে আছে কিনা খবর নেয়ার দরকার।

২| ২২ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪৭

শেখ জামাল ১২ বলেছেন: ভাই, এই পোষ্টে অাপনার ছবি দিলেনা যে!!!

জাতি একটা বিরাট মিস করলো।

এডিট করে অাপনার একটি ছবি ঢুকাই দিয়েন


ব্লগটা একেবারে ফেসবুক করে ফালাইছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.