নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আপনারা সবাই কেমন আছেন?
অফিসের কাজে ফরিদপুর গিয়েছিলাম- আমার সম্পাদকের সাথে। খুব ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম। ব্লগে আসতে পারিনি। আর মোবাইল দিয়ে ব্লগ চালিয়ে আরাম পাই না। সামু এবং সামুর ব্লগারদের জন্য বেশ অস্থির হয়েছিলাম। হয়তো অনেক কিছুই মিস করেছি। কয়েকদিন পর আবারও যেতে হবে।
আমরা জানি, গ্রাম বলতে এমন একটি এলাকাকে বোঝায় যেখানে অধিকাংশ মানুষ কৃষিজ পেশায় সম্পৃক্ত এবং মানুষ প্রথাগত সম্পর্কে অভ্যস্থ। কৃষিকাজকে কেন্দ্র করে যে মানববসতি গড়ে ওঠে, তা-ই গ্রাম। একদিকে মানুষ বাধ্য হয়ে শহরে আসছে, অন্যদিকে বেশি সুযোগ-সুবিধা পেতেও শহরে আসছে। গ্রামের মানুষ নগরের মানুষের তুলনায় ধর্মপ্রাণ হয়ে থাকে। গ্রামীণ জীবনে ধর্মের প্রভাব অত্যধিক। ইদানিং গ্রাম আমাকে খুব বেশি টানে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে ঢাকা শহর ছেড়ে একেবারে চলে যাই গ্রামে।
ফরিদপুর আমি অনেকবার গিয়েছি। ভাঙ্গা, আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারি এবং মধুখালি। এবার আলফাডাঙ্গার অনেক গ্রাম ঘুরেছি। বাংলাদেশের নদীর নাম গুলোর মতো- গ্রামের নাম গুলোও অদ্ভুত সুন্দর। হেলেঞ্চা, কুচিয়া, বাকাইল, সাতৈর, বুড়াইচ ইত্যাদি। আমার ইচ্ছা আছে বাংলাদেশের সব গ্রাম গুলোর নাম এর ইতিহাস নিয়ে কাজ করবো। পুরো ফরিদপুরে গ্রাম আছে ১৮৫৯টি। এর মধ্যে আমি ১০০টি গ্রাম ঘুরে দেখেছি। বিশেষ করে গ্রামের বাজার গুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে খুবই ভালো লাগে। বেশির ভাগ গ্রামেই সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। প্রতিটা গ্রামের বাজারে খাঁটি দুধের চা পাওয়া যায়। যা আমার খুব প্রিয়।
ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা ১৭৮৬ সালে। বর্তমান জন্যসংখ্যা প্রায় ২৮ লক্ষ। সবচেয়ে ছোট উপজেলা আলফাডাঙ্গা (১৩৬ বর্গ কিমি)। ১৯৬০ সালে আলফাডাঙ্গা থানাকে ফরিদপুর জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। পূর্বে এটি ছিল যশোর জেলার নড়াইল মহাকুমার আওতাধীন। আলফাডাঙ্গার আয়তন ১২৮ বর্গ কিলোমিটার। এবার গ্রামে গিয়ে নানান রকম মিষ্টি, দই আর রসমালাই খেয়েছি। খুব'ই ভালো আর টেস্টি। ঢাকার থেকে দামও অনেক কম।
গ্রামের প্রধান আকর্ষন তার নয়নাভিরাম সতেজ প্রকৃতি। কবি জসিম উদ্দিনের কবিতায় বাংলাদেশের গ্রাম প্রকৃতির যে ছবি অংকিত হয়েছে তা গ্রামের দিকে তাকালে সহজেই অনুধাবন করা যায়। পল্লী কবির বাড়ি এই ফরিদপুরে'ই। গ্রাম আমাকে দেয় মুক্তি; মনের আনন্দে আমি ঘুরে বেড়াই। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭০ হাজার গ্রাম রয়েছে। এবং প্রতি গ্রামে পরিবারের সংখ্যা গড়ে প্রায় ৩২০ টি। এক জীবনে এই সব গুলো গ্রাম কি ঘুরে দেখা সম্ভব?
গ্রামই হলো মানুষের আদি বাসস্থান। আপনি যদি ইচ্ছে করেন টাটকা দুধ, মাছ, মাংস শাক সব্জী খাবেন সেটা সম্ভব একমাত্র গ্রামেই। আপনি বুক ভরে শ্বাষ নিবেন সে শ্বাষে থাকবে না কোন বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। পথ চলতে ভয় থাকবেনা কোন ছিনতাইকারির। শহরের মানুষগুলো যেমন ব্যস্ততার জন্য আন্তরিকতা হীন হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে মনে হয় এখনও গ্রামের মানুষের মধ্য যথেষ্ট আন্তরিকতা আছে। তবে অনেক গ্রামে ভাল রাস্তা নাই, বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু কাঁদা।
জন্মের পর থেকেই শহরে আছে তাই স্বাভাবিকভাবে শহরের প্রতি একটা টান কাজ করে। কিন্তু কেন জানি আমার গ্রামও খুব ভাল লাগে। নানান কারনে শহরের অনেক কিছুই এখন আমার অপছন্দ হতে শুরু করেছে। গ্রামের ছেলে-মেয়েরা মুক্ত পরিবেশে মধ্যে বেড়ে উঠছে এটা খুব ভাল লাগে। আর শহরে ছেলে-মেয়েরা একেকটা যেন ফার্মের মুরগীর মত বড় হচ্ছে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়র 'পথের পাঁচালী' যেন গ্রামবাংলার চিত্রটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বাঁশঝাড় নুয়ে পড়েছে মেঠোপথে। সেই পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আমি। সবুজ ধানক্ষেতের বুক চিড়ে যে মেঠোপথ, সেই পথ বেয়ে আমি হেঁটে চলি দূর দিগন্তের দিকে। গ্রামের সব মানুষ এখন নগরমুখী। কেউ আর গ্রামোন্নয়নের কথা বলে না। কর্মের কারনে অনেক মানুষ শহরে পড়ে থাকে। কিন্তু মন পড়ে থাকে গ্রামে। এবার আমি সাইকেল দিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ঘুরেছি।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫১
হাফিজ রাহমান বলেছেন: ভাই! লেখাটি পড়ে বেশ পুলকিত হলাম। মনে পড়ে গেল আবহমান বাংলার সে গ্রামীণ স্মৃতি। আহ...। ধন্যবাদ।
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়.) বলেছেন: আপনি আছেন গ্রাম নিয়ে, আমি আছি ঝামেলায়!
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: ঝামেলা কেটে যাবে। মনে রাখবেন কিছু দুষ্টলোক সব জায়গায়'ই থাকে।
৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
ফরিদপুর যাবার সময়, ব্যাগের মাঝে ১টা মুজিবকোট রাখবেন, হয়তো কাজে লাগতে পারে
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০৬
গেম চেঞ্জার বলেছেন: যাক, আপনার ৯ দিনের খবরাখবর পেয়ে ভাল লাগল। গ্রাম আমারও ভাল লাগে। প্রবহমান বাতাসের সামনে দুহাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকতে সবচেয়ে ভাল লাগে!