নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
১। সকালে ঘুম থেকে উঠেই গোছল করে, জামা কাপড় পড়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হলাম। নাস্তা খাওয়া হয়নি। সময় তখন সকাল ৮ টা। রাস্তায় বের হয়ে দেখি- হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে আছে। আমার জুতোর ভিতর পানি ঢুকে আছে। হাঁটি আর ফস ফস শব্দ হয়। গতকাল রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি চলছেই। রাস্তায় এত পানি জমেছে যে সমুদ্রের ঢেউ এর মতো ঢেউ এসে পায়ে ধাক্কা দেয় দিচ্ছে। বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। আজ যেন অন্যদিনের তুলনায় রাস্তায় অফিসগামী লোকের সংখ্যা বেশি। ছাতা মাথায় থাকা সত্তেও ভিজে গেছি। পরপর তিনটা বাস এলো, কিন্তু আমি বাসে উঠতে ব্যর্থ হলাম। চতুর্থ বার রেগে-মেগে অনেক ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠতে সক্ষম হই। সিট পাইনি। কিন্তু তারপরও আমি অনেক খুশি। বাসা থেকে দেড় ঘন্টা আগে বের হয়েও অফিসে পৌঁছাতে ৪৫ মিনিট লেট হয়েছে। তিন দিন দেরী হলে একদিনের বেতন কর্তন করা হয়।
২। অফিসে গিয়ে আগে টানা দুই ঘন্টা কামলা খাঁটি। রাজীব সাহেব আমার বিলটা রেডি করে দেন। রাজীব ভাই, আমার হিসাবটা বের করে দেন। আমার চিঠিটা প্রিন্ট করে দেন। সিইও সাহেব ফোন করে বলবেন, গত মাসের ফাইলটা নিয়ে আমার রুমে আসেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা প্রতিদিনের রুটিন। কিন্তু এই কাজ গুলো তারা নিজেরাই করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা এই কাজ তাদের নিজেদেরই করার কথা। যাই হোক ১২ টায় অফিস থেকে বের হলাম। তখনও বৃষ্টি পড়ছে। প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। সকালে নাস্তা খাওয়া হয়নি। একটা হোটেলে গেলাম। নাস্তা খেলাম। দু'টা শক্ত রুটি, কখন বানিয়েছে কে জানে! সবজি টাও টক টক লাগছে। নাস্তা শেষে এক কাপ চা। হোটেল থেকে বের হয়ে একটা চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে সিগারেট শেষ করলাম। মাথার উপর ছাতা থাকা সত্ত্বেও পুরো ভিজে গেছি। আমার হাতে মোটা মোটা তিনটা ফাইল। ওজন কম হলেও চার কেজি হবে। হাত ব্যাথা করছে। অনেকক্ষানি পথ হেঁটে বাসে উঠলাম। হাতিরঝিল দিয়ে গুলশান-২ গেলাম।
৩। প্রথমে নাভানা অফিসে গেলাম। সেখানে কাজ শেষ করে আরেকটা অফিসে গেলাম। এক মিনিটের কাজ কিন্তু সেই অফিস থেকে বের হলাম তিনটায়। ভদ্রলোক বললেন, এখন আমি নামাজ পড়বো তারপর ভাত খাবো। অপেক্ষা করেন। ভদ্রলোক আমাকে একটা চেক দিবে- তার জন্য প্রায় দুই ঘণ্টা বসে থাকতে হলো। যাই হোক ওদের অফিসে রিসিপশনে বসে আছি। দুইজন রিসিপশনিষ্ট কি একটা হিন্দি সিনেমা নিয়ে আলাপ করছে। এই ১২ তলা বিল্ডিং এর তিনটা ফ্লোরে ওদের অফিস। আমি বসে আছি দশ তলায়। বসে বসে মোবাইলে গেমস খেলছি। এমন সময় তিনজন হিজড়া এলো। দুই রিসিপসনিষ্ট মেয়ের কাছে ১০০০ হাজার টাকা চাইল। টাকা না দেয়াতে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করলো। সিকিউরিটি গার্ড খুব ভয় পেয়েছে, সে হিজড়াদের বলছে আপা আপনারা আগামীকাল আসেন। বস অফিসে নাই। এই কথা শুনে হিজড়ারা আরও রেগে যায়। একজন হিজড়া বলল, এত বড় অফিস কারো কাছে এক হাজার টাকা নেই। এখন কাপড় খুলে তোদের জিনিস দেখাব। আর ওইটা (রিসিপশনের মেয়ে দু'টাকে দেখিয়ে বলল) কুত্তা দিয়ে--- করাবো।
৪। ৩ টা দশ মিনিটে গুশান-২ এর মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। খুব ক্ষুধা লেগেছে। যাহ্ ভুলে ছাতাটা ফেলে রেখে এসেছি। আবার ওই অফিসে গেলাম। ছাতা উদ্দার করলাম। ছাতা হারালে আজ আমার খবর আছে। সুরভি পই-পই করে বলেছে খবরদার ছাতা হারিয়ে এসো না। যাই হোক, অফিসে যেতে যেতে চারটা বেজে যাবে। ভাত পাবো না। পকেটে টাকাও বেশি নেই। একটা চায়ের দোকানে গেলাম। হাসিমুখে রুটি কলা খেয়ে নিলাম। অফিসে গিয়ে একাউন্সের লোকদের সাথে বসে পুরোনো একটা হিসাব শেষ করলাম। সাড়ে পাচটা বেজে গেছে। ছয়টা পর্যন্ত অফিস। ঘরে বাজার সদাই কিছু নেই। অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় যাওয়ার আগে বাজার করে নিয়ে যেতে হবে। ঈদের পর আর বাজারে যাওয়া হয়নি। ফ্রিজ খালি। গতকাল ডাল ভর্তা, আর ডিম ভেজে ভাত খেয়েছি। সুরভি'র বাবু হবে। এই সময় তার দিকে একটু বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। তাকে ফলফ্রুট খাওয়ানো দরকার। যাই হোক, অফিস থেকে ছয়টায় বের হবো, তখন সিইও সাহেব এসে নানান ফালতু আলাপ শুরু করলেন। অফিস থেকে বের হলাম সন্ধ্যা সাতটায়।
৫। হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরছি। খুব ক্লান্ত লাগছে। সাথে প্রচন্ড ক্ষিদে পেয়েছে। ইচ্ছা করছে একটা দামী রেস্টুরেন্টে গিয়ে সব খাবার খেয়ে ফেলি। কিন্তু এখন প্রতিটা টাকা হিসেব করে খরচ করতে হবে। সামনে অনেক খরচ। সুরভির বাচ্চা হবে। রাত ৮ টায় বাসায় ফিরলাম। জামা খুলে বিছানায় বসতেই কারেন্ট চলে গেল। এক ঘন্টা পর কারেন্ট এলো। সুরভি অসুস্থ, ডাক্তার বলেছে আগামী তিন মাস সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে। তাই আমি ভাত চড়ালাম। আগামীকাল অবশ্যই চাল কিনতে হবে। কেচেকুচে এক পট চাল আজ হয়েছে। কপাল ভাল ফ্রিজে দু'টা ডিমও পেলাম। ঝুড়িতে তিনটা আলু! আলু ভর্তা করবো। ডিম ভাজি। ডিম ভাজি আর আলু ভর্তা করতে আমি খুব ভালো পারি। সবচেয়ে বড় কথা সুরভি আমার হাতের আলু ভর্তা আর ডিম ভাজি খুব পছন্দ করে। লেখাটা এখানে শেষ করতে হবে। ভাত হয়ে এসেছে- মার গালতে হবে। আলুও সিদ্ধ হয়ে গেছে। এই রকম বৃষ্টির দিনে গরম ভাতের সাথে গরম ডিম ভাজা আর আলু ভর্তা মন্দ নয়।
২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৪৯
আমি চির-দুরন্ত বলেছেন: ফরহাদ কি বাকি কয়টারে এখনো মারে নাই?
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা .।.।.।
মেরেছে।
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা .।.।.।
মেরেছে।
৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৮
ওমেরা বলেছেন: আপনার লিখা পড়ে আমার তো এখন আলো ভর্তা খেতে ইচ্ছা করেছে কিন্ত কে বানিয়ে দিবে !!
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আলো না আলু ভর্তা।
৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৮
ওমেরা বলেছেন: এই হল আর কি আপনি তো বুঝেছেন ভাইয়া তাইনা ।
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: শুভ রাত্রি।
৫| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০১
সাতশো একান্ন বলেছেন: "সবচেয়ে বড় কথা সুরভি আমার হাতের আলু ভর্তা আর ডিম ভাজি খুব পছন্দ করে।" আহা! ভালোবাসা। শুভকামনা রইলো।
৬| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
সবকিছু মিলে, সব কস্টের পরও, আপনি ঢাকা শহরের জন্য একজন সুখী মানুষ; হাজার হাজার লোকের গিন্জি ঘরে পানি ঢুকে গেছে, চুলা জ্বালাতেও পারবে না।
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: ওস্তাদ শুভ সকাল।
আমার ঘরে পানি না ঢুকলেও বাসার সামনের রাস্তায় পানি জমে আছে।
৭| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৪:২১
কলাবাগান১ বলেছেন: সারা দিন বাইরে থেকে ঘরে এলেন আর রান্না চড়িয়ে ব্লগ লিখতে বসে গেলেন!!!!!! আপনার স্ত্রীর আসলেই ভাগ্য খারাপ...........
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: রান্না এবং ব্লগ লেখার পাশাপাশি তার সাথে সারাদিনের জমানো কথা গুলো আদান প্রদান হয়েছে।
৮| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৪৮
কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: আপনার মত মানুষের জন্য সোনার বাংলা নাহ, আপনি ইউরোপ বা আমেরিকাতে পরিবার নিয়ে চলে যান।
০৬ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: যেতে তো চাই ই কিন্তু টাকা নেই। মামা চাচাও নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৯
জাহিদ হাসান বলেছেন: হুম।