নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
এক
রাত দুইটায় শাহেদ বিছানায় গেল। তার স্ত্রী আজ বাসায় নেই। খালি বাসা তার ভালো লাগে না। অথচ স্ত্রী বাপের বাড়ি গেলে মানা করাও যায় না। শাহেদ খুব সাহসী না আবার খুব ভীতুও না। ঘুম আসছে না। শাহেদ নানান কথা ভেবে যাচ্ছে। ঘুম আসি আসি করেও আসছে না। ঠিক এমন সময় শাহেদের ঘরের দরজা কে যেন নক করলো। শাহেদ থাকে ছয় তলায়। নিচে কলাপসিবল গেট তালা লাগানো। অন্য ফ্লাটের লোকজনও আসার কথা না। বা তাদের কোনো দরকার হলে তারা ফোন দিত। কে এলো এত রাতে? কেন? কোনো কথা নেই, শুধু দরজায় নক করছে। থামছে। আবার নক করছে। শাহেদ নিশ্চিত এটা কোনো অশরীরির কাজ। দরজা খুললেই তাকে মেরে ফেলবে। শাহেদ বালিশ দিয়ে পুরো মাথা ঢেকে ফেলল। মনে মনে বলল- প্রভু রক্ষা করো।
দুই
আকাশের অবস্থা ভালো না। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। খুব বাতাস বইছে। হুট করে কারেন্টও চলে গেল। নীলার বাচ্চা হবে। ডাক্তারের হিসাব মতোন আরও দশ দিন বাকি আছে। এখন রাত এগারোটা। শাহেদ এখনও বাসায় ফিরেনি। অবশ্য শাহেদ বলেই গিয়েছে আজ তার ফিরতে দেরী হবে। সে অফিসের কাজে গাজীপুর গিয়েছে। এদিকে নীলার ব্যথা উঠেছে। মনে হচ্ছে বাচ্চা ডেলিভারী হয়ে যাবে। নীলা ব্যথায় ছটফট করছে। মনে হচ্ছে সে মারা যাবে। ছয় তলা থেকে নেমে একা হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব না। তাছাড়া এই ফ্ল্যাট বাড়িতে তারা নতুন এসেছে। এখনও কাউকে ভালো করে চেনে না। অন্ধকারে নীলা মোবাইল ফোনটা খুজে পাচ্ছে না। রাত একটায় শাহেদ বাসায় ফিরে নীলাকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পায়। নীলার চারপাশ রক্তে ভেজা।
তিন
কলা ভবনের কাছে এক মেয়ে একা বসে আছে। তার হাতে আমড়া। মেয়েটি দেখতে খুব সুন্দর। চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। কপালে টিপ দিয়েছে। আকাশি রঙের একটা শাড়ি পড়েছে। পুরো শাড়িতে ছোট ছোট ফুল আঁকা। মেয়েটির মাথা ভরতি চুল। চুল গুলো বাতাসে উড়ছে। শাহেদ মুগ্ধ হয়ে মেয়েটিকে দেখল। সে খুব সাহস সঞ্চয় করে মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলো। মেয়েটি বলল, একটু দূরে চেপে বসুন। শাহেদ বলল, আজকের দিনটি অনেক সুন্দর! কি ঝলমলে রোদ চারিদিকে! আকাশ খুব বেশি স্বচ্ছ। মেয়েটি বলল- তো? শাহেদ বলল, আমার পুরান ঢাকা গিয়ে কাচ্চি খেতে ইচ্ছা করছে। সাথে ফানটা। এবং সব শেষে একটা বেনসন সিগারেট। মেয়েটি বলল- বুঝতে পেরেছি। খাচ্চি খেতে ইচ্ছা করছে কিন্তু আপনার পকেটে টাকা নেই। শাহেদ হেসে দিল। মেয়েটি বলল, চলুন আপনাকে কাচ্চি খাইয়ে নিয়ে আসি। তবে চাকরি পেলে আমার টাকা কিন্তু ফেরত দিতে হবে। শাহেদ বলল, অবশ্যই। তারা দু'জনে একটা রিকশায় চেপে বসলো। তাদের দুইজনকে হাত নেড়ে নেড়ে খুব গল্প করতে দেখা গেল।
চার
এক ছুটির দিনে নীলার সাথে শাহেদের খুব ঝগড়া হয়ে গেল। নীলা বলল, বাজারে যাও। ফ্রিজ একদম খালি। বাজার থেকে এসে ফ্যানটা পরিস্কার করে দাও। লাইটের হোল্ডার গুলোও মুছতে হবে। খুব ময়লা জমেছে। তারপর ছাদে গিয়ে গাছ গুলোর আগাছা পরিস্কার করবে। শেষে গোছল করে জুম্মার নামাজ পড়তে যাবে। শাহেদ হুট করে প্রচন্ড রেগে গেল। রেগে গিয়ে নীলাকে বলল, তুই যা বাজারে। তুই ফ্যান পরিস্কার কর। আগাছা পরিস্কার কর- হারামজাদী। সারা সপ্তাহ গাধার মতোন খাটি। একটা দিন ছুটি পাই- একটু শুয়ে-বসে আরাম আয়েশ করবো। তা-না বলে বাজারে যাও, ফ্যান মুছো। এই প্রথম শাহেদ নীলাকে হারামজাদী বলে গালি দিল। নীলা প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। সে কোনো হই চই না করে ব্যাগ গুছিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেল। দুপুর দুইটায় শাহেদ বুঝতে পারলো নীলা চলে গেছে। তার প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। সে হোটেলে গেল, ভাতের বদলে ফুল প্লেট মোরগ পোলাউ খেলো। খেয়ে পুরান ঢাকার নারিন্দা গেল তার পুরোনো প্রেমিকা সুমি'র কাছে। কোনো ভনিতা না করে সরাসরি সুমিকে বলল, আমাকে বিয়ে করবে সুমি? আমি নীলাকে ছেড়ে দিব। সুমি বলল, নো নেভার। জাহান্নামে যাও।
পাঁচ
শাহেদের খুব শখ হলো- সে মাস্তান হবে। এলাকার সবাই তাকে ভয় পাবে। সম্মান করবে। মাস্তান হবার চিন্তা থেকে সে মোড়ের দোকান থেকে এক পেকেট সিগারেট নিলো। দাম দিল না। দোকানদার টাকা চাইতেই- শাহেদ রেগে গিয়ে দোকানদার ছোকরাকে ধাম ধাম করে দুইটা চড় বসিয়ে দিল। গলির মধ্যে মাছের বাজার বসে সকাল বেলা। শাহেদ বলল, এক হালি ইলিশ কত? মাছওয়ালা বলল- তিন হাজার টাকা। শাহেদ বলল- পনের শ' টাকায় হবে? মাছ বলল কিঞ্চিৎ তেজ দেখিয়ে বলল- কাচকি মাছ খান। ইলিশ খেতে হবে না। শাহেদ রেখে গিয়ে লাথথি দিয়ে মাছের পাতিল ফেলে দিল। তারপর মাছওয়ালার কলার চেপে ধরে ধাম ধাম করে কয়েকটা বসিয়ে দিল। আশে পাশের সব গুলো মাছ বিক্রেতা এসে বলল- মামা মাফ করে দেন, আপনাকে চিনতে পারে নাই। শাহেদ তার এলাকার হোটেলে গেলো- ওয়েটারকে বলল, নাস্তা দে। ওয়েটার নাস্তা দিল। শাহেদ বলল- ঠান্ডা রুটি দিলি ক্যান? বদলে দে। ওয়েটার বলল, ঠান্ডাই খান। বদলানো যাবে না। শাহেদ রেগে মেগে হোটেল বয়কে মারলো। ম্যানেজারের কলার চেপে ধরে বলল, হারামজাদা ব্যবসা করো মানুষ চিনো না? আজ তোদের শিক্ষা দিয়ে ছেড়ে দিব। ম্যানেজার বলল, মামা স্যরি। আর এরকম ভুল হবে না। আপনার যখন খুশি এসে খেয়ে যাবেন।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২২
রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদ বিরাট নির্বোধ।
২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯
জাহিদ অনিক বলেছেন:
পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদে কাহিনীতে আমি কেবল আপনাকেই দেখতে পেলাম শাহেদ রূপে।
কেন যেন মনে হলো, শাহেদ কেউ না- আপনিই।আপনার এক এক সময়ের মনের অবস্থার সমষ্টি।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।
ভাল থাকুন।
৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮
হাবিব বলেছেন: প্রথম দুই গল্প পড়লাম। শাহেদ যদি আপনি হন তাহলে অনেক কষ্ট লাগবে, আর যদি নিছক গল্পের চরিত্র হয় তাহলে কষ্ট লাগবে না।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি শাহেদ।
৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১
আরোগ্য বলেছেন: ইশ! মিস হয়ে গেল। আগে জানলে গত শুক্রবারের কাচ্চি পার্টিতে শাহেদকে দাওয়াত করতাম।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: এর পর কাচ্চি পার্টি হলে দাওয়াত দিতে ভুলবেন না।
৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫
আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: আপনি সবসময় ভালো লিখেন। সুন্দর
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:০৫
রাজীব নুর বলেছেন: মামুন ভাই আমি ভালো লিখি না। তবে ভালো লিখার চেষ্টা করি।
৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬
বিজন রয় বলেছেন: ছবিটি কোন গাঙের?
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১০
রাজীব নুর বলেছেন: মধুমতি নদী।
৭| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫২
নজসু বলেছেন:
অনেকে গল্পে শাহেদকে আপনার প্রতিবিম্ব ভাবছে।
আমিও ভাবছিলাম।
কিন্তু ৫ এ এসে ভাবনাটা আমি মন থেকে মুছে ফেললাম।
কারণ, আমাদের রাজীব ভাই এতো নির্মম হতেই পারেন না।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: 'ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা,
ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ,
আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা।
---------------রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
৮| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:৪১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পাঁচমিশালী...
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: ও গানওয়ালা আর একটা গান গাও
আমার আর কোথাও যাবার নেই
কিচ্ছু করার নেই।।
৯| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সুবোধ তবে কবে ফিরবে?
২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: দেশের পরিস্থিতি ভালো না হলে ফিরবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩
সাগর শরীফ বলেছেন: শাহেদের পিছেনে এরকম করে লাগলেন ক্যান রাজীব ভাই!