নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ভূতের গল্প, হতে পারতো

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৬



আমার বাতি বন্ধ করে ঘুমানোর অভ্যাস।
কিন্তু এই অপরিচিত জায়গায় লাইট বন্ধ করে ঘুমানোর সাহস পেলাম না। আমি এ বাড়িতে এসেছি আমার বন্ধু রাজু'র বাবা-মার সাথে। রাজু থাকে আমেরিকা। সে আমেরিকা লেখাপড়া করতে গিয়েছিল। কথা ছিল লেখাপড়া শেষ করে ফিরে আসবে। কিন্তু লেখাপড়া শেষ করে সে দেশে ফিরেনি। বরং তার বাপ মাকে বলেছে তোমরা আমেরিকা চলে আসো। এদিকে রাজুর বাপ-মা জন্মভূমি ছেড়ে কিছুতেই আমেরিকা যাবে না। আবার রাজুও দেশে আসতে চায় না। রাজু আমেরিকা যাওয়ার সময় বলেছিল- আমি যেন তার বাপ মায়ের উপর খেয়াল রাখি। আমি খেয়াল রাখছি। রাজুর বাবা মার সাথে ঢাকার বাইরে এই গ্রামে এসে বিরাট বিপদে পড়েছি। হঠাত তারা দু'জন ঝগড়া করে দু'দিকে চলে গেছে। আমি একা রয়ে গেছি এই ভূতুড়ে বাড়িতে। এই বাড়ি গত চার বছর তালা মারা ছিল। আজই তালা খোলা হয়েছে। পুরো বাড়ি জঙ্গল হয়ে গেছে। ভয়াবহ অবস্থা। খুব বাজে গন্ধ। ইদুর-বিড়াল, বাগডাসা, হয়তো খুঁজলে সাপও পাওয়া যাবে। বাইর মূল্যবান সনব জিনিস চুরী হয়ে গেছে।

এই বাড়িতে বলতে গেলে সারারাত জেগেই কাটিয়েছি।
ঘুমানোর প্রশ্ন'ই আসে না। আমি ভীতু মানুষ না। কিন্তু এ বাড়িতে আসার পর থেকেই ভয়ে-ভয়ে আছি। রাজু'র বাবা- মা রাগ করে দু'জন, দুই আত্মীয়'র বাড়ি চলে গেছে- মোবাইল ফোনে তারা আমাকে এ তথ্য দিয়েছেন। প্রচন্ড শীতের রাত। সকালে বাড়ি পরিস্কারের কাজ ধরবো। আমি কোনো রকমে এক রুমের দরজা খুলে মোটামোটি ধুলোবালি পরিস্কার করে বিছানায় মাথা রাখলাম। নতুন জাগায় ঘুম আসবে না জানি। সারারাত অদ্ভুত সব শব্দ শুনলাম। শব্দ গুলো এতটাই ভৌতিক লাগলো যে আঁতকে উঠতে হয়েছে বারবার। এমন ভয়ানক শব্দ এ কলিজা কেঁপে উঠেছে। মনে হয়েছে আজই বুঝি আমি মারা যাবো। আমার দম বন্ধ হবার যোগাড়। পুরোনো তালা বন্ধ বাড়ি, ভূত প্রেত থাকাটা অস্বাভাবিক না। আমি যে ক'টা সূরা জানি বারবার পড়তে লাগলাম। কোন দুঃখে যে আমি এদের সাথে আসলাম এই গ্রামে। নিজেকে নিজে নির্বোধ বলে বকা দেওয়ার পরও রাগ কমছে না আমার। যদি আজ রাতটা বেঁচে যাই, তো সকালেই ঢাকা চলে যাব।

আমার মাথার কাছে'ই একটা জানালা।
ঠিক রাত দুই টায় কে যেন জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বলছে- 'আপনি কেমন আছেন'? এই কথা শুনে আমার কলিজা কেঁপে উঠলো। দশ কাঠার বিশাল এই বাড়িতে আমি একা। মাঝখানে বাড়ি। চারিদিকে জঙ্গল আর জঙ্গল। নিজেকে বারবার বলছি- শাহেদ তুমি ভুল শুনছো। তুমি গভীর ঘুমে। আর ঘুমের মধ্যে হয়তো স্বপ্ন দেখছো। কেউ জানতে চায়নি তুমি কেমন আছো? আবার সেই শান্ত স্বরে কে যেন বলল, ''আপনি কেমন আছেন''? আমি চোখ বন্ধ করে মরার মতোন শুয়ে আছি। যেন অশরীরিকে বুঝাতে চাইছি- আপনি আমাকে ডাকছেন কিন্তু আমি শুনতে পাচ্ছি না। আমি গভীর ঘুমে। একটু পর একজন নারী কন্ঠ শুনতে পেলাম। নারী কন্ঠ বলল, ''থাক, ডেকো না। ছেলেটা ভয় পাচ্ছে।'' হয়তো আমি অজ্ঞান হয়ে গেছি অথবা ভয়ের চোটে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছি। আমার ঘরের টিনের চালায় কে যেন সারারাত হাঁটাহাঁটি করলো। বেশ কয়েকবার কে যেন ঢিল ছুড়ে মারলো আমার ঘরের দিকে।

আমি আল্লাহ আল্লাহ করছি!
মনে মনে ভাবছি- সকাল হোক। খুব তাড়াতাড়ি দিনের আলো ফুটুক। দিনের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো। তখন আমার বন্ধুর বাবা মা ফিরে এলো। তারা বলল- রাতে তুমি কি ভয় পেয়েছো? আমি খুব ভাব নিয়ে বললাম- একটুও না। ভয় পাওয়ার কি আছে! বন্ধুর বাবা বললেন, তুমি কোন ঘরে ঘুমিয়েছিলে? আমি দেখালাম। বন্ধুর বাবা অবাক হয়ে বললেন, এটা তো ঘর না কবরস্থান। আমাদের পারিবারিক কবরস্থান। এখানে রাজু'র দাদা-দাদীর কবর। এত বড় বাড়ি, এত গুলো ঘর। কিন্তু তুমি এখানে ঘুমাতে এলে কেন?
হায় কপাল! সারারাত আমি কবরের পাশে ঘুমিয়েছি! আর যে খাটে ঘুমিয়েছি সেটা মরা মানুষ বহন করার খাট! রাজু'র বাবা-মা, মানে আংকেল আন্টি খুব অদ্ভুত মানুষ। তারা নাকি এই কবরে পাশে বসে জিকির করেন। মৃত মানুষদের দেখতে পারেন।
আমি বন্ধুর সাথে ফোনে কথা বললাম। তাকে সব জানালাম। সে নির্বিকার। তার এক কথা- সেভাবেই হোক বুঝিয়ে সুঝিয়ে আমি যেন তার বাপ-মাকে আমেরিকা পাঠাই। এদিকে রাজুর বাপ মা চায় আমি যেন তার একমাত্র ছেলেকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসি।

পনের জন লোক দিয়ে পুরো বাড়ি পরিস্কার করালাম।
আমি খুবই কাজের লোক। একদিনের মধ্যে- পুরো বাড়ি রঙ করালাম। এখন বাড়িটা দেখতে বেশ লাগছে। বিকেলে মিলাদ পড়ালাম। এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেবকে এ বাড়িতে থাকতে রাজী করালাম। আমার ধারনা যে বাড়িতে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর মানুষ থাকে না- সে বাড়িতে শয়তান এসে আস্তানা গাড়ে। অনেক চেষ্টা করেও আংকেল আন্টিকে আমেরিকা পাঠাতে ব্যর্থ হলাম। অন্যদিকে রাজুকে বাংলাদেশে আনতে ব্যর্থ হলাম। একদিকে রাজুর বাবা মা অন্য দিকে রাজু। তারা সবাই আমাকে এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে আকড়ে ধরেছেন। ভালোবাসার বন্ধনে আমি আটকে গিয়েছি। আমি চাই, আমার বন্ধু রাজু ভালো থাকুক। সে খুবই একটা ভালো ছেলে। রাজুর বাবা-মা ভালো থাকুক, আমার বাবা-মাও ভালো থাকুক। ভালো থাকুক পৃথিবীর সমস্ত বাবা-মা এবং তাদের সন্তানেরা।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৫

নয়া পাঠক বলেছেন: ওয়ান্ডারফুল! ছবির জমিদার বাড়িটা চেনা চেনা লাগছে। যাহোক অনুভূতির প্রকাশগুলি অতি চমৎকার।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য অনুভূতি তো তাই।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: রাজিব ভাই শাহেদটা তাহলে গল্পের নায়ক B-)

আপনি তাহলে ভুত ভয় পান এ জন্য শাহেদ :P

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা----

৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৩

নজসু বলেছেন:




মরা মানুষ বহন করার খাটে ঘুমিয়েছেন?
আমার তো ভাই এখনই ভয়ে গা হিম হয়ে গেল।

এই পোষ্টটা আমি আরেকবার রাতে আরেকবার পড়বো।
দেখি এখনকার আর তখনকার অনুভূতি কেমন হয়।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: রাতে পড়বেন না।
প্রচন্ড ভয় পাবেন।

৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৪

বাকপ্রবাস বলেছেন: দারুণ ছিল

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

নজসু বলেছেন:





দেখেন তো সেদিন রাতে এমন কিছু নজরে পরেছিলো কিনা। :-B

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: অনেকটা এই রকমই।

৬| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৭

মুক্তাদীর রহমান বলেছেন: ভৌতিক এবং দূঃসাহসিক। ভালো ছিল।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিল শাহেদ।

৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: আপনি কেমন আছেন ?
ভাইরে , এমন পরিস্থিতিতে আমাকে এ কথা বললে আমি মরে যাবো !!!!!

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদও মরতে মরতে বেঁচে গেছে।

৮| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভালো লাগলো লেখা

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ বোন ফাতেমা।

৯| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

ফাহমিদ বলেছেন: গল্প ভালো লেগেছে, ভয়টা আর আগের মত পাই না।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ভয় না পাওয়াই ভালো।

১০| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভূতের গল্প হতে পারতো বটে ;)

সংক্ষিপ্ত হলেও ভাল লেগেছে

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া জনাব আপনি আমার পোষ্টে এসেছেন- এতেই আমি অনেক খুশী।

১১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: ছবিটি দেখে এক মুহূর্ত থমকে গিয়েছিলাম । আমার দাদা বাড়িটি কেনা হয়েছিল ১৯৬১ সালে । আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে সেটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে । সেই বাড়ীর দেয়ালগুলো ঠিক এমন ছিল । ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি আছে সেই বাড়িতে । অনেক বছর ছিলামও সেখানে কিন্তু একদিনও ভয় পাইনি B-)

লেখা ভালো লেগেছে ভাইয়া ।


১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

১২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালোই হয়েছে।
যে জীবন সৎকাজে ব্যায়িত, সে জীবন মহান আল্লাহর পছন্দনীয়।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪২

আরোগ্য বলেছেন: রাজীব ভাই এর গল্পে অন্য স্বাদ।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মানুষ টাই সবার থেকে আলাদা। ভালো অর্থে আলাদা না খারাপ অর্থে আলাদা তা জানি না। কারো সাথে আমার মিলে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.